somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার লুলীয় জ়ীবন সমগ্র ;)(পর্ব ১- রাভিনা, সুবর্না আর জনৈক মর্জিনা):P:P:P

১০ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১০:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাঠকদের জ্ঞ্যাতার্থে আগেই জানিয়ে দিচ্ছি আমার গল্পের সমস্ত চরিত্র বাস্তব, শুধু আমি কাল্পনিক :P
আমি তখন অনেক ছোট।কেবল ক্লাস ফোরে পড়ি।তখন আমাদের বাসায় প্রথম ডিস এন্টেনা আসলো।আমার বাবা মা দুই জনেই চাকুরিজীবি।আমি খানিকটা ভুদাই হলেও বাবা মা কে ফাকি দিয়ে কিভাবে কোন চ্যানেল দেখতে হয় তা আমি বুঝে গেসি।তাই বাবা মা সামনে থাকলে ডিসকভারী চ্যানেল দেখি আর বাবা মা চোখের আড়াল হলেই আমি হিন্দি চ্যানেল গুলো দেখা শুরু করে দেই।তখন প্রেম ভালবাসা কি এইসব জিনিশ ভালমতন বুঝতাম না।এটুকু বুঝতাম যে, এই গুলো খারাপ ছেলে মেয়েদের কাজ।আমি আবার ভোদাই হলেও পড়াশোনায় ভাল ছিলাম।ক্লাস রোল নম্বর এক থেকে খুব একটা পরিবর্তন হত না।এর মধ্যে আমার ডিস শিক্ষা চলতে লাগলো B-)
আপনারা সবাই হয়ত জানেন যেসব ছেলে মেয়েরা একা একা সারাদিন বাসায় থাকে তাদের নিজেদের একটা কল্পনার জগত থাকে।আমারও এরকম একটা জগত ছিল।সেই জগতে আমি রাজা আর আমার প্রজারা হল টম জেরী
এগুলো।বেশি বেশি ডিস দেখার কারনে আমার প্রজা বৃন্দ ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে শুরু করল।সেখানে শিল্পা শেঠী,টাবুদের আনাগোনা বেড়ে গেলো।আমি তো মহা খুশি :P
ধীরে ধীরে বাবা মার অজান্তেই আমার বালক মনে বিশাল পরিবর্তন চলে আসলো।আমার মাঝে প্রেম করার সুপ্ত বাসনার সৃষ্টি হল।কিন্তু প্রেম করবে কে আমার সাথে?মেয়ে তো লাগবে।আমি বাস্তবের মেয়েদের দিকে ফিরেও তাকালাম না।হাতের কাছে কাছে এত এত সুপার হট হিন্দি নায়িকা থাকতে আমার কি ঠেকা পরসে যে বাঙালি কন্যার দিকে ফিরে তাকাবো।এরি মধ্যে মুক্তি পেল সেই বহু বিখ্যাত সিনেমা মোহরা।রাভিনার "তু চীজ বাড়ি হ্যায় মস্ত মস্ত" দেখে আমি পুরাই ফিদা।রাভিনাকেই আমার মনে ধরল।আমি তার প্রেমে পড়লাম।রাতের বেলায় তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি।স্বপ্নে আবার সে আমার জন্য ফিদা।আমি পাত্তা দেই না।সে আমার পেছনে পেছনে ঘুরে;)
