রমযান মাস আসছে, সে যে কি খুশির খবর ! ছেলে বুড়ো সবাই খোলা মাঠে গিয়ে হাজির হত রোজার চাঁদটাকে এক নজর দেখতে । চাঁদ দেখতে পাবার পর তারস্বরে চেঁচিয়ে সবাই মিছিল বের করতাম, "আহলান সাহলান, মাহে রমযান...."
তখন রোজার দিন আসতো শীতের ঋতুতে । হাড়কাঁপানো শীতের মাঝে কাঁপতে কাঁপতে উঠে সেহরি খেতাম । তারপর সবার সাথে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মাঝে অজু করে মসজিদে যাওয়া । এক অভিন্ন উৎসবের আমেজে রোজার দিনগুলো কেটে যেত । সারাদিন হামদ নাত শোনা অথবা কোরআন পড়া, আসরের পর যত সময় যেত তত অপেক্ষা, কবে মসজিদের মিনার হতে ভেসে আসবে আজানের সুমধুর ধ্বনি । আজান দিলে সবাই মিলে ইফতারি করা ।
আহা, কি যে আনন্দময় ছিল সেই দিনগুলি ।
প্রতি সেহরিতে ভাবতাম এত তীব্র শীতের দিনে রমযান না এসে যদি গরমের দিনে আসতো । তাহলে কতই না ভালো হত । কখনো কখনো কথাটা মুরুব্বিদের বলতাম । মুরুব্বিরা সবসময় আমাদের সতর্ক করে দিতেন, গরমের ঋতুর রমযান খুব কষ্টকর । আমরা ভাবতাম, এ আর এমন কি কষ্টকর । এখন তো টের পাচ্ছি গরমের রমযান যে কি জিনিস !
একেকটি রোজা শেষ হত, আর আমরা ছোট মানুষেরা হাতের দাগে গুনে গুনে দেখতাম ঈদের আর কত দিন বাকি রইল । রমযান যখন প্রায় শেষ হয়ে আসতো, তখন আবার রমযানের জন্য কিছুটা খারাপ লাগতো । আর একটি বছর এই মহান মাসের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ভাবতেই হৃদয়টা হাহাকার করে উঠত ।
শৈশবের সোনালি দিনগুলোর মত রমযানও এখন পুরনো স্মৃতির আধার ।
হে আল্লাহ, আমার রমযান মাসকে তুমি শৈশবের আনন্দদায়ক সময়ের মত আবার পরিপুর্ণ করে দাও ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১:২৩