somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিনটি অনুগল্প

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গল্প এক

দুইবার রিং বাজার পরে মীম কিছু একটা না করে থাকতে পারলো না । খুব ভাল করেই জানে যত সময় না অপুর ফোন না ধরা হবে ততক্ষন যে ফোন করেই যাবে । কিন্তু এখন যে কথা বলবে সেটার কোন উপায় নেই । মীমের পাশেই ওর আম্মু শুয়ে আছে । শীতকালে ও প্রায়ই সময়ই ওর মায়ের পাশে ঘুমায় । অনেক দিনের অভ্যাশ ।
ও অপুর ফোনটা কেটে দিয়ে মেসেজ পাঠালো ওকে !
"কি ব্যাপার ফোন দিতেছো কেন ?"
"কথা বলবো"
"বাহ । সারা দিন কথা বলার টাইম নাই ওনার এখন মাঝ রাতে আইছে কথা বলার জন্য । যাও ভাগো"
"কথা বলবো"
"না ! মা আছে পাশে । আমি কথা বলতে পারবো না"
"আমি কথা বলবো"
"যা ইচ্ছে কর ! আমি এবার ফোন বন্ধ করে ঘুমাবো । দেখি তুমি কিভাবে আমাকে ফোন কর"
"এই খবর দার বলছি ! ফোন বন্ধ করবা না কিন্তু"
"করবো ! কি করবা তুমি শুনি ? কি করবা ?"
"কি করবো ? তুমি ফোন বন্ধ করবা আর এখন তোমাদের ল্যান্ডলাইনে ফোন করা শুরু করবো ! তুমি আমাকে চিনো না"
মীম কি করবে ঠিক বুঝলো না । কদিন আগে ফোনে ব্যালেন্স না থাকায় বাসায় ল্যান্ড ফোন দিয়ে ফোন দিয়েছিল ওকে । আর বদ ছেলে সেটা সেভ করে রেখে দিয়েছে । মীম লিখলো
"এমন ছেলে মানুষী কেন করছো ? প্লিজ ঘুমাও । আমিও ঘুমাই"
"তোমার সাথে কথা না বললে আমার ঘুম আসবে না । আর আমি তোমাকেও ঘুমাতে দিবো না ! না না না !"
"আচ্ছা ঠিক আছে । আমি উঠছি । কিন্তু এক মিনিট ! এর বেশি না । যা বলবা তাড়াতাড়ি বলবা"
মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে সে ঘুমিয়ে আছে । মীমের মায়ের ঘুম পাতলা একটু শব্দেই জেগে ওঠে । খুব সাবধানে বিছানা থেকে উঠলো সে । যখনই বিছানা থেকে পা নিচে নামালো তখনই মায়ের ঘুম জড়ানো ডাক শুনতে পেল ।
-কোথায় যাস ?
-এই তো আম্মু, ওয়াসরুমে !!
আর কিছু জানতে চাইলেন না । মীম চোখ তাকিয়ে দেখে তার মা চোখ বন্ধ করে আছে । ডিম লাইটের আলোতে মায়ের চেহারা দেখতে তার কষ্ট হল না । কিন্তু পরিস্কার বুঝতে পারছে যে কোন রকম শব্দ শুনলে সেটা মায়ের কানে ঠিকই চলে যাবে ।
এখন ? কোন দিকে যাবে ?
এই ঘরের ভেতরে দাড়িয়ে কথা বলা যাবে না । মা ঠিক ঠিক টের পেয়ে যাবে । ড্রটিং রুম আর ডাইনিং রুম টা এক সাথে । সেখানে বসে কথা বললেও আবার সমস্যা আছে । এই শুনশান রাতের নিরবতার ভেতরে সেই আওয়াজ টা ভাল করেই শোনা যাবে । যে কেউ যে কোন দরজা দিয়ে বের হয়ে আসতে পারে । তাহলে ?
আর এদিকে জনান তো এসব বুঝবে না । এরই মাঝে আরও একবার ফোন দিয়ে ফেলেছে । মীম লাইন টা কেটে দিয়ে ফোনটা নিয়ে আস্তে করে রুম থেকে বের হয়ে এল । দরজা টা খোলার সময় এমন ভাবে দরজা খুললো যেন সামান্যতম ক্যাঁচকুচ আওয়াজও যেন না হয় ।
যখন দরজা দিয়ে বের হল তখন মীমের কাছে মনে যেন ও নিজের ঘরের দরজা নয় পাশের দেশের বর্ডার ক্রস করছে । ড্রয়িং রুমে না গিয়ে সোজা রান্না ঘরের দিকে গেল । রান্না ঘরের পাশেই একটা ছোট্ট বারান্দা আছে এক মাত্র ঐ জায়গাটাই কথা বলার জন্য নিরাপদ ।
বারান্দাট দরজাটা খুলতেই কনকনে ঠান্ডা শীতের প্রবাহ ওর গায়ে এসে লাগলো । ওর শরীরের কোন শীতের কাপড় নেই । শোয়ার সময় কেবল সেলোয়ার কামিজ পরে শুয়েছিলো । বারান্দায় যাচ্ছিলো বলে সেটা আনতেও পারে নি । পাছে ওর মা যদি আবার কিছু বুঝে ফেলে ।
এই যে জনাবের আবারও ফোন চলে এসেছে । মীম ফোন রিসিভ করলো !
