somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এখানে গরুর চাপ বিক্রয় করা হয়, হাতির নয় B-) B-)

১৮ ই জুন, ২০১২ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উদাসমুখে আকাশ পানে চাহিয়া ছিলাম। বন্ধু জগলুল আসিয়া কহিলো “চল দোস্ত কিছু টাকা মারিয়াছি গরুর চাপ খাইয়া আসি”। পরীক্ষার চাপ,সংসারের চাপ, নিম্মচাপ, উর্ধ চাপ, প্রাকৃতিক চাপসহ নানাবিধ চাপের নাম শুনিয়াছি কিন্তু গরুর চাপের নাম কখনও শুনিনি। চাপ মানেইতো প্রেসার। কল্পনা করিতে চেষ্টা করিলাম গরুর চাপের ধরন। কল্পনায় যাহা পাইলাম তাহা মোটেও সুখকর নহে। কি এমন অপরাধ করিয়াছি যে আমাকে গরুর চাপ খাইতে হইবে? আমিতো নেতা-নেত্রী নই। ছোট বেলায় একবার বাবার পকেট থেকে ২০ টাকা মারিয়াছিলাম।সেবার শাস্তি স্বরুপ চাপ খাইয়াছিলাম। বাবা দু আঙ্গুলের মাঝখানে কলম দিয়া চাপ দিয়াছিলেন। কিন্তু সে অপরাধের জন্য এত বছর পর আসিয়া গরুর চাপ খাইতে হবে? কি নাজায়েজি কাজকর্ম। তাহা ছাড়া গরুর চাপ খাওয়া সম্পূর্ণ শরীয়ত বিরোধী।আমি জগলুলকে বলিলাম “আমি কারিনার চাপ, ক্যাটরিনার চাপ,এমনকি সানির চাপ খাইতে রাজি আছি কিন্তু গরুর চাপ? তওবা তওবা ! ইহা আমার পক্ষে সম্ভব নহে।তাহা ছাড়া ইহাদের চাপ স্বপ্নে মাঝে মধ্যেই ভক্ষন করি। বন্ধু অবাক হইয়া বলিলো “আরে দোকানেতো এসবের চাপ বিক্রি করে না”

