somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা কী আদৌ সাম্প্রদায়িকতা থেকে মুক্ত হতে পেরেছি!

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার এক হিন্দু বন্ধু আছে৷ হিন্দু বললাম কারণ সে ওই ধর্মের। কিন্তু তাতে আমার কিছু আসে যায় না৷ আমি আমার বন্ধুত্বের সম্পর্কে কে হিন্দু কে মুসলমান এসব নিয়ে ভাবিনি৷ বন্ধু তো বন্ধু তার আবার জাত পাত ধর্ম কি। সে তার ধর্ম পালন করে তার মত, আমি আমার ধর্ম পালন করি।
.
এখন আমি হঠাৎ করেই এই বিষয়টি নিয়ে কেন বলছি৷ আপনার মনে হতে পারে ধর্মের কথা কেন নিয়ে আসলাম। আসলে আমি যেই বইটির কথা বলতে চাচ্ছি সেই বইটি ঠিক এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখা যেখানে ধর্মের কথা আছে৷ আছে মানুষের চিন্তা ভাবনার কথা। বিশেষ ভাবে আমাদের দেশের মানুষের চিন্তা ভাবনার কথা৷ বইটি হচ্ছে "সাম্প্রদায়িকতা - ক্ষমতা ও রাজনৈতিকতা"। বইটি লিখেছেন সহুল আহমদ ও সারোয়ার তুষার।
.
শুরুতে যা বলতে চাচ্ছি সেটা হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে আমার ভাবনা। আমি আসলে অসাম্প্রদায়িক কিনা এখনও জানি না৷ তবে মানুষ যখন একে অন্যের উপর জুলুম করে ক্ষমতা দেখায় এবং ফায়দা লোটার চেষ্টা করে আমার মনে হয় সেটাই সাম্প্রদায়িকতা। আমি এর থেকেই দূরে থাকি৷
.
আসলে সাম্প্রদায়িকতা কখনই সমাজের জন্য ভাল কিছু বয়ে নিয়ে আসতে পারে না৷ এখন আমরা একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন যে সবাই কোন না কোন জায়গাতে সাম্প্রদায়িক। এটা আপনি মানুন বা না মানুন৷ আমরাদের ভেতর সাম্প্রদায়িকতা রয়েছে৷ কখন বেশি সবাই আমরা এর মধ্য দিয়ে যাই। অথবা আমাদের যেতে হয়। যদিও সেটা ক্ষেত্রে বিশেষে আলাদা হয়ে থাকে।
.
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট যদি ধরি, তবে সাম্প্রদায়িকতা বলতে সবাই ধর্মীয় দৃষ্টিকোনকেই সামনে দেখতে পাবেন। কারণ আমরা এটাই সবচেয়ে বেশি দেখতে পাই। আমরা মুখে বললেও কাজের সময়ে সেটা দেখাতে পারি না। আমরা সবাই অসাম্প্রদায়িক এই কথাটা অনেক বলা হয় বা শোনা যায়। কিন্তু ক্ষমতা বা রাজনীতির পট অনুযায়ী এই সাম্প্রদায়িকতা ও অসাম্প্রদায়িকতা দুটোর অবস্থা ভিন্ন হয়ে থাকে। কারণ ক্ষমতা ও রাজনীতির সাথে সাম্প্রদায়িকতার অবস্থা ও ধরন পরিবর্তন হয়ে থাকে৷
.
এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে আপনি দেখতে পারেন হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার কথা। যেমন ধরুন আপনি এবং আপনার বন্ধু দুই জন দুই দলের। কিন্তু যখন ধর্মীয় ভাবে আঘাত আসে তখন আপনি ও আপনার বন্ধু যেই মতাদর্শের হন, ঠিক ই এক হয়ে তার প্রতিবাদ করে থাকেন৷ তখন কিন্তু এটা এক ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক বলা গেলেও সেটা পুরোপুরি ভাবে ঠিক বলা যায় না। কারণ আপনি সময়ের প্রয়োজনে এক হয়েছেন। নিজেদের ফায়দা ও ক্ষমতাকে দেখানোর একটা প্রচেষ্টা ছিল আপনাদের মাঝে৷
.
বাংলাদেশের এই প্রেক্ষাপট আমরা অনেকবার ই দেখতে পেয়েছি। এটা স্বাভাবিক ভাবেই বলা যায় বাংলাদেশের মানুষ আসলে সাম্প্রদায়িকতা ও অসাম্প্রদায়িকতা দুটোর মাঝে পার্থক্য করতে পারে না৷ কারণ তারা আসলে জানেই না যে কোনটি সাম্প্রদায়িকতা ও কোনটি নয়। ক্ষেত্র বিশেষে আসলে মানুষ বুঝতে পারে, তবে সেটা খুব সামান্য। আমাদের ভেতর এখনও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা ভাবনা আসেনি বা বলা যায় আমরা কোন কিছুর যুক্তিতর্ক দিয়ে বুঝতে চাইনি।
.
আপনি আমি বা আমরা সব সময় হুট করেই কিছু একটা করে ফেলি বা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করি। সেটা ক্ষমতা বা অন্য কিছু হতে পারে৷ এখানে সাম্প্রদায়িকতা নেই। সাম্প্রদায়িকতা তখনই আসে যখন সেটা নিজেদের বিরুদ্ধে চলে যায়৷ তখন আমরা এটা নিয়ে বেশ হইচই করে থাকি।
.
ছোট করে বললে আমরা যতদিন নিজেদের ভেতর সাম্প্রদায়িক ভাবনা গুলোকে চেপে রাখব ততদিন আসলে আমরা নিজদের অসাম্প্রদায়িক বলতে পারব না৷

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:১৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমুখী একটি চাওয়া

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২০


মানুষের মুখে হাসি ফুটুক,
আঁধার মুছে আলোর ছোঁয়া,
ক্লান্তিহীন পথ চলুক,
নতুন স্বপ্ন আনবে জোড়া।

দিনবদলের শপথ নিয়ে,
কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করে যাই,
নদীর স্রোতে ভেসে ভেসে
একটি স্রোতে মিলিয়ে যাই।

সবার তরে সমান বিচার,
ধনীর দুঃখীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ

লিখেছেন জ্যাকেল , ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×