১৯৪৭ সালের দেশ ভাগ হওয়ার পর থেকে হিন্দুদের এক অংশ এই দেশকে নিজেদের দেশ হিসাবে ধরে নিতে পারে নাই। কারণ ধর্মের কারণে বাংলা দুই ভাগ হয়েছিল। তবে দেশভাগে মুসলিম নেতারা যতটা না দায়ী ছিল তার চেয়ে বেশি দায়ী ছিল হিন্দু নেতারা। হিন্দু নেতারা বলেছিল ভারতবর্ষ ভাগ হোক বা না হোক বাংলা ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ চাই। তাদের কথা মতই বাংলা দুই ভাগ হয়ে একটা পাকিস্তান অংশ আরেকটি হিন্দুস্থান অংশ হয়।
হিন্দুরা হিন্দু রীতিনীতির কারণে হিন্দুস্থানে যাওয়া শুরু করে আর মুসলিমরা মুসলমানের দেশ হিসাবে পাকিস্তানে আসে। ১৯৪৭ সালে যখন দেশ ভাগ হয় তখন এই বাংলায় ৪৬% হিন্দুর বসবাস ছিল। হিন্দুরা জাত গেল জাগ গেল ধুয়া তুলে দল ধরে জাত রক্ষার্থে দেশ ছেড়ে ভারতে পালালো। মুসলমানে গরু খায় তাদের হাতের ছোঁয়া কোন কিছু খাওয়া যাবে না। এমন ধোঁয়া তুলে অচ্ছ্যুত জাতি মুচি মেথররাও দেশ ছেড়ে পালালো। তারা যদি জাতপাতের তোয়াক্কা না করে এ দেশে থেকে যেত তাহলে তাদের আজ সংখ্যা লঘু হতে হতো না। তাদের কারণেই আজ তারা সংখ্যালঘু হয়েছে।
এখন সমস্যা হলো হিন্দুরা দলেবলে ভারত যাওয়ার কারণে তাদের পরিবারগুলোও দুইভাগ হয়েছে। একটা অংশ ভারতে গিয়ে বসবাস করছে আরেকটা অংশ বাংলাদেশে বসবাস করছে। বাংলাদেশে যারা আছে তাদের সম্ভাবতই মনটা বাংলাদেশে টিকছে না, কারণ একই পরিবারের পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিন ভাই বোন হয়তো ভারতে গিয়েছে আর বাকি দুই ভাই বাংলাদেশে আছে। নিজের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন না থাকায় তাদের মনটা বাংলাদেশের চেয়ে ভারতের নিকট আত্মীয় স্বজনের দিকে বেশি টানছে। কিন্তু তারা বর্তমানে ভারত যেতে চাইলেও ভারত সরকার সে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। এনআরসি করার কারণে তারা আর আগের মতো ভারত গিয়ে জমিজমা কিনে বাড়ি করতে পারছে না। যে কারণেই হিন্দুরা যেকোন উছিলায় ভারত সরকারের নজর আকৃষ্ট করে ভারত যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়ার কোন অজুহাত না পেয়ে কথায় কথায় শুরু করেছে বাংলাদেশের মুসলমানরা হিন্দুদের অত্যাচার করে। অত্যাচারের কথা বলার উদ্দেশ্য হলো ভারতের সরকারসহ লোকজনের সহমর্মিতা পাওয়া। তারা যদি অত্যাচারের কথা না বলে তাহলে ভারতের সরকার তো দূরের কথা ভারতের লোকজনও তাদেরকে ভারতে জায়গা দিতে চাবে না। অনেক গ্রাম ঘুরে দেখেছি একটা হিন্দুকেও পেলাম না যে সে সাধারণ মুসলমান দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে থাকে সেটা হয়তো জমিজমা সংক্রান্ত ঝামেলা নয়তো রাজনৈতিক কারণে হয়েছে। বাংলার মুসলমানে অত্যাচার করে এমন ধুয়া তুলে ভারত যাওয়ার চেষ্টা স্বরুপ ৫ই আগষ্টের পরে হিন্দু ভারতের বর্ডারে গিয়ে জড় হয়েছিল কিন্তু ভারত সরকার সে চেষ্টা ব্যার্থ করায় এখন আবার নতুন আন্দোলন শুরু করেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩১