somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ বিবাহ এবং বিবাহ পূর্ব ও পরবর্তি ঘটনা সমূহ :D

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার ইমিডিয়েট বস একজন মেয়ে !

ফেসবুকে আমি সারা জীবন নারীতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছি ! নারীদের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি আর কপালের কি খেল, আমার বস একজন মেয়ে ! উপরওয়ালা মনে মনে হেসেছে আর বলেছে "দাড়া তোকে মজা দেখাই" !

যদিও বস মানে এই না যে সে আমাকে হুকুম করবে আর আমাকে সেইটা করতে হবে ! আমার ডিপার্টমেন্ট আমার কাছে ! এভাবে প্রত্যেকের কাজ আলাদা ! তবুও মেয়েটার পজিশন আমার থেকে একটু উপরে ! বেতনও আমার থেকে একটু বেশি !

প্রথম প্রথম মনে হত চাকরি ছেড়ে দেই । কিন্তু এমন চাকরী ছাড়তে বুকের পাজড়ের হাড় বেশ বড় হওয়া লাগে । আমার এখনও সেই হাড় তত বড় হয় নাই ।
যাক তবুও চেষ্টা চলছে । চাকরি ছেড়ে দিব একদিন !

তবে মেয়েটার সম্পর্কে আর যাই বলি না কেন, মানে ঈশিতার সম্পর্কে আর যাই বলি না কেন, মেয়েটা কিন্তু আসলেই এই পদটার জন্য যোগ্য ! এমআইটি থেকে পড়ে এসেছে । তার যেনতেন রেজাল্ট নিয়ে না । এমন মেয়েগুলো সত্যি আমাদের দেশে আরও কিছু থাকে তাহলে দেশে মেয়েদের চেহারা বদলে যাবে ! কিন্তু সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ । অর্ধেক নারী । সেই অর্ধেক নারীর ভেতরে এই ঈশিতার মত ক'জন থাকে ?
হাতে গোনা কয়েকজন !

আমার ফেসবুকে নারী বিরোধী পোস্ট গুলো আমার অফিসে বেশ জনপ্রিয় ! আমি একেক দিন একেকটা পোস্ট দেই আর সেগুলো নিয়ে অফিসের ফাঁকে ফাঁকে গছিপ হয় ! কেউ কেউ কেবল মজা করে আবার কেউ কেউ খুব সিরিয়াস হয়ে যায় ! বিশেষ করে দু তিন জন মেয়ে আছে তারা ! আমি অবশ্য এসব কিছু মনে করি না ! আমার তর্ক করতে মজাই লাগে ! আর আমার মনে হয় ঈশিতাও ঠিক ঠিক আমার ফেসবুকের কথাবার্তা লক্ষ্য করে ! তার আচরনে তাই মনে হয় ! একটু যেন আমার প্রতি শত্রু ভাবাপান্ন ! অবশ্য আমি তাতে কিছু মনে করি না ! নারী বিরোধী লেখার কারনে সেটা অনেকেই মনে করে । তবে অনেকে মেয়ে কিন্তু সেটা পছন্দও করে ! যাই হোক !

ঈশিতার সব কিছুতেই আমাকে একটা ঝাড়ি মারার চেষ্টা থাকে । কিন্তু সেই সুযোগ আমি তাকে খুব কম দেই ! আমার কাজ আমি খুব ভাল করেই বুঝি ! বিনা করনে অবশ্য সে আমার উপর ভাব নেয় না ! তবে মাঝে মাঝে আমিও সুযোগ খুজি ! একদিন সুযোগ পেলে আমিও তাকে দেখে নেব ! একদিন সেই সুযোগ এসে হাজির !

ঈশিতা আমার বস হলেও তার উপরেও বস আছে । তাকে বিভিন্ন এসাইনমেন্ট দিয়ে থাকে । একদিন ঈশিতা আমাকে তার ডেস্কে ডেকে আমাদের কোম্পানীর কিছু প্রোজেক্টাল কাজ করতে দিল ! আসলে এটা আমার ডিপার্টমেন্টেরই কাজ ! বিশেষ করে আমার কাজ !
ঈশিতা আমাকে বলল
-এটা কাজ টা করে দিতে হবে !

