somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, জানুন বিস্তারিত

১০ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সব কিছু ঠিক থাকলে নতুন সম্ভাব্য সময় অনুযায়ী (স্পেস মিশনে এটাকে বলে New Estimated Time, NET) এই বছরে অর্থাৎ ২০১৮ এর মে এর ১১ তারিখ রাত ২ টা ১২ তে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশন (Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission – BTRC) এর মালিকানাধিন ৩.৫ মেট্রিক টন (৩৫০০ কেজি) ওজনের বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট টি বাংলাদেশের প্রথম জিওস্ট্যাশোনারি (Geo stationnary) যোগাযোগ উপগ্রহ হিসেবে ইলন মাস্ক (Elon Musk) এর স্পেস এক্স (SpaceX)কম্পানির একটি ফ্যালকন ৯ (Falcon 9) রকেট এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার এর লঞ্চ সাইট LC-39A থেকে যাত্রা শুরু করবে তার অরবিট (Orbit) এর দিকে। ২০১৫ সালের নভেম্বর এর ১১ তারিখে ওর্ডার করা এই স্যাটেলাইট টি তৈরি করেছেন ফ্রান্স-ইটালির কোম্পানি থেলেস আলেনিয়া (Thales Alenia )।টার্ন কি সিস্টেম এ প্রজেক্টটির প্রাইম কন্ট্রাক্টর থেলেস আলেনিয়া এর দায়িত্ব এর মধ্যে আছে ডিজাইন, প্রোডাকশন, টেস্টিং এবং অরবিট এ স্যাটেলাইটটি ডেলিভারি। এছাড়া থেলেস আলেনিয়া বাংলাদেশে দুইটি গ্রাউন্ড স্টেশন এ স্যাটেলাইট কন্ট্রোল এবং নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার নির্মান এবং পরিচালনা উপযোগী করার কাজও করবে। বাংলাদেশে গ্রাউন্ড স্টেশন টির সিভিল ওয়ার্ক্স এর কাজ পেয়েছে থেলাস এলানিয়ার বাংলাদেশের পার্টনার স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।


২৪৮ মিলিওন ইউ এস ডলার অর্থাৎ ১৯.৫১ বিলিয়ন টাকা মূল্যের বঙ্গবন্ধু-১ এর জিওস্টেশোনারি অক্ষাংশ (Longitude)হবে ১১১.৯ ডিগ্রি পূর্ব (119.1° East) । ১৬০০ মেগাহার্জ কেপাসিটির বঙ্গবন্ধু-১ এর ভেতর থাকছে মোট ৪০ টি ট্রান্সপন্ডার (Transponder) যার মধ্যে ২৬টি কে ইউ ব্যান্ড (Ku Band) ট্রান্সপন্ডার এবং ১৪টি সি ব্যান্ড (C Band) ট্রান্সপন্ডার। বঙ্গবন্ধু-১ এর কাভারেজ এরিয়া হবে বাংলাদেশ, বে অফ বেংগল, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা , ফিলিপিনস এবং ইন্দোনেশিয়া এবং এর লাইফ টাইম হবে ১৫ বছর।

বঙ্গবন্ধু-১ এর টাইমলাইনঃ

নভেম্বর ১১, ২০১৫ – আন্তর্জাতিক দরপত্র শেষে থেলেস এলেনিয়া এবং বিটিআরসি এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু-১ বিষয়ক চুক্তি সম্পাদন
নভেম্বর, ২০১৬ – বঙ্গবন্ধু-১ এর ডিজাইন সম্পন্ন এবং বিশেষজ্ঞ কমিটির ডিজাইন রিভিউ শুরু
জানুয়ারি ১০, ২০১৭ - বঙ্গবন্ধু-১ এর ডিজাইন রিভিউ পাস
জানুয়ারি, ২০১৭ – প্রডাকশন ফেইজ এর শুরু। ফ্রান্স এর Toulouse এ কমিনিকেশন মডিউল এবং Cannes এ সার্ভিস মডিউল তৈরী শুরু ।
মার্চ, ২০১৭ - কমিনিকেশন মডিউল এবং সার্ভিস মডিউল একসাথে করা হয় এবং পূর্নাংগ স্যাটেলাইট এর নির্মান কাজ শুরু
মার্চ ২৮, ২০১৮ – Thales Alenia Space কোম্পানির ফ্রান্স এর Cannes প্ল্যান্ট থেকে যুক্ত্ররাষ্ট্রের কেপ কার্নিভাল এর উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা শুরু।
মার্চ ২৯, ২০১৮ – যুক্তরাষ্ট্রের Boston এ যাত্রা বিরতি
মার্চ ৩০, ২০১৮ – বঙ্গবন্ধু-১ কে বহনকারি Antonov An-124 (Registration UR-82072) বিমান টি যুক্তরাষ্ট্রের Cape Carnival এ অবতরন। এখান থেকেই নিয়ে যাওয়া হয় লঞ্চ সাইট এ।

