somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ কিডন্যাপার যখন প্রেমিক ;)

২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



"খাইছে এই মাইয়া এই খানে কি ?"

মুখ দিয়ে কথাটা বেরই হয়ে যাচ্ছিল । কোন ভাবে মুখের কাছে এসে আটকে গেল !

প্রথমে মনে হল আমি হয় তো ভুল দেখছি কিন্ত আরেকটু ভাল করে দেখলাম নাহ, কোন ভুল নাই ! সেই মেয়েই ! বয়সে একটু বড় হয়েছে কিন্তু চেহারা একদম পরিবর্তন হয় নি । আরও একটু পূর্ণতা পেয়েছে বলতে আরও একটু সুন্দরী হয়েছে ।

আমি আস্তে করে বসের পেছনে চলে গেলাম ! নিজেকে আড়াল করা নিলাম । গত কালই শুনেছিলাম যে কোন মন্ত্রীর মেয়ে নাকি এখানে আসতেছে ছটি কাটাতে । কিন্তু এই মেয়ে যে আসবে কোন ভাবেই মাথায় আসি নি । আর মনে আসবেই বা কি ভাবে এতো পুরোনো কথা কি মনে থাকে ?
নয় বছর ?
হুম ! আট-নয় বছর তো হবেই !

আমি আরেকবার লবির দিকে তাকালাম । মোট আটজন গান ম্যান রয়েছে । হাবভাব দেখেই মনে হচ্ছে এরা সব সরকারী লোক । ভিআইপিদের সিকিউরিটি দেওয়াই এদের কাজ । মুখে সব সময় একটা গাম্ভির্য মুলক ভাব নিয়ে বসে দাড়িয়ে আছে ।
আমাদের বস মানে হোটেলের মালিক নিজে এসেছে এদেরকে স্বাগতম জানানোর জন্য ! বস আর ম্যানেজার সাহেবের সাথে আমারও তাদের সাথে থাকার কথা ছিল কিন্তু আমি পেছনে চলে এলাম ! কথা বলুক ! বস যা বলার বলুক ! এখনই এখন থেকে কেটে পড়া লাগবে । না জানি মেয়েটা আমাকে চিনতে পারবে কি না ? পাড়ার কথা না, তবুও যদি চিনে ফেলে তাহলে তো খবরই আছে ! পেছন দিয়ে কেটে পড়তে যাবো ঠিক তখনই বস আমার নাম ধরে ডাক দিল !

-এই সাফাত !
-জি স্যার !
-এদিকে এসো !
আমি দুরু দুরু পায়ে এগিয়ে গেলাম ! যখনই মেয়েটার দিকে চোখ পড়লো আমার মত মেয়েটাও চমকে গেল কিন্তু নিজেকে সামলে নিল পরক্ষনেই । বস আমাকে দেখিয়ে বলল
-এ হচ্ছে সাফাত হাসান ! আমাদের এই হোটেলের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার । আপনাদের পুরো টিমের দেখা শুনার দায়িত্বে সাফাত থাকবে ! যে কোন দরকারে সরাসরি সাফাতের সাথে যোগাযোগ করবেন ।

মেয়েটি আমার দিকে এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে দিল । বলল
-আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভাল লাগলো মিস্টার হাসান ! আমি নিহিতা আহমেদ !
আমিও কোন রকম হাত মিলিয়ে মুখে হাসি আনার চেষ্টা করলাম । কিন্তু খুব বেশি কাজ হল না কি না কে জানে ?
কিন্তু নিহিতার মুখের হাসি আমাকে বেশ চিন্তিত করে ফেলল । না জানি মেয়েটা সামনে আমার সাথে কি করবে ?
নাহ ! এই চাকরি করা যাবে না আর ! জেল জরিমানা হয়ে যেতে পারে যদি নিহিতা এখন পুলিশ ডেকে সব কিছু বলে দেয় ! আমার মুখে ভয়ের চিহ্ন দেখে নাকি অন্য কোন কারনে নিহিতা আমার মুচকি হেসে উঠলো !