আমি খানিকটা অবাক হয়ে লক্ষ্য করে দেখলাম যে ঈশিতার কন্ঠে সেই আগের মত মনভাব নেই । সেখানে একটা অনুরোধে সুর রয়েছে ! আমি বললাম
-সমস্যা নেই । এটা তো আমারই কাজ ! কবে দিতে হবে ?
-কাল সকালে !
-কি !!!!!

আমি কিছু সময় ঈশিতার দিকে তাকিয়ে রইলাম !
-কাল সকালে ? এক সপ্তাহের আগে এই কাজ করা সম্ভব না ! কোন ভাবেই না ! এটা আপনি যেমন জানেন আমি জানি !
-দেখুন এটা জরুরী !
-জরূরী বললেই তো আর হবে না ! এক সপ্তাহ সময় দিন তাহলে আমি সানন্দে কাজটা করে দিচ্ছি ! কালকে হলে আমি নাই !

আমি ভেবেছিলাম ঈশিতার আমার উপর চিৎকার চেঁচামিচি করবে ! বসের কাছে রিপোর্ট করবে ! কিন্তু সে রকম কিছু হল না ! একটু অবাকই হলাম ! এমন তো হওয়ার কথা না ! নিশ্চয়ই এর ভেতরে কোন কিন্তু আছে !

খোজ নিতে গিয়ে আসল রহস্য বের হয়ে এল ! আসলে কাজটা আমারই করার কথা ছিল ! আমার সবার যে বস, সে আমাকে দেওয়ার কথাই বলেছিল কিন্তু ঈশিতা নাকি নিজে আগ্রহ নিয়ে কাজটা নিয়েছে । বলেছে সে পারবে ! কারনটা বুঝতে আমার মনেই কষ্ট হল না !
কিন্তু আসল ব্যাপার কি, একজন মানুষ যতই যোগ্য হোক না কেন, কিছু ব্যাপার এমন আছে যে সেই লাইনের লোক ছাড়া অন্য কেউ সেটা পারে না ! যেমন আমি হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারি, অন্য যে কোন কিছু রান্না করতে পারি কিন্তু আমার মায়ের মত চমৎকার ভাবে ডাল রান্না করতে আমি কোন দিন পারবো না ! আমার উচিৎ যে ডালটা কিনে এনে মায়ের হাতে দেওয়া যেন তিনিই রান্না করেন ! নিজে যদি মাতব্বারী করে ডাল রান্না করতে যাই তাহলে ফলাফল টা কিছুতেই ভাল হবে না ।
কিন্তু কিছু কিছু মানুষ এটা বুঝে না ! বুঝে ভাল, এবার ঝামেলা সামলাও !

সন্ধ্যায় অফিস থেকে বের হতে গিয়ে একবার ঈশিতার কেবিনে উকি দিলাম ! সে তখনও কেবিনে । জানি আজকে সে বাসায় যেতে পারবে না ! কি যে হল ঠিক বুঝলাম না ! আমি ঈশিতার কেবিনে ঢুকলাম ! হাতের ব্যাগটা এক পাশে রেখে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম
-রাতে আমি বিরানী খাবো ! সাথে কোকাকোলা ! আর যদি একটা আইসক্রিম থাকে তাহলে একটু ভাল হয় !
আমার কথা বুঝতে ঈশিতার খুব একটা কষ্ট হল না ! একটু অবাক হলেও নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো !
-আমি ব্যবস্থা করছি !
-থ্যাঙ্কিউ ! আপনার চেয়ারে বসলে সমস্যা হবে না তো ? নাকি আমি আরেকটা চেয়ার এনে বসবো !
ঈশিতা বসতে ইংগিত করলো !

ঐদিন যখন সব কাজ শেষ করলাম তখন প্রায় ভোর হয়ে গেছে । ওকে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে সকাল বেলা বাসায় চলে গেলাম ! পরদিন অফিসে এসে বুঝলাম অবস্থা একটু পরিবর্তন হয়েছে । অন্তত ওর মনভাব একটু পরিবর্তন হয়েছে । দুপুরে আমাকে সে লাঞ্চ করালো ! এক পর্যায়ে বলল
-আপনি তো খুব নারী বিরোধী ! তা আমাকে সাহায্য করলেন কেন ?
-তাই কি উচিৎ না ? পুরুষেরা তো তাই করে !

আমার কথায় কিছু ছিল দেখলাম ওর মুখ কালো হয়ে গেল ! আর কথা বলল না !