-হুম ! বল ! কি এমন কথা !
একটু কড়া কন্ঠেই বলল ।
-আরে আজকে সারা দিনে কথা হয় নাই ।
-অপু কি বলবা বল ? আমি মাকে ওয়াশ রুমের কথা বলে এসেছি ।
-কোথায় তুমি ?
-কোথায় তুমি মানে ? বাসায় আর কোথায় ?
-আরে বলার চেষ্টা করছি যে কোথায় দাড়িয়ে কথা বলছো ?
-রান্না ঘরের পাশে একটা বারান্দা আছে ।
-বাইরে খুব ঠান্ডা না খুব ?
-হুম !
-গায়ে শীতের কিছু পরেছো ?
-আরে এতো কথা কে বলছো ? কি বলবা বলে ফেলো !
-তার মানে শীতের কিছু পর নাই ।
ওপাশ থেকে কিছুটা সময় কোন কথা এল না । মীমের কেন জানি মনে হল এবার অপু ওকে ঝাড়ি মারা শুরু করবে । হলই তাই ।
-তুমি এই ঠান্ডার ভেতরে বাইরে বাইরে বের হয়েছো গরম কিছু না পরে । কবে যে তোমার এই ......... তুমি কি কচি খুকি নাকি ! আজিব !
মীম কিছু বলতে গিয়েও বললো না । কেন জানি অপু এর বকা দেওয়াটা ভাল লাগে ওর । এখনও ভাল লাগলো বেশ । সমস্ত মুখে একটা হাসির ছড়িয়ে পড়লো ! মাঝে মাঝে এমন আদুরে বকা শুনতে ওর খারাপ লাগে না । এর আগে একদিন ফুচকা খাওয়ার জন্য সে কি ঝাড়ি । অপু খুব ভাল করেি জানতো মীমের ফুচকা নিয়ে একটু সমস্যা আছে । ওটা খেলে মাথার ভেতরে কেমন শুরু করে । প্রচন্ড মাথা ব্যাথা শুরু হয় । সেদিন বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়ে সবার পাল্লায় পড়ে খেয়ে ফেলেছিলো । তারপর সন্ধ্যার পর থেকেই মাথা ব্যাথা শুরু । এইটা শুনে অপু সে কি ঝাড়ি দেওয়া ।
ফোনের ওপাশ থেকে আবারও অপু কন্ঠস্বর শোনা গেল
-তুমি এখনই ঘরে যাও ! এখনই । দেরী করবা না । এই ঠান্ডা গায়ে লাগাতে হবে না !
-আরে বাবা সমস্যা নেই তো । তুমি বল কি বলতে চেয়েছিলে ?
-আমি কিছু বলতে চাই নি । এখনই ফোন রাখো । আর ঘরের গিয়ে শুয়ে পড়ো । কাল কথা হবে ।
মীমকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই অপু ফোন কেটে দিল ।
ফোন হাতে নিয়ে আরও কিছুটা সময় বারান্দায় দাড়িয়েই রইলো । কালো অন্ধকারের দিকে চেয়ে রইলো কিছুটা সময় । মনটা কেমন এলো মেলো লাগছে হঠাৎ ।
কার জন্য ?
অপুর জন্য ?
ছেলেটা মাঝে মাঝে এমন অদ্ভুদ আচরন করে ! এমন কেয়ার করে আবার এমন জোর খাটায় মীম নিজের কাছেই কেমন যেন লাগে । একটা সময় মনে ওকে ছাড়া সে কিছুই বুঝে না আবার মাঝে মাঝে মাঝে একদম অন্য কিছু । আরও কিছু ভাবতে যাবে দেখে আবারও ওর ফোনে একটা মেসেজ এসে হাজির ।
"এখনও যাও নি ঘরের ভেতরে !!"
বরাবরের মত মীম খানিকটা অবাকই হল । ছেলেটা মাঝে মাঝে ওকে কিভাবে যেন বুঝে ফেলে ।
মীম লিখলো
"কে বলেছে তোমাকে ? আমি ঘরের ভেতরে।"
উত্তর এল সাথে সাথেই ।
"মিথ্যা কথা । তোমার শরীর টা ঠান্ডায় একটু একটু কাঁপছে এটা আমি স্পষ্ট অনুভব করতে পারছি ! "
"বলেছে তোমাকে !"
