somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহিলা র‌্যাব অফিসার এবং আমার সম্ভাব্য প্রেমের গল্প

১৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার এই এলাকাটা ওয়াশিংটন ডিসি থেকে প্রায় ৩৫০ মাইল দুরে । অন্যান্য এলাকা থেকে এই এলাকাটা আমার কেন জানি একটু বেশি কাছের মনে হয়, একটু যেন বেশিই আপন মনে হয় । যদিও এই বিদেশের মাটিতে সবাই এবং সব কিছুই পর তবুও এখানে বিশেষ করে এই পার্কটাতে আসলে মনে হয় ঢাকার রমনা পার্কে বসে আছি । চারিদিক থেকে গাড়ির হর্ণ শোনা যাচ্ছে । সবাই ছুটে চলেছে নিজের কর্ম স্থলে কিংবা সেখান থেকে অন্য কোথায় । আমারও আমার কর্ম ক্ষেত্রেই যাওয়ার কথা কিন্তু মাঝে মাঝেই আমি এখানে বসে থাকি ।

দেশ ছেড়েছি সেই বছর খানেক আগে । আর যাওয়া হয় নি । যেতে যে ইচ্ছে করে না, তেমন না কিন্তু আর যাওয়া হয়ে ওঠে না । আর মনে হয় যাওয়া হবেও না । এখানেই থেকে যাওয়ার ইচ্ছে । বাবা মাও এই পাশে প্রদেশেই থাকে । ইচ্ছে হলেই সেখানে যাওয়া যায় । কি দরকার আর দেশে যাওয়ার । তার চেয়ে এখানেই থাকা ভাল । আর দেশে থাকার সব থেকে উল্লেখযোগ্য কারণটা যেহেতু আর নেই সেহেতু সেখানে আর যাওয়ার কোন মানে নেই ।

সপ্তাহের একটা দিন আমি এখানে এসে সময় কাটাই । একটু দেরি করে কাজে যাই । আজকেও তেমন করেই বসে ছিলাম । ঘড়ি ধরে ঘন্টা খানেক বসি । আমার মানুষ গুলোকে দেখি তারপর উঠে চলে যাই । প্রত্যেক সপ্তাহের একটা নিয়মিত রুটিন বলা চলে এটাকে ।

দিনের এই সময়টাতে এখানে বেশ কম মানুষ থাকে । সবাই কাজে যাওয়া নিয়েই ব্যস্ত থাকে আমার সেখানে কোন ব্যস্ততা নেই । এই পার্কটা থেকে কয়েক মিনিট হাটলেই আমার অফিস ।

আজকেও যখন পার্ক ভ্রমন শেষ করে আমি গেটের দিকে পা বাড়ালাম তখনই সুরাইয়াকে দেখতে পেলাম । প্রথমেই মনে হয়েছিলো হয়তো ভুল দেখছি কিন্তু ভুল ভাঙ্গলো আরও একটু পরেই । আমার থেকে ঠিক ৫০ গজ মত দুরে দাড়িয়ে ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছে । আমার একবার মনে হল আমি পাশ কাটিয়ে চলে যাই । কি দরকার এতো দিনের পুরানো কিছু মনে করে !

অবশ্য আমি জানি যা হবার হয়ে গেছে । এমনিতেও মেয়েটা আমার মাথার ভেতরে সেই কত বছর থেকেই গেথে আছে । আজকের পর থেকে আরও বেশি ভাল করে সেই ব্যাথাটা জাগান দিবে । আমার মনে হল এর থেকে আর বেশি দুরে না যাওয়াই ভাল । একটু আগেও ওর কথাই ভাবছিলাম আর আজকে ওখানে !
কিন্তু কিভাবে সম্ভব ?
কোন ভাবেই সম্ভব না । ও কি কোন কারনে এখানে এসেছে ?


আমি হাটি হাটি পায়ে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম । যদিও মনকে বোঝাতে লাগলাম যে ওর সাথে দেখা করা কিংবা কথা বলাটা দুজনের কারো জন্যই ভাল হবে না কিন্তু মনকে বোঝাতে পারলাম না !

-কেমন আছো ?
আমার কন্ঠ শুনে সুরাইয়া আমার দিকে ফিরে চাইলো । তবে আমি আশা করেছিলাম যে ও আমাকে দেখা খুব অবাক হবে কিন্তু ওর চেহারায় মোটেই অবাক হওয়ার ভাবটা দেখলাম না । খুব স্বাভাবিক আমার দিকে তাকালো । তারপর ফোনের কথা শেষ করলো !

-তুমি কেমন আছো ?

আমার যতদুর মনে পড়ে আমি সুরাইয়াকে আপনি করে বলতাম । ও নিজেও আমাকে আপনি করেই বলতো । তাহলে আজকে আমাকে তুমি করে বললো কেন ? আর আমিই বা আপনি বাদ দিয়ে তুমি করে কেন বললাম ?
-এখানে ?
-তুমি তো এখানে ?
আমি বললাম
-আমি এখানেই থাকি । একটু সামনেই আমার অফিস ! তুমি ?
-আমারও অফিস এখানে ।
আমি খানিকটা অবাক না হয়ে পারলাম না । বললাম
-তোমার অফিস মানে ?

সুরাইয়া আমার কথার জবাব না দিয়ে অদ্ভুদ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো । আমার তখনই মনে হল সুরাইয়ার সাথে এখানে এভাবে দেখা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা ঠিক কাকতালীয় ব্যাপার হতে পারে না । এর ভেতরে অন্য কোন কিন্তু আছে । কিন্তু থাকতে বাধ্য


-----
দুই
----
আমি চট করেই এক বছর আগে চলে গেলাম । একটা বছর এর ভেতরেই পার হয়ে গেছে আর আমার এখনও মনে হয় এই যেন সেদিনের ঘটনা ! চোখের সামনে সব কিছু দেখতে পাই যেন ।
রাতের বেলা গাড়িটা চালতে আসলেই একটু মজা লাগত । পুরো রাস্তা পাওয়া যায় ফাঁকা । ইচ্ছা মত স্পিড তোলা যায় ! আর সব থেকে মজার ব্যাপার হল দিনের বেলায় যে রাস্তায় ২০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানো যায় না এই রাতের বেলা সেখানে ১২০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানো সম্ভব !
সেদিন রাতের বেলাতেও আমি ফুল স্পীডে গাড়ি চালাচ্ছিলাম । এতো রাতে এই পথটা একেবারেই ফাঁকা থাকে । আমি গাড়ির গতি আর একটু বাড়িয়ে দিলাম । এটাতে ১২৯ কিলোমিটার পার আওয়ার পর্যন্ত ওঠে ! দেখা যাক আজকে কত দুর তুলতে পারি !

