somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনু গল্পঃ পাঠাও আর বাঁচাও

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি গুগল


দবির সাহেব বেশ বিরক্ত । রিক্সা করে বাসায় ফিরছিলেন । তবে আজকে একটা কাজ থাকায় পান্থপথে আসতে হয়েছিলো । সারাদিনের অফিস শেষে বেশ ক্লান্ত লাগছে তার । কিন্তু রাস্তায় কুকুর বিড়ালের জ্যাম লেগে আছে । কিছুতেই যেন ছাড়তে চাইছে না । এই জন্য তিনি সাধারনত এই রাস্তায় আসতে চান না । কিন্তু মাঝে মাঝে আসতে হয় ।এখন তার আর কিছুই ভাল লাগছে না । কেবল বাসায় গিয়ে একটু ঘুমাতে ইচ্ছে করছে ।

অনেক অপেক্ষার পর তার রিক্সা পান্থপথ মোড়ে এসে থামলো । একটু যেন শান্তি পেল । আরেকটা সিগনাল পার হলেই বাকি রাস্তাটা একটু সহজ হবে তার জন্য । আর জামে পড়তে হবে না খুব একটা । বাঁ দিকে তাকাতেই তিনি দেখতে পেলেন একটা বাইকের পেছনে একটা যুবক ছেলের সাথে একটা মেয়ে বসে আছে । বাইকের আসনে চশমা পরা ছেলে । তার পেছনে একটা মেয়ে । মেয়েটার চেহারা দেখা যাচ্ছে না । দবির সাহেবের মেজাজটা মুহুর্তেই খারাপ হয়ে গেল । তিনি সব কিছু সহ্য করতে পারেন কিন্তু ছেলে-মেয়েদের এমন অবাধ ঘুরাঘুরি একদম সহ্য করতে পারেন না । ইচ্ছে হয় ধরে ধরে একেকটাকে থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে করে । কিন্তু চাইলেই দিতে পারেন না । দেওয়া যায় না । তিনি মুখ বুঝে সহ্য করে নিলেন ।

ঠিক সেই সময়ে তিনি অবাক হয়ে দেখলেন বাইকের পেছনের মেয়েটি আর কেউ নয়, তার নিজের মেয়ে সাদিয়া । তীব্র বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলো সেদিকে । কিছুতেই যেন বিস্মাস হচ্ছে না । একটা অচেনা ছেলের সাথে বাইকে করে ঘুরে বেড়াচ্ছে । এটা সে কোন ভাবেই সহ্য করতে পারবেন না । রিক্সা থেকে এক লাফেই নেমে গেলেন তিনি । তারপর সোজা গিয়ে হাজির হলেন বাইকের সামনে ।


বাবাকে দেখেই চমকে উঠলো সাদিয়া । বাবার এই ব্যাপারটা সম্পর্কে সে খুব ভাল করেই জানে । ছেলে মেয়েদের এমন অবাধ মেলামেশা তিনি মোটেই পছন্দ করেন না । আর তার নিজের মেয়ে কি না অন্য ছেলের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে ! সাদিয়া বাবাকে দেখেই বাইক থেকে নেমে গেল । তাকিয়ে রইলো বাবার দিকে । মুখ থেকে আপনা আপনি বেরিয়ে গেল, বাবা ! তুমি এখানে ?

দবির সাহেব কি বলবেন খুজে পেলেন না । তার ইচ্ছে করলো এখনই সাদিয়াকে একটা চড় বসিয়ে দেন । কিন্তু তার আগেই সামনে বসা ছেলেটা বলল, ম্যাডাম ১২০ টাকা হয়েছে ।
সাদিয়া খানিকক্ষণ ফ্যাঁলফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে বলল, হ্যা ১২০ ?
দবির সাহেব দেখলো বাইকে বসা ছেলেটা মোবাইল বের করে কি যেন টেপাটেপি করে মোবাইলটা সাদিয়ার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে ।

সাদিয়া সেদিকে তাকিয়ে রইলো কিছুটা সময় । রাকিব কোন এপস বের করে নি । সেখানে মেসেজ অপশন ওপেন করা । পাঠাও এর একটা সার্ভিস মেসেজ দেখা যাচ্ছে । সাদিয়া মুহুর্তেই বুঝে গেল ব্যাপারটা । তারপর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল
-বাবা ১২০ টাকা দাও তো !
দবির সাহেব বললেন
-কেন ?
সাদিয়া বলল
-বাবা দেখছো না কি পরিমান জ্যাম, তাই পাঠাও রাইড নিয়েছি । দাও না ১২০ টাকা ।

দবির সাহেব কোন কথা না বলে পকেট থেকে ১২০ টাকা বের করে দিল । সাদিয়া সেটা রাকিবের হাতে ধরিয়ে দিল । তারপর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,
-তুমি কি বাসায় যাচ্ছো ?
-হ্যা ।
-আমিও যাবো । একটা কাজে বের হয়েছিলাম । চল ।

দবির সাহেবকে খানিকটা দ্বিধাগ্রস্থ মনে হল তবে সে কোন কথা বলল না । তার মেয়ে যে অন্য মেয়েদের মত হয় নি এটা জেনে সে খুব আনন্দিত । সামনে বসা ছেলেটা আসলে পাঠাও ড্রাইভার । তার মেয়ে কোন ভাবেই অন্য কোন ছেলের সাথে ঘুরতে পারে না ।

সাদিয়াকে নিয়েই আবার রিক্সাতে উঠে বসলেন । একটু পরেই সিগনাল ছেড়ে দিল ।

সাদিয়া রিক্সায় চড়ার সময়ে আরেকবার রাকিবের দিকে তাকালো । রাকিব তখনও তাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে । ভাগ্যভাল সময় মত বুদ্ধিটা বের করেছিলো । নয়তো আজকে ওর খবরই ছিল । আজকে তো আর দেখা হল না অন্য দিন রাকিবকে এর জন্য একটা আলাদা উপহার দিতে হবে !



(পাঠাও কেবল আপনার তথ্যই নিয়েছে সেটা নয় মাঝে মাঝে এমন বিপদে আপনাকে উদ্ধারও করতে পারে)


সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০১
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×