"প্লিজ ভেতরে যাও ।"
মীম ভেতরে যেতে যাবে ঠিক তখনই ওর চোখে রাস্তার কোনায় গেল । এতোক্ষন ওদিকে ও তাকায় নি । মুহুর্তের ভেতরে ওর পুরো শরীরটা কেঁপে উঠলো । বুকের ভেতরে কেমন একটা অজানা অনুভুতি ধাক্কা দিলো জোড়ে ! সাথে সাথে সাথে ফোন টা হাতে নিয়ে অপুকে ফোন দিলো ।
-কি হল ?
-তুমি কি পাগল নাকি ?
-কেন ?
-মানে এই রাতে বেলা কেন এসেছো এখানে ?
-ও!! মানে তুমি দেখে ফেলেছো আমাকে ?
মীম দেখলো আড়াল থেকে ল্যাম্পপোস্টের আলোতে একটা ছায়া মুর্তি এসে দাড়ালো । গায়ে চাদর জড়োনো গলায় একটা সাদা মাফলার ! তাকিয়ে আছে ওর দিকে । হাত নাড়ালো ।
মীম কি বলবে ঠিক বুঝে উঠতে পারলো । নিরবে কেবল তাকিয়ে রইলো অপুর দিকে ।
-কিছু বলছো না কেন ?
-তোমাকে না আমার এখন খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে । বদ ছেলে কোথাকার ! তুমি এক্ষুনি বাসায় যাবে । সোজা !
একটু আগে অপু ওকে বকা দিচ্ছিলো এখন ও নিজে বকা দিচ্ছে । কি অদ্ভুদ ! অপু বলল
-আচ্ছা বাবা যাচ্ছি তো । এতো রাগারাগির কি হল ! তোমাকে দেখতে এসেছিলাম । সারাদিন দেখা হয় নি কথাও না । তাই না দেখলে ঘুম আসতো না ।
মীম আবারও কথা হারিয়ে ফেলল । একটু আগে অপুকে কড়া কথা বলার জন্য নিজের কাছেই খারাপ লাগতে শুরু করলো ওর । নিজেকে সামলে নিতে আরও কয়েকটা মুহুর্ত কেটে গেল নিরবে । এই সময়টা দুজনেই কেবল দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো চুপ করে । তারপর মীম মৃদু স্বরে বলল
-আচ্ছা তুমি বাসায় যাও, এই ঠান্ডার মধ্যে বাইরে থাকতে হবে না । সকালে দেখা হবে । কেমন !
রুমে ফিরে এসোও মীমের মন পড়ে রইলো রাস্তার উপরে । ছেলেটার মাথা আসলেই খারাপ । কেবল একটু দেখার জন্য এমন করে কেউ চলে আসে এই শীতের রাতে !


গল্প দুই

ক্লাস শেষ করে ক্যাম্পাসের মাঠে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম । বাসায় ফেরার খুব একটা তাড়া নেই । মা যদিও দেরি করে গেলে একটু চিৎকার চেঁচামিচি করে । বারবার ফোন দিয়ে আমাকে বাসায় যেতে বলে ।
আজকেও যখন মার ফোন এল তখন আমার কেবল মনে আজকেও মা সম্ভবত আমাকে বকাবকি করার জন্যই ফোন দিয়েছি । আমি ফোন রিসিভ করে মায়ের বকা শোনার জন্য প্রস্তুতি নিলাম তখনই মা বলল
-তুই কোথায় ?
মায়ের গলার স্বরে কিছু একটা ছিল যে আমার কেন যেন আমার মনে হল কিছু একটা সমস্যা হয়েছে । আমি আরও কিছু শোনার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম । মা বলল
-জাহিদ, আমাকে একটু ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যা তো ?
-কেন ? কি হয়েছে ? কার কি হয়েছে ? বাবা ঠিক আছে ?
মা বলল
-না তোর বাবা ঠিক আছে । সুপ্তি অনেক গুলো ঘুমের ঔষধ খেয়েছে ।
-সেকি !!
আমি আসলেই ভাবতে পারছিলাম না । সুপ্তি আমার বড় মামার মেয়ে । প্রায় প্রত্যেক সপ্তাহে সুপ্তি নিয়ম করে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসে । মায়ের সাথে সুপ্তির খুব খাতির । মা ওকে খুব বেশি আদর করে । কিন্তু আমাকে কেন জানি সুপ্তি একটু এড়িয়ে চলে । আমার সাথে ঠিক মত কথা বলে না দরকার না পড়লে । আমার চোখে চোখ পড়তেই চোখ সরিয়ে নেয় চট করে । টুকটাক কথা ছাড়া কোন কথা হয় না ।
সব থেকে বড় কথা সামনের মাসে সুপ্তির বিয়ে হওয়ার কথা । সব কিছু ঠিক ঠাক । ছেলে ডাক্তার । সুপ্তি নিজেও ডাক্তারী পড়ছে ডিএমসিতে । তাই বড় মামা যখন ভাল একটা ছেলে পেল তখন আর মানা করে নি । যদিও আরও কয়েকদিন পরে বিয়ে হলে হয়তো ভাল হত । কিন্তু বড় মামা যা ভাল বোঝেন তাই হয়তো করেছেন ।
কিন্তু মাঝখানে এ কি কাজ করলো সুপ্তি ?
আর সব থেকে বড় কথা কেন করলো ?
আমি যতদুর জানি যে সুপ্তির কোন ভালবাসার মানুষ ছিল না যে জোর করে বিয়ে দিচ্ছি বলে সুপ্তি এই কাজটা করেছে । তার উপর ওর যে বিয়ে হচ্ছে এটা নিয়ে ওর কোন সমস্যা ছিল না অন্তত আমি তো দেখেনি । বরং মনে হচ্ছিলো যে এ বিয়েতে ওর নিরব সম্মতি ছিল । আর ছেলেটাও অনেক ভাল । সুদর্শন দেখতে । সরকারী মেডিক্যাল অফিসার ।
আমার মাথায় আসলেই এসব চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিলো । আমি কিছু বুঝতে পারছিলাম না । বাসার গিয়ে মাকে নিয়ে আবার ঢাকা মেডিক্যালের হাজির হলাম । ডাক্তার বলেই ওকে অন্য আলাদা ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে । মা বলল যে ভয়ের কিছু নেই । খুব বেশি কিছু হওয়ার আগেই নাকি সব কিছু সামাল দেওয়া গেছে ।
ওর কেবিনের সামনে বেশ কয়েকজন সাদা এপ্রন পরা ছেলে মেয়েদের কে দেখতে পেলাম । ওর ক্লাস মেইট । আমি মায়ের সাথে ওর কেবিনে ঢুকতে যাবো তখন মা বলল
-তোর ঢুকতে হবে না ।
-সে কি কেন ? আমি দেখবো না ওকে ?
-না ! এখন না পরে দেখিস !
-আমি কি চলে যাবো তাহলে ?
-হ্যা চলে যা । দরকার হয়ে আমি ডাক দিবো
-আচ্ছা !
আমি দরজার সামনে দাড়িয়ে রইলাম কিছুটা সময় । কি করবো কিছুই বুঝতে পারলাম না । মনে হল একখানে আর থেকে আর লাভ নেই । মাথার ভেতরে তখনও অনেক গুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে । একে তো সুপ্তির এভাবে সুইসাইড এটেম্ট করাটা আমার আসলো না কিছুতেই । কিছু হলে মাকে তো অন্তত জানাতো তাও না । তাহলে মেয়েটা এমন পাগলামি কেন করলো ?
সপ্তাহ যেতে না যেতেই খবর পেলাম সুপ্তির বিয়েটা নাকি ভেঙ্গে গেছে । মামাই নাকি ছেলেদের মানা করে করে দিয়েছে । যাক ভাল সুপ্তির যদি ছেলেটাকে পছন্দ না করে থাকে তাহলে মানা করে দেওয়াই ভাল । দুদিন পরেই সুপ্তিকে বাসায় নিয়ে আসা হয় । ভাগ ভাল যে মেয়েটার কিছু হয় নি । হলে কি হত কে জানে ।
পরের সপ্তাহে সুপ্তিসহ সবাইকে মা আমাদের বাসায় দাওয়াত দিলেন । ওর সুস্থ হয়ে ফিরে আসা উপলক্ষ্যে । এর ভেতরে ওর সাথে আমার একবারও দেখা হয় নি । যদিও ফোন নাম্বার টা আমার মোবাইলে সেভ করা আছে কিন্তু ফোন করা হয়ে ওঠে নি । ভেবে রেখেছি ঠিক জানতে চাইবো কি কারনে ও ঘুমের ঔষধ খেয়েছিলো ।
বরাবরের মত দাওয়াতের জন্য কেনা কাটা বলতে গেলে সব আমাকেই করা গেল । অবশ্য কেনা কাটা করতে আমার খুব বেশি খারাপ লাগে না । টাকা মারা যায় বেশ কিছু । মা যদিও ঠিকই ধরে ফেলেন তবে কিছু বলেন না ।
সন্ধ্যার দিকে সবাই এসে হাজির । আমি আমার ঘরঈ বসে ছিলাম । কাউকে দাওয়াত দিলে স্বাধারনত ওদের সামনে যাই না । তাই নিজের ঘরেই ছিলাম । খানিক বাদে দেখলাম সুপ্তি নিজেই আমার ঘরে এল । আমি ভাবলাম মা হয়তো আমার জন্য কিছু পাঠিয়েছে । নয়তো ওর এখানে আসার কথা না । কিন্তু দেখলাম মা কিছুই পাঠাই নি । ও নিজে থেকেই এসেছে ।
সুপ্তি আমার পিসি টেবিলের উপর বসতে বসতে বলল
-আপনি আমাকে দেখতে যান নি কেন ?
