দারুন বাজেট হয়েছে এই বছর। সকল কালো টাকার বৈধতা দেয়া হল। তাও সেটা একদিন দুইদিনের জন্য নয়, এমনকি এক মাস দুই মাসের জন্যও নয়। একদম ২০১২ সাল পর্যন্ত। এর মধ্যে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। কারন কালো টাকা বৈধতা পাওয়াতে বিনিয়োগ অনেক বেড়ে যাবে। ব্যাবসা-বানিজ্যের অনেক উন্নতি হবে। দারুন। সত্যি দারুন। এটা বোধহয় এই দেশেই সম্ভব।

কালো টাকা বলতে আমরা কি বুঝি। যে টাকায় কর দেয়া হয় নি, সেটাকে কালো টাকা বলা হয়। আমাদের দেশের প্রচলিত আইনে আপনি জমি কিনতে গেলে, ফ্ল্যাট কিনতে গেলে, ব্যাবসা করতে গেলে টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। সেটার কতটুকু প্রয়োগ আছে, সেটা পরের কথা। এখন থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এটা আর জানতে চাওয়া হবে না।

এবার আসি কালো টাকা কিভাবে তৈরী হয়। চাদাবাজেরা যে ইনকাম করে, আমলারা যে ঘুষ খায় সেগুলো কালো টাকা। এর বাইরেও অবশ্য কালো টাকা তৈরী হতে পারে। যেমন, একজন ব্যাবসায়ী তার মুনাফা কম দেখিয়ে ট্যাক্স ফাকি দিল। তার মানে যে পরিমান টাকায় ট্যাক্স দেয়া হল না, সেটাও এক রকমের কালো টাকা।

এখন থেকে কালো টাকার উৎস নিয়ে কোন প্রশ্নই তোলা যাবে না। চাদাবাজেরা ইচ্ছামত চাদাবাজি করবে। ঘুষখোরেরা ইচ্ছামত ঘুষ খাবে। সেই টাকা দিয়ে ইচ্ছা মত জমি কিনবে, ফ্ল্যাট কিনবে। তাদেরকে কিছুই বলা যাবে না। বললে তো বিনিয়োগ থেমে যাবে। বিনিয়োগ তো আর থামানো যাবে না। এছাড়া চাদাবাজ আর ঘুষখোরদের ইনকামের রাস্তা বন্ধ ছিল দীর্ঘ দুই বছর। সেই লস তো পুষাতে হবে। আর সেই লস পুষাতে দেয়া হল দারুন সুযোগ। বাহ, বাহ।

এই নিয়মে সরকারেরও অনেক লাভ হবে। এই কালো টাকা ১০% কর দিয়েই হালাল করা যাবে। সরকারের ইনকাম বাড়বে। তাই সরকার জানতেও চাবে না, এই টাকা কি চাদার টাকা না ঘুষের টাকা। এই সব সুবিধা অবশ্য আওয়ামী লীগ ঘরানাদের জন্য। বিপক্ষ দল হলে আলাদা ব্যাপার। তখন হেনস্তা করা হবে ইচ্ছামত।

এফ.বি.সি.সি.আই এই সিদ্ধান্তে বাহ বাহ করছে। এই দেশের সন্ত্রাস-চাদাবাজের নাটের গুরু তো ওরাই। ওরা তো বাহ বাহ করবেই।

এবার আমরা ২০১২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করি, এই দেশের সোনার চাদাবাজ আর ঘুষখোরের এই দেশকে কতদূর এগিয়ে নিয়ে যায়।