গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এখানে যে কোন সময় যেকোনো অযোগ্য লোক জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে যায়। আজকের আধুনিক বিশ্বে জাতিকে নেতৃত্ব দিতে হলে জাতির জন্য আধুনিক বিশ্বের সাথে সমন্বয় করে সকল নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য খুবই দক্ষ ও চৌকস হতে হয়। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই সুশিক্ষিত নয়। তাই নির্বাচনের মাধ্যমে তারা সঠিক জনপ্রতিনিধি কখনোই ঠিকভাবে নির্বাচিত করতে পারেনি। যার জন্য জাতি স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত সঠিক পথে আসতে পারেনি।
গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে শেখ হাসিনা তার প্রধান বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে নির্বাচন করে চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে। নির্বাচনের আগেই ধারণা করা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করবে। কিন্তু উনি যাদের নির্বাচন করার জন্য তাদের এলাকায় পাঠিয়েছেন দেখা গিয়েছে তারা নিজেদের নামে ও জনপ্রিয়তায় জয়ী হতে পারছে না। তাদেরকে জিতিয়ে নিয়ে আসতে হয়েছে, যাদেরকে সম্ভব হয়নি, তারা আসতে পারেনি।
নির্বাচনের সময় আমি আমাদের এলাকায় ছিলাম। আমাদের এমপি সাহেবের খুব বেশি সুনাম আমি শুনতে পাইনি। বেশিরভাগই উনাকে ভোট না দেওয়ার পক্ষে ছিল। তবে সমস্যা হচ্ছে উনাকে বাদ দেওয়ার পরে কাকে নির্বাচন করবে সে অপশন কারো হাতেই ছিল না। কেননা উনার বিপক্ষে যারা দাঁড়িয়ে ছিল তারা কেউই উনার চেয়ে যোগ্য নয়। তাহলে বুঝুন কি একটা অবস্থা। বিএনপি যদি নির্বাচনেও আসতো তাহলে আমদের আসনে বুঝা যাচ্ছিল কাকে নমিনেশন দিতো। সে মানুষটিও নির্বাচন করলে তাকে জনপ্রতিনিধি করার মতো কোনো গুণাবলী তার মধ্যে ছিল না। আসলে আওয়ামীলীগের চেয়ে বিএনপির অবস্থা আরো বেশি খারাপ। কেনো বলছি, বর্তমানে আওয়ামীলীগ দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, বাণিজ্য, প্রশাসনকে এমনভাবে পুলিউটেড করেছে মানুষ যারপরানেই বিরক্ত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মানুষ বিকল্প অপশন হিসেবে বিএনপিকে চিন্তা করতে পারছে না। যার জন্য আওয়ামীলীগের অনেক অদক্ষ পদক্ষেপ, দুর্নীতি এসবকে দাঁত চেপে সহ্য করে যাচ্ছে! তবে কতদিন সহ্য করে যাবে বলা সম্ভব নয়। আওয়ামীলীগের সামান্য একটি ভুল কর্মের স্পার্ক থেকে সারাদেশে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। যেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা শেখ হাসিনা কিংবা তার দলের পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়।
তবে এটা এক প্রকার নিশ্চিত, এই বিএনপি জামাতের আহবানে মানুষ কখনোই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নামবে না। বিএনপি তার লিগ্যালেসী অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছে দেশকে শাসন করার জন্য। যার জন্য তারা শত শত বার মানুষকে রাস্তায় নেমে আসতে বললেও মানুষ আসছেনা। মানুষের মনে ধারণা জন্মে গেছে মন্দের ভালো হিসেবে আওয়ামীলীগ সরকার বিএনপি জামাত থেকে কিছুটা উপরে আছে।
তবে মানুষ রাস্তায় নামবে আওয়ামীলীগের দুর্নীতির বিরুদ্ধে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারার ব্যর্থতায় এবং প্রশাসন ও দলীয় ক্যাডারদের অত্যাচারে। সেদিন বাঙ্গালীদের এই প্রিয় দলটিকে নিশ্চিত ভাবে শেখ হাসিনা রক্ষা করতে পারবেন না। একসময় ইতিহাসের কাঠগড়ায় উনাকে দাঁড় করানো হবে এই দলটির ঐতিহ্য নষ্ট করার জন্য!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