সাম্প্রতিক খবর হচ্ছে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব ১৯ এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ব্লগে এটা নিয়ে সেরকম কোন পোস্ট চোখে পরল না। আমার মনে পরে একটা সময় ব্লগেও বাংলাদেশের খেলার একটা প্রভাব দেখা যেত। অনেকেই খেলার প্রতি অনেক আগ্রহ নিয়ে পোস্ট করতেন। কিন্তু বর্তমানে সেটা নেই বললেই চলে। সমস্যা আসলে বাংলাদেশ জাতীয় দলের পারফর্মেন্স। তাদের পারফর্মেন্স এতটাই বাজে হয়েছে যে এখন বাংলাদেশের ক্রিকেট থেকে মানুষ তাদের মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
এছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডে সিরিজ খেলতে গিয়েছে। তিন ম্যাচ সিরিজের এই সিরিজে প্রথম ম্যাচে ৪৪ রানে হেরেছে। কিন্তু এখানে সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে সৌম্য সরকার, আনামুল বিজয়, সহ কয়েকজনকে ক্যাম ব্যাক করা হয়েছে। কিন্তু সৌম্য তার সেই পুরাতন ধারা বজায় রেখেছে। বিজয় যদিও তার চেষ্টা করেছে তবে দলকে জয় এনে দিতে পারেননি। মুশফিক সেই আগের মতই যখন দলের দরকার তখন আউট হয়েছেন। তো সবশেষে আমরা ম্যাচ হেরেছি ৪৪ রানে, ডি/এল ম্যাথড অনুযায়ী।
যদিও আজকে আমার লেখার বিষয় বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব ১৯ এর এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়নশীপ জয়। তবুও বাংলাদেশ জাতীয় দলের পারফর্মেন্স নিয়ে কিছু ধারনা দিলাম।
এখন অনুর্ধ্ব ১৯ এশিয়া কাপ আয়োজন করা হয়েছে দুবাইতে। এই এশিয়া কাপে দুটি গ্রুপে মোট ৮টি দল ছিল। এই আটটি দলের এ গ্রুপে ছিল পাকিস্তান, ভারত, আফগানিস্তান, নেপাল এবং গ্রুপ বি এ ছিল বাংলাদেশ, ইউএই, শ্রীলংকা, জাপান।
এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তার সবচেয়ে বড় উদাহরন হচ্ছে নেপাল ও জাপান কে এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দেয়া। ধীরে ধীরে ক্রিকেটকে বিশ্বায়নের দিকে নিয়ে না গেলে ক্রিকেট জনপ্রিয়তা হারাবে।
যাইহোক বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে পুরোপুরি অপরাজিত ছিল। গ্রুপ পর্বে তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে ওঠে। আরে টুইস্ট হচ্ছে সেমিতে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয় ভারত। আমি ভেবেছিলাম বাংলাদেশ এখান থেকেই বাদ পরতে যাচ্ছে। কারণ ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেট অনেক বেশি ভাল, তাই ওদের ছোট বেলা থেকে ক্রিকেট ওদের রক্ত মিশে যায়। তাই ওদের এই টিমটা স্ট্রং হবে। যদিও আমি খেলা দেখিনি। তবে হাইলাইটস দেখেছি, ওদের খেলার স্টাইল কিছুটা ডিফেন্সিভ মনে হয়েছিল। তবে কয়েকজন ভাল খেলোয়াড় আছে ওদের।
অপর দিকে সেমিতে ইউএই হারিয়েছে পাকিস্তান কে। অবিশ্বাস্য হলেও এটা যখন শুনেছি তখন অনেক আনন্দ লেগেছে। এরপর হাইলাইটস দেখলাম। সেখানে পাকিস্তান ভাল অবস্থানে থাকা স্বত্তেও হেরেছে। কিভাবে হেরেছে জানি না। তবে ফাইনালে ইউএই প্রতিপক্ষ হবার কারনে আমি খুশি হয়েছি আবার চিন্তায় কপাল ভাজ পরেছে।
বাংলাদেশের আবার সহজ খেলা কঠিন করতে ওস্তাদ কিনা। তাই ভাবলাম খেলা না দেখে আমি হাইলাইটস দেখব। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ক্রিকেট ফ্যান হিসেবে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখা কঠিন। অফিসের ল্যাপটপে ব্রাউজারে খেলা ছেড়ে দিয়ে কাজ করেছি। একটু পর পর স্কোর দেখেছি। বাংলাদেশের ব্যাটিং বেশ ভাল হয়েছে। শিবলীর শতক, রিজওয়ান ও আরিফুলের অর্ধ শতকের উপর ভর দিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৮২/৮ উইকেটে। ভাল আবার খারাপ। বাংলাদেশের মিড ও লোয়ার অর্ডার এখনও ভাল খেলার চেষ্টা করে না। তাদের ব্যাটিংও কিছুটা পারা উচিত।
এরপর ইউএই এর ব্যাটিং শুরু হয়। ভাবছিলাম বেশ ফাইট হবে। কিন্তু মারুফ ও বর্ষণ এর বোলিংয়ের মুখে ইউএই দাড়াতে পারেনি। দুজনেই ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া জীবন ও ইমন নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।
ইউএই অলআউট হয়েছে মাত্র ৮৭ রানে। বাংলাদেশ ১৯৫ রানে এশিয়া কাপ জয় করে নিয়েছে। আমাদের জন্য এটি গর্বের। আমাদের বলার মত সেভাবে ভাল দিন আসে না।
এই জয় আমাদের অনুর্ধ্ব ১৯ এর ছেলেদের আগামী অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে অনুপ্রেরণা যোগাবে। তাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে। আমরা এই জায়গা থেকে কিছু ভাল খেলোয়াড় পাবো যারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলবে। যারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ কে আরও পরিচিত করে তুলবে। যাদের কাছ থেকে আমরা ভাল কিছু পাব বলেই আশা রাখি।
আশা করছি আমরা অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপও জয় করব।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৬