কি কথা কি কথা। এ প্রকার চাপের জন্য আবার দোকানও রহিয়াছে। দেশ জাতি সমাজ কোথায় যাইতেছে। বুঝিলাম জাতি আজ মূল্যবোধের ক্রান্তিলগ্নে। যে জাতি গরুর মত পশুর চাপ দিবার জন্য দোকান দিয়াছে। সে জাতি কোথায় যাইতেছে বুঝিতে অসুবিধা হয় না।বন্ধুকে বলিলাম “:সর‌্যি দোস্ত আমার পক্ষে গরুর চাপ খাওয়া সম্ভব নহে। এত বড় চাপ নিবার ক্ষমতা আমার নাই। তুই বরং মদনের সহিত যোগাযোগ কর সে বিরাট দেহ সে সবধরনে চাপ নিতে পারিবে।
বন্ধু নাখোশ হইয়া বলিলো নাহ আমি তোকেই চাপ খাওয়াইবো।গরুর চাপ না খাস ছাগলের চাপ খাবি। এবার আমি অবাক হইয়া চোখ কপালে তুলিলাম “কসকি মমিন ছাগলেও চাপ দেয়? ছাগল একটা ছাগল প্রাণী। বিশেষ অঙ্গের উপস্থিতির উপর নির্ভর করিয়া তাহারা কখনও খাসী, কখনও বা পাঁঠা। আমি খাইবো ছাগলের চাপ?। তাহার পরও ভাবিতে লাগিলাম ছাগলের চাপ কি রকম হয়।চোখ বন্ধ করিতে দেখিলাম একখানা কালো ছাগল দড়ি ছিড়িয়া ম্যাঁ ম্যাঁ করিতে করিতে আমার শরীরের বিশেষ দিকে তাকাইয়া জিহব্বা বাহির করিয়া আমার দিকে ছুটিয়া আসিতেছে। আমি আর ভাবিতে পারিলাম না। চোখ খুলিয়া দেখিলাম জগলুল আমার দিকে তাকাইয়া আছে ছাগলটির মত। এই বুঝি চাপ দিবে।নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে সরাইয়া নিয়া বলিলাম “নাহ আমি ছাগলের চাপ খাইয়া ছাগলের হাতে নিজ ইজ্জত বিসর্জন দিতে পারিবো না। সমাজে আমার কিঞ্চিত মান ইজ্জত রহিয়াছে। ছাগলের হাতে তাহা তুলিয়া দিতে পারিবো না?
জগলুর নাছোড়বান্দা। সে কহিলো “তাহা হইলে চল মুরগীর চাপ খাই” । যাক চাপের সাইজ না মানে পশুর সাইজ ধীরে ধীরে ছোট হইতেছে। ইহা সুখকর। ছোট না হইয়া যদি বড় হইয়া হাতি ঘোড়াতে ঠেকিত তবে মরণ।হাতির কথায় মাথায় আসিবার সঙ্গে সঙ্গে হাতির সামনের বিরাট পা খানা চোখের সামনে ভাসিয়া উঠিলো। পাঠকরা বিশ্বাস করেন কেবল হাতির পা খানাই চোখের উপর ভাসিয়াছে অন্যকিছু না। “মুরগী ছোটখাট মানুষ সর‌্যি ছোটখাট প্রাণী সে আবার কি চাপ দিবে” ব্যাপক সাহস সঞ্চয় করিয়া বন্ধুকে কহিলাম চল জগলুল। মুস্তাকিম নামের বিখ্যাত চাপের দোকানে উদ্দেশ্যে রিকশাযোগে রওনা হইলাম। রিকশায় বন্ধু আমাকে একখানা গান শুনাইলো। গায়ক গাহিতেছে “মুস্তাকিমের চাপ আবার জিগায়”। বুঝিলাম না মুস্তাকিমের চাপ ইহা আবার কি? ইহা কি হাতির মত বড়? গায়ক কি চাপ খাইয়া গান গাহিয়াছেন? কিঞ্চিত ভয় পাইয়াছি।ভয়কে জয় করিয়া চাপ বিক্রয় কেন্দ্রে নামিলাম। ম্যানু লিষ্ট দেখিয়া চোখ এবার মাথার উপরে দিয়া গেল। ইহা আমি কি দেখিলাম গরুর চাপ ৪৫ টাকা,মুরগীর চাপ ৭৫ এবং খাসীর চাপ ৪৫ টাকা। যে দেশে দোকানে দোকানে টাকায় চাপ বিক্রি করে সে দেশের মানুষ ইজ্জত থাকিবে কোথা?
যাহা হোক বন্ধুর পিড়াপীড়িতে গরুর চাপরই অর্ডার দেয়া হইলো।তারপর রুদ্ধশ্বাসে কিছুক্ষন কাটিয়া গেল।বয় ব্যাটা বাটিতে করিয়া গরুর চাপ আনিলো। ইয়াহু এই চাপ ওই চাপ নয়।আমি বাঁচিয়া গেছি, জীবন বাচিয়া গেছে,ইজ্জত বাচিয়া গেছে। গরুর কাছে ইজ্জত দান করিবার মত লজ্জার আর নাই।কবজি ডুবাইয়া গরুর চাপ খাইলাম। একটা শেষ করিয়া আরেকটার অর্ডার দিলাম। লুচি খাইলাম ইচ্ছামত। তাহার পর আরামে একখানা বিড়ি টানিয়া বাড়ীতে চলিয়া আসিলাম।
কাহিনী শুরু হইলো ঘন্টাখানেক পর। তীব্র নিম্নচাপ অনুভব করিলাম।টয়লেট সম্মুখে দৌড় দিয়া সে যাত্রায় রক্ষা পেলুম।

শেষ আপডেট : গরুর চাপ খাইয়া এখন আমি প্রকৃতির ডাকে টয়লেটে চাপ শিল্পের প্রসার করিতেছি। আমি সবার দোয়াপ্রার্থী।
৩০টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারীবাদ, ইসলাম এবং আইয়ামে জাহেলিয়া: ঐতিহাসিক ও আধুনিক প্রেক্ষাপট

লিখেছেন মি. বিকেল, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৪



আইয়ামে জাহিলিয়াত (আরবি: ‏جَاهِلِيَّة‎) একটি ইসলামিক ধারণা যা ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর আবির্ভাবের পূর্ববর্তী আরবের যুগকে বোঝায়। ঐতিহাসিকদের মতে, এই সময়কাল ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম শতাব্দী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×