somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ সভায় প্রকাশ্যে চুম্বন প্রসঙ্গ...

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রকাশ্যে চুমু খাওয়াটা বা জড়িয়ে ধরাটা (যদি না মাত্রাতিরিক্ত(!) বোঝায়) অশ্লীলতা স্প্রেড করা না। এটা কোন আমদানি করা ভিনদেশী কালচারও না। আর প্রতিবাদটাও দেশকে ভিনদেশি কালচার শেখানোর না। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সমস্যা হচ্ছে আমরা এই প্রকাশ্য চুমুর একচুয়াল মেসেজটা ধরতে পারছি না বা ডেলিভারি দিতে পারছি না। এর মাধ্যমে যে মেসেজটা দেয়া হচ্ছে তা হচ্ছে আমি আমার লাইফে যা কিছু করি, তাতে অন্যকারো মাথাব্যথা থাকতে পারবে না। যে মেসেজটা দেয়া হচ্ছে তা হচ্ছে ফ্রিডম, রাইট টু লিবার্টি। এটা একরকম ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন।
এটা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সভ্য সমাজের রাইট। ওয়েস্টার্ন কালচারেও কিন্তু অনেক কঞ্জার্ভেশন আছে। সবাই একরকম না। কিন্তু সেখানে স্বাধীনতা, ফ্রিডমের চর্চা হয়। যার এধরণের স্বাধীনতা পছন্দ না, সে তা করে না। কিন্তু অন্যকে বাধা দিতে পারবে না। এটাই 'স্ব অধীনতা'।


আমি কোন হিসেবে এটাকে অশ্লীল বলি নি, তা ব্যাখ্যা করেছি। আমরা ভুলে যাচ্ছি যে প্রতিবাদটা হচ্ছে সেটা একটা ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ। এটা কোন পাবলিক্যালি চুমু খাওয়াকে জায়েজ বানানোর আন্দোলন না। কিন্তু খুব সূক্ষ্ম একটা ঘটনা ঘটানো হয়েছে বুঝে এবং না বুঝে। তা হচ্ছে এই চুমু খাওয়ার ঘটনাকে ইচ্ছা করে হাইলাইট করা হয়েছে। কীভাবে হয়েছে, এবং কারা করেছে জানি না। কিন্তু এর কারণ হচ্ছে প্রতিবাদটা নিয়ে খুব সূক্ষ্ম একটা নেগেটিভ ধারণা আনার চেষ্টা। আমি প্রথম প্যারায় একটা সাধারণ রাইট বলেছিলাম, কিন্তু সেটা সবসময় না। অর্থাৎ প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া বা জড়িয়ে ধরা যদি স্বাভাবিক love regarded হয়, তাহলে কেউ কিছু মনে করবে না। কিন্তু তা যদি overly explicit display হয়, তাহলে কিন্তু এক্সেপ্টেবল না। এখন আমাদের মতো কনভারজেটিভ দেশে ধর্ষকদের শেল্টার দেয়ার মতো অনেকেই আছে। তারাই এই সামান্য ব্যাপারগুলোকে হাইলাইট করেছে। এবং তারা সফল। গত কয়েকদিনে ধর্ষণের প্রতিবাদ থেকে বেশি মাতামাতি হচ্ছে এই কয়েকটা চুমুর দৃশ্য নিয়ে। একটা বড়ো মুভমেন্টে এমন হওয়া খুবই স্বাভাবিক, এবং সারাবিশ্বেই প্রেম- দ্রোহ একে অপরকে সঙ্গ দিয়ে এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বুঝে এবং না বুঝে আমরা আসল প্রতিবাদটার মোটিভ চেঞ্জ করে ফেলার চেষ্টা করছি ঘটনাগুলোকে হাইলাইট করার মাধ্যমে। যে দেশে ছেলেমেয়েদের স্বাভাবিক মেলামেশা, চলাফেরাকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়, তারা তাদের চোখে এই 'অস্বাভাবিক' দৃশ্য দেখে হজম করতে পারবে না এবং সবার প্রতি খারাপ ধারণা আসবে। (আমি ঠিক বুঝলাম না কয়েক জোড়া কপোত-কপোতী প্রকাশ্যে চুমু খেয়ে কীভাবে বাংলাদেশকে আমেরিকা বা অন্য কোন 'nasty culture' এর ধারক বানাতে পারে!)।