এদিকে নিয়মিত হিন্দি মুভি দেখার বদলে আমার মধ্যে কিঞ্ছিত লুলামিও দেখা দিসে।আমি আমার কল্পনার জগতে আরেক জন কে আমদানি করলাম।যাকে আমদানি করলাম তিনি হলেন সুবর্না মোস্তফা।তখন বিটিভি তে তার কয়েকটি নাটক দেখে আমি তার উপর আস্থা রাখলাম।আমার দিনকাল ভালই কেটে যাচ্ছিলো।স্বপ্নে রাভিনার সাথে একটু প্রেম করি তো আবার সুবর্না রাগ করলে তাকেও খানিক সময় দেই।মজার ব্যাপার হল স্বপ্নে তাদের সাথে আমার কথা হত সাধু ভাষায়।শুধু মাত্র তাই না তারা আমাকে আপনি বলে সম্বোধন করত আর আমি তাদের কে তুমি তুমিকরে বলতাম।এইভাবে রোজ রাতে তাদের সাথে আমার রঙ্গলীলা চলতে লাগলো:D
কিন্তু এই সুখ আল্লাহ আমার কপালে বেশি দিন দিলেন না।আমি হিন্দি সিনেমা দেখে চুলে হাল্কা পাতলা স্টাইল করসি,একটু বড়ও রাখসি।সেই দেখে ক্লাসের এক মেয়ে আমার জন্য পাগল হল।তার নাম মর্জিনা।আমার থেকে লম্বায় এক হাত আর বেড়ে আর এক হাত বড়।বয়সে বড় মিনিমাম ৪-৫ বছরX((।তাকে আমরা সবাই মহিলা গুন্ডা তথা গুন্ডি বলে জানতাম।রোল নাম্বারে শেষের দিক থেকে প্রথম।প্রতি বছর ফেল করে করে আমাদের ক্লাসে এসে পড়ছে।এই হেন গুন্ডি এসে আমার ব্যাগে একটা চিঠি দিল।আর হুমকি দিয়ে গেল, উত্তর দিস।আমি বাসায় গিয়ে চিঠি খুলে দেখলাম আমার নব্য প্রেমিকার হাতের লেখা হায়ারগ্লিফিক অক্ষরও ফেল।২ ঘন্টা ব্যয় করে আমি চিঠির যে মর্মার্থ উদ্ধার করলাম সেটা এরকম-
আই তুয়ারে ভালা পাই।তুয়ারে কেটি কুটী ভালা পাই(মনে হয় কোটি কোটি ভালবাসার কথা বোঝান হয়েছে)।তুই অরে সারা ন দি দেখ্যুন,অড়ড় তলে গাড়ি ফাল্ল্যুম যে(কাদার তলে পুতে ফেলব)।
যাই হোক এমন চিঠি পাওয়ার পর বুশেরও সাহস নাই যে না বল্বে।আমাকে পরের দিন ডেকে আর উত্তর জানার দরকার মনে করল না।তার চিঠির ক্ষমতা সম্বন্ধে তার ভালই ধারনা ছিল।এ কারনেই মনে হয় আর জিগ্যেস করেনি।কিন্তু সে আরেক টা কাজ করল ক্লাসের সবাইকে বলে বেড়াল আমার আর তার প্রেম কাহিণী।সবাই আমাকে ধরে বসল কাহিনী সত্য কিনা জানার জন্য।আমি তার রক্ত চক্ষু দেখে ইনায় বিনায় স্বীকার করেনিলাম যে কাহিনী সত্য।সবাই আমাকে আড়ালে আবডালে ভুদাই ডাকা শুরু করল।আমি চুপচাপ সয়ে গেলাম।এরমধ্যে ক্লাসের অন্যতম সুন্দরি মেয়ে আমার দিকে একটু(এর কথা পরের কোন এক পর্বে বলব) অভিমানের দৃষ্টিতে তাকাল।আমিও অসহায়ের মত তার দিকে চেয়ে রইলাম।আমার এই দেব্দাস মার্কা চাহনী আর কেউ লক্ষ্য না করুক মর্জিনার চোখ এড়াল না।ফলাফল টিফিন পিরিওডে আমার চুলের মুঠি ধরে আরও কিছু খাটি চাটগাইয়া গাল গালায।কিছুই বুঝতে পারলাম না।তবে শেষের কথা শুনে এটুকু বুঝতে পারলাম যে আমি আরেক বার এরকম করলে আমার সমস্ত চুল সে আগুন দিয়ে ধ্বংস করে দিবে।আমি আমতা আমতা করে বাধ্য ছেলের মত তার কথা মেনে নিলাম।
