somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওয়্যারউল্ফ মিথ নাকি বাস্তব?

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওয়্যারউল্ফ বা লাইকানথ্রপি। সিনেমা এবং গল্পের কারণে এই নামটা আমাদের কাছে বেশ পরিচিত। কিন্তু কেন এ রকম একটা ভয়ঙ্কর আর রহস্যময় চরিত্রের সৃষ্টি হয়েছে? ওয়্যারউল্ফ কি কোনো মিথ নাকি বাস্তব? প্রায় পাঁচ শতাব্দী ধরে এ প্রশ্ন মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছে।
ওয়্যারউল্ফ কথাটার জন্ম ইউরোপে। মনে করা হয়, কিছু মানুষ বিভিন্ন অভিশাপের কারণে প্রতি পূর্ণিমার রাতে নেকড়েতে পরিণত হয়। পেটে তখন থাকে তার প্রচণ্ড ক্ষুধা। সেই ক্ষুধা তখন সে নিবৃত করে মানুষের রক্ত আর মাংস ভক্ষণ করে।

মানুষ কীভাবে ওয়্যারউল্ফে রূপান্তিত হয় : বিভিন্ন মতবাদ আছে এ নিয়ে। কোথাও প্রচলিত আছে, কোনো মানুষ যদি পূর্ণিমার রাতে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে নেকড়ের চামড়ায় তৈরি বেল্ট পরিধান করে তাহলে সে ওয়্যারউল্ফে রূপান্তিত হয়। আবার অন্য ধারণা মতে, কেউ যদি, নেকড়ের পায়ের ছোঁয়া লাগা বৃষ্টির পানি পান করে, তাহলে সে ওয়্যারউল্ফে রূপান্তিত হয়। ফ্রান্স এবং জার্মানে বিশ্বাস করা হয়, কেউ যদি গরমের পূর্ণ চাঁদের রাতে (বুধ এবং শুক্রবার) ঘরের বাইরে ঘুমায় এবং চাঁদের আলো যদি সরাসরি তার মুখের ওপর পড়ে তাহলে সে ওয়্যারউল্ফে রূপান্তিত হয়।


গ্রিক মিথলজিতে ওয়্যারউল্ফ : একবার দেবতা জিউস ছদ্দবেশে পৃথিবীতে ভ্রমণ করতে আসেন। মেহমান হয়ে বেড়াতে যান তিনি আর্কাডিয়ান রাজা লাইকনের রাজ্যে। লাইকন তাকে ঠিকই চিনতে পারে। লাইকন জিউসকে মারার জন্য, খাবারে জিউসকে মানুষের মাংস পরিবেশন করে। জিউস লাইকনের ট্রিক ধরতে পারে এবং খাবার খেতে অস্বীকার করে। এরপর জিউস লাইকনের পুরো সাম্রাজ্য ধ্বংস করে ফেলে এবং লাইকনকে নেকড়েতে রূপান্তিত করে সারাজীবনের জন্য বন্দি করে রাখে। যতদূর সম্ভব, এই ঘটনা থেকেই গ্রিক শব্দ লাইকনথ্রপ কথাটার উদ্ভব যার ইংলিশ সমশব্দ ওয়্যারউল্ফ।
কাদের মধ্যে এই বিশ্বাস সবচেয়ে বেশি প্রচলিত : আগেই বলেছি, ওয়্যারউল্ফ কথাটার জন্ম ইউরোপে। এছাড়াও আমেরিকা, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্রিস, জার্মান, এমনকি এশিয়ার কিছু দেশেও ওয়্যারউল্ফে বিশ্বাস করা হয়। তবে ওয়্যারউল্ফে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করে রেড-ইন্ডিয়ানরা।
বিজ্ঞানের ভিত্তিতে ওয়্যারউল্ফ : কিছু কিছু বিজ্ঞনীদের মতে ওয়্যারউল্ফ বলে বাস্তবে কিছু নাই। তবে পনেরোশ’ শতাব্দীর দিকে ইউরোপের কিছু অঞ্চলে এবং রেড ইন্ডিয়ান কিছু মানুষের মধ্যে একটা রোগ দেখা দেয়। এই রোগে মানুষের সারা শরীরে কুকুরের মতো লোম গজাত আর যার এই রোগ হতো, তার মেজাজ সবসময় খিঁচরে থাকত। (অনেকটা জলাতঙ্ক রোগের মতো)। সে মাঝে মধ্যে অন্যকে কামড়াতে যেত। কুসংস্কারীরা এই রোগ থেকেই ওয়্যারউল্ফের গল্প তৈরি করে।



ওয়্যারউল্ফে রূপান্তর : প্রচলিত মতে, যারা ওয়্যারউল্ফ, প্রতি পূর্ণিমার রাতে ঠিক বারোটার সময় তাদের দেহে ঘন লোম গজানো শুরু করে, নখ বড় বড় হয়ে যায়, চোখের রং হয়ে যায় হলুদ। আস্তে আস্তে তারা পরিণত হয় অর্ধেক মানুষ অর্ধেক নেকড়েতে। তারপর বের হয়ে যায় জঙ্গলে রক্তপানের নেশায়। এই ওয়্যারউল্ফ যদি অন্যকোনো মানুষকে কামড়ে দেয় তাহলে সেও পরিণত হয় ওয়্যারউল্ফে। আবার কেউ যদি ওয়্যারউল্ফকে হত্যা করে তাহলে সেও পরিণত হয় ওয়্যারউল্ফে।
ওয়্যারউল্ফ কি সত্যি নাকি শুধুই মিথ : বিজ্ঞানীদের মতে ওয়্যারউল্ফ শুধুই এক ভয়ঙ্কর কল্পনা ছাড়া আর কিছুই না। কিন্তু এখনো পৃথিবীর হাজার হাজার জাতির কোটি কোটি মানুষ এখনো বিশ্বাস করে ওয়্যারউল্ফ নামক এই ভয়ঙ্কর কিংবদন্তিতে।

১৩টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×