অরবিট (Orbit) কি?

অরবিট (Orbit) এর বাংলা কক্ষপথ। মহাশূন্যে একটা বস্তু তা সেটা প্রাকৃতিক হোক বা কৃত্তিম, যখন আরেকটা বস্তুর চারপাশে একটা স্পেসিফিক রাস্তা ফোলো করে স্পেসিফিক সময় ব্যয় করে বার বার ঘুরতে থাকে তখন সেই রাস্তাটাকে আমরা বলবো তার অরবিট (Orbit) আর পুরো রাস্তাটা ঘুরে আবার আগের জায়গায় আসতে তার যে সময় লাগে তাকে আমরা বলবো অরবিটাল পিরিয়ড (Orbital Period) । যেমন আমরা জানি সূর্যের চারপাশে পৃথিবী একটা অরবিট এ ঘুরছে। তাই পৃথিবীর অরবিটাল পিরিয়ড ১ বছর বা ৩৬৫ দিন। এভাবে সব গুলো গ্রহের অরবিট আছে, অরবিটাল পিরিয়ড আছে। গ্রহগুলোর যদি নিজস্ব উপগ্রহ থাকে যেমন পৃথিবীর আছে চাঁদ, সেগুলোও গ্রহ কে কেন্দ্র করে তাদের অরবিট এ ঘুরছে, তাদেরও অরবিটাল পিরিয়ড আছে, এক একটার এক এক অরবিটাল পিরিয়ড।উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, চাঁদ এর অরবিটাল পিরিয়ড ২৭ দিন ৭ ঘন্টা ৪৩ মিনিট ১১.৫ সেকেন্ড।
প্রশ্ন হলো এই গ্রহ বা উপগ্রহ এত বাধ্য কেন যে অরবিট এ থাকে? কেন অরবিট থেকে উইইইই বলে বের হয়ে যায় না? উত্তর বুঝতে হলে মনে মনে একটা পরীক্ষা করতে হবে। ধরেন মাঠ এর মধ্যে একটা খুটি গাথলেন। এবার খুটির সাথে ১ মিটার লম্বা একটা দড়ি লাগালেন। দড়ি টা এমন ভাবে খুটী তে লাগানো যে টান টান করে খুটীর চারপাশে ঘুরলে খুটী তে পেচাবে না, বরং যেদিকে টানবেন সেদিকে ঘুরে যাবে। এবার একটা মোটকা দেখে ছাগল* এনে দড়ির আরেক মাথায় বাধলেন। ছাগল যদি আমার মত হয় তাহলে চুপচাপ বসে বসে পাতা চিবাবে আর যদি বিয়াদ্দপ হয় তাহলে প্রথম সুযোগেই দৌড় লাগাবে। কিন্তু দড়িটা যখন টান টান হয়ে যাবে তখন আর সোজা সরল রেখায় দৌড়াতে পারবে না । দড়ির টানের কারনে খুটির দিকে একটু বাকবে। কিন্তু ছাগল তো আমার মত না যে খুটির বশ্যতা স্বীকার করে নেবে। তাই সে যতক্ষন পারে সোজা দৌড়াতে চাবে আর খুটি তে বাধা থাকার কারনে তার দৌড়ানোর রাস্তা বার বার বাকবে।
একটু যদি চিন্তা করেন তাহলে ছাগলের উপর এইখানে দুইটা বল (Force) কাজ করছে। একটা হোল তার নিজের ফোর্স যা দিয়ে সে সোজা দৌড়াতে চাচ্ছে। আর ২য় হোলো দড়ির টান যার দিয়ে খুটি তাকে নিজের দিকে টানছে। এই দুই ফোর্স এর টানাটানি তে ছাগল বেচারার দৌড়ানোর রাস্তা সোজা না হয়ে হয়ে গেছে বৃত্তাকার। এইবার পরীক্ষার শেষ ধাপ চিন্তা করেন। মনে করেন পৃথিবী একটা খুটি আর তার পাশে ঘুরতে থাকে কৃত্তিম উপগ্রহ একটা ছাগল। মাধ্যাকর্ষন শক্তি হলো দড়ির টান আর কৃত্তিম উপগ্রহ কে রকেট এর মাধ্যমে দেয়া গতি হলো ছাগলের দৌড়ানোর চেষ্টা। যদি দড়ির টান বেশি হয় তাহলে উপগ্রহ পৃথিবী তে আছড়ে পড়বে আর যদি অনেক পাওয়ারফুল রকেট দিয়ে বুস্ট দেয়া যায় তাহলে সেই উপগ্রহ দড়ির টান বা মাধ্যাকর্ষন শক্তি কে জয় করে অরবিট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে রউনা দিতে পারবে অসিম মহাশূন্যে। আর যদি এই দড়ির টান আর নিজের শক্তির টানাটানি তে যখন একটা সমান সমান অবস্থায় পৌছাবে তখনই তৈরী হবে অরবিট এর।
* নো ছাগল ওয়াজ হার্মড ডিউরিং দিস মেন্টাল এক্সপেরিমেন্ট।
আমরা এখন জানি যে মহাশূন্যে সকল অরবিট ইলিপ্স (ellipse) এর মত শেপ এর। অরবিট যদি গোল বৃত্তের মত শেপ এর হতো তাহলে অরবিট এর কেন্দ্র থেকে অরবিট এ থাকা স্যাটেলাইট এর দুরত্ব সবসময় সমান হতো। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে সব স্যাটেলাইট পৃথিবী চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে কখনো পৃথিবী থেকে অনেক দূরে থাকে, আবার কখনো পৃথিবীর অনেক কাছে থাকে।স্যাটেলাইট অরবিট এ তাহলে আমরা দুইটা পয়েন্ট মার্ক করতে পারি। একটা পয়েন্ট এ স্যাটেলাইট টি পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে। এই পয়েন্ট টার নাম অ্যাপোজি (Apogee)। আর একটা পয়েন্টে স্যাটেলাইট টি পৃথিবী এর সবচেয়ে কাছে চলে আসে। এই পয়েন্ট টার নাম পেরিজি (Perigee)। পেরিজিতে মাধ্যাকর্ষন শক্তির টান সবচেয়ে বেশি থাকে।
পৃথিবীর নিজেরও কিন্তু সূর্যের চারিদিকে ঘোরার একটা অরবিট আছে। এই অরবিট এ যেখানে পৃথিবী সূর্য থেকে সব চেয়ে দূরে থাকে সেই পয়েন্টটা কে বলে পেরিহেলিওন (Perihelion)। এই ছবি টা দেখলে ব্যাপার গুলো আরো ক্লিয়ার হবে।
(লিঙ্ক কমেন্টে)
একটা স্যাটেলাইট পৃথিবীর সারফেস বা ভূপৃষ্ঠ থেকে কত উচুতে আছে তার মাপ টাকে বলে অরবিট অল্টিটিউড (Orbit Altitude) । এটা কিলোমিটার এ মাপা হয়। এই অরবিট অল্টিটিউড এর উপর নির্ভর করে কৃত্তিম উপগ্রহের অরবিট গুলো কে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এক হলো লো আর্থ অরবিট (Low Earth Orbit) বা সংক্ষেপে লিও (LEO) । আরেক হলো জিওসিংক্রোনাস আর্থ অরবিট (Geosynchronous Earth Orbit) বা সংক্ষেপে জিও (GEO)।

কেউ যদি ভূপৃষ্ঠ থেকে মোটামুটি ১০০ কিলোমিটার (৩ লক্ষ ২৮ হাজার ৮৪ ফিট) উপরে যায় তাকে বলা যায় মহাশূন্যের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে। এই ১০০ কিলোমিটার উপরের জায়গাটার একটা নাম ও আছে, কারমান লাইন (Kármán line) । কারমান লাইনে মাধ্যাকর্ষন শক্তির পরিমান বেশি এবং এটমোস্ফিয়ার গ্যাস এর ঘনত্ব ও অনেক বেশি । এইখানে স্যাটেলাইট রাখতে হলে যে পরিমান জ্বালানী খরচ হবে তার উপযোগী স্যাটেলাইট তৈরি এবং পরিচালনা করা লং টার্ম এর জন্য অসম্ভব একটা ব্যাপার। হয়তো যদি আমরা কোনদিন নবায়ন যোগ্য জ্বালানী তে আরো উন্নত হই তাহলে সম্ভব হবে। এই কারমান লাইনের যদি আরো উপরে যাওয়া যায় , ধরা যাক ২০০ কিলোমিটার তাহলে মাধ্যাকর্ষন এর টান আরো কমে যাবে এবং এখানে কোন স্যাটেলাইট কে যদি রকেট এর মাধ্যমে বুস্ট দেয়া যায় তাহলে স্যাটেলাইটটির পক্ষে মাধ্যাকর্ষন শক্তিকে কিছুটা অতিক্রম করে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে থাকার মত অরবিট তৈরি করা সম্ভব। এই ২০০ কিলোমিটার থেকে ১২০০ কিলোমিটার অরবিটাল অল্টিটিউড মানে পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ২০০ থেকে ১২০০ কিলোমিটার এর উচ্চতায় যে সব স্যাটেলাইট ঘুরছে তাদের কে আমরা বলি লিও স্যাটেলাইট বা Low Earth Orbit Satellite । LEO এর উদাহরণ খুব পরিচিত দুটো নাম দিয়ে দেয়া যায়। ইন্টারন্যাশনার স্পেস স্টেশন (International Space Station) LEO তে ঘুরছে। ব্র্যাক এর অন্বেশা LEO তে ঘুরছে।

LEO যেহেতু পৃথিবীর অনেক কাছাকাছি তাই এর চারপাশে ঘুরে আস্তেও এই অরবিট এর স্যাটেলাইট গুলোর খুব অল্প সময় যেমন গড়ে ৯০ মিনিট এর মত লাগে। ISS এর লাগে ৯২.৪৯ মিনিট। কাছাকাছি হওয়াতে সিগ্ন্যাল এর যাওয়া আসার সময় (Round Trip Time – RTT) ও কম লাগে । তাই এই অরবিট টা স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন এ খুব ব্যবহার হয়। ইরিডিয়াম একটা কোম্পানি আছে। স্যাটেলাইট ফোন এর ব্যবসা করে। ওদের সব স্যাটেলাইট LEO তে।
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট যাবে এই LEO এর আরো উপরের অরবিট এ। যার নাম জিওসিংক্রোনাস আর্থ অরবিট (Geosynchronous Earth Orbit) বা GEO।

জিওসিংক্রোনাস / জিওস্টেশনারী স্যাটেলাইট কি?

জিওসিংক্রোনাস স্যাটেলাইটঃ
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৫৭৯০ কিলোমিটার উপড়ে থাকে। পুরো পৃথিবী কে ঘুরে আসতে সময় লাগে ১ দিন। কিন্তু পৃথিবী যেদিকে ঘুরছে মানে পূর্ব থেকে পশ্চিম এ , সেই বরাবর নাও ঘুরতে পারে। তাই পৃথিবী থেকে দেখলে এই ধরনের স্যাটেলাইট কে চলমান মনে হবে
জিওস্টেশনারী স্যাটেলাইটঃ
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৫৭৯০ কিলোমিটার উপড়ে থাকে। পুরো পৃথিবী কে ঘুরে আসতে সময় লাগে ১ দিন। পৃথিবী যেদিকে ঘুরছে ঠিক সেই বরাবর ঘুরতে থাকে। একই গতিতে থাকার কারনে পৃথিবীর যে কোন একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে দেখলে মনে হতে পারে সেই পয়েন্ট এর উপর স্যাটেলাইট টি স্থীর হয়ে আছে। তাই এর নাম জিও (অরবিট এর নাম)স্টেশনারি।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্বেশা এবং বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট এর মধ্যে পার্থক্য কি?
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্বেশা একটি কিউব স্যাটেলাইট। কিউব স্যাটেলাইট হলো খুবই ছোট আকারের (১০ সেমি x ১০ সেমি x ১০ সেমি) এবং হাল্কা (১.৩৩ কেজি) স্যাটেলাইট। কিউব স্যাটেলাইট স্থাপন করা হয় LEO অরবিট এ। LEO অরবিট কি তা উপরে আলোচনা করেছি একবার তাই আর বললাম না। ব্র্যাক এর অন্বেশা ৩রা জুন, ২০১৭ তে লঞ্ছ করা হয় Falcon 9 রকেট দিয়েই। ব্র্যাক এর অন্বেশা ছবি তুলতে পারে। এর মেমরি তে পৃথিবী থেকে ডাটা আপলোড এবং ডাউনলোড করা যায়। Kyushu Institute of Technology এর Birds-1 প্রোগ্রাম এর আন্ডারে এটি মহাকাশ এ প্রেরন করা হয়। এই প্রোগ্রাম টি হলো যে সব দেশের কখনো কোন স্যাটেলাইট ছিল না তাদের কেও মহাকাশে স্যাটেলাইট স্থাপনে সাহায্য করার একটি প্রজেক্ট। ব্র্যাক অন্বেশা এর গ্রাউন্ড স্টেশন আছে বাংলাদেশ এ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এর উপরে, থাইল্যান্ড এ এবং তাইওয়ান এ। এটির মূল্য ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা ।
অপর দিকে বঙ্গবন্ধু–১ একটি GEO অর্বিট এর স্যাটেলাইট এবং অন্বেশার থেকে আকার, ওজন এবং কর্ম ক্ষমতায় অনেক গুন বড় যার বর্ননা ইতমধ্যে উপরের লেখা গুলোয় আমি দিয়েছি।


বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দিয়া আমাদের লাভ কি?

আমি খুব মোটা দাগ এর তিনটা লাভ এর কথা বলি।
১। মহাকাশ এ পদার্পন এর শুরু টা হচ্ছে সরকারি ভাবে। এরপর মহাকাশ আর বড়লোক দেশের জিনিষ বলে থাকলো না।

২। ধরেন একটা দেশি টিভি চ্যানেল আমেরিকা বা জাপান এ তার চ্যানেল দেখাইতে চায়। তাইলে তার কি করতে হবে। তার চ্যানেল এর সিগ্ন্যাল বিদেশি একটা স্যাটেলাইট এ আপ লিঙ্ক করতে হবে। বিদেশের কোন ক্যাবেল টিভি কম্পানি তার ডিশ এন্টেনা ব্যাবহার কইরা সেই সিগ্ন্যাল ডাউনলিংক কইরা নামাবে তারপর কেবল দিয়া ঘরে ঘরে দিবে। অথবা গ্রাহক নিজেই সেট টপ বক্স এবং ভিস্যাট বসায়া নামায় নিবে। এই আপলিঙ্ক এর জন্য টিভি চ্যানেল গুলার বর্তমানে বছরে ১২৫-১৩০ কোটি টাকা খরচ হয়। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট এর সাথে আপলিঙ্ক করলে এই খরচ টা কম হবে। আর আরো বড় কথা হইল দেশের টাকা দেশের প্রতিষ্ঠান ই পাবে।

৩। আমাদের নিজশ্ব স্যাটেলাইট এক্সপার্ট তৈরি হবে। আমরা যখন মহাকাশ গবেষনা শুরু করব NASA কিংবা ইন্ডিয়ার মত নিজেদের রকেট থাকবে আমাদের, তখন এদের কাজে লাগবে। আমাদের শিশুরা এই স্বপ্ন টা দেখে বড় হতে পারবে। আমরা যখন ছোট বেলায় ইউরি গ্যগারিন, নীল আর্মস্ট্রং এর গল্প পড়সি, স্পুটনিক-১ এর ছবি দেইখা ওয়াও বলসি তখন কি চিন্তাও করতে পারসি কোনদিন যে আমাদেরও নিজেদের স্যাটেলাইট হবে।

আমি প্রচন্ড রকম দেশ পাগল মানুষ। আমার দেশের সব কিছু নিয়া গর্ব লাগে। আমার প্রিয় এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তাই আমার দেশের নিজেদের প্রথম স্যাটেলাইট নিয়া আমার উৎসাহের কোন সীমা পরিসীমা নাই। ঈদ ঈদ লাগতাসে। আমি যা কিছু পড়সি, জানসি তা সব ই এই ভাল লাগা থেইকা। ভুল ভাল কিছু থাকলে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিয়েন।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৫২
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×