somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ আমার সাদা পরীটা

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



-কি ব্যাপার বয়ফ্রেন্ড কি খবর ?

তানজিলার দুষ্টুমি দেখে আমি খানিকটা মনে মনে হাসলাম । এতো সহজে সে আমাকে বয়ফ্রেন্ড বলতে পারলেও আমি তাকে কিছুইতে গার্লফ্রেন্ড বলতে পারছি না । তবে আমি না বলতে পারলেও এতোক্ষনে আমার আর ওর পরিচিত সবাই জেনে গেছে যে, আমি আর ও এই সম্পর্কে জড়িয়ে গেছি ।
ওর পরিচিত গোটা পঞ্চাশেক মানুষ এরই মধ্যে আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে ফেলেছে । আমি জানি আমার পরিচিত মানুষেরাও তাকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে ফেলেছে এরই মধ্যে । এই ঘন্টাখানেক আগে ফেসবুকে মেয়েটা সাথে আমার ইন এ রিলেশনশিপ স্টাটাস আপডেট করা হয়েছে । যদিও ঘটনা খানিকটা অন্য রকম !

তানজিলার সাথে পরিচয়টা বেশ অদ্ভুদ ভাবে । একদিন বিকেল বেলা আমি ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম । এমন সময় একজন আমার ইনবক্সে নক দিয়ে বলল যে আমি বিশেষ কেউ কি না ! এরকম প্রশ্ন আমার কাছে বেশ অদ্ভুদ মনে হল । অন্তত এমন করে আমার কাছে এর আগে কেউ কিছু জানতে চায় নি কোন দিন !
আমি বিশেষ কেউ কি না !
আমি জানতে চাইলাম হঠাৎ এই প্রশ্ন ?
এরই ভেতরে আমি মেয়েটির প্রোফাইলে ঘুরে এসেছি । মেয়েটির নামের বানানটা বেশ অদ্ভুদ । লাজিনতা । এই নাম আমি আগে কোন দিন শুনিও নি । লাজিনতা তখন আমাকে জানালো যে আমার ফ্রেন্ড লিস্টে একজন ঢুকতে চায় । এবং সেই মানুষটি লাজিনতাকে আমার কাছে অনুরোধ করতে বলেছে যেন আমি তাকে লিস্টে যুক্ত করে নিই ।

তখন অবশ্য আমার ফ্রেন্ড লিস্ট ছিল খুবই ছোট । পরিচিত মানষ ছাড়া আমি কাউকেই আমার লিস্টে যুক্ত করতাম না । আমি তাকে তখন সরাসরিই মানা করে দিলাম । ব্যাপারটা তানজিলার কাছে সম্ভবত একটু অন্য রকম লেখেছিলো । এই মেয়ে সম্ভবত না শুনে খুব একটা অভ্যস্ত নয় । তার পেছনে অবশ্য কারনও ছিল । সুন্দরীদের খুব একটা না শুনতে হয় না । কেউ তাদের কিছু বললে সেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হয়ে যায় । আর সত্যি বলতে আমি তানজিলার মত সুন্দর চেহারার কাউকে না বলাটা খুবই কষ্টের । মন কিছুতেই সায় দিতে চায় না । তবে আমি অনলাইনের ব্যাপারে সব সময়ই সাবধানী । অনলাইনের চেনা জানা পরিচয় সব সময়ই খুব ঠুনকো হয়ে থাকে । খুব সহজেই মানুষকে ঝামেলাতে ফেলতে পারে ।

মনে ভেতরে আমার খানিকটা আকুপাকু করছিলো তানজিলার অনুরোধটা শোনার জন্য । তবে এর থেকেও বেশি তানজিলা যদি অন্যের জন্য না হয়ে নিজে আমার লিস্টে যুক্ত হতে চাইতো তাহলে বেশি খুশি হতাম । তারপর দিনই তানজিনার সাথে আবার কথা হল । সে সেদিন আমাকে আবারও সেই একই প্রশ্ন করলো এবং আমি আবারও বললাম যে আমি খুবই সাধারন একজন । তবে এবার সে নিজেই খুজে বের করলো সব । আমি যে গল্প লিখি সেটা সে নিজেই বের করে ফেলল । তারপর আমাকে বলল এতো ভাব না নিলে বলে দিলেই হত । সেদিন আরও কিছু কথা হল । সে কোথায় থাকে কি পড়ে এই । সেদিনই জানতে পারলাম যে তার নাম আসলে তানজিলা । নামটা সে ঠিক উল্টো করে লিখেছে । সেই হিসাবে আমাকে সে ডাকতে শুরু করলো "পুঅ" বলে । কি হাস্যকর দেখাচ্ছিলো নামটা । কয়েকবার মনে মনে উচ্চারন করে দেখলাম । আরও বেশি হাস্যকর শোনাচ্ছে ।

