
৫ আগস্টের পর থেকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একের পর এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি অদ্ভুত ও বিরক্তিকর প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ক্ষমতা প্রত্যাশী বিএনপির নেতা বা কর্মীর কোনো অপকর্ম হলে অনেকেই তাদের দলীয়ভাবে শাস্তি দেওয়ার পরেও প্রশ্ন উঠছে তারা তাদের বিচার করছে না কেনো?
কিন্তু বাস্তব প্রশ্ন হলো, একটি রাজনৈতিক দল কি একজন নাগরিকের বিচার করতে পারে? তারা কি কারাগারে পাঠাতে পারে কিংবা ফাঁসি দিতে পারে?
না, এ দায়িত্ব তো একমাত্র সরকারের, আরো নির্দিষ্টভাবে বললে, রাষ্ট্রযন্ত্রের।
বিএনপি বর্তমানে ক্ষমতার বাইরে, যার জন্য ধরে নিতে হবে প্রশাসনিক কোনো কর্তৃত্ব তাদের হাতে নেই। তারা চাইলেই কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে না, তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে না, এমনকি কোনো রায়ও দিতে পারে না। তারা দলীয় শৃঙ্খলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ব্যবস্থা নিতে পারে, যেমন সতর্ক করা, শোকজ করা, বহিষ্কার করা সর্বচ্চো করলে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে পারে!
আসলে বিচার চাইতে হবে সেই পক্ষের কাছে, যার হাতে প্রশাসন, যাদের হাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, আদালত, গোয়েন্দা সংস্থা—অর্থাৎ সরকার।
বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই সরকারই জাতীয় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বও বহন করে।
তাহলে প্রশ্ন হলো যখন দেশে সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা বা ধর্ষণ, খুন-গুমের মতো ঘটনা ঘটে, তখন আমরা কেন বিএনপি'র কাছে বিচার চাচ্ছি! কেন ড. ইউনুসকে জবাবদিহির মুখোমুখি করি না?
ইদানিং জনগণের মধ্যে একটি প্রশ্ন ক্রমেই জোরালো হচ্ছে, এই সব অরাজকতা কি আসলে উপদেষ্ঠাদের নীরব প্রশ্রয়ে হচ্ছে?
তারা কি দুর্বৃত্তদের ‘ সুযোগ’ করে দিচ্ছে নিজেদের স্বার্থে?
এ প্রশ্ন আসা খুব স্বাভাবিক, কারণ ঘটনাগুলোর পর কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া, বিচারহীনতা ও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা এ প্রশ্নের ভিত্তি জোরালো করছে।
এই প্রেক্ষাপটে আমি মনেকরি এটা ড. ইউনুস ও তার উপদেষ্টাদের রাজকপাল!
কারণ, যেই অপরাধই ঘটুক, দায় চাপানো হয় বিএনপির ওপর। অথচ সরকার চালাচ্ছে ড. ইউনুস নিজেই। দায়িত্ব পালন না করে বিরোধী দলের ‘অসক্ষমতা’ কিংবা তাদের বিচ্ছিন্ন অপকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকা কি শাসকের মতো আচরণ?
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে শাসকদের প্রধান দায়িত্ব হলো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, অপরাধ দমন করা এবং জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়া।
বিরোধী দলের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলে যদি সরকারের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা হয়, তবে সেটা দুঃখজনক ও আত্মপ্রবঞ্চনামূলক।
পূর্বের মত দোষারোপের রাজনীতি যদি চলতে থাকে তাহলে আর কি লাভ হলো এত সব করে।
যাইহোক এখন থেকে জবাবদিহি একমাত্র তাদের কাছেই চাওয়া উচিত, যারা দেশের চাবিকাঠি হাতে নিয়ে বসে আছে। তবে এই সবকিছুই যদি ম্যাটিকুলাস ডিজাইনের অংশ হয়ে থাকে, তাহলে আর তেমন কিছুই করার নেই সাধারণ জনগণের!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