পরের দুই দিন ফেসবুকে আমি সামনে দিতে থাকলাম আমার পছন্দমত পোস্ট ! তৃতীয় দিন ঈশিতা এসে হাজির ! আমার দিকে রাগত স্বরে বলল
-আপনি মেয়েদের ভেবেছেন কি ? পেয়েছেন কি ?
-আমি কি পাবো ?
-আপনার মনভাব এমন কেন শুনি ?
-কেমন ?
-কেমন মানে আপনি জানেন না ? আপনার কি মেয়েদের পেছনে লাগা ছাড়া আর কোন কাজ নেই ?
-আরে আজিব ! আমি তো আমার কাজই করই কি ! আপনাদের পেছনে লাগলাম কিভাবে ? এখন আমার কথার মাঝেখানে যদি আপনারা চলে আসেন তাহলে আমার কি করার আছে বলুন !
ঈশিতা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল
-চলুন আমার সাথে !
-কোথায় ?
-কাজী অফিসে ?
-কেন ? সেকি !
-আপনি যে ধারনা গুলো পেষন করে আজকে সেগুলো ভুল প্রমানিত করবো ! আপনি সেদিন কি বলেছিলেন যে একজন মেয়ে সব সময় তার থেকে উচু লেভেলের কারো সাথে বিয়ে করে ! সংসারে স্বামী অবদান বেশি থাকে ! দেনমোহর ! এন্ড অল দ্যাট বুল শিট ইউ টক এবাউট ! আসুন ! আজকে আপনার সব ধারনা ভুল প্রমানিত করে দিবো !

তার মানে এই ঈশিতা ঠিকই আমার ফেসবুক ফলো করে ! আমি যা যা করি কিংবা বলি সব কিছু মাথায় রাখে ! ভাল তো ! আমি খানিকটা হেসে বললাম

-আপনি পাগল হয়ে গেছেন ! রাইট !
-না পাগল হয় নি ! সেদিন বিয়ে নিয়ে মেয়েদের সম্পর্কে আপনার মনভাব পড়ে আমার মেজা গরম হয়ে গেছে ! আপনি নিজেকে ভাবে কি ?
-এটার মানে এই নয় যে আমাকে আপনার বিয়ে করতে হবে ! তাই না ?
-নাকি ভয় পাচ্ছেন ? ভয় ! আসলে জানি তো আপনাদেরকে ! এরপর থেকে এই রকম পোস্ট দেওয়ার আগে কে ভয় পেয়েছিল মনে রাখবেন !

এর আর চুপ করে থাকা যায় না ! মেয়েদের কে ভয় !
উঠে বললাম
-চলেন !

যদিও জানি কাজটা মোটেই ভাল হচ্ছে না তবুও মেয়েদের কে ভয় !! অসম্ভব !

সত্যি সত্যি ঈশিতার সাথে বিয়ে করে ফেললাম !
১ টাকা দেনমোহরে !

আমাদের সংসারও শুরু হল অন্য ভাবে ।
আমাদের বাসর রাতেই ঠিক হল পরিবারের কোন কর্তা থাকবে না ! সব দায়িত্ব হবে সমান ভাবে ! অধিকারও ঠিক হবে একেবারে সমান সমান !
আমাদের সব কিছু সংসার খরচ থেকে শুরু করে বাজার করা পর্যন্ত একেবারে সমান ভাবে হতে লাগলো ! আমি যা করি ঈশিতাও তাই করে । মাস খানেক যাওয়ার পরে মনে হতে লাগলো আমি কি আসলেই সংসার করছি ! নাকি কোন কম্পিটিশনে আছি ! জেদের বসে কি করে বসলাম ! আসলে মানুষ রাগ কিংবা জেদ করে যে কাজ গুলো করে তার কোন টাই ঠিক হয় না ! ইশিতা নিজে জেদ করে কাজ টা করেছে আমি নিজেও সেরকম টাই করেছি !


তবে একটা কথা বলতেই হবে যে ঈশিতা রান্না খুব চমৎকার করতো ! যদিও প্রতিদিন রান্না করার সময় ছিল না তার তবে রান্নার হাত ছিল চমৎকার ! ছুটির দিন গুলোতে সে রান্না করতো ! আমি ওর রান্না খেয়ে মুগ্ধ সত্যি বলতে কি !