তারপর কিভাবে যে তানজিলা আমার লিস্টে যুক্ত হয়েছিলো আমি মনে করতে পারছি না । হয় সে নয়তো আমি তাকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম । তারপর তার হোয়াটসএপেও যুক্ত হয়ে গেলাম । নিয়মিত কথা না হলেও মাঝে মাঝেই তানজিনার সাথে কথা হত । আর ওর ছবি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করতাম । কারন তানজিলা সত্যিই সত্যিই নিখুত সুন্দর ছিলো । চোখ নাম মুখ আর চেহারার একেবারে চমৎকার সংযোজন । সত্যিই আমি ওর মত চমৎকার চেহারা অনেক দিন দেখি নি ।

সেদিন ও একটা ছবি দিয়েছিলো ওর ছোট ভাইয়ের সাথে । ছবিটার দিকে বেশ কিছু সময় তাকিয়ে রইলাম । মেয়েটা কালো রংয়ের একটা টিশার্ট পরেছিলো । সে সাথে একটা সাদা লেগিংস । অন্যান্য সময় ওর চুল ছাড়া থাকলেও আজকে চুল ও পোনিটেল করে বেঁধেছে । সেই সাথে আবার হাতে মেহেদি দিয়েছে । সাদা লেগিংস আর মেয়েদীর উপর আমার এমনিতেও একটা দুর্বলতা আছে । আর আজকে ওকে দেখে যেন আমি নিজেকে খানিকটা হারিয়েই ফেললাম । লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে ওকে ছবিটার একটা স্ক্রিনশট পাঠিয়ে বললাম যে ছবিটা ভাল হয়েছে । ও হাসলো কেবল । নিজেকে ধরে রাখতে চাইলাম । বললাম যে আর না, আর কিছু বলা মোটেই ঠিক হবে না । মেয়েটা কি না কি ভেবে বসবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করেই ফেললাম । ওকে বললাম যে এই পোশাকের তার সিঙ্গেল ছবি আছে কি না!
বলেই নিজেকে একটা কষে চড় মাড়তে ইচ্ছে হল । এই ভাবে কারো কাছে ছবি চাওয়াটা কত খানিকটা ছ্যবলামো সেটা আমি জানি । তানজিলা নিশ্চয়ই আমাকে সেই রকমই ভাবছে । আমি সরি লিখতে যাবো তখনই দেখলাম মেয়েটা বেশ কিছু ছবি পাঠিয়ে দিল । ওর বিভিন্ন পোজে । ঐদিন আর কোন কথা হল না । আর কোন কাজও আমার হল না । আমি কেবল ছবি গুলোর দিকেই তাকিয়ে রইলাম বেশ কিছুটা সময় ! অন্য কিছু যেন আমি ভাবতেই পারছিলাম না ।


এভাবেই আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে যাচ্ছিলো । আমরা তখনও একে অন্যকে কেবল আপনিই বলি । মাঝে মাঝে কথা হয় । তারপরই গত সপ্তাহে সে আমাকে কথাটা বলল । আমার কাছে সাহায্য চাইলো । সাহায্যটা হচ্ছে আমাকে ওর বয়ফ্রেন্ড হওয়া লাগবে । আমার অভিজ্ঞতা থেকেই আমি জানি সুন্দরী মেয়েদের লাভ লাইফ কিছুতেই স্বাভাবিক থাকে না । তাদের প্রেম জীবনে দুনিয়ার ঝামেলা থাকে । তানজিলারও তাই ছিল । আমি শুরু থেকেই জানতাম ওর একটা রিলেশন ছিল. সেটা ভেঙ্গে গিয়েছিলো তবুও সমস্যা রয়েই গিয়েছিলো ।