-কে বলল যাই নি ? গেছি তো ! তুমি ঘুমিয়ে ছিলে !
-মিথ্যা কথা । গেলে আমি টের পেতাম ।
-সত্যি গেছি । তবে ঘরে ঢুকি নি ।
-কেন ?
-হাসপাতাল ভাল লাগে না তাই ?
-যদি আমি আপনার কিছু হতাম তাহলে ঠিকই যেতেন ! তবে আজকের পর থেকে ঠিক ঠিক যাবেন ।
-মানে ?
-কিছু না ! আপনাকে বুঝতে হবে না !
তাকিয়ে দেখি ও হাসছে মুখ টিপে । আমার কাছে একটু অবাক লাগলো । এই মেয়ে আমার সাথে এতো কথা তো বলে না কোন দিন । তাহলে আজকে কেন বলছে । আমি বললাম
-আচ্ছা তুমি কাজটা কেন করলে বলতো ?
কিছু সময় চুপ করে থাকার পর সুপ্তি বলল
-একটা গাধার জন্য ।
-গাধা ! তা তুমি কি শুনি ?
-আমি গাধী ! হিহিহিহি !
-তা গাধা টা কে ? মামা তো তোমার বিয়ে ক্যান্সেল করে দিয়েছে । তোমার খুশি হওয়ার কথা !
-হুম ! হিহিহিহিহি ।
-এরকম করে হাসছো কেন ?
-আসলে আজকে ঐ গাধাটার খবর আছে তো তাই হাসছি ।
আমি আসলে তখনও বুঝতে পারি নি কি হতে চলেছে । মেয়েটা এমন করে হাসছে কেন ? আরও ঘন্টা খানেক পরে সব জানতে পারলাম । সুপ্তি যার জন্য ঘুমের ঔষধ খেয়েছিলো সেটা আর কেউ না, সেটা আমি নিজে । মামাকে ভয় পেত খুব তাই মামাকে বলতে সাহস পায় নি । এমন কি আমাকেও বলতে পারে নি । কিন্তু অন্য কাউকে বিয়ে করার কথা চিন্তাও করতে পারে নি ও ।
মায়ের কাছ থেকে এসব জানার পরে আমার মাথা ঘুরতে লাগলো । কি করেছে এই মেয়ে !!
এই মেয়ের মাথা খারাপ নাকি !
এই জন্যই আজকে সুপ্তির কথা ফুটেছে । এতো দিন সুপ্ত ভাবে থেকে আজকে তার সাহস সঞ্চিত হয়েছে । গাধীটা আমাকে একবার বলতেও পারতো !


গল্প তিন

মেঘলা হাসান মেঘ মাথা নিচ করে দাড়িয়ে রইলো কিছুটা সময় । মনে করার চেষ্টা করলো জীবনে তার মা-বাবাও কিংবা পরিবারের অন্য কেউ তাকে এতো জোড়ে ধমক দিয়েছে কি না । কিন্তু এই বেটা দিব্য দিনকে দিন ঝাড়ি দিয়েই চলেছে । নিজের লম্বা চুলটা হাত দিয়ে এক পাশে সরিয়ে দিল । আর মনে মনে বলল বেটাকে থাপ্পড়ানো দরকার !
ইমতিয়াজ স্যারের দিকে আরেকবার তাকাতেই মেঘের কেন জানি হাসি চলে এল । এই মানুষ নিজেকে সব সময় গম্ভীর করে রাখতে ব্যস্ত । মেঘের আরও মনে হয় ওর মত মেয়েদের সামনে এলে যেন ভাবটা আরও একটু বেড়ে যায় ।
ওদের মেয়েদের অফিস গসিফে প্রায় এটা নিয়ে কথা হয় যে ইমতিয়াজ স্যারের যতটুকু না বয়স নিজেকে তার থেকে বেশি বয়স্ক করে রাখার একটা চেষ্টা চালায় ! কপাল সব সময় কুচকে রাখে যেন মনে হয় সব কিছু একটা চেপে ধরে রাখে । বেটা নিশ্চয় গার্লফ্রেন্ডের ঝাড়ি খেতে খেতে অস্তির । মেঘ যতদুর শুনেছে এখনও বেটা বিয়ে করে নি । কে করবে এই খাড়ুস টাকে বিয়ে । অফিসে সবাই এই জন্য একে খাড়ুস বলে ডাকে । মুখে রস কস নাই, কারো সাথে হাসি মুখে কথা বলে না । অফিসের সবাই এর জ্বালাই অস্থির । সবাইকে দৌড়ের উপরে রাখে ।
প্রথম যেদিন ঝাড়ি শুনেছিলো কান্না চলে এসেছিলো কিন্তু এখন মেঘ এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দেয় । সবাই তাই করে ।
ইমতিয়াজ স্যার আবার বলল
-আপনারা কি কাজ করেন বুঝি না ! একটা ওয়ার্ক শীটের ভেতরে চারটা ভুল ? মনযোগ কোথায় থাকে ?