যখন ১১০ পর্যন্ত উঠেছে তখনই পেছনে সাইরেন শুনতে পেলাম ।
সর্বনাশ !
পুলিশ !
এতো রাতে !
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় দুইটা বেজে গেছে ! এতো রাতে তো পুলিশের থাকার কথা না ! কাজ সেরেছে !
আমি লুকিং গ্লাসে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম । সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির গতিও কমিয়ে আনলাম। পুলিশের গাড়িটা আর একটু কাছে আসেই আমার বুকটা একটু ধক করে উঠলো।
আবারও সর্বনাশ !
এতো র‌্যাবের গাড়ি !

র‌্যাব জিনিসটা সবাই-ই একটু ভয় পায় । আমিও একটু ভয় পাই । যদিও খুব একটা ভয় পাওয়ার কারন নাই । আমার বড় মামা পুলিশে আছেন, তার ছোট ছেলে আর্মিতে আছে, আমার থেকে কয়েক বছরের ছোট । কোন সমস্যা হলে সামলানো যাবে । তবুও এই রাতের বেলা যদি র‌্যাবের গাড়ি আপনার গাড়ির পিছু নেয় ভয় পাওয়ার কারন আছে বৈকি ।

আমি গাড়ি গতি কমিয়ে আনতে আনতে একেবারে কমিয়ে আনলাম । আর তখনই র‌্যারের গাড়িটা আমাকে ক্রস করে সামনে চলে এল । মনে একটা ক্ষীণ আশা ছিল যে হয়তো গাতিটা আমাকে ওভার টেক করে চলে যাবে । কিন্তু সেই আশায় গুড়ে বালি । গাড়িটা থামলো ঠিক আমার গাড়ির সামনে । বাধ্য হয়ে আমাকেও গাড়ি থামাতে হল । থামানোর সঙ্গে সঙ্গেই দুজন কালো পোষাক পরা অফিসার আমার গাড়ির দিকে এগিয়ে এল । কালো পোষাক, কালো বুট আর মাথায় কালো স্কার্প । চোখের কালো চশমাটা দেখা যাচ্ছে না । একজন দাড়ালো আমার গাড়ির সামনে । মনে হয় নাম্বার প্লেট চেক করছে ।

আর একজন আমার গাড়ির জানলার কাছে । আমার দিকে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল । আসলে ওরা ভেবেছিল আমি হয় গাড়ি চুরি করে পালাচ্ছি । অথবা রাতের বেলা ঢাকার কিছু অভিজাত ঘরের ছেলে মেয়ে রাস্তায় বের হয় গাড়ি নিয়ে । রেস করে । কিন্তু আমার গায়ে অফিসে ফরমাল পোষাক দেখে লোকটি কিছুটা ইতস্তত করতে লাগলো ।
দেখলাম যে লোকটা আমার গাড়ির নম্বর প্লেট দেখছিল সেও প্রথম লোকটার পাশে এসে দাড়ালো । দুজনের চোখাচোখে কিছু কথা বলল । কিছু একটা ইশারা করলো মনে হয়।
আমি গাড়ির কাঁচ নামালাম ।
-কোন সমস্যা অফিসার ?
প্রথম জন আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-কোথায় যাচ্ছেন ?
-বাসায় যাচ্ছি।
-এতো রাতে ?
-জি । অফিসে একটু কাজ ছিল । বের হতে হতে একটু দেরি হয়ে গেছে ।

-কোন অফিস রাত দেড়টা পর্যন্ত চলে আমার ধারনা ছিল না !

আমি কেবল অবাক হয়ে তাকালাম কিছুক্ষন ! কারন কথাটা লোক দুজনের মুখ থেকে বের হয় নাই । বের হয়ে হয়েছে একটা মেয়ের কন্ঠ থেকে !
এই রাতের বেলা মেয়ে কন্ঠ !!
আমি লোক দুটোকে ছাপিয়ে ওদের গাড়িটার দিকে তাকানোর চেষ্টা করলাম ।
ল্যাম্প পোষ্টের হলুদ আলো পড়েছে র‌্যাবের গাড়িটার উপরে ! র‌্যাবের গাড়ির গায়ে হেলান দিয়ে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে ! কালো র‌্যাবের পোষাক পরে আছে ! তবে মেয়েটার পোষাকটা ঠিক র‌্যাবের পোষাকের মত না । মানে এতো ঢিলা ঢোলা না । বেশ টাইট ফিটিং ! বিশেষ করে মুভির নায়িকারা যখন কোন পুলিস অফিসারের রোল করে তখন যে টাইপের ড্রেসআপ করে সেই রকম ।


কোন র‌্যাবে এমন সুন্দর মেয়ে আছে ?
ও মাই গড !

দেখলাম আমার সামনের দুজন লোক একটু দুরে সরে গেল । মহিলা অফিসার আমার দিকে এগিয়ে এগিয়ে আসতে লাগলো ।
আমি নায়িকার চেহারাটা আরো ভাল করে দেখতে পেলাম । হলুদ আলোতে মনে হচ্ছে ....
কি মনে হচ্ছে থাক ! সব কিছু বললে আপনারা আবার আমাকে বদ পুলা বলবেন ।
আরো একটু কাছে আসতেই দেখলাম এই মহিলা অফিসার কালো চশমা পরেছে ! হিরোইন স্টাইল !
আর মাশাল্লা ! একটু আগে যে বলেছি মহিলা আসলেই মুভির হিরোইন দের মত দেখতে ।
আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল
-এতো কোন অফিস খোলা থাকে ?
আহা ! এই কন্ঠ নিয়ে আপনার তো কোন নিউজ চ্যানলের সংবাদ পাঠিকা হওয়ার দরকার ছিল ! আপনি র‌্যাবে কি করেন ! নাহ ! ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ! আমি বললাম
-আসলে ম্যাম ....।
-বাইরে আসুন
আমি গাড়ির দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসলাম ।
-ম্যাম ! আমার...।
-আপনার আইডি কার্ড দেখান ?
কি রে ভাই ? এতো ভাব নেয় কেন ?
কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না । আসলে মেয়েটা তার কথা বার্তায় একটা কাঠিন্য আনতে চাচ্ছে কিন্তু খুব একটা কাজ হচ্ছে না । এতো মিষ্টি কন্ঠস্বর থেকে ধমক শুনতে ভালই লাগছে ।
আমি আইডি কার্ড বের করে দিলাম ।
মহিলা র‌্যাব অফিসার কিছুক্ষন আমার আইডি কার্ডের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল
-কোন অফিসে চাকরী করনে আপনি ?
-আমার মনে হয় আপনি পড়া লেখা জানেন ?
মহিলা অফিসার আমার দিকে সরু চোখে তাকালো ।
আহা ! মেয়েটা চেহারায় আরো যেন একটা আবেদনময় ফুটে উঠলো । আমি নিশ্চিত যদি এখন এই মেয়ে র‌্যাবের পোষাক না পরা থাকতো তাহলে একটা কাজই হত ।

কি কাজ হত ?
বলা যাবে না !

মহিলা অফিসার আমার দিকে শীতল গলায় বলল
-যা জানতে চেয়েছি তার সোজা এবং সহজ উত্তর দিবেন আশা করি ।
আমি আামর অফিসের নাম বললাম ।
-এতো রাতে বাসায় যাওয়া কারন ?
-আসলে ম্যাম । ঐ এটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি তো । একটা ভিডিও কনফারেন্স ছিল ! আর বোঝেনই তো ওদের সময় আর আমাদের সময় ঠিক এক না । তাই এতো দেরি ।

আমার কেন জানি মনে হল মহিলা অফিসার আমার কথায় ঠিক সন্তষ্ট হল না ।
-শফি !
দেখলাম দাড়িয়ে থাকা দুজন অফিসের একজন এগিয়ে এল ।
-জি ম্যাম ।
-গাড়ি চেক কর । আমার তো মনে হয় এখানে কিছু আছে ।
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-চাবি ।
আমি চাবি এগিয়ে দিলাম ।
দেখলাম শফি মিয়া অনেক খোজা খুজি করলো আমার ডিক্কির ভিতর । কিছু পেল না ।
যখন আবার আবার আমাদের সামনে এল তখন তার মুখে হতাশা ।

মহিলা অফিসারও একটু হতাশ হল । কিছুক্ষন কি যেন ভাবলো । তারপর বলল
-ঠিক আছে আপনি আসতে পারেন । এতো রাতে ঢাকায় রাস্তায় ঘোরাঘুরি করবেন না !
আমি তখনও তার দিকে তাকিয়ে আছি । বিশেষ করে তার চোখ দুটো আসলেই কেমন নেশা ধরিয়ে দেয় ।

মহিলা অফিসার তার সাথে দুই অফিসার কে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যত হল । আমি পেছন থেকে বললাম
-মিস সুরাইয়া ।
তিনজনই দাড়িয়ে গেল । আমার দিকে পিছন ফিরে তাকালো ।
-আমাকে কিছু বলছেন ?
-আপনার নামতো সুরাইয়াই, তাই না ? আপনার নেম প্লেটে তো তাই লেখা আছে । একটা কথা বলতাম ।
-বলুন ।
-আপনার অফিসারদের যদি একটু দুরে যেতে বলতেন ।
-কেন ?
-না মানে, কিছু না ।
সুরাইয়া বলল
-বলুন ।
-আপনার চোখ দুটো অনেক সুন্দর । আপনি র‌্যাবে না থাকলে আমি নির্ঘাত আপনার প্রেমে পড়ে যেতাম !

দেখলাম সুরাইয়ার চোখে এক টা বিশ্ময় ! আসলে কেউ যে ওকে এই কথা বলতে পারে এটা ও ভাবতেই পারে নাই । আমি আরো কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলাম মহিলা র‌্যাব অফিসারের দিকে ।
সুরাইয়া আমার দিকে এগিয়ে এল ।
আবারও শীতল কন্ঠ বলল
-আপনার সাহস তো কম না । ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে রুলের ডলা দিলে ঠিক হয়ে যাবে ।
আমি হাসলাম ।
-যদি আমার সাথে একদিন লাঞ্চে যেতে রাজি হোন তাহলে ১০ দিন রুলের বাড়ি খেতে রাজি আছি ।
এবারও দেখলাম সুরাইয়া শীতল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
আহা ! কি সেই দৃষ্টি !
একটু একটু রাগ যেন উঠছে । নিজের রাগ কে দমানোর চেষ্টা করছে ।

আমি শফি সাহেবের দিকে তাকালাম । যদিও অন্ধকার ল্যাম্পপোষ্টের আলোতে তাদের চেহারা বেশ ভালই দেখা যাচ্ছে । দুজনের চেহারায় একটা হাসি হাসি ভাব । আমার কথায় তারা দুজনেই বেশ মজা পেয়েছে ।
আমি শফি সাহেব দিকে তাকিয়ে বললাম
-শফি সাহেব, আপনাদের সুরাইয়া ম্যাম কি বিবাহিত ?
-জি না । ম্যাম গত মাসেই আর্মী থেকে এখানে এসেছে ।
-শফি গাড়িতে বস ।
সুরাইয়া ধমক দিয়ে উঠল । তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আর একটা কথা যদি বলেছেন তাহলে সত্যি সত্যি কিন্তু আপনার খবর আছে ।
সুরাইটা কন্ঠটা একটু কাঁপছে । তারমানে সত্যি সত্যি রেগে গেছে ।
-আচ্ছা, আপনি রেগে যাবেন না । আমি না হয় পারিবারিক ভাবেই প্রস্তাব পাঠাবো ।

সুরাইয়া আর কোন কথা বলল না । সোজা পিছন ঘুরে হাটা দিল ।
-মিস ! একটু শুনেন প্লিজ !