বেয়ারা ডেকে ওদের রুম দেখিয়ে দিয়ে চট জলদি কেটে পড়লাম ! রুমে গিয়ে ব্যাগ গুছাতে হবে । এখানে থাকা যাবে না মোটেও ! মোটেও থাকা যাবে না !
বস তো এখন ছুটি দেবে না । না দিক, না দিলে চাকরি ছেড়েই এখান থেকে চলে যেতে হবে !

আমি রুমে আসতে আসতেই আমার ফোন বেজে উঠলো ! অপরিচিত নাম্বার !
-অপু সাহেব !!
-কে ?
বলেই মনে হল কে ফোন করেছে । এখানে আমার ডাক না কেউ জানে না । সবাই সাফাত নামে চিনে । এই মেয়ে কেবল আমার চেহারাই মনে রাখে নি আমার নামটাও মনে রেখেছে । এতো বছর পরেও আমাকে মনে রেখেছে দেখে একটু অবাকই হলাম !
নিহিতার কন্ঠ চিন্তে আমার একটুও কষ্ট হল না ! নিহিতা বলল
-অপু সাহেব, ব্যাগ গোছানোর কথা চিন্তাও করবেন না ! যদি আপনি পালানোর চেষ্টা করেন তাহলে কিন্তু সত্যি সত্যিই পুলিশের কাছে আপনার নাম বলবো ! মনে রাখবেন আমার বাবা কিন্ত এখন মন্ত্রী ! সেই কিডন্যাপারদের একজন কিন্তু এখনও ধরা পরে নি !
ভয়ের একটা শীতল স্রোত আমার মেরুদন্ড দিয়ে বয়ে চলল ! কি করবো ঠিক বুঝতে পারলাম না !
নিহিতা বলল
-বিকেল বেলা সমুদ্রে আমরা হাটতে বের হব ! আপনি আমাদের সাথে যাবে ।

নিহিতার কন্ঠস্বর শুনে মনে হল বিকেল বেলা তারা হাটতে যাবে আমাকেও যেতে হবে, এটা সে আমাকে অনুরোধ করছে না, আমাকে আদেশ দিচ্ছে !

এমন বিপদে জীবনে পড়বো কোন দিন ভাবতেও পারি নি ! এখন কি করি ? ব্যাগ গুছানোর কথা বাদ দিলাম ! আমার সব ঠিকানা চাকরীর সময় জমা দেওয়া আছে । আমাকে খুজে বের করতে একটুও দেরি হবে না ! সারা জীবন ফেরারী হয়ে থাকতে হবে তখন ! আপাতত পালানোর চিন্তা বাদ দিলাম !
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বিকেল হতে এখনও কিছুটা সময় বাকি আছে । নিজের ঘরে বসে সেই পুরানো কথা ভাবতে লাগলাম !


তখন বয়স খুব বেশ ছিল না ! সবে মাত্র ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি ! রাজনীতির সাথে সক্রিয় ভাবে জড়িত । একদিন বড় এক ভাই একটা বিশেষ মিশন দিয়ে আমাকে ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গায় পাঠালো ! কাজ হল এখানকার বিরোধী দলীয় এমপীর মেয়ে কিডন্যাপ করতে হবে ! এবং কাজটা করতে হবে বেশ সাবধানে । এলাকার কেউ যাতে চিনতে না পরে এই জন্য অন্য নতুন লোক হিসাবে আমাকে যেতে হচ্ছে । সম্পুর্ন দায়িত্ব আমার উপর থাকবে ।

কয়েকদিন কেবল লক্ষ্য রাখলাম মেয়েটা কখন কখন স্কুলে যায় আর কখন কখন প্রাইভেট পড়তে যায় ! শহরের একেবারে শেষ মাথায় মেয়েটা রিক্সা করে যায় পড়তে । সন্ধ্যার কিছু আগে ফেরৎ আসে । খুব বেশি কষ্ট হল না কাজ সারতে ।
মেয়েটাকে ক্লোরোফম শুকিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে ফেলতে সর্বমোট দুই মনিটের মত সময় লাগলো ! তারপর গাড়ি দ্রুত এগিয়ে চলল যশোরের দিকে । জায়গা আগে থেকেই ঠিক করা ছিল ! আমাদেরকে বলা ছিল কোন ভাবেই সেফ হাউজ থেকে বের হওয়া যাবে না । একেবারে মেয়েটাকে নিয়ে গায়েব হয়ে যেতে হবে ! এরই সাথে এটাও নির্দেশ ছিল যে মেয়ের যাতে কোন প্রকার ক্ষতি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখে হবে !