মেঘ মনে মনে বলল স্যার মনোযোগ থাকে কোন দিকে সেটা আপনাকে কেন বলবো ?
-সরি স্যার !
-শিখেছেন তো ঐ সরি ! যান এখনই ঠিক করে নিয়ে আসেন !
-আচ্ছা ! আমি যাচ্ছি এখনই ।
মেঘ আর দাড়ালো না । সোজা কেবিন থেকে বেরিয়ে নিজের ডেস্কের কাছে এসে বসলো । বসার সাথে সাথেই মনটা ভাল হয়ে গেল । ওর টেবিলে রঠিক সামনেই গোলাপটা রাখা । ও যখন ইমতিয়াজ স্যারের কাছে গিয়েছিলো তখনই কেউ রেখে গেছে । একটু উঠে দাড়িয়ে দেখতে নিয়ে চারিপাশটা । তাকিয়ে দেখে সাব্বির ভাই এদিকেই তাকিয়ে আছে । ও তাকাতেই হাসলো একটু ওকে দেখে । প্রতি উত্তরে মেঘ নিজেও হাসলো ।
তাহলে সাব্বির ভাই !!
এর আগেও প্রায়ই ওকে আসে পাশে দেখেছে । চেহারা কেমন একটা হ্যাবলা হ্যাবলা ভাব । মেঘ মনে মনে হাসলো ।
তবুও মেঘ তখনও ঠিক বুঝতে পারলো না যে এই গোলাপ আর কার্ডটা কে পাঠিয়েছে । প্রতিদিনই পাঠায় । গত দুই মাস ধরে পাঠিয়েই চলেছে । দিনের কোন একটা সময় ঠিক এখানে এসে কেউ এটা রেখে যাবে ।
গোলাপ টার দিকে আরেকবার তাকালো । নিখুত ভাবে কাঁটা গোলাপ । ঠিক পরিপূর্ন ভাবে ফুটন্ত না । আর দুইদিন গাছে থাকলে পুরোপুরি ফুটতো । ফুল ছাড়াও ডালটা আরও ইঞ্চি ছয়েক মত লম্বা । সেই সাথে একটা মাত্র পাতা লেগে আছে । কোন কাটা নেই । প্রতিদিনই এই রকম ভাবে থাকে । একেবারে নিঁখুত ভাবে । সাথে একটা লাভ-কার্ড । কার্ডে কিছু লেখা থাকে না । কেবল একটা খামের ভেতরে কার্ডটা থাকে । এবং খামটার উপরে ফুলটা টেপ দিয়ে আটকানো থাকে ।
প্রথম যেদিন ডেস্কে এই গোলাপটা পেয়েছিল বেশ অবাক হয়েছিল । এদিক ওদিক তাকিয়ে ভেবেছিলো কেউ হয়তো মজা করছে । কিন্তু পরপর যখন সাত দিন এই একই ঘটনা ঘটতে লাগলো তখন মেঘ একটু নড়ে চড়ে বসলো । যদিও কারো সাথে ব্যাপার টা নিয়ে গল্প করে নি তবুও মনে মনে খুজতেই লাগলো যে কাজটা কে করে ।
কিন্তু এখনও খুজে বের করতে পারলো না । একদিন সকালে অফিসে এসেই দেখতে পেল ওর টেবিলে খাম আর গোলাপ পড়ে রয়েছে । তখনই চলে গেল অফিসের সিকিউরিটি রুমে । সেখানে গিয়ে সিসি টিভি ফুটেজ দেখতে লাগলো অফিসে কে কে এসেছে এবং কে ওর টেবিলের দিকে গেছে । একটু পুরো ভিডিও টা দেখলো কিন্তু কিছুই খুজে পেল না । মনে হল যেন ওটা একদম টেবিল ফুড়ে উপরে উঠে এসেছে । আরেকটু ভাল করে লক্ষ্য করে দেখলো কয়েক মিনিটের ভিডিও নেই সেখানে । কেউ যেন সেটা অফ করে রেখেছে । বুঝতে কষ্ট হল না কে করেছে কাজটা । যে ফুলটা ওকে পাঠায় তার সব দিকে নজর আছে ।
তারপর থেকে অনেককেই সন্দেহ করে এসেচে কিন্তু কারো ব্যাপারে ঠিক শিওর হতে পারে নাই । তবে সব থেকে বেশি সাব্বিরকেই সন্দেহ হইছে ওর । আর এমনিতেও মেঘ ঠিক ঠিক বুঝতে পারে সাব্বিরের ঠিকই ওর দিকে আগ্রহ আছে ।
আজকেও গোলাপ টা পেয়ে আনমনে কি যেন ভাবতেছিলো তখনই সাব্বির এসে হাজির ।
-কই যাবা না ?
