somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসংগঃ আস্তিকের ধর্মকথা-৬

২৬ শে মার্চ, ২০১১ রাত ১০:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ধর্মীয়, বৈষয়িক এবং সামাজিকতার প্রেক্ষিতে সম্পূর্ন ব্যাক্তিগত উপলব্ধি, কারো সাথে মিল বা অমিলে কিছু আসে যায় না।


আল্লাহর অস্তিত্ব আছে যেমন প্রমান করা যায় না, আল্লাহর অস্তিত্ব নাইও তেমন প্রমান করা যায় না। তাই আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। প্রমান নির্ভর আধুনিক বিশ্বে শুধু বিশ্বাস নির্ভর ধর্মের ভিত্তিতে জীবন যাপন খুবই অযৌক্তিক এবং হাস্যকর বৈকি।

আল্লাহ যদি সত্যিই থেকে থাকে তবে আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলে সবাই মার-মার কাট-কাট করে ওঠে কেন? কেন দোযখের ভয় দেখায়? নাস্তিক, কম্যুনিস্ট ইত্যাদি বলে কেন? কেন সরাসরি প্রমান করে দেখায় না যে এই হলো আল্লাহ। কেন উলটো প্রশ্ন করে ‘তাহলে এই বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড কার সৃষ্টি?’ এই প্রশ্নটি করে কি বিশ্বাসীরা নিজেরাই কি অবিশ্বাসীদের কাছে উত্তর খোঁজে? মানুষের সাথে আল্লাহর এই লুকোচুরির কারন কি?

যার যার ধর্ম যদি তার তার কাছেই হয়, তবে ১৩ বছর বয়সেও কোন মুসলিম পুত্রসন্তান স্বেচ্ছায় নামায না পড়লে তাকে বেত দিয়ে পেটাতে বলা হয়েছে কেন? ভালবাসার পরিবর্তে ভয় দেখিয়ে ধর্ম পালন করালে কি ধর্মের প্রতি ভালবাসা জন্মাবে? না শুধুই ঘৃনা?

অনেকে যখন বলে এই সমগ্র বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ, তখন মনে প্রশ্ন জাগে, ‘আল্লাহ কেন এসব সৃষ্টি করেছেন?’ তার কি আর কোন কাজ নেই? তিনি যদি সত্যিই সকল ক্ষমতার অধিকারী হন, তবে কেন তিনি নশ্বর পৃথিবীর মানুষের প্রার্থনা এবং সেজদার জন্য এত লালায়িত? ‘মানুষ’ যদি সত্তিই তার সৃষ্ট সেরা জীব হয়, তবে তিনি তাদের পাপে কেন নিষ্ঠুর শাস্তি দিবেন? এতে কি তার মহত্য প্রকাশ পায়? আর আল্লাহ’র নির্দেশেই যদি সকল কিছু পরিচালিত এবং ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে থাকে, তবে পাপ/পূন্যের বিচারের প্রহসনে মানুষ কেন কষ্ট পাবে?

তাওরাত, যাবুর এবং ইঞ্জিল যদি মানবজাতির কল্যানে আল্লাহ’র প্রেরীত দিক নির্দেশনার বই হয়, তবে তার’ই প্রেরীত দিক নির্দেশনার শেষ সংস্করন কোরানে ঐ তিন গ্রন্থের কিছু কাহীনি ছাড়া কোন শক্তিশালী সূত্র উল্লেখ করা নাই কেন? মুহম্মদের সময় থেকে মুসলমানেরা দাবী করে যে, অনুসারীরা ঐ তিন গ্রন্থ বিকৃত করে নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী তৈরী করে নিয়েছে। এই কথা মেনে নিলে প্রমানিত হয় আল্লাহ পুর্বের তিন ধর্মগ্রন্থ আল্লহ নিজে রক্ষা করতে পারেন নি। পরবর্তী সংস্করন আসার পূর্বেই যদি বর্তমান সংস্করন পরাক্রমশালী আল্লহর শক্তি উপেক্ষা করে নশ্বর মানুষ বিকৃত করতে পারে, তবে কিভাবে শেষ সংস্করন কোরান আল্লাহ নিজে রক্ষা করেন?

কোরানে আল্লাহ নামক সৃষ্টিকর্তার গুনাগুন, প্রশংসা, ভয়-ভীতি, হুমকী, বেহেশতের আদিরসাত্মক ভোগ-সুখের বর্ননা, দোযখের পৈশাচিক নৃশংসতা, নিষ্ঠুরতা, আরব অঞ্চল এবং তার আশেপাশের লোককাহিনী, রূপকথার কল্পকাহিনী, প্রার্থনার নিয়ম, মূর্তিপূজারী আব্দুল্লাহ’র ছেলে মোহাম্মদ আল্লাহ’র সকল প্রেরীত পুরুষদের মধ্যে এবং মানব জাতির সকলের মধ্যে কতটা শ্রেষ্ঠ তা নিয়ে নিজের ঢোল নিজে পেটানো ছাড়া আর কিই বা আছে? কোরানের নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করলে কি মানবজাতি আজ এই পর্যন্ত আসতে পারতো? না সেই ১৪০০ বছর পূর্বের মধ্যযূগীয় জীবনযাপন করতো? ভবিষ্যতের (বর্তমানের) আধুনিক পৃথিবীর প্রতি নির্দেশনা করে কোরানে কি কোন পথ দেখানো হয়েছিল? আধুনিক পৃথিবী কি এই পর্যায়ে এসেছে কোরানে নির্দেশিত পথ অনুসারন করে? কী প্রমানিত হয়? কোরানে কিভাবে সমগ্র মানবজাতীর কল্যানে পথ নির্দেশিত হলো?

আল্লাহ যদি সকল ক্ষমতার অধিকারী হন, তবে তার সৃষ্ট সেরা জীব মানুষকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেন না কেন? মানুষ যে কোন খারাপ কাজ শয়তানের প্ররোচনায় করে বলে বলা হয়। এবং শয়তানকে এই ক্ষমতা আল্লাহই দিয়েছেন। তবে আল্লাহ’র প্রাপ্ত ক্ষমতায় শক্তিশালী শয়তানের কাজে মানুষ পাপী হয় কেন? দোষ তো আল্লাহ’র নিজেরই। মানুষ তার স্রেষ্ট সৃষ্টি হলে তিনি তা করেন কেন? এতে কি তার পৈশাচিকতার প্রমান পাওয়া যায় না?

ইসলাম ধর্মে উপাস্য হিসেবে পাথর, মূর্ত্তি বা কোন প্রতিকৃতির দিকে নত হওয়া বা প্রার্থনা করা নিষেধ হলে, আরবদেশের প্রাচীন পূজার মন্দির কাবার দিকে মুখ করে নামাজ পড়া হয় কেন? কেন নামাজের দিক যেরুযালেমের আল্-আকসা মসজিদ থেকে মক্কার পূজার মন্দিরের দিকে ঘুরে গেল? এছাড়া হজ্জ্বের সময় বিশেষ পাথরে চুমু খাওয়া এবং শয়তান মনে করে বিশেষ দুই পাথরের খাম্বাকে পাথর মারা ইসলাম ধর্মের অংশ। নিরাকার আল্লাহর প্রার্থনার জন্য যদি কোন কিছুর প্রতিকৃতিকে ব্যাবহার করা হয় এবং দিক পরিবর্তনও যদি সম্ভব হয়, তবে পাথর বা মূর্তিপূজারীদের সাথে পার্থক্য কী হলো?


চলবে…
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ৮:১৭
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×