আমার সাথে পিন্টু নামের একটা ছেলে ছিল ! স্থানীয় আমাদের দলের একজন ! পিন্টুর হাবভাব আমার কাছে শুরু থেকেই খুব বেশি ভাল লাগছিল না ! একদিন সেফ হাউজের অন্য রুমে শুয়ে আছি হঠাৎই মেয়েটার গোঙ্গানির শব্দ কানে এল । তাড়াতাড়ি রুমে গিয়ে দেখি পিন্টু মেয়েটার সাথে জোর জবরদস্তি করার চেষ্টা করছে । ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে নেশা করেছে ।

কোন কিছু না ভেবে পিন্টুর কোমড় বরাবর একটা জোড়ে লাথি মারলাম ! এমনিতেও শরীরে কিছু ছিল না, তার উপর নেশা করে শরীরে উপর ব্যালেন্স একদম নেই ! উপরে গিয়ে পড়লো দুরে ! মেয়েটা ততক্ষনে আমার পিছনে এসে দাড়িয়ে । চোখ ফেটে জল বেড়িয়ে পড়েছে । পিন্টু তখনও উঠতে পারি নি ! কাছে গিয়ে আরও দুটো লাথি মারলাম ! আর উঠলো না ।

মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখি তখনও তার কান্না থামে নি ! বেশির ভাগ সময় মেয়েটা অজ্ঞানই ছিল । প্রথমে যখন জ্ঞান ফিরে তখন একটু চিৎকার চেঁচামিচি করলেও সামলে নিয়েছিল ।

মেয়েটার হাট ধরে গাড়ির কাছে নিয়ে এলাম ! তারপর গাড়িতে করে শহরের শেষ মাথায় পৌছে দিলাম ! যখন আমি ওকে নামিয়ে দিলাম তখন মেয়েটা ঠিক মত বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে আমি ওকে ছেড়ে দিচ্ছি ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-চলে যাবো ?
-হুম ! যাও !
-পেছন থেকে এসে আর ধরবেন না তো ?
-যদি ধরবো তাহলে ছেড়ে দিচ্ছি কেন ? সামনে ঐ যে দোকান আছে ওখান থেকে ফোন কর ! কেমন ? ভাল থাকো ! আর পারো তো তোমার আব্বার কাছে চলে যেও ! এখানে থাকা টা তোমার জন্য নিরাপদ না !
-হুম !
আমি যখন গাড়ির গেট বন্ধ করলাম তখন মেয়েটা জানলা দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আপনি মানুষ হিসাবে খারাপ না ! এসব কাজ কেন করেন ?
বললাম
-টাকা অনেক দরকারী একটা জিনিস ! এখন বুঝবে না আরেকটু বড় হও তখন বুঝবে !

তারপর গাড়ি ঘুরিয়ে চলে আসি ! মেয়েটার সাথে আর হয় নি । পরে শুনেছি যে পিন্টু নাকি ধরা পরেছে । সাথে সাথে আরও অনেকেই ধরা পরেছে । কিন্তু আমি স্থানীয় ছিলাম না বলে কেউ আমাকে আইডেন্টিফাই করতে পারি নাই ! তারপর সরকার বদলেছে । অনেক কিছুই বদলেছে । পড়ালেখা শেষ করে আমি অন্য দিকে হেটেছিল ! সব কিছু ভালই চলছিল কিন্তু এতো দিন পরে আবার কোন বিপদ এসে হাজির হল !



