somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিশির সাথে পাশাপাশি কাছাকাছি কিছুক্ষন !!

০৩ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরীবাগের ওভার ব্রীজটার কাছে এসেই মনটা খারাপ হয়ে গেল । ওভার ব্রীজটা পার হলেই নিশি রিক্সা নিবে । রিক্সা নিয়েই চলে যাবে । কেমন করে সময় চলে গেল । প্রায় তিন ঘন্টা নিশির সাথে ছিলাম অথচ মনে হচ্ছে যেন আধা ঘন্টাও হয় নি ।
বেটা আইনষ্টাইন ঠিক কথাই বলেছিল । পৃথিবীতে সব কিছুই আপেক্ষিক । আসলেই সুসময়টা বড় জলদি চলে যায় ।
আমি নিশির দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে । খানিকটা অবক হলাম । এমন ভাবে তাকিয়ে আছে কেন মেয়েটা !! আমি বললাম
-কি ব্যাপার ?
-নাহ । কোন ব্যাপার না ।
নিশি সুন্দর করে হাসল । বলল
-সময়টা তাড়া তাড়া চলে গেল তাই না ?
-হুম ।
আমার মনটা ভাল হয়ে গেল ! তার মানে ওর কাছেও হয়তো আমার সঙ্গ ভাল লেগেছে !!
নিশি আবার হাসল ।
-তোমার সাথে সময় ভাল কাটলো । ইস !! কেন যে আরো আগে তোমার সাথে মিশি নি ।
নিশির কথাটা শুনে কেন জানি মনের ভাল লাগাটা আরো একটু বেড়ে গেল । আসলেই নিশির সাথে আরো আগে কথা বললেই হত । এমতেই শুধু শুধু ভয় পেয়েছি । ভেবেছি কথা বলতে গেলে নিশি কি না কি মনে করে !
তাই নিশিকে ভাল লাগলেও ওর কাছে যেতাম না এই ইতস্তত মনোভাবের কারনেই ।
আমি ভেবেছিলাম হয়তো কোনদিন ওর সাথে আমার কথাই হবে না । কেবল ওকে দুর থেকে দেখেই যাবো । কিন্তু একদিন কেমন করে যেন নিশির সাথে কথা হয়েই গেল ।
শরীফ স্যার আমাদের এসাইনমেন্ট দিয়েছিল আর বলেছিল যে দুজন করে একটা গ্রুপ করতে । এবার দুজন মিলে এসাইনমেন্ট কম্লিট করতে । আমি ক্লাসে সব সময় চুপচাপই থাকতাম । খুব একটা কথা বলতাম না কারো সাথে । আর আমার গ্রুপ করার কোন ইচ্ছাই ছিল না ।
আমার একা একাই কাজ করতে ভাল লাগে । কিন্তু আর তা হল কই ? ঐদিন ক্লাসের পর ক্যান্টিনে বসেছিলাম এমন সময় নিশিকে আসতে দেখলাম । প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো ক্যান্টিনে কিছু কিনতে এসেছে কিন্তু সরাসরি আমার দিকে এসে আমার টেবিলের উপর ব্যাগটা রাখল ।
আমার বুকটা তখন পনের রিক্টার স্কেলে ভুমিকম্প হচ্ছে । আমার সামনে বসে নিশি বলল
-তোমার সাথে কয়টা কথা বলতে পারি ?
-বল ।
আমার গলাটা কেমন যেন কেঁপে উঠল ।
-আসলে স্যার যে গ্রুপ করতে বলেছিল না , ঐ ব্যাপারে কথা বলতাম ।
আমার মন খানিকটা খারাপ হল । আমি ভেবেছিলাম কি না কি বলবে, কিন্তু এখন দেখি দরকারী কথা !
আমি বললাম
-বল !
-আসলে, স্যার তো দুজন করে গ্রুপ করতে বলেছে কিন্তু আমার না কোন গ্রুপ করা হয়নি । আমি কদিন আসি নিতো তাই ঠিক মত জানতাম না !
-ও আচ্ছা ! আমি কি করতে পারি একটু বলবা ?
-তুমি তো একাই আছো !! আমি তোমার সাথে আসি ?? প্লিজ !!
আমি যতই নিশিকে পছন্দ করি না কেন গ্রুপে মেয়েদের নেওয়া মানে ঝামেলা সৃষ্টি করা । এই মেয়েগুলো কোন কাজ করবে না, কেবল বসে বসে সুফল নিবে ! আর ন্যাক ন্যাকা কথা বলবে !!
কিন্তু নিশিকে না বলা গেল না কিছুতেই ! মেয়েদের এই একটা দিক যে মেয়েদের অনুরোধ সহজে ফেলা যায় না ! অনুরোধের ঢেকি গিলতেই হল ।
অবশ্য আমার খুব একটা সমস্যা হবার কথা না ! আমি এমনিতেও একা একাই কাজ করতাম । সুতরাং ব্যাপর না !
লাভের দিক দিয়ে এটা হল যে নিশির সাথে এখন কিছু কথা হবে !
আমাদের কাজ ছিল পদ্মা ওয়েল কোম্পানীর অফিসে গিয়ে কিছু ডাটা সংগ্রহ করা । স্যার আমাদের ঐ কোম্পানীর উপর একটা রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছিলেন । আমি সিওর ছিলাম যে নিশি বলবে যে আমারতো ঐদিন খুব জরুরী একটা কাজ আছে আমি যেতে পারবো না, তুমি একটু কষ্ট করে যাও না প্লিজ !
আমি সেই রকমই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম । কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে নিশি বলল যে আমি সময় মত পৌছে যাবো !
ঠিক সময় মতই নিশি হাজির হল ।
কিভাবে যে সময়টা চলে গেল বুঝতেই পারলাম না !

ওভার ব্রীজটা পার হবার পর যখন রিক্সা নিতে গেলাম নিশি বলল
-খুব কি জরুরী কাজ আছে কোন ?
-কেন বল না?
আমি অবাক হলাম ওর কথায় ! নিশি বলল
-না মানে, আবার কবে এমন করে আসবো, তোমার সাথে সময়টা ভাল যাচ্ছিল । আরো কিছু ক্ষন থাকা যেত !
আমি যেন আকাশ হাতে পেলাম । এই মেয়েটা বলে কি ? মনটা আসলেই আনন্দে ভরে উঠল । বললাম
-না কোন তাড়া নাই
-তাহলে চল । ঐদিকটাতে একটা সুন্দর রাস্তা আছে ।আমি মাঝে মাঝে আসি এখনটাতে । তোমার ভাল লাগবে !
-চল !
নিশির সাথে হাটা শুরু করলাম ! সত্যি এমন একটা দিন আসবে কখনও ভাবি নি ।

নিশি হাটছে আমার পাশাপাশি !


বিঃদ্রঃ আজ এই লেখা টা লেখার কোন কথা ছিল না । একটা গল্পের শেষ টার জন্য জানি অনেকেই অপেক্ষা করে আছেন । কিন্তু আমি লিখতে পারছি না । মনটা খুব বেশি বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে ! কিছুই ভাল লাগছে না । দয়া করে আরো কিছু সময় অপেক্ষা করেন !!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:০৯
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×