আর কোন কথা হল না । মহিলা র‌্যাব অফিসার গাড়িতে করে চলে গেল ।
আমি দাড়িয়ে রইলাম ।
পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমি হাত নাড়লাম গাড়ির দিকে ।


-----
তিন
----
রেস্টুরেন্টার নাম গ্রিন-এ্যাবে ফুড কোর্ট । প্রতিদিনের এই দিনটা আমি অফিসে এমনিতেই একটু দেরি করে যাই । আজকে ইতিমধ্যে দুই ঘন্টা পার হয়ে গেছে । আমি পার্কে সুরাইয়ার সাথে দেখা হওয়ার পরে আর ওকে ছাড়তে পারি নি । নিজের সাথে বারবার যুদ্ধ করেই যাচ্ছি । বারবার মনে হচ্ছে যতটা সময় আমি সুরাইয়ার সাথে যতটা সময় কাটাবো ততটাই আমার পক্ষে কঠিন হয়ে যাবে ওকে মন থেকে মুছে ফেলা । অবশ্য ওকে মন থেকে মুছে ফেলা কোন ভাবেই সম্ভব না আমার জন্য । মনের এক কোনে ওকে আটকে রেখেছিলাম । ওর স্মৃতিটা ইচ্ছে করে অন্যান্য স্মৃতির মাঝে ডুবিয়ে রেখেছিলাম কিন্তু এখান মনে হচ্ছে আর সেটা সম্ভব না !

পার্কে থাকতেই সুরাইয়া বলল ও কেন এখানে এসেছে । এখান থেকে মাইল দশেক দুরেই এফ বিআইয়ের একটা ট্রেনিং সেন্টার আছে । সেখানেই নাকি রাষ্ট্রিয় ভাবে ওদের পাঠানো হয়েছে ট্রেনিং নেওয়ার জন্য । ওর সাথে আরও কয়েকজন এসেছে । আজকে ওদের অফ ডে । তাই এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে । এই পার্কটা দেখে এখানে ঢুকে পরেছে ।

স্বাভাবিক গল্প হলেও আমার কেন জানি ওর ওর এই গল্পটা মোটেই বিশ্বাস হল না । কেবলই মনে হল এর পেছনে অন্য কোন কারন আছেই । এভাবে হুট করে দেখা হয়ে যেতে পারে না ।
আমি কিছু জানতে চাচ্ছি কিন্তু সেটা বলতে পারছি না । এখনও ঠিক মত মনের ভেতরে সুস্থির হতে পারি নি । সুরাইয়া তখন বলল যে আমার কোন কাজ আছে নাকি । অনেক দিন পরে দেখা হয়েছে তাই কিছু সময় কাটানোই যায় । বলার চেষ্টা করলাম যে আমার অফিস আছে কিন্তু সেই কথা মুখ দিয়ে বের করতে পারলাম না । হাসি মুখে রাজি হয়ে গেলাম । তারপরই এখানে এসে হাজির ।

কফির অর্ডার দিয়ে সুইরাইয়াকে বললাম
-তা কদিন থাকবে এখানে ?
-ঠিক নেই । বছর খানেক থাকার কথা । কিংবা তার থেকেও বেশি । আসলে এখানে আসার আরেকটা কারন হচ্ছে আমার কিছু পড়ালেখা করার ইচ্ছে আছে ।
-কি বিষয় নিয়ে ?
-এখনও ঠিক করি নি । তবে দেখা যাক চেষ্টা করে ।
-ও ।

কথা হ ঠাৎকরেই শেষ গেল আমার । কয়েকবার চেষ্টা করে শেষে বললাম
মেজর সাহেব রাগ করবেন না ? এতো দিন দুরে থাকবে !

সুরাইয়ার মুখ দেখে মনে হল ও যেন এই প্রশ্নটার জন্যই অপেক্ষা করছিলো । বলল
-শাহরিয়ার খুব জলদি লেফট্যানেন্ট কর্ণেল হয়ে যাবে ।
-তাই নাকি ?
-হুম ।
-কেমন চলছে সংসার ?
সুরাইয়া হাসলো । তারপর বলল
-ভাল ! তোমার কি খবর ?
-আমিও আছি ভাল ।
-বিয়ে করো নি মনে হচ্ছে ? তা করবে না আর ?
-নাহ ।
-আমার মত আর কাউকে মনে ধরে নি ?

এই লাইণটা বলে সুরাইয়া বেশ জোরেই হেসে ফেলল । সুরাইয়ার হাসিটা আমার বুকের ভেতরে বিঁধলো বেশ শক্ত করেই । এফোড় ওফোড় করে দিতে চাইলো । আচ্ছা মেয়েটা কি কোন দিন আমাকে পছন্দ করেছিল ?
নাহ !
আমার জন্য ওর কোন অনুভুতি ছিল না । থাকলে সেদিন ও ঠিক ঠিক আমার দিকে একবার হলেও ফিরে চাইতো ! কিন্তু ও একটা বারও আমার দিকে ফিরে তাকায় নি ! আমার এখনই সেদিনের ঐ চলে যাওয়াটা খুব দারুন ভাবে পীড়া দেয় !


------
চার
----------
ঐ রাতের ঘটনার ঠিক তিন দিনের পরের ঘটনা ! আমি সরাসরি হাজির হয়ে গেলাম সুরাইয়ার ক্যাম্পে ! আমাকে দেখে সুরাইয়া দারুন ভাবে অবাক হয়ে গেল । আমি ওর সামনে বসে ছিলাম । সুরাইয়া আমার দিকে গম্ভীর ভাবে তাকিয়ে ছিল ।

আসলে ক্ষমতায় থাকা কাউকে এমন ভাবে অবাক হতে দেখে বেশ মজাই লাগে । আমারও মজাই লাগছিলো । আমি ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম এক ভাবেই । গতদিন রাতে মেয়েটা কালো পোষাক পরে ছিল কিন্তু আজকে সেই পোষাকে নেই । নীল রংয়ের একটা আটোসাটো জিন্স আর সাদা শার্ট পড়ে আছে । অবশ্য গায়ে একটা র‌্যাব লেখা কোটি টাইপের জ্যাকেট ছিল । চোখে কালো চশমা । একটু যখন আমার সামনে দিয়ে ও নিজের চেম্বারে এসে ঢুকলো ওকে তখন মোটেই কোন র‌্যাবের অফিসার মনে হয় নি । বরং মনে হয়েছে কোন ইউনিভার্সিটিতে দ্বিতীয় বর্ষে পড়া কোন মেয়ে । এই মেয়ে এখানে কেন এল কিভাবে !

সুরাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আপনি এখানে কেন এসেছেন ?
-আসলে আমার একটা কম্প্লেইন ছিল !
-তাহলে কম্প্লেইন বক্সে কম্প্লেইন রেখে যান । এখানে কেন ? আমি আপনার কম্প্লেইন শুনতে এখানে বসে নেই । আপনি আসুন !

ওর কন্ঠে স্পষ্ট বিরক্তি টের পেলাম ।
-চলে যাবো ?
-হ্যা !
-কিন্তু !
-কোন কিন্তু না ! আমি অনেক সহ্য করেছি । আর না । এবার কিন্তু সত্যি সত্যি আপনাকে লকাপে ঢুকাবো । একবার এখানে ঢুকলে প্রেম ভালবাসা কোথায় দৌড় দিবে । আমি বুঝতে পারছি আপনার পেছনে শক্ত কেউ আছে কিন্তু এখানে সে সব কোন কাজে আসবে না ।

আমি আরও কিছু সময় বসে রইলাম কোন কথা না বলে । আসলে ঐদিন রাতের পর থেকে মেয়েটাকে আমি কিছুতেই মাথা থেকে বের করতে পারছিলাম না । একটা মিনিটের জন্যও সুরাইয়াকে মাথার বাইরে থেকে অন্য কোন কাজে মনও দিতে পারছি না । শেষে আর উপায় না দেখা খোজ শুরু করলাম । খুব বেশি কষ্ট করতে হল না ওকে বের করতে । মামা ছিলেন তবে মামাতো ভাইটা বেশ কাজে দিলো । চটপট খোজ বের করে দিল ।

ভেবেছিলাম আমাকে এখানে আসতে দেখে মেয়েটা ঠিক ঠিক ভড়কে যাবে । প্রথম প্রথম সেটা গিয়েও ছিল কিন্তু মেয়েটা এতো জলদি সামলে নিবে সেটা ভাবি নাই ।
আমি আরও কিছুটা সময় বসেই থাকলাম । সুরাইয়া বলল
-আপনি এখনও বসে আছেন কেন ?

আমি আর কথা না বলে উঠে দাড়ালম । এই মেয়েকে কিভাবে পটাবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না !

-----
পাঁচ
----
এবার সুরাইয়ার চোখে সত্যি সত্যিই বিশ্ময় দেখতে পেলাম । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত প্রায় ১০টার কাছাকাছি বাসে । সুরাইয়ার অফিস থেকে বের হয়েছিলাম সকাল দশটার দিকে । এতোটা আমি সুরাইরার অফিসের পাশের চেয়ার দোকানেই বসে আছি । কয় কাপ চা খেয়েছি আমি নিজেই জানি না । দুপুরে নাস্তাও চলেছে চা আর বিস্কিট দিয়ে ।

এর মাঝে মাঝে সুরাইয়া দুইবার অফিস থেকে বের হয়ে কোথায় জানি গিয়েছিলো । আমাকে দেখে নি । কিন্তু এবার বের হয়ে আমাকে ঠিক ঠিক দেখলো । এগিয়ে এল আমার কাছে ।

বিশ্ময় কাটতে এখনও সময় লাগছে ।
-সুমন সাহেব আপনি ........
কথাটা শেষ করলো না সে । আমি বললাম
-আসলে এই দোকানের চা টা খুব বেশি ভাল । এক কাপ খেয়েই প্রেমে পড়ে গেছি । তাই সকাল থেকে খেয়েই চলেছি ।

সুরাইয়া কি বলবে ঠিক বুঝতে পারলো না । ল্যাম পোস্টের আলোতে ওকে খানিকটা অসহায় মনে হল ।

আর কিছু না বলে ও গাড়ির দিকে হাটা দিল । আমি মনে মনে বললাম, যাহ শ্লা এতো সময় বসে থাকলাম খামোখাই । কোন কাজই .....
তখনই ঘটনা ঘটলো ...
না কাজ হয়েছে ।
সুরাইয়া গাড়ির ভেতরের ড্রাইভারকে কি জানি বলল । গাড়ি নিয়ে তারা চলে । সুরাইয়া রয়ে গেল ।

সুরাইয়া আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল
-আপনি এমন পাগলামি কেন করছেন ?
-আপনাকে বলেছিলাম আমি কারন টা সেদিন !
-আপনি যেটা ভাবছেন সেটা কোন দিনই হবে না । এটা সম্ভব না !
-আচ্ছা ঠিক আছে । আমি হওয়াতে বলছি না । এক কাপ চা কি খাওয়া যাবে আমার সাথে ? আপনাদের অফিসের সামনের এই চা টা আসলেই চমৎকার !

সুরাইয়া বলল
-দুপুরের কি খেয়েছেন ?
বাহ । মেয়েটা দেখি আমার দুপুরের খাওয়া নিয়ে টেনশন করছে । এই তো লাইনে চলে আসছে । আসবে না মানে ?

আমি বললাম
-তেমন কিছুই না । চা আর বিস্কিট !
-আসুন আমার সাথে ।

আমাকে নিয়ে ওর ওদের ক্যাম্পের ক্যান্টিনে ঢুকলো । তারপর বিরানীর অর্ডার দিল । তাকিয়ে দেখলাম আসে পাশের কয়েকজন র‌্যাবকর্মকর্তা আমাদের দিকে কেমন চোখে তাকাচ্ছে । ঠিক যেন মেনে নিতে পারছে না । তবে তারা ঠিক মত কোন কথা বলছে না ।
সুরাইয়া বলল
-আপনি এখন বিরিয়ানী খাবেন । তারপর সোজা বাসায় চলে যাবেন । আর কোন দিন যেন এখানে না দেখি !
আমি বিরিয়ানী মুখে নিতে নিতে বললাম
-আমি চা খেতে আসবোই ! আমি সেই রকম চা খোর বলতে পারেন....
-দেখুন .....।
-আরে আপনাদের এখানে বিরিয়ানীটাও চমৎকার তো । এটা খেতেও তো আসতে হবে, আমি বিরিয়ানী খোরও বলতে পারেন । আচ্ছা এখানে কি সিভিলিয়ানদের খেতে দেয় ?