-হ্যা ভাইয়া যাবো । কিন্তু খাড়ুস স্যার কাজ দিয়েছে । ওটা শেষ করে কিভাবে যাবো ?
-আচ্ছা শুনো আমাদের ওখানে গিয়ে সব কিছু তৈরি করতে হবে । আমি গেলাম । তুমি চিনবা তো ?
-হ্যা ভাইয়া আমি চিনবো । আপনি চিন্তা করবেন না !
-আচ্ছা গেলাম আমি । আসো জলদি । আর ঐ খাড়ুস কে কাটিয়ে এসো !
একটু পরেই লক্ষ্য করলো অফিসের প্রায়ই সবাই বের হয়ে গেছে । যাটা বের হয় নি তারাও বের হয়ে যাচ্ছে । আজকে ওদের এবাকাস কনভেনশন সেন্টারে একটা বড় কনফারেন্স আছে । বিদেশ থেকে ক্লাইন্ট আসবে । ওদের অফিসের কনফারেন্স রুমটা এতো বড় নয় তাই এবাকাশ ভাড়া করা হয়েছে । সেখানে সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত । যদিও মেঘের নিজের অতোরা দায়িত্ব নেই কিন্তু সেখানে যেতে তো মানা নেই ।
কাজ শেষ করে ফাইল টা ইমতিয়াজ স্যারের কাছে দিতে গিয়ে শুনলো স্যার নাকি পার্কিং আছে । এখনই বের হবে । এমন মেজাজ গমর হল ওর । কেন বাবা এই কাজটা যদি দরকারই না হবে তাহলে এখন দেওয়ার মানে কি ছিল ।
মেঘের একদিন খুব করে ইচ্ছা আছে যে সবার সামনে খুব করে ঝাড়ি মারবে । মনের সাধ মিশিয়ে । সেই দিনের অপেক্ষায় আছে । একদিন না একদিন ঠিক ঠিক সুযোগ পেয়ে যাবে বলে ওর বিশ্বাস ।
মেঘ আরেকবার ঝাড়ি শুনতে চাইলো না । তাই খানিকটা দৌড়েই গেল পার্কিং লটের দিকে । ফাইল টা দিয়ে দিতে হবে ।
যখন পার্কিং লটের কাছে পৌছানো দেখতে পেল ইমতিয়াজ স্যারের গাড়িটা দাড়িয়ে আছে । ইমতিয়াজ স্যার নিজের গাড়ি নিজেই চালান । ড্রাইভিং সিটে বসে স্যার কি যেন করছে । মনে হল যেন ও সিটবেল্ট বাধছে । ও জানলা দিয়ে ফাইল টা বাড়িয়ে দিল ।
-এই নিন স্যার !
-কমপ্লিট ?
-জি স্যার !
একবার না দেখে ফাইল টা পেছনের সিটে রেখে দিল । মেঘ যখন সামনের দিকে এগুতে যাবে তখন মেঘকে খানিকটা অবাক করে দিয়েই বলল
-আপনি কনফারেন্সে যাবেন না ?
-জি স্যার । এখনই যাবো !
-আমিও যাচ্ছি । আসুন আমার সাথে ।
-না না স্যার । ঠিক আছে । আমি যেতে পারবো ।
-আমি তো বলছি না যেতে পারবেন না । আমি যাচ্ছি । আসুন !
মেঘের একবার মনে ও বলে যে অনার সাথে যাবে না । একাই যাবে কিন্তু কি মনে করে বলল না ।
-আসুন !
মেঘ সামনের সিটে উঠে সবলো । নিজের কাছেই ওর কেমন যেন লাগছিলো । এখনও ঠিক মত বিশ্বাস হচ্ছে না যে ও এই খাড়ুসটার সাথে গাড়িতে উঠেছে । অফিসের কেউ কোন দিন এর অফিসে উঠেছে কি না কে জানে ? কেউ যদি দেখে তাহলে কি হবে কে জানে !!
