somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেহদী ও অভ্র’র দল কি একুশে পদক পেতে পারে না?

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেহদী ও অভ্র’র দলকে একুশে পদক দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন কাজী মামুন। এ নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা হতে পারে বলে আমরা মনে করি। সেজন্য নতুনদেশ ডটকমে প্রকাশিত তার প্রস্তাবনাটি সবার সঙ্গে শেয়ার করছি। সবার মতামত জানাই লক্ষ্য
মেহদী ও অভ্র’র দল কি একুশে পদক পেতে পারে না?

কাজী মামুন

তিন তোলা সোনার একটি মেডেল আর মাত্র এক লক্ষ নগদ টাকার ‘একুশে পদক’ অর্থমূল্যের বিচারে খুবই সামান্য। কিন্তু বাংলাদেশিদের জন্য এটা সর্বোচ্চ সম্মানজনক একটি পুরষ্কার। ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা, গবেষণা, ইত্যাদি নানা বিষয়ে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৬ সাল থেকে এই পুরষ্কার দেয়া হচ্ছে ভাষা শহীদদের স্বরণে। এই পুরষ্কার রাষ্ট্রের জন্য যে কোনো গুরত্বপূর্ণ অবদানের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।

তিন লক্ষ আইসল্যান্ডবাসীর আইসল্যান্ডিক ভাষার জন্য গুগুলের ভাষান্তর ব্যবস্থা আছে অথচ তাঁর চেয়ে ১০০ গুণ বেশি প্রবাসী বাঙালী আছে দুই বাংলার বাইরেই, হাজার গুন বেশি আছে দুই বাংলায়, কিন্তু আমাদের নেই ভাষান্তর ব্যবস্থা। এই লজ্জার পাশাপাশি ভাষা নিয়ে আমাদের আছে গৌরব করার মতো কিছু ব্যাপারও! পৃথিবীর বুকে আমরাই এক মাত্র জাতি যারা মায়ের মুখের ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছি, মিলেছে স্বীকৃতিও, আমাদের মহান একুশে ফ্রেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবষ। দেশে বিদেশে লক্ষ কোটি মানুষ এখন মাথা নুয়ে, ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় আমাদের।

তিন বছর ধরে আবারও বাংলা লিখছি। স্কুলের গণ্ডি পার হয়ে ইংরেজী মাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখার পর থেকে বাংলা হয়ে পড়েছিল অপ্রয়োজনীয়। দীর্ঘ অনেক বছর ধরে টুকটাক বাংলা লেখা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল গল্প আর কবিতা লেখার জন্য। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট এক সময় খাতা কলমের সামান্য জায়গাটাও দখল করে নিয়েছিল। অভ্যাস ধরে রাখতে মাঝে মাঝে কম্পিউটারে ইংরেজী বর্ণমালায় লিখতাম বাংলা, বাংলা টাইপিং শেখার সময় কিম্বা প্রয়োজনীয়তা একেবারেই ছিল না! প্রায় ভুলেই যেতে বসেছিলাম কিছু কিছু বাংলা বর্ণমালা! এখনো অনেক বানান ভুল হয়ে যায়! দায়টা আমাদের প্রজন্মের নয়, দায়টা সময়ের আর আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া যুগোপযোগী হওয়ার তাড়নার। এমন সময় ডাক্তারী পড়তে যাওয়া বাচ্চা একটা ছেলে তাঁর কিছু বন্ধু বান্ধব মিলে কোটি বাঙালীর জন্য নিয়ে এলো ‘অভ্র’- কম্পিউটারে ইউনিকোড ভিত্তিক বাংলা লেখার জন্য সহজতম একটি সফটওয়ার। ছেলেটির নাম মেহদী, মেহদী হাসান খান।

এই আনন্দে নতুন করে অনেকে বাংলা লিখতে শুরু করলো, ব্লগে, ফেসবুকে, ফোরামে এখন নতুন করে বাংলার জয়জয়কার। লক্ষ কোটি বাঙালী এখন আবার বাংলা লিখছে অভ্র’র কল্যাণে। বাংলা বর্ণমালায় ভরে উঠছে ইন্টারনেটের জগত। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, অন্যান্যরা যখন ভাষাকে পুঁজি করে ব্যবসার ফাঁদ পেতে বসে আছেন তখন মেহদী হাসান খান সফটওয়ারটি দিচ্ছেন সম্পূর্ণ বিনামুল্যে! অভ্র সহজ করে বাংলা লেখার মাধ্যম হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমরা লিখছি আমাদের মায়ের ভাষায়। মেহদী’র সাথে রিফাত-উন-নবী, তানবিন ইসলাম সিয়াম, রাইয়ান কামাল, শাবাব মুস্তফা এবং নিপুন হক এর মতো এক ঝাঁক তরুণ এখন যোগ দিয়েছে অভ্র'র দলে। অভ্র’র কর্মীরা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে বাংলা ভাষা লেখার প্রকৃয়াকে আমাদের জন্য আরো সহজ ও সাবলীল করে তুলতে।

মেহদী’র এই অবদান শুধু যে ভাষার জন্য অবদান তা নয়! মেহদী এখন আগামীর তরুণদের জন্য অনুসরনীয় এক চরিত্র। শুধুমাত্র ইচ্ছা আর একাগ্রতা থাকলেই মানুষ যে, যেকোনো কাজ করে ফেলতে পারে মেহদী তা প্রমাণ করেছে। ডাক্তারী পড়াশোনা করেও গড়ে তুলেছে অভ্র’র অমিক্রন ল্যাব। মেহদী ও অভ্র’র দল কি বাংলা ভাষার জন্য অতীব গুরত্বপূর্ণ এই অবদানের জন্য একুশে পদক পেতে পারে না?
http://www.notundesh.com/motmotantor.html
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×