সুরাইয়া গম্ভীর মুখে থাকতে থাকতে হেসে ফেলল । আমি তখনই আবারও মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেলাম আবারও ।
আমি আবার বললাম
-আচ্ছা আপনার নাম সুরাইয়া ছাড়া আর কিছু নেই । এটা মনে হচ্ছে আপনার ফরমাল নেম । নিক নেম নাই ?
-নাহ ।
-আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আছে ।
-আছে তাহলে বের করেন ।
-হুম । করা যায় । করবো দেখে নিয়েন ।
-দেখা যাবে ।

খাওয়া শেষ সুরাইয়া এবার নিজ দায়িত্বে আমাকে বাসায় পৌছে দিল । বাসার সামনে এসে বলল
-ভাল থাকবেন সুমন সাহবে, আপনার সাথে আর দেখা হবে না ।
-হবে । হতেই হবে ।
সুরাইয়া কেবল হাসলো । আর কিছু বললাম না ।

যদিও বলেছিলো আর দেখা হবে না কিন্তু তারপর থেকেই আমাদের দেখা হতে লাগলো । ওর সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক তো হলই সেই সাথে ওর সাথে সে কর্মকর্তা গুলো থাকতো তাদের সাথেও পরিচয় গেল । আমাদের বারবার দেখা হতে লাগলো । অফিস থেকে বের হয়েই আমি ওর খোজ করতাম । কোন দিন অফিসে কিংবা কোন দিন থাকতো বাস্তায় । মাঝে মাঝেই আমরা রাস্তার পাশে বসে চা খেতে লাগলাম । সময় আসলেই খুব ভাল যেতে লাগলো । সুরাইয়া আমার সাথে বেশ ফ্রিও হয়ে গেল ।


একদিন ওকে সরাসরি বিয়ের কথা বলতেই ওর মুখটা কেমন যেন কালো হয়ে গেল । বলল
-এটা সম্ভব না
-কেন ?
-বলেছি না ! এটা নিয়ে আমি আর কোন কথা বলতে চাই না । যদি এর পর থেকে এটা নিয়ে কোন কথা বলেন তাহলে আপনার সাথে সত্যি সত্যি আর কোন দিন দেখা হবে না ।

ব্যাস আমি আর কোন কথা বললাম না । কিন্তু কথা না বলে ঠিক থাকতেও পারছিলাম না । মেয়েটার সমস্যা টা কি ! যেদিন প্রথম দেখা হয়েছিলো সেদিনই ওকে বলেছিলাম পারিবারিক ভাবেই প্রস্তাব পাঠাবো । তাই মনে হল ও বাবার কাছে বললে মনে হয় কাজ হবে । আর একবার যদি ওর বাবার রাজি হয় তাহলে মেয়ে নিশ্চয়ই অমত করবে না !

সুরাইয়ার বাবাও একজন আর্মি পার্সোন্যাল । আমার সেই মামাতো সাথে যোগাযোগ করলাম । মামাতো ভাইটাই সুরাইয়ার বাবার সাথে দেখা করার একটা ব্যবস্থা করেই ফেললাম । আমি প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো সুরাইরার বাবা নিশ্চয়ই খুব গুরু গম্ভীর মানুষ হবে । কিন্তু পরিচয়ে দেখা গেল খুবই হাসি খুশি মানুষ । আমি টুকটাক কথা বলে নিজের পরিচয় দিলাম । সুরাইয়ার পরিচিত জেনে তিনিও খুশি হলেন । তারপরই আমি কথাটা বললাম ।

কথাটা শুনে দেখলাম সুরাইয়ার বাবার মুখটাও কালো হয়ে গেল । তারপর বলল
-আসলে, রিনির বিয়ে অনেক দিন আগে থেকেই ঠিক করা আছে । সব কিছু ঠিকঠাক । এ বছরের শেষের দিকেই ওদের বিয়ে হবে ।

বুকের মধ্যে কেমন একটা কাঁটা বিধে গেল । এই জন্যই মেয়েটা আমাকে বারবার বলছিল যে এটা সম্ভব না ।
সুরাইয়ার বাবা বলল
-আসলে রিনির বিয়ে ঠিক আমি অনেক দিন আগে থেকেই করে রেখেছি । দাড়াও তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই ।

এই বলে তিনি জোড়ে ডাকতে লাগলেন
-শাহরিয়ার ! কোথায় গেলে ?

তাকিয়ে দেখি একটু পরেই ভেতরের ঘর থেকে একজন আর্মীর পোষাক পরা একজন সুদর্শন যুবক বের হয়ে এল । যদিও দেখতে সে সুপুরুষ তবে কেন জানি শাহরিয়ার সাহেবের চোখের দিকে তাকিয়ে আমার মোটেই ভাল লাগলো না । কেমন একটা নিষ্ঠুর ভাব আছে । এর সাথে সুরাইকে কোন ভাবেই মানাবে না !

শাহরিয়ার সাহেব আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো । কথাও বলল হাসি মুখে । কিন্তু আমার আসলেই শাহরিয়ার সাহেবকে ভাল লাগলো না । লাগার কথাও না । এটার ভেতরে অন্য রকম একটা ব্যাপার আছে ।

আমার আর কিছু ভাল লাগছিলো না । সব কিছুতেই একটা দম বন্ধ দম বন্ধ ভাব মনে হচ্ছিলো । মনটা আর কিছুতেই এখানে থাকতে মনে চাইলো না । আমি সুরাইয়ার বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাইরে বের হয়ে এলাম ।

ওদের বাসা থেকে বের হয়ে হাটতে শুরু করেছি । গাড়িটা রেখেছি খানিকটা দুরেই । পায়ে যেন বল পাচ্ছি না । বুকের ভেতরে সেই দম বন্ধ ভাবটা কাটছিলো না কিছুতেই । সুরাইয় কোন ভাবেই আমার হবে না এটা আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না । কিন্তু এটাই বাস্তব । আমাকে এটা মেনে নিতেই হবে ।

আস্তে আস্তে আমার গাড়ির দিকে এগোতে লাগলাম । একবার মনে হল মামাতো ভাইটাকে বলে যাই যে আমি চলে যাচ্ছি কিন্তু ইচ্ছে হল । আমি আস্তে আস্তে এগুতে লাগলাম ।
কিছুদুর এগিয়েছি তখনই পেছন থেকে একটা গাড়ি আসার আওয়াজ পেলাম । কে আসছে সেটা দেখার প্রয়োজন মনে করলাম না । কেবল আমার মাথায় সুরাইয়ার চিন্তাই খেলা করছিলো । গাড়িটা একদম কাছে চলে এসেছে । আমি আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম । আরও কিছু কাছে আসতেই মনে হল গাড়িটা থেমে গেল । আমি কৌতুহল নিয়ে যখনই তাকাতে যাবো ঠিক তখনই আমার মাথায় কেউ যেন কিছু একটা দিয়ে বাড়ি মারলো । আমি মাটিতে পড়ে যাওয়ার আগে কেবল একটা কালো রংয়ের বুট দেখতে পেলাম । আমার আর কিছু মনে নেই ।