অথচ এই দৃশ্যটা একটা মুভমেন্টের খুবই স্বাভাবিক দৃশ্য হওয়ার কথা ছিল কারণ একটা মুভমেন্টে নিজেদের কোয়ালিটি টাইম থাকাকে আপনি অস্বীকার করতে পারেন না।
যাইহোক, শেষ কথাটা হচ্ছে, একদম প্রথমে বলা স্বাধীনতার মেসেজটা কেউই দিতে পারতেসে না। যারা এখন প্রকাশ্যে চুমু খাচ্ছে, তারা অনেকটা ঝোঁকের বসেই করতেসে। তারা ভাবতেসে 'লোকে যা বলে বলুক'- এটা ঠিক- এটাই স্বাধীনতা। কিন্তু এই মেসেজটা তারা কারো কাছে ক্লিয়ারলি দিতে পারতেসে না। যার ফলস্বরূপ প্রতিবাদটা 'ধর্ষকদের আস্তানা- ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও' থেকে অনেকটা 'ভালোবাসা হোক উন্মুক্ত' টাইপের হয়ে গেছে। এবং আগেই বলেছি 'যারা বুঝতে পেরেছে যে প্রতিবাদটা পুরা সিস্টেমকে আঙুল দেখাচ্ছে এবং যারা চায় না বাংলাদেশের দলীয় শেল্টার ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়ুক'; তাদের সাথে সাথে 'যারা ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদটা প্রকৃতপক্ষেই চায় এমন অনেক মানুষও এর জন্য দায়ী'।




[আমার মেসেজ যারা বুঝার, তারা বুঝবেন আশা করি। না বুঝলে অপেক্ষা করেন, ভাবেন। বুঝে যাবেন। আর যারা আমার বক্তব্যের গঠনমূলক সমালোচনা করতে আগ্রহী তারা সাদরে আমন্ত্রিত। আর হ্যা, এই চুমুর সমালোচনা যদি করোনাকালীন সিচুয়েশন বিবেচনায় হয়, তাহলেও কিছুটা বিবেচনা করা যায় :-p]

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৪:৪০
১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের ট্যাক্স এর টাকা খরচ করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তারা কি আমাদের সেবা দিতে পারছে?

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৭:৩৬



আমার আব্বুর চাকরির সুবাধে বিভিন্ন জেলায় ঘুরা লাগে। তাই কমলাপুর ট্রেন স্টেশনও বহুবার গিয়েছি। আমরা গুলিস্থান থেকে ঢাকা টু দাউদকান্দি বাসে চরে ভবেরচর যাই। এখন কথা হচ্ছে কমলাপুর এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই জঞ্জাল স্বাধীনতার পর থেকেই, শুধু এক যুগের নয়....

লিখেছেন আমি সাজিদ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

এক, মানুষের মেন্টালিটি পরিবর্তন না হলে কোনও সরকার কিছু করে দিতে পারবে না।
দুই, কোন কারনে উপরের এক নাম্বার মন্তব্যটি করলাম?
স্বৈরাচার পতনের পর কি কি পরিবর্তন হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু হিন্দু অখন্ড ভারত চায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮




মুসলিম অখন্ড ভারত শাসন করেছে তখন তারা ছিলো সংখ্যা লঘু। খ্রিস্টান অখন্ড ভারত শাসন করেছে, তারা তখন সংখ্যা লঘু মুসলিম থেকেও সংখ্যা লঘু ছিলো। তারপর মুসলিমদেরকে সাথে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। টাইম ম্যাগাজিনের আগামীর ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় বাংলাদেশের নাহিদ ইসলাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১২




নাহিদের ভাষ্য, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম– অবশ্যই তার অবসান হতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গল্প প্রকাশিত হবার পর নিষিদ্ধ হয়

লিখেছেন জাহিদ শাওন, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৫০


এক কাপ চা, শীতের সন্ধ্যায় বেশি ঝালের ভর্তায় মাখানো চিতই পিঠার অজুহাতে বুকপকেটে কতবার প্রেম নিয়ে তোমার কাছে গিয়েছিলাম সে গল্প কেউ জানে না।
আজকাল অবশ্য আক্ষেপ নেই।
যে গল্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

×