আমার সুখের সংসারে আগুন লেগে গেল।স্বপ্ন যেহেতু বাস্তবের কাছাকাছি হয়।আমার স্বপ্ন গুলোও সে আনুসারে পালটে গেল।এখন আর রাভিনা আর সুবর্না আমাকে আপনি আপনি করে না বলে একবারে তুই তুই করে কথা বলা শুরু করল।আমি যতই তাদের কে বোঝাই তারা কথা শুনে না।এমঙ্কি আগের রোমান্টিক সিন গুলো পালটে হরর ফিল্মের মত হয়ে গেল।তারা এখন অভিমানের বদলে খাটি চাটগাইয়া ভাষায় গালি দেয়া শুরু করল।এই পর্যন্ত ঠিক ছিল।কিন্তু সেই কালান্তক মর্জিনা আমার স্বপ্নেও হানা দেয়া শুরু করল।সেখানে সে আগুন হাতে তেড়ে আসে আর আমি পালাতে থাকি।আমাকে না ধরতে পেরে সে রাভিনা আর সুবর্নাকে চুলের মুঠি ধরে ধোলাই দিতে থাকে।আপ্নারা যারা ইন্সেপ্সন মুভি টা দেখসেন তারা জানেন স্বপনের এই অবস্থাকে কিক বলে।আমি দিনের পর দিন মর্জিনার এই কিক খেতে খেতে স্বপ্ন দেখায় ছেড়ে দিলাম।ঠিক তখন আল্লাহ আমার দিকে মুখ তুলে তাকালেন।
আমাদের স্কুলে মোবারক নামে এক গুন্ডা মতন ছেলে ছিল।সে আবার এই মর্জিনাকে পছন্দ করত।সে পড়ত ক্লাস সেভেন এ।স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে সে মাঝে মাঝে মর্জিনা কে ইভটিজীং ও করত;)।তার কাছে লোক্ মুখে খবর গেল আমি নাকি মর্জিনার সাথে প্রেম করে বেড়াচ্ছি।এদিকে মর্জিনা আমাকে জানাল আমি যদি কোন ব্যাবস্থা না নেই তাহলে সে আমার হাড় গুড়া গুড়া করে ফেল্বে।আমি জানতে চাইলাম আমি কি করতে পারি?সে আমাকে জ্ঞান দিল বাংলা সিনামাতে নায়ক যেভাবে ভিলেনের সাথে ফাইট করে তুই সেভাবে ফাইট করবি।আমি কিছু বললাম না।স্কুল ছুটির পর আমি তার পিছু পিছু গেলাম।মোবারক এই অপেক্ষাতেই ছিল।
আমাকে এসে বল্ল এই চু**** তুই আমার মর্জিনার সাথে কি করস?
আমি বললাম, ভাইয়া আপনি ভুল করছেন।আমি আসলে কিছুই করছি না।
উনি আমার চুলের মুঠি খাব্লায় ধরে বললেন মর্জিনা কে ভুলে জেতে।
কিন্তু চুল ধরার কারনেই আমার মেজাজ হঠাত বিলা হয়ে গেল।আমি মারামারি শুরু করলাম :((
ফলাফল আমি মোবারক ওয়াশ হয়ে গেলাম।
পুরও ১ সপ্তাহ আমি স্কুলে গেলাম না।১ সপ্তাহ পর স্কুলে
এসেই শুনলাম সুসংবাদ।আমার মোবারকওয়াশ এর কারনে মর্জিনা লজ্জায় ঘৃনায় আমার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করেছে :((
সেদিন আবার সেই মেয়েটা আমার দিকে খুশি খুশি দৃষ্টি নিয়ে তাকাল।আমিও তাকালাম বেকুবের মত।
তারপর কি হল?
কি আর হবে?আমি আবার আমার দুই প্রক্তন গার্লফ্রেন্ডদেরকে ডাক দিলাম।
তারা স্বানন্দে চলে আসল।আমিও আবার শুরু করে দিলাম স্বপ্ন দেখা:P
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×