somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুন্ড্র নগরী দর্শন

১১ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৩:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রাচীন বাংলার বৌদ্ধ বিহার গুলো কেবল ধর্মীয় উপাসনালয় ছিল না বরং এগুলো ছিল একেকটা আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। ভিক্ষুরা ছিলেন উপাসনালয়ের আবাসিক ছাত্র। ভাসু বিহার এরকমই একটা বিহার যেটি সম্ভবত খ্রিস্টীয় ৮ম শতকের দিকে অর্থাৎ পাল আমলে খ্যাতির চূড়ায় ছিল। এখানে দুটি বড় আকারের মঠ আছে যেগুলোর মাঝখান টা বিরাট হলঘরের মত। সম্ভবত এই ঘরগুলোতেই ক্লাস নেওয়া হতো। আর হলঘরের চারদিকে ছিল ছাত্রদের থাকার জন্য আবাসিক কক্ষ। দুটো বিহার মিলিয়ে মোট ৫৬ টি এরকম কক্ষ আছে। ১২/১৩ শ বছর আগে এইরকম শিক্ষা ব্যবস্থার কথা আমাদের অঞ্চলের লোকেরা ভাবতে পেরেছিলেন সেটা ভেবে আমি রীতিমতো শিহরিত। নিজের রুম থেকে বের হয়ে কয়েক কদম হেঁটে গেলেই ক্লাস রুম, কোন গাড়ি ঘোড়ায় চড়ার ঝামেলা নেই, লেট হওয়ার কোন চান্স নেই কোন টপিক বুঝতে অসুবিধা হলে হাতের কাছেই বিজ্ঞ পন্ডিতদের পাওয়া যায়, শিক্ষার জন্য এরচেয়ে ভালো পরিবেশ আর কি হতে পারে! আর এখান থেকে পাহাড়পুর বা সোমপুর মহাবিহারের দূরত্ব মাত্র ৫০ কিলোমিটার। এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিশ্চয়ই যোগাযোগ ছিল। আমার কল্পনা করতে আরাম লাগতেছিল যে সোমপুর বিহার থেকে কোন বিখ্যাত শিক্ষক ঘোড়ার গাড়িতে চেপে ভাসুবিহারে এসে গেস্ট টিচার হিসেবে ক্লাস নিয়ে আবার বিকেলে সোমপুরে ফিরে যাচ্ছেন। কারণ সেসময় সোমপুর বিহার কেবলমাত্র মাইটি নালন্দার সাথেই তুলনীয় ছিল। এই জায়গা যখন জ্ঞান চর্চার তীর্থস্থান ছিল তখন শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপংকরের এখানে আসার সম্ভাবনাও আমি কল্পনার চোখে দেখতে পাই। এই স্থান গুলো তে, এই কক্ষগুলোতে, এই টানা বারান্দায় কত জ্ঞানী গুণী মানুষ হেঁটে বেরিয়েছেন, কত আনন্দ বেদনা স্বপ্ন, কত ঘটনা দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে এই লালচে ইটগুলো এসব ভেবে আমি উদাস হয়ে যাই। সেইসাথে আফসোস ও লাগে এই ভেবে যে এইরকম একটা সভ্যতার উত্তরসূরী হয়েও আমাদের দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পায় না! আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার এই অনগ্রসরতা এক বিরাট দীর্ঘশ্বাসের নাম।

ভ্রমণসঙ্গীঃ নাজমুল আলম নীল

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৩:১১
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×