তানজিলা আমাকে বলল যে ওর সাথে পাব্লিক্যালি রিলেশনশীপ স্টাটাস দিতে আমার কোন সমস্যা আছে কি না । আমি সিঙ্গেল রয়েছি । আমার কোন সমস্যা এমনিতেও নেই । আমি বুঝতে পারছিলাম ও ওর আগের কোন ঝামেলা থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়ার জন্য এই কাজটা করতে চাইছে । আমার কোন সমস্যা ছিল না । এই ভাবেই তানজিলা হয়ে গেল আমার ভার্চুয়াল প্রেমিকা ।



তানজিলার মেসেজটার দিকে আমি আরও কিছু সময় তাকিয়ে রইলাম । কি জবাব দিবো সেটা ভাবতেই তানজিনা আরেকটা মেসেজ পাঠিয়ে দিল ।
-শুনেন, আজকে থেকে আপনি বলা বাদ । বুঝছেন ? আর মাসেজেও আপনি বলা বন্ধ করতে হবে । আমার কিছু ফ্রেন্ড আছে যারা মাঝে মাঝে ফোন চেক করে । সেখানে যদি এই আপনি আপনি দেখে তাহলে কিছু সব ফাঁস হয়ে যাবে । বুঝতে পেরেছেন ?
আমি বললাম
-হুম । বুঝতে পেরেছি ।
যদি আমার কাছে অস্বস্থি লাগছিলো । এতোদিন ধরে আপনি বলা কাউকে চট করেই আপনি বলা যাায় না । আমি অন্তত বলতে পারি না । আমি কেবল ভাবছি এই অনলাইনে না হয় বললাম তুমি তুমি করে কিন্তু যদি সত্যি সত্যি দেখা হয় তখন কি বলবো ? সত্যি কি তুমি বলতে পারবো ?

আমার মনের কথা মনেই রয়ে গেল । তানজিলা তারপর বলল
-শোন, আগামী পরশুদিন আমাদের মেলাতে দেখা হবে । কেমন ?

বই মেলা শুরু হয়েছে কয়েকদিন । আমি এখনও সেখানে যাই নি তবে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলাম । আমি কিছু বলতে গেলাম তার আগেই তানজিলা বলল
-শুনো কোন রকম অযুহাত দিবা যে দেখা করবা না । এসব চলবে না । যখন গার্লফ্রেন্ড বানিয়েছো তখন ঝামেলাও গলায় নিয়েছো । কথা কম কম বলবা । আমার কথার উপরে কথাই বলবা না । মনে থাকবে ?
-হুম ।
-হুম কি ? বল যে মনে থাকবে ।
-হুম মনে থাকবে ।
-গুড বয় । এখন আগামী পরশুদিন আমাদের দেখা হচ্ছে । ঠিক আছে ?
-হ্যা ঠিক আছে !

আমি মনে মনে একটু চিন্তিত হয়ে গেলাম । সত্যি সত্যিই দেখা হচ্ছে তাহলে এই মেয়ের সাথে ।




বই মেলাতে যখন ঢুকছিলাম তখনও বুকের ভেতরে কেমন যেন করছিলো । বুকের ভেতরে একটা দুরু দুরু ভাব কাজ করছিলো । যদিও এতো ভয় কিংবা অস্বস্তির কোন কারন ছিল না । আমি চারিদিকে তানজিলাকে খুজতে শুরু করলাম । ঠিক সেই সময়ই ওর ফোন এসে হাজির !
-কি জনাব ! এসেছেন ?
-হ্যা । কোথায় আপ.... মানে কোথায় তুমি ?
ফোনের ওপাশ থেকে হাসির শব্দ শুনতে পেলাম । আমি ওকে আপনি বলে ফেলেছিলাম প্রায় তবে সেটা ঠিক করে নিয়েছি । তানজিলা বলল
-হ্যা দেখতেই পাচ্ছি তুমি চলে এসেছো । একটু ডান দিকে ঘোরো । আমাকে দেখতে পাবে ।

আমি ফোন কানে নিয়েই ডান দিকে ফিরে তাকালাম । এরই ভেতরে অনেক মানুষ চলে এসেছে । কিন্তু এতো মানুষের ভীড়ে আমার তানজিনাকে চিনতে মোটেও কষ্ট হল না । আজকে তানজিনা পুরোপুরি সাদা পরে এসেছে । ও সব সময় জানতো আমার সাদা পোশাক পছন্দ । সাদা কামিজের সাথে সাদা লেগিংস আর সাদা ওড়না । চুল গুলো আজকে খোলা । অবশ্য খোলা রেখে ভাল করেছে । হাতের দিকে তাকাতে সেখানে গাঢ় মেহেদী দেখতে পেলাম । আসার আগে দিয়ে এসেছে নিশ্চয়ই । একেবারে সাদা পরীর মত লাগছে ওকে !