-----
ছয়
-----
যখন জ্ঞান ফিরলো তাকিয়ে দেখি আমি একটা ছোট রুমের ভেতরে রয়েছি । আমার হাত দুরে সামনে টেবিলের সাথে হ্যান্ড কাফ দিয়ে আটকানো ! মাথাটা কেবল ঝিম ঝিম করছে । একটা ব্যাথা অনুভব করতে পারছি। ঠিক তখনই আমার ঠিক মত জ্ঞান ফেরে নি । কেবল ব্যাথা আর আলোর অনুভুতিটা টের পাচ্ছি । তারপর মনে পড়লো কিভাবে এখানে এসেছি ।
কিন্তু কেন ?
পরক্ষনেই আমার মনে কেবল একটা নামই এল !

শাহরিয়ার !
যদিও আমি দেখি নি তবে আমার কেবল মনে হল সেই ই হবে । ওর চোখ আমার তখন কোন ভাবেই ভাল লাগে নি । সম্ভবত আমি যখন সুরাইয়ার বাবাকে এসব কথা বলছিলাম তখন ও পাশের ঘর থেকে সব শুনতেছিলো ।

আরো প্রায় ঘন্টা খানেক পরে শাহরিয়ার সাহেব ঘরে ঢুকলো । আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ঘৃণা ভরা চোখে ।
তারপর বলল
-আপনাকে এখানে কেন এনেছি জানেন ?
-জি না !
-কেন ? আপনার তো জানার কথা ? আমার বউয়ের পেছনে যখন ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তখন একবারও মনে হয় নি কেউ আপনার খবর নিতে পারে !
-আপনার বউ এখনও সে হয় নি !

এই কথা বলতেই খুব জোরে একটা থাপ্পড় খেলাম !
-চুপ %$&@# । তুই কি ভেবেছিস আমি তোর খোজ রাখবো না । ঐ দিন রাত থেকে আমি তোমর খবর জানি । কেবল মাত্র তোর খবর নেওয়ার জন্যই আমি দেশে এসেছি !

আমি আর কোন কথা না বলে চুপ করে রইলাম । এখন ওর সামনে কথা বলা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না । শাহরিয়ার বলল
-কালকে পেপারে হাজারো নিউজের ভেতরে একটা নিউজ কি হবে জানেন ? র‌্যাবের সাথে কথিত বন্দুক যুদ্ধে শীর্ষ সন্ত্রাসী সলিম কালাম নিহত !
শাহরিয়ার এই কথা বলেই সে হো হো করে সেহে উঠলো । তার হাসি শুনে সত্যি সত্যিই আমি ভয় পেয়ে গেলাম । আমাকে ক্রস-ফায়ারে দিবে !
আবার শাহরিয়ার বলল
-অথবা ভাবছি আপনার লাশটাই গুম করে দিব । কেউ জানবেই না আপনি কোথায় গেছেন । আপনার গাড়িটার চাবি আছে আমার কাছে । সেটাও গুম করে দেওয়া যাবে । ব্যাস মামলা খালাস !

আমার ভয় পাওয়া উচিৎ তবে খুব একটা ভয় পেলাম না কেন জানি । মামা রয়েছে তারপর মামাতো ভাইও এখানেই আছে কোথায় । ঠিক ঠিক খোজ পেয়ে যাবে । এই বেটা আমাকে মেরে ফেলার সাহস করবে না । যখন বলল আমার খোজ নিয়েছে তখনই নিশ্চয়ই আমার পেছনে আমার ঐ মামার কথাও জেনে থাকবে । আমার মুখের ভাব দেখেই মনে হল শাহরিয়ার সাহেব আমার মনের কথা টের পেয়ে গেল । বলল
-ভাবছেন আপনার মামা আপনাকে বাঁচাতে আসবে ? কিংবা ঐ পিচ্চি ? হাহাহাহা !
তারপর আরও কিছু সময় আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল
-আপনার ঐ পিচ্চি এখান সাভার ক্যান্টরমেন্টে আছে । ওকে পাঠানোর ব্যবস্থা আমিই করেছি । তার উপর আপনার মামা এখন শহরে নেই তাই না ?

আমি একটু ঢোক গিললাম । কথা আসলেই সত্যি । মামা গতকাল রাজশাহী গেছে মামার স্বশুর বাড়ি ।
শাহরিয়ার বলল
-দেখলেন তো । মানুষের যখন মরন হয় তখন সে ঠিক ঠিক মরনের কাছে চলে আসে । আমার প্লান ছিল আপনাকে আমি রাস্তা থেকে উঠিয়ে আনবো । কিন্তু আপনার মরার এতো শখ যে আপনি নিজেই এখানে চলে এসেছেন ! হাহাহাহা !

এবার আমি একটু ভয়ই পেলাম । ভীত চোখে তাকিয়ে রইলাম শারিয়ার দিকে । হঠাৎ করেই আমার বুকের সেই ব্যাথাটা আবার যেন ফিরে এল । সুরাইয়াকে না পাওয়ার একটা কষ্ট আর একটু পরে আমি মরতে যাচ্ছি এই কষ্ট, আমি খানিকটা নিরুপণ করার চেষ্টা করলাম কোনটা বেশি বড় । সুরাইয়াকে না পাওয়ার কষ্ট নাকি এতো জলদি মারা যাওয়ার কষ্ট !
জানি না !

হঠাৎই শাহরিয়ার বলল
-চলুন । আপনার সময় হয়েছে ।

শাহরিয়ার আমার দিকে এগিয়ে আসতে ঠিক সেই সময় ঘরের দরজা দিয়ে আরেকটা ছায়া মুর্তি দেখতে পেলাম ।
বড় পরিচিত ।

সুরাইয়া !

ও আমার দিকে একবার তারপর শাহরিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো । কয়েক মুহুর্ত যেন সময় থেমে গেছে । কেউ যেন নড়তে ভুলে গেছে ।
সুরাইয়া কোন কথা না বলে আমার কাছে এল । তারপর পকেট থেকে একটা চাবি বের করে আমাকে খুলে নিয়ে মুক্ত করে নিল । তারপর শারহিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি এই কাজটা করবে আমি কোনদিন ভাবতেই পারি নি । আজকে যদি ওর কিছু হত তাহলে তোমাকে যে আমি চিনি কিংবা তোমার সাথে আমার কিছু হতে যাচ্ছে এটা তোমাকে ভুলে যেতে হত !

আমি তখনই শাহরিয়ারের দিকে তাকিয়ে । ওর চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে । পারলে আমাকে এখানেই সেই াগুন দিয়ে ভষ্ম করে দিবে ।

আমাকে নিয়ে এবার সবার সামনে দিয়েই বের হয়ে এল । আমি হঠাৎ করে আটকে ভাবে কিংবা এভাবে হঠাৎ করেই ছাড়া পেয়ে যাবো কোন টাই ভাবি নি । সুরাইয়া আমাকে আমার গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে এল । তারপর বলল
-তুমি আর কোন দিন আমার সাথে দেখা করতে আসবে না ! আমার সাথে শারহরিয়ার বিয়ে হবে খুব জলদি !
-রিনি !
সুরাইয়া অরফে রিনি আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুটা সময় । আমি বললাম
-দেখলে তো তোমার নাম ঠিক বের করে ফেললাম । কিন্তু আজকের পরে আর ডাকতে পারবো না এই যা ! আচ্ছা একটা কথার জবাব দিবে ?
-কি ?
-তুমি ঐ ছেলে ভালবাসো না আমি জানি ! আমাকে কি ভালবাসো না ?
সুরাইয়া আবারও দীর্ঘক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইলো । তারপর আমার গালে ছোট্ট করে একটা চুম খেয়ে বলল
-তুমি অনেক ভাল ছেলে । দেখবে ঠিক ঠিক খুব ভাল একটা মেয়ে তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছে ।

বলতে চাইলাম আমার অন্য কাউকে দরকার নেই কিন্তু বলা হল না ।
তোমাকে দরকার !
কিন্তু বলা হলনা ।

সুরাইয়া আর দাড়ালো না । হাটা দিল যেদিকে থেকে এসেছিলো সেদিকে ।

আমি তাকিয়েই রইলাম একবার এই আশায় যে সুরাইয়া আমার দিকে ফিরে চাইবে । একবার ফিরে চাইবে !


-----
সাত
----
সুরাইয়া কফি শেষ করেছে অনেকক্ষণ আগেই । চুপ করে বসে আছে । আমি ওকে চুপ করে বসে থাকতে দেখে বললাম
-তুমি এখানে আমার জন্য এসেছো তাই না ?
সুরাইয়া মাথা নিচু করে রইলো কিছুটা সময় । তারপর বলল
-আমি দুই মাসের লিভ নিয়েছি । এখানে কোন ট্রেনিংয়ের জন্য আসি নি !
-তাহলে ??

আমার তখনই ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না আমি কি শুনছি ! তাহলে কি ?
না ! মোটেই এটা হতে পারে না ।
নাকি হচ্ছে !
ঐদিন কি একটা না পাওয়ার বেদনা এখনও আমার বুকের ভেতরে লেগে আছে আজকে সেটা যেন আবার নতুন করে আন্দোলিত হল ।
সুরাইয়া বলল
-আমি ঐ দিন ফিরে চেয়েছিলাম তোমার দিকে । কিন্তু তুমি ততক্ষনে মাথা নিচু করে ফেলেছো । ঐদিন যদি দেখতে তাহলে তোমার ঐ প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যেতে ।
বলেই সুরাইয়া আমার দিকে তাকালো । ওর চোখের কোনে আমি যেন কিছুটা অশ্রু দেখতে পেলাম । সুরাইয়া বলল
-আমি ঐ পার্কটাকে গত এক মাস থেকে যাই । তোমার সাথে দেখা হবে বলে । আরও ভাল করে বললে তুমি আমাকে দেখবে বলে । আমি নিজ থেকে তোমার দিকে যেতে পারি নি ।

আমি কি বলবো ঠিক খুজে পেলাম না । সুারাইয়া বলল
-আমি ঠিক খোজ পেয়েছিলাম তুমি এখানে চলে এসেছে । কেন চলে এসেছো তাও বুঝতে কষ্ট হয় নি ।
-আর শাহরিয়ার ?
-ও তারপরই আবারও বাইরে চলে যায় । ফিরে আসে আরও মাস ছয়েক পরে । আমাকে বিয়ে করতে চাইলেও আমি আরও সময় চেয়ে নিই । একটা সময় আবিষ্কার করি যে ওকে আমি কিছুতেই বিয়ে করতে চাই না । ওকে আমি কোন দিন ভালবাসি নি । পারিবারিক ভাবে বিয়ে হচ্ছিলো বলে খুব একটা আপত্তিও ছিল না কিন্তু তোমার সাথে দেখা হওয়ার পরে ...... তোমার পাগলামো তোমার সাথে সময় কাটানোর পরে..... আসলে ওকে আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব না !
-তাহলে এখন ?

-জানি না কি করবো ! ঠিক করেছি আর ফিরে যাবো না !
-মানে কি সত্যি !
-বাবা প্রথম প্রথম একটু রাগ করবে কিন্তু পরে ঠিক হয়ে যাবে ।

আমার তখনও ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না সুরাইয়ার কথা । আমি কেবল ওর দিকে তাকিয়েই রইলাম । আমি কিছু ভাবতে পারছি না । ভাবতে চাচ্ছি না । স্বপ্ন মনে হচ্ছে । আসলেই কি সত্য ? স্বপ্ন দেখছি না তো !!




-------------------

অনেক দিন আগে মহিলা র‌্যাব অফিসার সুরাইয়া এবং আমার সম্ভাব্য ছোট প্রেমের গল্প নামে একটা গল্প লিখেছিলাম । সেটা ছিল একদমই ছোট একটা গল্প । আজকে সেই গল্পটা আরও বড় করে লিখে শেষ করে ফেললাম ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৪৭
২০টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×