এভাবের দিন যেতে লাগলো ! অফিস করি ! বাসায় আসি ! খাওয়া দাওয়া করে ঘুম ! বিয়ের আগে আর বিয়ের পরের জীবন খুব একটা পরিবর্তন হল না ! কিন্তু একদিন ছন্দ পরিবর্তন হল !

আমার মাঝে মাঝে শরীর কাঁপিয়ে জ্বর আসতো ! একদিন থাকতো ! তারপর আবার ঠিক ! অন্য কোন সময় মনে না হলেই এই সময়ে আমার কেন জানি নিজেকে খুব বেশি অসহায় লাগলো ! বাসায় যাওয়ার উপায় ছিল না কারন এক দিনের জন্য এতো দুরে যাওয়া যায় না ! কিন্তু মায়ের কথা মনে হত খুব ! একা একা ঘরে পড়ে থাকতাম !

এবভার যখন জ্বর এল আমার বেহুসের মত পরে রইলাম ! বিকেলের দিকে যখন একটু হুস আসলো দেখি ঈশিতা আমার মাথায় পানি ঢাকছে ! আমার মাথা মুছে দিচ্ছে ! সন্ধ্যার দিকে আমাকে জোর করে স্যুপ খাওয়ালো ! আমি কিছুতেই খাবো না, সে আমাকে না খাইয়ে ছাড়বেই না ! শেষে আমাকে খেতেই হল !

বিয়ের পর এই প্রথম বারের মত ওকে সেদিন রাতে জড়িয়ে ঘুমালাম ! ও আপত্তি করলো না ! ওর শরীর নরম গন্ধেই যেন আমার শরীর আরও একটু দ্রুত ভাল হতে লাগলো ! অন্যান্য বার জ্বরের সময় আমার নিজের কাছে যেমন অসহায় লাগতো এবার তেমন লাগলো না ! মোটেই লাগলো না !

পরদিন সকালেই আমি মোটামুটি সুস্থ্য হয়ে গেলাম ! তবুও শুয়েই ছিলাম !
ঈশিতাকে দেখলাম তৈরি হচ্ছে অফিসে যাওয়ার জন্য ! আমি বললাম
-কোথাও যাও ?
-অফিস ।
-যেতে হবে না !
-কেন ?
-আমি বললাম এই জন্য !
-শুনো আমি তোমার বস ! তোমার কথা শুনবো কেন ? আর আজকে তোমার শরীর বেশ ভাল !
-বস ! তাই ?
ওর হাত ধরে ওকে খাটের উপর বসালাম ! তারপর ওর কোলের উপর মাথা রেখে বলল
-আজকে যেতে হবে না অফিসে !
-এমন কেন করছো ? এমনিই ককালকে না ছুটি নিয়েই অফসি যায় নি ! আর .....
-বলেছি না, যেতে হবে না !
ঈশিতা হেসে বলল
-কি ব্যাপার আমার নারী বিদ্বেষী স্বামীর আজকে যেন খুব নারী প্রেম জেগে উঠেছে ! শুনো ! দ্য কন্ডিশনস ইস্টিল রিমেইন !
-কি !

আমি উঠে গিয়েই ওকে বলতে গেলে চেপে ধরলাম ! বালিশের সাথে ওর দুহাত দুদিকে চেপে ধরে বলল
-কি বললে ?
-বললাম দ্য কন্ডিশা.........

ওকে আর কথা বলতেই দিলাম না ! তবে এতে খুব একটা আপত্তি করলোও না !

তারপর থেকেই আমাদের সম্পর্ক আশ্চর্যজনক ভাবে বদলাতে শুরু করলো ! আমি যদি ফেসবুকে আমার কাজ করা বন্ধ করলাম না, কিন্তু আমাদের বাস্তব জীবনটা অন্য রকম ছিল ! আমি একেক বার পোস্ট লিখতাম ঈশিতা সেটা পড়তো আর হাসতো ! তখন ও আর অবাক হত না ! বিশেষ করে ও নিজেই মাঝে মাঝে অনেক আইডিয়া দিত ! অবশ্য সম্পর্কটা আরও কাছের হয়েছিলো আরও একটা কারনে !

