ইসলাম ও নারী
ইসলামে নারী অধিকার সম্বন্ধে এই লেখা ।
ইসলামে নারীদের জীবনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।যেমনঃ১.বিয়ে পূর্ব জীবন।এসময় ভরণপোষণ এর দ্বায়িত্ব পিতা-মাতার।২.বিয়ে পরবর্তী জীবন।এসময় ভরণপোষণ এর দ্বায়িত্ব স্বামীর(তবে সে নিজেও এই দ্বায়িত্ব নিতে পারে)।৩.বার্ধক্যকাল।এই সময় ভরণপোষণ এর দ্বায়িত্ব সন্তান-সন্ততিদের।
এখন কুরআন-হাদিসের আলোকে ইসলামে নারীদের অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করি।
# এমন এক সময় ছিল যে সময় কন্যা শিশু জন্ম নেয়া ঘৃণার চোখে দেখা হত।এবং তাদেরকে জীবন্ত প্রোথিত্ করা হত।আর সে সময় ইসলাম কন্যা শিশু পালনকে উতসাহিত করেন।যেমনঃ রাসুল (সাঃ) বলেন,
তোমাদের মধ্যে যে ২টি মেয়েকে সঠিকভাবে লালন-পালন করবে, স্নেহ-মমতা দিয়ে বড় করে তুলবে সে জান্নাতে যাবে।
আরেক হাদিসে বলেন,
একটা নবীজির (সাঃ) সামনে এক লোক তার ছেলেকে চুমু দিয়ে কোলে বসালো কিন্তু মেয়ের সাথে এমনটি করল না। এই দৃশ্য দেখে নবীজি (সাঃ)ঐ লোকটিকে তিরস্কার করলেন। এবং বললেন তুমি অবিচার করছ। তোমার মেয়েকেও চুমু দিয়ে অন্য কোলে বসাও।
সর্বপ্রথম ইসলামই নারীদেরকে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেছে। ইসলামে মেয়েভ্রূণ হত্যা করা হারাম। একথা আছে সুরা তাকভিরে ৭ ও ৮ নং আয়াতে “যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কি অপরাধে তাকে হত্য করা হল?”। এছাড়াও আল্লাহ্ আরো বলেনঃ “দারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না।তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মারাত্নক অপরাধ। (সুরা ইসরাঃ ৩১)।
পবিত্র কুরআনে আরো আছে,“যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়,তখন তাদের মুখ কালো হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছথেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নীচে পুতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট। (সুরা আননাহলঃ ৫৮-৫৯)
হাদিসেও কন্যাদের জীবন্ত প্রোথিতকরণকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।যেমনঃরাসুল (সাঃ) বলেন,
আল্লাহ তায়ালা তোমাদের মাতাগণের অবাধ্যতা,কন্যাদের জীবন্ত প্রোথিতকরণ,কৃপণতা ও ভিক্ষাবৃত্তি হারাম করেছেন।আর তিনি তোমাদের জন্য বৃথা তর্ক-বিতর্ক,অধিক জিজ্ঞাসাবাদ ও সম্পদ বিনষ্ট করাকে অপছন্দনীয় করেছেন।
অতএব বলতে পারি,ইসলামই সর্বপ্রথম নারীদের বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করেছেন।১।তাই নয় কি ?
#প্রত্যেক মুসলিমের উপর জ্ঞানার্জন ফরজ।মুসলিমের মধ্যে নর-নারী উভয়ই অন্তর্ভুক্ত।যেমনঃহাদিসে আছে,
রাসূল (সাঃ)বলেছেন,প্রত্যেক নর-নারীর উপর জ্ঞান অন্বেষণ ফরজ।
#ইসলাম নারীর নিরাপত্তার জন্য পর্দাপ্রথার বিধান করেছে।এতে করে নারীকে ঘরের বাইরে নিরাপত্তার বিধান করেছে ইসলাম।আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন,
“হে নবী!আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন,তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকেচেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সুরা আল আহজাবঃ ৫৯)
আমাদের রব আরো বলেছেনঃ দেশে-বিদেশে কাফেরদের অবাধচাল-চলন যেন তোমাদিগকে মোহে না ফেলে দেয়। এটা হলো সামান্য দিনেরপ্রাপ্তি। এরপর তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। আর সেটি হলো অতি নিকৃষ্ট স্থান। (সুরা আলেইমরানঃ ১৯৬-১৯৭)
অতএব বলতে পারি পর্দাপ্রথা এমন একটি বিধান,যার দ্বারা নারী ইহকালে থাকবে সুরক্ষিত এবং পরকালে পাবে উত্তম প্রতিদান তথা জান্নাত।
#ইসলাম বিয়েতে মেয়ের অনুমতিকে প্রাধান্য দিয়েছে।মেয়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে বাতিল তুল্য।কেননা,
এপ্রসঙ্গে একটি হাদিস রয়েছে- একদা এক মহিলা সাহাবি রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে অভিযোগ করলেন আমার বাবা যার সাথে আমার বিয়ে দিয়েছেন তাকে আমার পছন্দ নয়। তখন রাসুল (সাঃ) সঙ্গে সঙ্গে সেই বিয়ে বাতিল করে দিলেন। (সহিহ বুখারি ৭ম খণ্ড, নিকাহ অধ্যায়)
অতএব ইসলাম বিয়েতে নারী মতামতকে অগ্রাহ্য করে নি।বরং যথেষ্ঠ প্রাধান্য দিয়েছে।২।তাই নয় কি ?
#বিয়েতে মোহরানার বিধান নারীদের মর্যাদা দানের সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ।৩।তাই নয় কি ?