গাড়িতে উঠে মেঘ কি বলবে খুজে পেল না । কিছু বলা উচিৎ কিন্তু কিছু বলল না । জানলা দিয়ে সামনে তাকিয়ে রইলো । গাড়ি চলতে চলতে যখন রুপসী বাংলার মোড়ের ওখানে চলে এসেছে এখনই একটা ঘটনা ঘটলো । সামনের একটা গাড়ি হঠাৎ করে সিগনাল না দিয়ে থেমে গেল । ঠিক গাড়িটার পেছনেই ছিল ওদের গাড়িটা ছিল । ইমতিয়াজ ঠিক বুঝতে পারে নি যে এভাবে গাড়িটা থেমে যাবে । ধাক্কা এড়ানোর জন্য হার্ড ব্রেক করলো । একেবারে শেষ মুহুর্ত গিয়ে ধাক্কা থেকে রক্ষা পেল ।
মেঘ চমকে উঠলেও সামলে নিল । ইমতিয়াজ বলল
-আপনি ঠিক আছেন ? লাগে নি তো কোথায় ?
-না ঠিক আছি । সামনের গাড়ির ড্রাইভার টা ছাগল নাকি !
-দাড়ান .....।
এই বলে ইমতিয়াজ গাড়ি দরজা ঠেলে বের হয়ে গেল সামনের গাড়ির দিকে । মেঘ চোখ তুলে দেখতে যাবে ইমতিয়াজ কি করতে যাচ্ছে ঠিক তখনই ওর চোখ গেল গাড়ির টুল বক্সটার দিকে । এতো জোরে ব্রেক করার জন্য সামনে দিকে যে ছোট একটা ওয়াল বক্স থাকে সেটা খুলে গেছে । সেখান টুকটাক কয়েকটা দরকারী জিনিস রয়েছে, কিন্তু মেঘের চোখটা আটকে গেল অন্য কিছুতে । বক্সের ভেতরে দুইটা গোলাপ ফুল দেখা যাচ্ছে ।
মেঘ ফুল দুটো হাতে নিতেই চমকে উঠলো ।
ইঞ্চি ছয়েক বড় । একটা পাতা ! কোন কাঁটা নেই ।
খুব চেনা এই ফুল তার । নিজের চোখ কে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলো না । আর যেই হোক মানুষটা যেন ইমতিয়াজ হবে সেটা ও কোন দিন ভাবতে পারে নি । ফুল দুটো আবার আগের জায়গা রেখে দিয়ে সোজা হয়ে বসে রইলো ।
একটু পরে যখন ইমতিয়াজ ফিরে আসলো মেঘ কেবল অবাক হয়ে ইমতিয়াজের দিকে তাকিয়ে রইলো । এই ছেলেটা ওকে এতো দিন ধরে ফুল দিয়ে এসেছে গোপনে সেটা বুঝতেই পারে নি । কিভাবে ?
যখন এবাকাসে ঢুকলো ওদের গাড়ি মেঘ বের হওয়ার ঠিক আগ মুহুর্ত ইমতিয়াজকে বলল
-আমার পেছনে কত টাকা গোলাপ কিনেছেন শুনি ?
এতো দিন পরে এই প্রথম ইমতিয়াজের মুখের রং ফ্যাকাসে হতে দেখলো । সব সময় ওর কথা শুনে অন্যের মুখের রং বদলেছে আজকে ইমতিয়াজের রং বদলাতে দেখে মেঘের খুব মজা লাগলো !
-মা-মানে ?
মেঘ এবার আর স্যার বলল না । মেঘ খুব ভাল করেই জানে যে ইমতিয়াজ এখন আর আগের পর্যায়ে নেই । ওকে আর ধমক দিতে পারবে না চাইলেও ।
মেঘ এবার হাসলো কেবল ।
-ইমতিয়াজ সাহেব, নিজেকে আপনি বুদ্ধিমান মনে করেন সমস্যা নেই তবে অন্যদের কে বোকা ভাবা ঠিক না ।
ইমতিয়াজ কোন কথা না বলে অন্য দিকে তাকালো ! মেঘের মনে হল একটা ধমক দেয় এতো দিন ধরে ওকে জ্বালিয়েছে আজকে ও একটু জ্বালাক । তারপর কি মনে হল ধকম দিলো না । বলল
-এরপর থেকে যদি আর কোন দিন আমার উপর চিৎকার করেন তাহলে আপনার খবর আছে এই বলে দিলাম । আর ফুল আসা যেন বন্ধ না হয় !
ইমতিয়াজ এবার তাকালো মেঘের দিকে । বলল
-হবে না । তবে ধকমের ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না ।
-আরেকবার ধকম দিয়ে দেইখেন । সেদিন মজা বুঝবেন না ।
গাড়ি থেকে বের হয়ে এল । দরজা দিয়ে প্রবেশের পেছনে তাকিয়ে দেখি ইমতিয়াজ তখনই ওর দিকে তাকিয়ে আছে হাসি মুখে এর আগে মেঘ ইমতিয়াজকে এমন করে হাসি মুখে দাড়িয়ে থাকতে দেখেছে বলে ওর মনে পড়লো না । একটা হাসি ওর নিজের ঠোঁটেও চলে এসেছে ততক্ষনে !
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০১
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×