ফারুকের মতো সাধারন পরিবারের অসাধারন মেধাবীরা কেন রাজনীতীতে জড়ায়? বিনিময়ে লাশ হয়ে ঘরে ফিরে, মুহুর্তেই বাবা-মায়ের ছন্ন ছাড়া পরিবারের শেষ আশাটুকু দপ করে নিভে যায়।
গত কয়েকদিনের ঘটনা প্রবাহে এই ব্যাপারটি আমাকে প্রায় আচ্ছন্ন করে রেখেছে, নিজের মধ্যে শান্তি খুজে পাচ্ছিনা। সাময়িক প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমরা অনেকেই শিবির, ছাত্রলীগ ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন পোষ্ট দিচ্ছি, সরকারের ব্যর্থতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবী করছি, স্বরাষ্টমন্ত্রী চিরুনী অভিযানের নির্দেশ দিচ্ছেন, গ্রেফতার চলছে, হয়তো বিচার ও হবে ( এ ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ আছে ) । এসব তোড় জোড় কত দিন? মিডিয়ার পাতা থেকে ফারুক সরে যাবে , সরে যাবে আমাদের মন থেকেও । হয়তো নতুন কোন খবরে আবারো মিডিয়া, ব্লগ সরগরম হয়ে উঠবে।
কিন্তু ফারুকের মা-বাবা, ভাই বোনরা কি ফারুককে ভুলতে পারবে? ফারুককে ঘিরে তাদের এই স্বপ্নের করুন সমাপ্তি কি তাদের মৃত্যু পর্যন্ত তাড়িয়ে বেড়াবেনা?
বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ ভাগ বা তার ও বেশী ছাত্র/ছাত্রীর পারিবারিক অবস্থা কিন্তু ফারুকদের মতোই। নুন আনতে পানতে পুরায়। কিন্তু ফারুকরা তাদের পরিশ্রম আর মেধাকে কাজে লাগিয়ে ভার্সিটিতে চান্স পায়, বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখে। যে ছেলেটির পরিবারের কেউ রাজনীতী নামের বস্তুটিকে কোন দিন ছুয়েও দেখেনি, সেই হয়ে যায় কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী বা ক্যাডার। কিসের নেশায়? কেন?
আজ টিভিতে দেখলাম অনেক শিবিরের কর্মীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যাচ্ছে, কয়েকজন আবার মুখ ঢেকে নিজেকে আড়াল করতে চাচ্ছে । কেন? ওরাও মেধার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই ঢাবি'তে ভর্তি হয়েছিলো, খোজ নিলে দেখা যাবে ওদের পারিবারিক অবস্থাও ফারুকের মতো বা কাছাকাছি। কিন্তু আজ ওদের পরিচয় শিবির ক্যাডার, কখনো বা লীগ বা দলের ক্যাডার।
অনেকেই বলেন ছাত্ররাই দেশের ভবিষ্যত নেতৃত্ব, সুতরাং ছাত্রজীবনে রাজনীতী চর্চা জরুরী। কিন্তু এ কিসের রাজনীতী? হয় প্রতিপক্ষের হাতে মর ( যেমন ফারুক ) অথবা সহপাঠিকে ( যেমন আবুবকর) মার। কেন? কিসের আশায় ছাত্র রাজনীতীতে জড়ানো? কখনো জামাত বা কখনো লীগ বা দলের রাজনৈতিক লোভের শিকার হওয়া বা শিকার করা।
জানিনা সমাধান কি? তবে আবু বকর, ফারুক, মহিউদ্দিনের পরিনতি আমাদেরকে কিসের ইংগিত দিচ্ছে? আমাদের গন্তব্য কোথায়?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১০ রাত ১১:৪০