নিহিতা সমুদ্রের পানি ঘেষে হাটছে আমার পাশাপাশি ! ওর বন্ধুরা সবাই আরও সামনে ! আমি কোন কথা বলছি না ! কি বলবো খুজেই পাচ্ছি না ! কি বলবো !
নিহিতাই প্রথম মুখ খুলল ।
-এখানে কত দিন ?
-এই তো বছর দুয়েক !
-আগের কাজ ছেড়ে দিয়েছেন !
-এখন তো আমাদের সরকার নেই !
-তারমানে আপনাদের সরকার আসলে আবার শুরু করবেন ?
-আরে কি বলেন ! আবার শুরু করবো কেন ? ওসব ছেড়ে দিয়েছি ! অনেক আগেই !
-আমি কোন দিন ভাবি আপনার সাথে এখানে এভাবে দেখা হয়ে যাবে ! তবে আবার যে দেখা হবে এটা আমি জানতাম !
-জানতেন ?
নিহিতা আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো ! বলল
-আগে তো আমাকে তুমি করে বলেছিলেন ! এখন আপনি ?
-ঐ টা একটা অস্বাভাবিক ঘটনা ছিল ! সেটা দিয়ে কোন কিছু বিচার করা ঠিক হবে না ! এটা এখন স্বাভাবিক ঘটনা ! বললেন না কিভাবে জানতেন ?
-কারন আমি আল্লাহর কাছে প্রে করেছিলাম ! এমন কি যখন আমার কিডন্যাপাদের খোজা হচ্ছিল, আমার কাছে বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হচ্ছিল তখন আমি চাচ্ছিলাম আপনি যাতে ধরা না পরেন !
-টিনএজ ইমোশন !
আমি হাসলাম !
নিহিতা বলল
-হয়তো ! কিন্তু সেই আবেগটা এখনও আমার ভিতরে রয়েছে ! বিন্দু মাত্র মরে যায় নি !
আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম ! নিহিতা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল তার আগেও ওর এক বন্ধ এসে ওকে নিয়ে গেল ! আমি ওদের পেছন পেছন হাটতে লাগলাম !

নিহিতার ভাব ভঙ্গি কিছুই বুঝতে পারলাম না । এই মেয়ে আমার কাছে কি চায় কে জানে । এখানে বেড়াতে এসেছে অথচ সারা দিন হোটেলেই বসে থাকে । ওর বন্ধুরা এখানে ওখানে যায় গাড়ি করে কিন্তু ম্যাডাম কোথায় যায় না । সারা দিন এটা দরকার ওটা দরকার ! এবং সব দরকার সব সমাধানের জন্য আমি ছাড়া আর কেউ নেই ।

একদিন বিকেল বেলা নিহিতা আমার আমার রুমে এসে হাসির ! আমি তখন ডিউটি দেওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলাম ।

-আপনি ?
-কোথায় যাচ্ছেন ?
-কোথায় আর ? কাজে !
-তাহলে চলুন ?
-কোথায় ?
-হিমছড়ি যাবো !
-এখন ?
-হুম ! এখন ! আপনিও আমার সাথে যাবেন !
-গত পরশুদিন না আপনাদের সবাই গেল ! তখন তো গেলেন না ?
-যাই নি ভাল লাগে নি তাই । এখন যাবো ।
-যেতে যেতে অনেক দেরি হয়ে যাবে তো ।
নিহিতা হেসে বলল
-আপনি সাথে থাকলে সমস্যা নেই ! আপনি সাথে থাকলে ভয় পাবার কোন কারন নেই !


নিহিতার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি খানিকটা কনফিউশনে পড়ে গেলাম ! মেয়েটা এমন কেন করছে ?
ঐ দিন বেশ রাত পর্যন্ত নিহিতার সাথে এদিক ওদিক ঘোরা-ফেরা করলাম ।
ফেরার পথে হোটেল থেকে কিছু দুরে নেমে পড়ে সমুদ্রের পাড়ে হাটতে লাগলাম ! হাটাহাটি করে যখন একটু ক্লান্ত, একটা জায়গা দেখে বসে পড়লাম দুজনে !
একটা পর্যায়ে যখন সমুদ্র পাড়ে বসে আছি তখন নিহিতা বলল
-কাল চলে যাবো !
-জানি !
-আমি চলে গেলেই তো আপনি বাঁচেন তাই না ? এতো দিন তো আমার সাথে বাধ্য হয়ে থেকেছেন তাই না ? যদি না থাকেন তাহলে আমি যদি পুলিশকে বলে দেই ?
আমি কি বলবো ঠিক বুঝতে পারলাম না !
নিহিতা বলল
-আপনি কি এখনও আমাকে ঠিক বুঝতে পারেন নি । এখানে হঠাৎ করে এসে আপনার সাথে দেখা হওয়া তারপর.... সব কিছু কেমন যেন ওলট পালট হয়ে গেছে !
আমিও আবারও চুপ । সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছি ।
-আসলে ঐ ক্লাস টেন এ পড়ার সময়ই আমার সব কিছু ওলট পালট হয়ে গেছে আমার ।
-ওলট পালট ?