আমি কিছু সময় কোন কথা বলতে পারলাম না । কেবল তাকিয়ে রইলাম একভাবে । তানজিলা হাসি মুখ নিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে আসতে লাগলো । আমি কেবল তাকিয়ে রইলাম এক ভাবেই ।

পুরো বইমেলা আমার কাছে অন্য রকম ছিল । বই আমি একটাও ঠিক মত দেখি নি । কেবল ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলাম । কিছু সময় পরে ওর বন্ধুরা এসে হাসির হল । আমার সাথে পরিচিত হল । আমি নিজের ভেতরে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলেও ঠিক পারছিলাম না । তবে তানজিলা ছিল স্বাভাবিক । ওর আচরন এমন ছিল যেন আমাদের কতদিনের সম্পর্ক । একটা সময় ও খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমার হাত ধরলো, ঠিক যেভাবে একজন প্রেমিকা তার প্রেমিকার হাত ধরে ।



মেলা থেকে ফিরেও আমার স্বভাবিক হতে বেশ কিছুটা সময় লাগলো । আমি ওকে ওর বাসা পর্যন্ত পৌছে দিয়ে তারপর এসেছি । বাসায় পৌছে দেখতে পেলাম ওর প্রোফাইল পিকচার বদলে গিয়েছে । সেখানে আমার সাথে মেলাতে তোলা একটা ছবি শোভা পাচ্ছে । কেন জানি এটা দেখে খুব বেসি ভাল লাগলো ।


তারপর থেকেই আমাদের দেখা সাক্ষাত হতে লাগলো । প্রায় কাছাকাছি বাসা হওয়ার কারনে দেখা হওয়াটা সহজ হয়ে গেল । আমি যেতাম নয়তো ও নিজেই আসতো আমার এলাকাতে । ক্যাম্পাস থেকে ফিরার সময় নিজের স্টোপেজে না নেমে আমার স্টোপেজে নামতো । এক সাথে লাঞ্চ করে তারপর বিকেলে বাসায় যেত । আর আমাদের প্রোফাইল আমাদের একসাথে ছবিতে ভর্তি হতে লাগলো ।

এমন কি আমার বাসাতেও ব্যাপারটা জেনে গেল । ভাইয়া কেমন করে যেন আমার প্রোফাইলের ছবি দেখে ফেলল । যদিও তাকে আমি অনেক আগেই ব্লক করে রেখেছিলাম । বাসা থেকে আমাকে ফোন করে জানালো যে মেয়ে তাদের পছন্দ হয়েছে । আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম । বলে কি এইসব !


তানজিলাকে বলতেই সে হেসে গড়াগড়ি খেতে শুরু করলো । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আমি যদি তোমার বউ হই তাহলে তোমার জীবন ভেজে ভাজা ভাজা করে ফেলবো । বুঝতে পারো নাই এখনও ?
-হ্যা তা আবার না বুঝতে পারছি !

আমি ভেবেছিলাম আমাদের সম্পর্ক হয়তো খুব বেশি দিন টিকবে না । আমি বলতে চাচ্ছি যে এই লোক দেখানো সম্পর্কটা বেশিদিন টিকবে । আমার ধারনা সত্যিই হয়ে গেল কয়েক দিন পরেই ।

সেদিন লেকের ধারেই বসে বসে গল্প করছিলাম । এমন সময় কয়েক জন ছেলে এসে আমাদের ঘিরে ধরলো । কিছু বুঝার আগেই আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করলো । আমি ব্যাপারটা ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না । কারন আমরা ছাড়াও আরও বেশ কিছু কাপল ছিল সেখানে । আমি খানিকটা বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু সংখ্যাতে আমি ওদের সাথে কোন ভাবেই পেরে উঠবো না ।
কিন্তু যেই না আমাকে ধাক্কা দিল একজন তখনই তানজিলার অন্য রূপ দেখতে পোলম ।