অফিসের একটা কনফারেন্সই ঈশিতাকে চট্টগ্রামে যেতে হয়েছিল ! আমি ওকে যেতে দিবো না কিছুতেই । অবশ্য সে আমার কথা শুনবে কেন ? এই নিয়ে বেশ কয়েকবার কথা কাটাকাটি হয়ে গেল নিজেদের ভেতরে ! আমাকে কয়েকবার জিজ্ঞস করলো আমি কেন রাজী হচ্ছি না ! আমি অবশ্য বললাম না কেন ! কোথায় যেন একটু বিব্রত লাগছিল কারনটা বলতে ! ও আমাকে রেখেই চলে গেল !

যাওয়ার পর থেকেই ওকে বেশ কয়েকবার ফোন দিলাম । ও কোথায় ? কেমন আছে কোন হোটেলে থাকছে ! আমাকে বারবার বলল যে সে ভাল আছে চিন্তার কোন কারন নেই ! কন্ফারেন্সে ঢুকার আছে বলল যে ফোন বন্ধ থাকবে ! বেরিয়ে ও ফোন দিবে ! ওকে বললাম যে বেরুনোর সাথে সাথে যেন ফোন দেয় !

কাজ শেষ করেই ফোন দিল !
-সব ঠিক ছিল ?
-হুম ! সবই ঠিকই ছিল ! তুমি ? আচ্ছা বলতো তুমি এতো চিন্তা কেন করছো ?
-করছি কারন ......
-হুম ! কি কারন ?
-কারন টা এখনই বলতে হবে ?
-হুম ! নাকি ঢাকায় আসলে তারপর বলবা ?
-না মানে আমি ফোনে বলতে চাচ্ছি না !
-তাহলে ......
তাহলে বলেই ঈশিতা আটকে গেল ! আমি ঠিক তখন ওর সামনেই দাড়ানো ! আসলে সত্যি বলতে কি ঐ দিন রাতে কিছুতেই আমার ঘুম আসে নি ! পরদিন সকালেই প্রথম ফ্লাইট ধরে চলে এসেছি !

ঈশিতা ফোন রেখে কিছুটা সময় আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ! ওর মুখে আনন্দমাখা হাসি দেখে আমার নিজের কাছে অদ্ভুদ রকম ভাল লাগলো ! এমন সময় ঈশিতা আরেকটু পাগলামো করলো ! আমার দিকে একটু দৌড়ে এসেছি আমাকে জড়িয়ে ধরলো ! এতো গুলো মাঝে ছিল আসে পাশে সেদিকে আমাদের কারো খেয়াল নেই ! আমাকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় ঈশিতা বলল
-নারীবিরোধী স্বামীর জন্য এতো স্ত্রী প্রেম কিন্তু ভাল না ! বুঝছো ! দ্য কন্ডিশনস .....
-স্টিল রিমেইন ?


কন্ডিশন তো অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে ! ঈশিতা বলল

-আর যদি সত্যি মুখ ফুটে বলতে এখানে আমাকে কেন আসতে দিতে চাও নাই আমি কিন্তু আসতাম না ! কিন্তু তুমি তো বল নাই ! আর শেষে এখানে এসে হাজির ! তা জনাব হারটা কার হল শুনি ?
-হুম ! পুরুষতন্ত্র আর নারীতন্ত্র আপাতত এক পাশে সরিয়ে রাখি !
ঈশিতা কিছু না বলে হাসলো । তারপর বলল
-কেন এতো চিন্তা কর শুনি ? আমি ছোট খুকি না ।
-আই নো ! কিন্তু চিন্তা করি এই জন্য না যে তুমি সব কিছু ঠিক মত সামলাতে পারবে না । চিন্তা করি বিকজ আই কেয়ার ! উই কেয়ার ! যদি তোমার কোন বিপদ হয় আর সেখানে আমি না থাকি তাহলে আমি সারাজীবন নিজের কাছে নিজে অপরাধি হয়ে থাকবো ! আমার কেবল মনে হবে তোমার পাশে আমার থাকার দরকার ছিল কিন্তু আমি ছিলাম না ! আমি.......

আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে হাত দিয়ে আমাকে চুপ করে দিল !
-দ্য কন্ডিশনস স্টিল রিমেইন ?
-উহু !

তারপর থেকে ..... যদিও এখনও আমার বউ আমার নিজের বস হয়ে আছে কিন্তু .......

থাক কিছু না কথা থাক না গুফুনে.....
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১২
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×