নিহিতা আমার দিকে তাকিয়ে রইলো অদ্ভুদ ভাবে , সেই অদ্ভুদ চাহনীতে কিছু একটা ছিল যেটা আমার মনের ভেতরে খুব জোরে একটা ধাক্কা মারলো ! মনে হল কিছু একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেলি । কিন্তু নিজেকে সামলে নিলাম ।
নিহিতা নিজের চোখের দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে নিল ! তাকিয়ে রইলো দুরে !

আরও রাত করে হোটেলে ফিরলাম । ওকে রুমে পৌছে দিয়ে নিজের রুমে আসতেই কেমন জানি লাগছিল ! মনে হচ্ছিল মেয়েটার প্রতি কি কোন প্রকার অনুভুতি কি জন্মেছে ?
কি জানি !

কিন্তু সকাল বেলা যখন নিহিতারা চলে গেল কেমন জানি লাগতে শুরু করলো নিজের কাছেই ! এমন তো স্বাধারনত হয় না ! বিদায় নেওয়ার সময় আবারও বস হাজির ছিল দেখলাম নিহিতা কেবল আমার দিকে হাত নাড়লো ! আর কিছু বলল না !
যখন চোখের আড়াল চলে গেল তখনই কেমন জানি একটা ফাঁকা ফাঁকা লাগতে শুরু করলো ! নিজেকে ধমক দিয়ে বোঝালাম ! এসব প্রশ্রয় দেওয়ার সময় এখন না ! একবার মনে এখান থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাই ! যদি নিহিতা যদি পুলিশে খবর দেয় ! পরক্ষনেই নিজের মনেই হেসে উঠলাম । নাহ ! এই মেয়ে আমার কোন ক্ষতি হোক সেইটা কোন দিন চাইবে না !


বিকেল বেলা ছুটি নিয়ে একা একাই সমুদ্রের পাড়ে হাটতে বের হলাম ! গতদিন নিহিতা কে নিয়ে যেখানে বসে ছিলাম সেখানেই বসলাম আবার ! কেন জানি একটু শূন্য শূন্য লাগছিল ! মেয়েটা কি সত্যি সত্যিই আমাকে ভালবেসেছিল নাকি অন্য কোন মোহ ছিল !
নিশ্চিত ভাবেই আমি তার চোখে অন্য কিছু ছিলাম যে কি ভাবে এক বিপদের হাত থেকে তাকে বাঁচিয়েছিল ! ঐ বয়সের কোন ঘটনা মনের মাঝে ছাপ বসে রাখতে পারে অজীবন ! এমন হয়তো আমি তার মনে ছিলাম ! এর বেশ কিছু না !

আজকেও রাতেও ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেল ! যখন হোটেলের কাছে এলাম দেখি উপরে ওঠার সিড়ি কাছে একটা ছায়া মূর্তি বসে আছে । নতুন গেস্ট হবে হয় তো ! আমাকে আসতে দেখেই উঠে দাড়ালো ! এতো রাতে স্বাধারনত কেউ এখানে বসে থাকে না !

যাক আমার দেখার বিষয় না ! কিন্তু যখন ছায়া মুর্তিটি আরও কাছে চলে তখন আমি খানিকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলাম ছায়া মুর্তিটা নিহিতা ! আমি কাছে আসতেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে, যেন কোন ভাবেই আমাকে ছাড়বে না ! আমি কেবল বোকার মত দাড়িয়ে রইলাম !
তবে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম যে একটু আগে যে বিষন্ন লাগছিল সেটা আর লাগছে না ! অদ্ভুদ ব্যাপার !




(অনেক দিনের জমানো গল্প । খানিকটা সিনেমা টাইপ হয়ে গেল মনে হয়)
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×