somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ মিস্ট্রি অব ফোর্থ সেঞ্চুরি - জিমি তানহাব (বুক রিভিউ)

১০ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :









ভালবাসা কখন সুন্দর, কখনও এক দারূন স্বপ্ন, আবার কখনও নিষ্ঠুর, নির্মম এবং স্বার্থপর। অথচ তবুও মানুষ ভালবাসা চায়। বার বার চায়। ধ্বংস হতে চায়, আবার সুখ লাভ করতে চায়। সবই এই ভালবাসার জন্য। কেউ সুখী হয় আবার কেউ সব কিছু ধ্বংস করে দেয়।
.
“অনেক ভালবাসা শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলে দেয়”
.
প্লট/কাহিনী বিন্যাসঃ

অ্যালেক্স সুন্দর অসম্ভব সুন্দর একটা মেয়ে। তার মায়ের মৃত্যুর পর সে তার বাবার কাছেই বড় হয়েছে। ছোট বেলাতেই সে এক দুর্ঘটনায় তার বাবা। অ্যালেক্স এর এক জোড়া সুন্দর জুতো ছিল। যা আগে কেউ দেখেনি। আর সেই জুতোর কারণেই তার বাবাকে খুন হতে হয়। অনেক ভাগ্যের জোরেই সে সেখান থেকে বেচে ফিরেতে পারে। তবুও যেন তারা পিছনে লেগেই থাকে।
.
লিও বনের মধ্যেই মেষ চড়াতো। বাবা মা বলতে কেউ নেই। ঘটনা চক্রে অ্যালেক্স এর সাথে পরিচয় ঘটে যায়। এরপর যেন শুরু হয় তার অন্য জীবন যেখানের পুরোটা জুড়েই অ্যালেক্স। তাকে খুন করতে এবং তার কাছ থেকে জুতো ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছে। গ্রীস ছেড়ে যেতে হবে। গ্রীস ছেড়ে লিও-অ্যালেক্স পারি জমায় রোমে।
.
এবার বোধহয় সুদিন আসবে। জাহাজেই পরিচয় ঘটে এক সওদাগরের সাথে। তার ওখানেই কাজ নেয় লিও। তারপর তারা একটা বাড়িতে থাকা শুরু করে। যদিও তারা বন্ধু, তবে লিও জানে অ্যালেক্স এর প্রতি তার দায়িত্ব আছে। সে তাকে আগলে রেখেছে।
.
কিন্তু খুনীরা তার পিছু ছাড়ছে না। তাদের উপর ভর করে আছে। অবশেষে তারা রোমের রাজ দরবারে হাজির হয়। সেখানেই আশ্রয় হয় তাদের। লিও-অ্যালেক্স দুজনেই ভেবেছিল যে এবার বুঝি তাদের সব কিছু থেকে মুক্তি মিলবে । কিন্তু না এখনও অনেক কিছুই বাকি ছিল তাদের জন্য। তবে সেটা এভাবে তা কেউ হয়ত বুঝতে পারেনি।
.
প্রিন্স ইথান, রোমের ভবিষ্যত রাজা। যাকে মানুষ উদার, মানবিক ও মহৎ বলে শ্রদ্ধা করে। সেই ইথান যে কিনা বীর এবং তার বীরত্বের জন্য অনেক রাজা তাদের মেয়েদের বিয়ের প্রস্তাব দেয়। সে কিনা সহজ সরল অ্যালেক্স এর প্রেম পরল। ভালবাসায় সব কিছু ভুলে গেল। তার আবেগ তাকে নিয়ে গেল পাগলামির চরম সীমানায়।
.
রাজ কার্যে তার মন নেই। সারাক্ষন অ্যালেক্স অ্যালেক্স করেই কাটান। কিন্তু অ্যালেক্স তার প্রেমে সাড়া দেয় না। এটা তাকে কুড়ে কুড়ে খায়। এভাবেই জীবন চলে যেত। এর মাঝে ঘটে যায় অনেক কিছু। লিও হঠাৎ আক্রমনে স্বীকার হয়। আর মৃত্যুর মুখোমুখি চলে যায়।
আর শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়।
.
পাঠ প্রতিক্রিয়া/পর্যালোচনাঃ