#বিয়ের পর স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অধিকার কতই না সুন্দরভাবে রাসূল (সাঃ) বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে তুলে ধরেছেন,
“হে মানুষ! তোমাদের স্ত্রীদের ওপর তোমাদের কিছু অধিকার রয়েছে আবার স্ত্রীদেরও তোমাদের ওপর কতক অধিকার আছে। তোমাদের দায়িত্ব হলো তাদের বৈবাহিক অধিকারকে সম্মান প্রদর্শন করা, এবং তাদের প্রতি অসদাচরণ করা থেকে বিরত থাকা, যদি তারা কোন অসদাচরণ করে তবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য জায়েয করেছেন তাদের কাছ থেকে বিছানা পৃথক করে ফেলা এবং মৃদু শাস্তি প্রদান করা, এবং এতে যদি তারা বিরত হয় তবে তাদেরকে সঠিকভাবে খোরপোষ দেবে।”
এবং
“দেখো! স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে কোন স্ত্রীরই উচিত নয় স্বামীর সম্পদ থেকে কাউকে কিছু প্রদান করা। স্ত্রীদের সাথে সদয় ব্যবহার করো যেহেতু তারা তোমাদের সাহায্যকারীনি এবং নিজেরা নিজেদের বিষয়সমূহ সামলাতে অপারগ। স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো, যেহেতু তোমরা তাদেরকে বস্তুত আল্লাহ্ প্রদত্ত নিরাপত্তায় গ্রহণ করেছো এবং তাদেরকে আল্লাহর কালাম উচ্চারণের দ্বারা বৈধ করে নিয়েছো।”
অতএব নারীরা তোমরা আর ইসলাম থেকে দূরে থেকো না ।ইসলামে রয়েছে তোমাদের জন্য অজস্র নিয়ামত।৪।তাই নয় কি ?
#এবার দেখি ইসলাম পিতা-মাতার অধিকার সম্পর্কে কি বলে ?
হাদিসে আছে ,এক ব্যক্তি আরজ করল হে আল্লাহর রাসূল !আমার সাহচার্যে আমার সদাচার পাওয়ার অগ্রাধিকারী কে?তিনি বললেন(রাসূল সাঃ),তোমার মা।লোকটি বলল অতঃপর কে ?রাসূল (সাঃ) বললেন,
তোমার মা।সে বলল,তারপর কে?তোমার মা।সে বলল,তারপর কে?তিনি বললেন,তোমার পিতা।অপর এক বর্ণনায় আছে,তিনি বললেন,তোমার মা।অতঃপর তোমার মা,।অতঃপর তোমার মা,তারপর তোমার পিতা।তারপর তোমার নিকট আত্নীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব।(বুখারী ও মুসলিম)
আল্লাহ তায়ালা সূরা লুকমানে বলেন,
আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতা সম্পর্কে আদেশ করেছি।তার মাতা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে গর্ভধারণ করেছেন।আর দু’বছর পর্যন্ত তাকে স্তন্য দান করেছেন।সুতরাং তোমরা আমার ও তোমাদের পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।আর আমার দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
আবার হাদিসে আছে ,মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত।উপরিউক্ত হাদিস ও কুরআনের আয়াত দ্বারা এটা স্পষ্ট যে,সম্মান ও মর্যাদাপ্রাপ্তির দিক দিয়ে আল্লাহ-রাসূলের পরেই পিতা-মাতার স্থান।তবে পিতার চেয়ে মাতার কষ্ট বেশী হেতু আল্লাহ মাতাকে বেশী মর্যাদা দিয়েছেন।
#উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির জের ধরে অনেকে বলেন,ইসলাম ধর্মে দু’নারী সমান এক পুরুষ।
আসুন এই বিষয়ে একটু কথা বলি,
মনে করুন, ২ভাই বোন একসাথে বাবার সম্পত্তির ভাগ পেল। এতে করে ভাই পেল ১লক্ষ টাকা আর বোন পেল ৫০ হাজারটাকা। এই ভাইবোন ২জনই টাকাটি ব্যাংক এ রাখল। কিছুদিন পর ২জন বিয়ে করল। এর পর বোনমোহোর হিসাবে তার স্বামী থেকে পেল আরো ৫০হাজার টাকা, আরভাই বিয়ের পর তার স্ত্রীকে মোহোর হিসাবে দিল ৫০হাজার টাকা। এখন দেখুন বোনের ব্যাংক এ ১লক্ষটাকা আর ভাইয়ের ব্যাংক এ ৫০ হাজার টাকা। এখনভাইয়ের ঐ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যাবসা করে যা অন্য যে কিছু করেই হোক সংসার চালাতেহবে। কারন সংসার চালানোর ব্যয়ভার ইসলাম পুরুষকে দিয়েছে। তাই ঐ টাকা ব্যাবসায়বিনিয়োগ করার কারনে তার কাছে এর কোন টাকাই অবশিষ্ট রইল না। কিন্তু বোনের আ্যকাউন্টেপিতা থেকে প্রাপ্ত ৫০ হাজার এবং স্বামী থেকে মোহর হিসেবে প্রাপ্ত ৫০ হাজার মোট মিলিয়ে১ লক্ষ টাকা রয়েই গেল। উপরন্তু তার এই টাকা সংসারে ব্যয় করার কোন প্রয়োজনই নেই। কেননাসে এই দায়িত্ব থেকে স্বাধীন। এখন বলুন লাভ কার? তারপর কিবলবেন ইসলাম নারীকে স্বাধীনতা দেয় নি???
#নারী এখন তুমি কোনটা গ্রহণ করবে সেটা একান্ত তোমার-ই সিদ্ধান্ত।আশা করি তুমি সুপথপ্রাপ্ত হবে।
আইনের ফাঁকফোকর-০৩
যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি
(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।
ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন
সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।
সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা
সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন