somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদিবাসী নিয়ে বাংলাদেশের কত রঙ্গ

০২ রা মার্চ, ২০১২ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ সরকার আদিবাসীদের নিয়ে কেমন রঙ্গতামাশা করছে নিচের দু’টো ছবি দেখলে যেমন হাসি পায়, তেমনি বাঙাল শাসকদের মানসিক দৈন্য দেখে খুবই কষ্ট হয়। যারা জাতিকে নেতৃত্ব দেয় তারা যদি এত নিচু মনের অধিকারী হয়, তাহলে তাদের কাছ থেকে ছোট ছোট আদিবাসী জাতিগুলো কী আশা করতে পারে? নিচের ছবিগুলো দেখুন।

আগের ছবি


এটা হলো আগের ছবি। কোন এক পর্যটন কর্মকর্তা হয়তো ভেবেছিলেন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে গেলে অনেক বিষয় বিদেশীদের কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন, অন্তত জাতিবৈচিত্র্যের কথা তুলে ধরা উচিত বহি:বিশ্বের কাছে। এটা তুলে ধরার অন্যতম উপযুক্ত জায়গা হতে বিমানবন্দর। সে কারণে হয়তো সেই রুচিশীল কর্মকর্তা পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নারীদের ঐতিহ্যবাহী রঙিন পোষাকে ছবি তুলে বড় ফ্রেমে বাঁধাই করে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দেয়ালে টানিয়ে রেখেছে। রাজনীতির মাঁরপ্যাচ না বুঝে হোক কিংবা অত্যন্ত খোলা দিলে তিনি স্পষ্ট করে ক্যাপশনে লিখে দিয়েছেন, ”Smiling Indigenous Women of Chittagong Hill-Tract".

পরের ছবি (এখনকার ছবি)

কিন্তু আদিবাসী নারীদের হাসিমুখের এই ছবি হয়তো কোন বড় কর্মকর্তা বা রাজনীতিবিদের নজর কেড়েছিলো কোন একদিন। ঐ বড়বাবু হয়তো খুব ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন ”Smiling Indigenous” শব্দ দেখে। এমনও হতে পারে বিমানবন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত বকুনি খেয়েছিলেন কখনো। ফলে আক্রোশ গিয়ে পড়ে ঐ ”Smiling Indigenous” শব্দ দু’টোর উপর। শুরু হয় ঘষামাজা। এই চিত্রটা দেখুন নিচের ছবিতে।


Figure 2 ...Women of Chittagong Hill-Tract

এখানে ’Smiling Indigenous’ শব্দ দুটো আর নেই। কেবল আছে “Women of Chittagong Hill-Tract”।

বন্ধুরা এখন আপনারা কল্পনা করে দেখুন, বিমানবন্দরের বড়বাবুকে কীভাবে ঐ ছবির উপর অত্যাচার করতে হয়েছিলো। ’Smiling Indigenous’ উঠাতে গিয়ে তাকে বা তার সাঙ্গপাঙ্গদের ছবির উপর কতই না আঁচড় দিতে হয়েছিলো। হয়তো ব্যবহৃত হয়েছিলো ধারালো কোন যন্ত্র, আর যন্ত্রের দাগ মুছতে গিয়ে হয়তো ব্যবহৃত হয়েছিলো কোন প্রলেপ, যাতে অন্যরা মানে বিদেশীরা বুঝতে না পারে ঐ ছবির উপর কতই না অত্যাচার জুলুম চলেছিলো!

এখন আরো কল্পনা করে দেখুন, “আদিবাসী”শব্দ মুছতে গিয়ে ছবির উপর যদি এরকম আক্রমণ চলতে পারে, তাহলে বাস্তব জ্যান্ত আদিবাসীদের মুছতে গিয়ে শাসকরা কী করেছিলো? সেনাবাহিনী কী করেছিলো? অস্ত্র, বেয়নেট, গুলি আর তার উপর ছিলো সেটেলার। মনের চোখে দেখলে স্পষ্ট অনুভব করা যায়, আদিবাসীদের নিশ্চিহ্ন করতে বাঙাল বড়বাবুরা কী করেছিলেন।

আরো দেখুন, এখানে ছবির উপর ঘষামাজা চলেছিলো। অর্থাৎ টেম্পারিং চলেছিলো। এটাও এক ধরনের চরম নীতিহীন কাজ। মানে দুর্নীতি। এতদিন শুনে আসছি টাকা পয়সা নিয়ে দুর্নীতি। বর্তমান সময়ের আলোচিত দুর্নীতি হলো পদ্মাসেতুর দুর্নীতি। অবশ্য পদ্মাসেতু প্রথম দুর্নীতি নয়। বাংলাদেশ এর আগেও পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো দুর্নীতি নিয়ে।

এখন সেই টাকা মেরে খাওয়ার দুর্নীতির সীমা ছাড়িয়ে বাঙাল নেতারা, বড়বাবুরা ‘আদিবাসী’ শব্দ নিয়েও দুর্নীতি শুরু করেছেন। অর্থাৎ ছবির উপর টেম্পারিং করে আদিবাসী শব্দ মুছে দিতে চাচ্ছেন বিভিন্ন জায়গা থেকে। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে টানানো এই ছবিই তা প্রমাণ দিচ্ছে।

হা! হা! হা! বাংলাদেশ সরকারের এত আদিবাসী ভয়! ভয়ে এখন বাংলাদেশ দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছে। আদিবাসী শব্দ মুছে দিলেই কী আদিবাসীরা মুছে যাবে? এটা কোন বাঙাল বাবুর বুদ্ধি?বাঙালদের দুর্নীতি চলতে থাকুক। আর আমরা আদিবাসী হা হা হা করে হাসতে থাকি।

----------------------
অডঙ চাকমা, ১ মার্চ ২০১২
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১২ রাত ৯:৪১
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×