আভাস
প্রায় আবছা, যা দেখা যাচ্ছে সেটুকু প্রতিকৃতি নয়; অনুভব। শরতের কাঁচা রোদে জ্বলন্ত ঘাসের উদ্বেগ; ভয়াল সমুদ্রের স্রোত যায় ভেতরে বাইরে, শঙ্খমালার হাড়ে-দড়ি-বাঁধা ঘুড়ি উড়তে দ্যাখে বিগত বাতাস। যুদ্ধমান এক সৈনিকের জন্মান্ধ ঘোড়া ছোটে ক্রমগতি তমসার ছদ্মবেশ ছিড়ে, তাঁর ক্ষয়িষ্ণু গান্ডীব আরো প্রশারিত হয়ে রাত্রির মতো গ্রাস করে। এই জটাজালের ভেতর লতিয়ে ওঠে ঘাস, সূর্যাস্ত ফেলে যায় সবুজ স্নেহ। অলিতে গলিতে অল্পেই নেমে যায় কুয়াশা ও কামড়ের দাগযুক্ত জ্বলজ্বলে মাতম। পেশিমন্ত হাওয়ার সামনে খুলে দেই বুক, লোমশ আঁধারে জমে শীতের প্রকোপ। তবু নামি এই তীব্র তীক্ষ্ন ফলার ভেতর, সীসার গলনে গেথে যাই বুকতক, এবং তুমিও স্ফুলিঙ্গের ভেতর দিয়ে পাথুরে পাহাড় ভেঙে খুলে দাও গোপন দুয়ার। তারান্তিম সোনালী আভাসে আগুনের হাল বেয়ে ভেসে যাই। যে শীতটুকু পড়ে থাকে আর তোমার দু:খের নগ্ন আশপাশ। তার নাম দাও জলঘড়ি, রাতের বাতাস। তাকিয়ে থাকো জলের ভেতর আর দ্যাখো এই বাঙলার মাইল মাইল হৃদয় নদীমাতৃক।