somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অপু দ্যা গ্রেট
নিজেকে জানতে চাই,ছুটে চলেছি অজানার পথে,এ চলার শেষ নেই ।এক দিন ইকারাসের মত সূর্যের দিকে এগিয়ে যাব,ঝরা পাতার দিন শেষ হবে ,আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাব ।

আন্ধাধুনঃ চোখ থাকিতেও অন্ধ যে জন (মুভি রিভিউ)

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষের অঙ্গের সবচেয়ে দরকারী অঙ্গ কোনটি প্রশ্ন আসতেই পারে । আপনি কি আসলে ভেবে দেখেছেন মানব দেহের সবচেয়ে দরকারী অঙ্গ কোনটি । হয়ত ভেবেছেন হয়ত না । তবে সব দিক বিবেচনা করে যেটা মনে হয় তা হলো চোখ । হ্যা, চোখ মানুষের অন্যান্য অঙ্গ থেকে একটু বেশি গুরুত্ব পাবে । ভেবে দেখুন তো আপনার চোখ না থাকলে কেমন লাগত । কিভাবে চলতেন । হাটতে চলতে সাহায্য লাগত । সব দিক থেকেই কিন্তু একটু অসুবিধা বেশি । আবার আমরা প্রবাদ হিসেবে বলে থাকি চোখ থাকিতে অন্ধ । আসলেই মানুষ চোখ থাকতে অন্ধ হয়ে যায় । আর এই অন্ধত্ব নিয়েই তৈরি হয়েছে মুভি “আন্ধাধুন”।




কাহিনীসূত্র

আকাশ একজন অন্ধ পিয়ানো বাদক । সে একাই থাকে এবং সাথে থাকে তার বিড়াল । সে পিয়ানো শিখিয়ে বেড়ায় । তার প্রতিবেশী একটা ছোট বাচ্চা আছে যে প্রতিদিন থাকে পরীক্ষা করে যে সে আসলেই অন্ধ কিনা । তবে আকাশের সেসব নিয়ে চিন্তা নেই । কারন পরীক্ষা করুক আর নাই করুক সে তো অন্ধ । তবে সে জন্মান্ধ নয় । ক্রিকেট খেলতে গিয়ে তার চোখে আঘাত লাগে এরপর থেকেই সে অন্ধ । সে পিয়ানো বাজিয়ে তার ইনকাম করে থাকে ।

প্রতিদিনের মত একদিন বের হয়েছে পিয়ানো শিখাতে রাস্তায় সে সোফিয়ার স্কুটারের সামনে পরে যায় । সোফিয়া অনেক কষ্ট পায় । তাই সে তার বাবার মিউজিক রেস্টুরেন্ট এ তাকে নিয়ে যায় । তার পিয়ানো বাজানোর মেধা তাকে মুগ্ধ করে । সে তাকে এখানে জব অফার করে । তারপর আকাশ এখানে পিয়ানো বাজায় । এরপর আস্তে আস্তে তারা অনেক বেশি ক্লোজ হয়ে যায় ।

সোফিয়াদের রেস্টুরেন্টে খেতে আসেন বিখ্যাত অভিনেতা প্রোমোদ সিনহা । আকাশের পিয়ানোর মেধা দেখে সে মুগ্ধ হয় । তাকে তার বাসায় পিয়ানো বাজানোর জন্য আমন্ত্রন জানায় । আকাশ সময় মতো প্রোমোদ সিনহা এর ফ্ল্যাটে চলে যায় । প্রোমোদ সিনহা এর প্রতিবেশি দেখতে পায় আকাশ ও সিমি(প্রোমোদ সিনহার স্ত্রী) কথা বলছে । সিমি আকাশ কে চলে যেতে বলে । প্রতিবেশী দেখা ফেলায় সে আকাশ কে ভেতরে আসতে বলে । আকাশ ভেতরে ঢুকে পিয়ানোর কাছে চলে যায় ।



তবে বাসায় প্রোমোদ সিনহা না থাকায় আকাশ বেশ অসুবিধার মধ্যে পরে যায় । কিন্তু আসল ঘটনা হচ্ছে প্রোমোদ সিনহা তখন মৃত । তিনি খুন হয়েছেন আরও আগে । আকাশ এসব জানত না । সে বুঝতেও পারেনি এসব ঘটনা ঘটছে তার চোখের সামনেই । অথচ সে পিয়ানো বাজিয়ে চলেছে । কারন তাকে লন্ডন যেতে হবে ।

