গত কয়েকদিন বিএনপি'র সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরকে নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা গত কয়েকদিনে বেশ চাঞ্চল্যকর কিছু কথা ও তথ্য দিয়েছেন, যেগুলি নিয়ে বিস্তর আলাপ করা সম্ভব। আমি সেগুলি শুধুমাত্র পয়েন্ট আকারে তুলে ধরছি।
• আওয়ামী লীগের সভানেত্রী উনাকে সরাসরি ফোন দিয়ে দেখা করতে বলেন এবং সেখানে তাকে তার চতুর্থ ভাই হিসেবে গ্রহণ করেন। ১০ মিনিটের আলোচনায় তার হাতে নৌকার নমিনেশন তুলে দেয়।
•বিএনপি ত্যাগ করার তার প্রধান ও অন্যতম কারণ হচ্ছে তারেক জিয়ার অপরিপক্ক নেতৃত্ব।
•হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ ছিলেন একজন রাজাকার। যিনি পাকিস্তান থেকে যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে এসে আবারো পাকিস্তানে চলে যায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে। পশ্চিম পাকিস্তানে যেসব বাঙ্গালী সামরিক বাহিনীর অফিসার ছিলেন তারা যারা বাংলাদেশের পক্ষে হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে চাইতো কিংবা বাংলাদেশের হয়ে কথা বলতো তাদেরকে চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিটি করা হয়। হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ ছিল সেই কমিটির চেয়ারম্যান।
• মেজর জিয়া সব সময় সাদামাটা চলাফেরা করতো। তার মধ্যে অর্থ লোভ কখনোই ছিলনা। এমনকি প্রেসিডেন্ট হাউসে সাধারণ বাঙালিরা যেসব খাবার খেতো সে ধরনের রান্নাই হতো।
•২০১৮ নির্বাচনে মঈন ইউ আহমেদ ও ফখরুল ইসলাম বেগম জিয়াকে ক্ষমতায় যাওয়ার অফার করেছিলো, তাদেরকে বিচারের আওতায় না আনার শর্তে। বেগম জিয়া সেটা প্রত্যাখ্যান করে।
•পরে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জিতাতে ভোট কেন্দ্রে পাঁচটি ভোট বাক্স থাকার কথা থাকলেও বাড়তি দুটি ভোট বাক্স আগেই সেখানে রাখা হয় আড়ালে। যেখানে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট দিয়ে ভরে রাখা হয় এবং এই বিষয়টি আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরাও জানতো না!
•২০১৪ এর নির্বাচনে আমেরিকা এবং জাতিসংঘের উপ মহাসচিব তারাংক খালেদা জিয়াকে বলেছিল তার দল নির্বাচন করলে ক্ষমতায় আসবে। তবে সংসদে আসন সংখ্যা আওয়ামী লীগের সাথে মার্জিন খুবই কম হবে।
কিন্তু তখন বিএনপি'র দুইজন নেতা বলেছিল আওয়ামীলীগ একটি আইন করেছিল বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রতিটি সরকারি অফিসে পেছনে টাঙ্গিয়ে অফিস করতে হবে। সে আইন বাতিল করার মত মেজরিটি না পেলে বিএনপি নির্বাচনে যাবেনা। বেগম জিয়া এও বলেছিল, শেখ মুজিবের ছবি পিছনে রেখে তিনি অফিস করতে পারবেন না। যদি আমেরিকা ও জাতিসংঘ দুই-তৃতীয়াংশ আসন ব্যবধানের নিশ্চয়তা দিতে পারে তাহলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। যা পরবর্তীতে আর সম্ভব হয়নি।
•বর্তমান বিএনপিতে তারেক জিয়ার মতের বাহিরে কেউ কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেনা। এমনকি তারেক জিয়া ভুল সিদ্ধান্ত নিলেও সেটা ভুল বলার মত সাহস কোন সিনিয়র নেতাদের নেই। ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর কয়েকবার তারেক জিয়াকে তার ভুল ধরিয়ে দিতে গেলে বাকি নেতারা তাকে বলতে গেলে হাতে পায়ে ধরে সেসব না বলার অনুরোধ করতে থাকে।
•ব্যারিস্টার শাহাজান ওমর আরো বলেন বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতারা দল থেকে বের হয়ে যেতে চায় কিন্তু সেরকম শক্তিশালী কোনো প্ল্যাটফর্ম না পাওয়াতে বের হয়ে আসতে পারছে না। তিনি যেই মুহূর্তে নৌকার নমিনেশন পেয়েছে সেটা যদি আরও একমাস আগে হতো তিনি অন্তত বিএনপির হাইকমান্ডের ৫০জন নেতাকে তার সাথে নিয়ে আসতে পারতেন। তারপরও তিনি বলছেন, নির্বাচনের পরে যদি নেত্রী এটা নিয়ে কাজ করতে বলে তাহলে তিনি বিএনপির মধ্যে থাকা সকল মুক্তিযোদ্ধাদেরকে তার সাথে নিয়ে আসবেন এবং তিনি দৃঢ়তার সাথে বলছেন সেটা সম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:১০