somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাপড় পেয়েছেন ময়না-জরিনা, তবে শাদা...

১৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তারা তখনো জানতো না এমন করুণ পরিণতি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। সামান্য একটু সাহায্য নিতে আসা তাদের সারাজীবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে।

ঈদের নতুন কাপড় কে না চায়, তেমনি এক চাওয়া পাওয়ার আশায় জাকাতের শাড়ির জন্য দাঁড়িয়েছিলেন জরিনা বেগম। কিন্ত যে দারিদ্রের জন্য নতুন কাপড় নিতে আসা সেই কাপড় তার আর কোনোদিন নেয়া হবে না। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাকাতের কাপড় নিতে আসা সঙ্গী লোকজনের পদদলিত হয়ে মারা যাওয়া তিনজনের একজন তিনি।

সমাজের নিচু শ্রেণীর এ সকল লোকজন বিত্তবানদের সহায়তা নিতেই লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু এমন যে হবে কে ভেবেছিল! আর তাইতো হাসপাতালের বারান্দায় এইসব হতভাগাদের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠে। সেখানে থাকা অন্য লোকজনও চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি।

বিশেষ করে জরিনা বেগমের বোন হাবলা বেগমের কান্না সবার হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। লালমনিরহাট থেকে বছর তিনেক আগে ঢাকায় আসা এই দুই বোন বাসা বাড়িতে কাজ করে জীবনযাপন করছিলেন। এবারের ঈদে তেমন কোনো আয় না হওয়ার কারণে নতুন কাপড়ের আশায় দুই বোন-ই লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু ভাগ্যক্রমে এক বোন বাঁচলেও মারা যান অন্যজন।

শুধু যে নিহতরাই হাসপাতালে এসেছে তা নয়, যারা আহত হয়েছেন কিংবা যাদের গায়ে মালেক মার্কেটের মালিকপক্ষের দারোয়ানদের লাঠি পড়েনি তেমন লোকও এসেছেন হাসপাতালে।

কেউ চিকিৎসা নিতে কেউ বা এই শোকে শামিল হতে।

মারা যাওয়া অপর নারী ময়না বেগমের এক নিকট আত্মীয় কান্নাকাটি করছেন। তবে নিহত বৃদ্ধ আর এক নারী যার এখনো পরিচয় পাওয়া যায়নি, সেই নারীর দিকে তাকালেও চোখের জল ধরে রাখতে পারছে না কেউ। জীবনের শেষ বয়সে এসে একটা নতুন কাপড় নিতে এসে সারা জীবনের জন্য চলে গেলেন তিনি। এখন অবশ্য নতুন কাপড় তিনি নিশ্চিতই পাবেন, তা হচ্ছে কাফনের সাদা থান।

হয়তো এর আগে জীবনের সঙ্গে কতই না সংগ্রাম করেছেন, কিন্তু এখন আর তাকে সেই যন্ত্রনা ভোগ করতে হবে না, কারো সামনে একটি টাকার জন্য হাত পাত হবে না। সেই না ফেরার দেশে গিয়েই তিনি মুক্তি হলেন।

শোষণ-শোষক নিয়ন্ত্রিত এই ভোগবাদী সমাজের নিষ্ঠুর বিড়ম্বনার শিকার এই সকল মানুষেরা সামান্য একটু সহযোগীতা নিতে এসে লাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। সাহায্য নিতে এসেও ভাগ্য তাদের সহযোগীতা করছে না। তাহলে তারা দাঁড়াবে কোথায়! এমন প্রশ্ন হাসপাতালের বারান্দায় আহাজারিরত মানুষের।

সাথে সেই পুরনো প্রশ্ন ফের ঘুরপাক খাচ্ছে-- জাকাতের শাড়ি-লুঙ্গি বা টাকা নিতে আবারও তো যাবে তারা লাইন দিতে অন্য কোনো ‘মালেক ‍মার্কেটে! আবার ঘটবে এরকম ঘটনা, মরবে অসহায় মানুষ, মিডিয়াকর্মী আর পুলিশ ছুটে যাবে। আবার লাশ যাবে মর্গে, মানবিক রিপোর্ট হবে পত্রিকার পাতায়।

কিন্তু কোনোভাবে কি বন্ধ করা যায় না এটা!

সুত্র- View this link
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×