অনেক মোটা বই শেষ করার পর একটা অনুভূতি হয়। সেটা আপতত হচ্ছে না। কারণ গল্পের ধারাতে আমি মুগ্ধ হয়েছি। রোমের সেই সময় যখন তাদের একটা ইতিহাস ছিল। সেই সময়টাতে চলে গিয়েছিলাম। বলা যায় অনুভব করেছি। সেই সময়ের রাজ পরিবার পরিবেশ পরিস্থিতি সব কিছু এক সুতোয় বাধা অনেক কঠিন কাজ ছিল। তবে সুনিপূন ভাবে সেটি করেছেন লেখিকা।
.
তবুও কিছু তো থাকেই। তাই সেগুলো নিয়ে বলছি। প্লট হিসেবে দারুণ একটি কাহিনী। সুন্দর এবং গোছানো। বলা যায় গল্পের মধ্যে ঢুকতে পারলে ওঠা মুশকিল। সুন্দর ভাবে এক ধারাতে গল্প এগিয়ে গিয়েছে।
.
কিন্তু, গল্পের গতি মাঝে এসে কিছু ধীর হয়ে গিয়েছে। কিছু কিছু বিষয় উল্লেখ না করলেই হতো। গল্প মাঝে অনেক বেশি ধীর হয়ে গিয়েছিল। বলা যায় অনেক টেনে নেয়া হয়েছে। যেহেতু লেখিকার প্রথম বই তবুও এটা একটু খারাপ ই লেগেছে। আমার মনে হয়েছে এই বিষয় গুলো এড়িয়ে গিয়ে কাহিনী ধরে রাখা যেতো।
.
তবে শেষটা আমার কাছে দারূন লেগেছে। সত্যি বলতে দারূন ভাবে ভাল লেগেছে।
.
চরিত্রের বিশ্লেষণে যাওয়া যাক। প্রথম দিকে অ্যালেক্স এর চরিত্র মাঝে গিয়ে এমন হবে ভাবিনি। এটা ভাল লেগেছে। সময়ের সাথে যে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয় এবং বোঝা ক্ষমতা কিছুটা হলেও যে তার ছিল সেটা ভাল লেগেছে। যদিও সময়ের প্রেক্ষিতে তাকে অনেক বেশি সহজ সরল মনে হয়েছে। তার চরিত্রে গঠন আর একটু ভিন্নতা হলে ভাল হতো।
.
অপর দিকে লিও চরিত্রের কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই গল্পের সবচেয়ে গুরুতপূর্ন চরিত্র। তবে কিছুটা দুর্বল। যদিও কাহিনীর বিচারে তার এটা ঠিক আছে। তবুও কেন জানি মনে হয়েছে সে মাঝে মাঝে খেই হারিয়ে ফেলত। তবে চরিত্রে গঠন নিয়ে বলার কিছু নেই। সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে।
.
প্রিন্স ইথান, হ্যা এই চরিত্রটি আমার কাছে কেন জানি বেশি ডমিনেটিং মনে হয়েছে। তাকে যেভাবে বর্ননা করা হয়েছে মনে হয়েছে তার ভেতর ঠিক উল্টো। কেন জানি ম্যাচ করাতে পারিনি। কোথায় যেন একটা শুন্যতা ছিল। আর শুরু থেকেই কেন জানি মনে হচ্ছিল সে ধ্বংসের উপর বেশি জোর দেয়। তার কথা হচ্ছে সে যা বলবে তাই হবে। কিন্তু সেটা সবার ক্ষেত্রে নয়। তবুও এই দিকটা ছেড়ে দিলেও তাকে রাখতে পারছি না।
এছাড়া রাজা মেরিউলাস, সেনাপতি প্যারিস সহ অন্য সকল চরিত্র ঠিক আছে।
.
সবশেষে বলতে হবে, অসাধারন ভাবে শেষ হয়েছে বইটি। যদিও আমি খুব দ্রুত পড়েছি। তবে বইয়ের কোথায় থেমে থাকতে হয়নি। সুন্দর সাবলীল বর্ননা। ভাবিনি দ্রুত শেষ করতে পারব। মোট বই আমি সময় নিয়ে পড়ি। তবে এটা কিভাবে যেন শেষ হয়ে গেল। বইটির শেষে অসমাপ্ত লেখা। এর আরও পার্ট আসবে। কি কাহিনী সেটি পরের পর্বেই জানা যাবে। আপাতত এই বইটি পড়ে আনন্দ নিন।

ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×