এরপর সোফিয়ার সাথে তার সম্পর্ক ভেঙ্গে যায় । কারন আকাশ কে অন্য একটি মেয়ের সাথে বিছানায় দেখতে পায় । তখন সে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না । নিজ থেকেই সম্পর্ক ভেঙ্গে দেয় ।

অনেক চড়াই উৎরাই পেড়িয়ে আকাশ লন্ডন পৌছায় । এর মধ্যে সোফিয়ার সাথে তার আর যোগাযোগ হয়নি । সে লন্ডনের এক গিগে পিয়ানো বাজায় । তার চোখ আগের মত ই কালো চশমা থাকে । অন্ধদের হাতের লাঠিও । যদিও তখন সোফিয়া তাকে দেখছে । সোফিয়া তাকে জিজ্ঞেস করে সব ঘটনা । আকাশ বলে তার অন্ধত্ব আর জীবনের ঘটনা গুলো । তারপর সেখান থেকে চলে যায় ।
এভাবেই শেষ হয় আকাশ আর সোফিয়ার গল্প ।


আলোচনা

আমি এই মুভিটির ব্যাপারে এক ভাইয়ার কাছ থেকে জেনেছি । উনি রিভিউ দেয়ার পর আমি ভাল প্রিন্ট এর জন্য অপেক্ষা করেছি । তারপর দেখেছি ।

মুভিটি সত্যিকার অর্থেই এন্টারটেইনিং । এছাড়া কাহিনী ও পরিচালনাও অসাধারন হয়েছে । যদিও মুভিটি আপনাকে থ্রিল একটু কম দেবে । তবে কাহিনীড় জন্য উঠতে মন চাইবে না । কারন একের পর এক টুইষ্ট পাবেন । যখন ই মনে হবে এই শেষ, তখন আবার নতুন করে শুরু ।




মুভির টাইমিং একটু স্লো । ধীর গতির কারনে আপনি বিরক্ত বোধ করতে পারেন । তবে দেখতে থাকলে খারাপ লাগবে না । কারন মার্ডার মিস্ট্রি তাও এক নয় দুটো মার্ডার । তাহলেই ভাবুন কি হতে পারে । তারপর উপর একজন অন্ধ মানুষ এসবের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে । প্রতিটি ঘটনায় সে জড়িয়ে আছে । কেমন লাগবে । আমার কাছে সময়টা ভাল গিয়েছে । থ্রিল কম হলেও একেবারে খারাপ লাগেনি ।
এবার কথা বলি অভিনেতা অভিনেত্রীদের নিয়ে । মুভিটিতে অভিনয় করেছেন আয়ুস্মান খুরানা, আকাশের চরিত্রে । তার অভিনয় শৈলী নিয়ে আমার কোন ব্যক্তব নেই । কারন চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে সে অসাধারন । একদম সত্যিকার মনে হয় । যেকোন চরিত্রে সে নিজেকে একদম জড়িয়ে নেয় ।

অপর দিকে টাবু হচ্ছে বলিউডের অন্যতম মেথড এক্ট্রেস । তার অভিনয় নিয়ে কিছু বলার নেই । এর আগে অজয়ের সাথে দৃশ্যম মুভিতে তার অভিনয় মুগ্ধ করেছে । এছাড়া টাবু অনেক দিন থেকে বলিউডের মুভিতে অভিনয় করে আসছে । নায়িকার চরিত্রে রাধিকা আপ্টে । যিনি নিজের প্রতিটি কাজে নিজেকে ছাড়িয়ে যান । যদিও এখানে তার চরিত্রটি তেমন গুরুত্বপূর্ন নয় । এছাড়া আরো কয়েকজন কলাকুশলী রয়েছেন যারা এই মুভিতে যথেষ্ট ভাল অভিনয় করেছেনে । এক ডাক্তারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাকির হুসেইন । মুভিটি পরিচালনায় ছিলেন শ্রীরাম রাঘবান ।

সবমিলিয়ে মুভিটি আপনাকে মার্ডার মিষ্ট্রি এর দারুন এক অনুভূতি দেবে । কারন শেষের টুইষ্টাই যথেষ্ট ।

আজই দেখে ফেলুন “আন্ধাধুন” ।


মুভি ডাউনলোড লিংকঃ Andhadhun
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৫৩
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×