আমার সামনে এসে দাড়িয়ে সামনের ছেলেটাকে এতো জোড়ে ধাক্কা দিল আর চিৎকার করতে লাগলো যে আমি ভরকে গেলামই সামনের ছেলে গুলোও ভরকে গেল । দেখি আশে পাশ থেকে বেশ কিছু মানুষ এগিয়ে এল আমাদের সাহায্যের জন্য । অবস্থা বেগতিক দেখে ছেলে গুলো সরে গেল । আমি তখন তানজিলা শান্ত করতে লাগলাম । ওকে নিয়ে রিক্সায় উঠে ওর বাসার দিকে রওনা দিলাম । সন্ধ্যা হয়ে অন্ধকার হয়ে গেছে ।

তানজিলা আমার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলো । আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না ।

ওর বাসার কাছে এসে নেমে বললাম
-কি হয়েছে ! এমন ভাবে রেগে গেলে কেন ?
-ওরা তোমার গায়ে হাত দিবে কেন ?
-আচ্ছা বাবা দিক । যা হবার হয়েছে । ওদের একজন কি তোমার এক্স ছিল ?
তানজিলা মাথা ঝাকালো । তারপর বলল
-ওর কাছ থেকে পুরোপুরি সরে যেতেই আমি তোমার কাছে এসেছিলাম । ওকে দেখানোর জন্য । কিন্তু ওর এটা সহ্য হচ্ছে না । এই জন্য তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে এসেছে ।
আমি বললাম
-বুঝতে পারছি । যাক, এবার একটু মাথা ঠান্ডা কর । বাসায় যাও । কাল দেখা হবে আবার । ঠিক আছে ?
ও মাথা ঝাকালো !

তানজিলা তখনও আমার হাত ধরেই রেখেছে । আমি হাত ছাড়িয়ে চলে যেতে যাবো দেখলাম ও হাত ছাড়লো না । মৃদু আলোতে আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়েই চমকে উঠলাম । মেয়েটাকে এমন কেন লাগছে । চোখে কেমন ঘোর লাগা দৃষ্টি !
তানজিলা বলল
-আমি জানি না সে সময় আমার কি হয়েছিলো যে আমি ওরকম আচরন করলাম !
আমি চুপ করে তাকিয়ে আছি ওর দিকে ! ও বলেই চলেছে
-কিন্তু আমার মনে হচ্ছে যে আমি তোমার উপর ফল করেছি !

লাইনটা বলেই ও আমাকে গভীর ভাবেই চুমু খেলো ! ওদের বাসাটা একটা গলির ভেতরে দিকে যেতে হয় । একটু অন্ধকার মত হলেও মাঝে মাঝেই সেখান দিয়ে লোকজন আসা যাওয়া করে । যে কেউ চলে আসতে পারে কিন্তু আমার কিংবা তানজিলার সেই দিকে খেয়াল ছিল না । বেশ কিছুটা সময় পরে আবার নিজেকের ভেতরে ফিরে আসার পর আমি তানজিলার দিকে তাকালম । ও তখন চোখ নামিয়ে ফেলেছে । এই এতো দিকে আমি ওকে দেখলাম ওর চোখে একটা লজ্জা মিশ্রিত হাসি । এতো দিন আমিা কেবল লজ্জা পেয়েছি ।
আমি বলল
-আমি আসি কেমন ?
-হুম ! সাবধানে যেও !
-যাবো !

আমি ওকে রেখে হাটা দিলাম । গলি দিয়ে বের হওয়ার আগ পর্যন্ত কতবার পেছনে ফিরে তাকিয়েছি আমি নিজের জানি না । প্রত্যেকবার তানজিলাকে দেখেছি ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে । স্বল্প আলোতেও ওর চোখে আমার জন্য ব্যকুলতাটা আমার চোখে এড়ালো না । আমার লোক দেখানো সম্পর্কটা সত্যি সত্যি শেষ হয়ে গেল । এখন থেকে সেটা একেবারে সত্যিই সম্পর্কে পরিনত হল। আমাদের নতুন গল্প শুরু হয়ে গেল আজকে থেকে । আমার আর সাদা পরীটার গল্প !


(সমাপ্ত)


নতুন বছরের প্রথম গল্প । সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা !


(গল্পটা মিথ্যে হলেও কিন্তু গল্পের এই পরীটার অস্তিত্ব কিন্তু সত্যিই আছে)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:২৭
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×