somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দারিদ্র বিমোচনে অংশ নেয়ার গল্প

১০ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বের লোকসংখ্যা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে । যদিও কিছু উন্নত দেশ ও অঞ্চলের জনগণ বিলাসী জীবন উপভোগ করছে । কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে অনেক লোকচরম দরিদ্র অবস্থায় জীবনযাপন ধরে । বর্তমানে দারিদ্র বিমোচন জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে পরিণত হয়েছে । আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের জন্য চীন সরকারের আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচনে অংশ নেয়ার গল্প বলবো। এবারের সেমিনারের অনেক তাত্পর্য রয়েছে । চীনের দারিদ্র বিমোচনের অভিজ্ঞতা শেখা আমাদের শ্রীলংকার দারিদ্র বিমোচন কাজের জন্য অনেক সহায়ক হবে ।

আপনারা শুনতে পাচ্ছেন শ্রীলংকার অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার দক্ষিণ এশিয় দারিদ্র বিমোচন নীতি ও কার্যকরী কর্মকর্তাদের সেমিনারের সময় সংবাদদাতাদের জানানো বক্তব্য । চীন আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের উদ্যোগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল , শ্রীলংকা এবং আফগানিস্তানসহ ৫টি দেশ থেকে আসা ২০ জন কর্মকর্তা এবারের সেমিনারে অংশ নিয়েছেন । ২০০৪ সালে শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্ব দারিদ্র বিমোচন সম্মেলনে চীন সরকার বিশ্বের দারিদ্র বিমোচন ও উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং নিজদেশের দারিদ্র বিমোচন সমস্যা সমাধান করার পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে আঞ্চলিক ও বিশ্বের দারিদ্র বিমোচন কাজে অংশ নিয়েছে । চীন সরকার এবং জাতিসংঘের উন্নয়ন পরিকল্পনা কার্যালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ২০০৫ সালের ১৬ মে চীন আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় । সেমিনার চলাকালে সেমিনারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ,আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের গবেষক ডক্টর হুয়াং ছেং ওয়েই সাংবাদিকদের কাছে এ কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরেছেন । তিনি বলেছেন, আমাদের কেন্দ্র পরিষদের প্রশাসন পদ্ধিতে চালু হয় ।এর সদস্য চীন সরকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, বাণিজ্যমন্ত্রণালয়, উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটি , জাতিসংঘের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা কার্যালয় এবং বিশ্ব ব্যাংক ।

আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের দায়িত্ব হচ্ছে : দারিদ্র বিমোচনে প্রশিক্ষণ দেয়া, দেশের মধ্যে দারিদ্র বিমোচনের অভিজ্ঞতা বিনিময় করা এবং দারিদ্র বিমোচন বাস্তবায়নে গবেষণা করা । উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষ করে আফ্রিকা ও এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলো আমাদের সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে । কারণ এ দু'টি অঞ্চলের দরিদ্র লোকসংখ্যা বেশি এবং দারিদ্র বিমোচন কাজের কার্যকর অবস্থা দুর্বল । আশা করি আমাদের সেমিনারের মাধ্যমে চীনের সফল দারিদ্র বিমোচন অভিজ্ঞতা প্রচারিত হবে এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে অভিন্ন দারিদ্র বিমোচন সামর্থ্য উন্নত হতে সক্ষম হবে ।

জানা গেছে, এ পর্যন্ত চীন আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্র বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশের ১৬০জন উচ্চ ও মাঝারি পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে । তাঁদের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের কর্মকর্তা ৭ জন । বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তারা সেমিনারের প্রশংসা করেছেন । ৩ জন মন্ত্রীসহ অনেক কর্মকর্তা স্বদেশে ফিরে যাওয়ার পর দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের কাছে ধন্যবাদপত্র পাঠিয়েছেন এবং চীন সরকার ও দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের সেমিনারের উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন ।

এবারের সেমিনার ১৫দিনব্যাপী। সেমিনারে বিষয় ছিল চীনের মৌলিক অবস্থা ,অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়ন নীতি, চীনের দারিদ্র বিমোচনের সফল অভিজ্ঞতা এবং দারিদ্র বিমোচন নীতি ও বাস্তবতা তুলে ধরা । প্রশিক্ষণের পদ্ধতি হল তত্ত্বের ব্যাখ্যা, অভিজ্ঞতার বর্ণনা, ঘটনার বিশ্লেষণ এবং আলোচনা । সেমিনার চলাকালে সকল কর্মকর্তা চীনের ছোংছিং গিয়ে স্থানীয় দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করেন এবং দরিদ্র অঞ্চলের শ্রমিক শক্তির হস্তান্তর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যান ।

ছোংছিংয়ে পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে ডঃ হুয়াং বলেছেন, বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তাদের চীনের দরিদ্র লোকসংখ্যা বেশি থাকা প্রদেশ পরিদর্শন করানোর উদ্দেশ্য হল তাঁদের ভালভাবে স্থানীয় অঞ্চলের অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়ন বোঝানো এবং তাঁদের জন্য চীনের দারিদ্র বিমোচন পদ্ধতি ও চীনের উন্নয়নের জন্য অসম্মান দেখানো । যাতে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার পর তাঁরা ভালভাবে এসব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে স্বদেশের দারিদ্র বিমোচন সমস্যা সমাধান করা যান ।

সংবাদদাতা সেমিনারে অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তাদের সাক্ষাত্ নিয়েছেন । তাঁরা পৃথক পৃথকভাবে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন । নেপালের অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কাইলাশ রাজ পোখারেল বলেছেন, এবার হচ্ছে আমার প্রথমবার চীন আসা । এবারের সেমিনারে অংশ নিতে পেরে আমি খুবই আনন্দ রোধ করছি । চীন সরকার আমাদের জন্য দারিদ্র বিমোচন অভিজ্ঞতা শেখার সুযোগ দেয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ থেকে আসা অর্থমন্ত্রণালয়ের তিন জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেমিনার ক্লাসের শেষে আমাদের সাক্ষাত্কার দিয়েছেন । তাঁরা পৃথক পৃথকভাবে দারিদ্র বিমোচন সম্পর্কে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন । যদিও চীন আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের বয়স মাত্র ২ বছর ,কিন্তু তারা ইতোমধ্যে অনেকবার নানা ধরনের সেমিনার আয়োজন করেছে এবং প্রতি বছর কমপক্ষে একবার বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিনিময় কার্যক্রম ,৩ বা ৪ বার প্রশিক্ষণ ক্লাস এবং ৪ বা ৫ বার আন্তর্জাতিক আঞ্চলিক সেমিনার আয়োজন করে । তা ছাড়া, দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্র চীন সরকারের বৈদেশিক ত্রাণসাহায্য কার্যক্রমে সাহায্য দেয়ার জন্য সক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং আশা করে, সহযোগিতার মাধ্যমে কিছু দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে । যাতে আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কাজে আরো বেশি অবদান রাখা যায় ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ২:৩৩
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×