
গাজী গোলাম মোস্তফা ঢাকা শহরের একজন ত্রাস ছিলেন। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সিটি ইউনিটের সভাপতি ছিলেন। তার দুই ছেলের সাথে শেখ কামালের ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব ছিল। তার ছেলেরাও বেপোরোয়া জীবন যাপন করতো। তাদের বেপোরোয়া জীবন যাপনের কারণেই মেজর ডালিমসহ তার বউ এবং খালা শ্বাশুড়িকে অপহরণ করে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে আর্মিদের সহযোগীতায় ছাড়া পায়। অনেকেই মনে করেণ এই ঘটনা থেকেই ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টের সুত্রপাত।
যাইহোক দেশ স্বাধীনের পরে বাংলাদেশ রেডক্রসের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং দুর্নীতির কারণে যুদ্ধ বিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের জনগণ বিদেশি সাহয্য থেকে বঞ্চিত হয়। রিলিফের মাল বিশেষ করে রিলিফের কম্বলের ব্যাপক দুর্নীতি হয়। সে এতো পরিমাণ দুর্নীতি করে যে তার দুর্নীতি নিয়ে ১৯৭৪ সালের ১লা সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন পোষ্ট বিভিন্ন প্রমাণসহ একটি রিপোর্ট করে। সেই রিপোর্টের প্রতিবাদ স্বরুপ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান উল্টো গাজী গোলাম মোস্তফার পক্ষ নেয় এবং বলেন এইসব প্রপাগান্ডা যারা করছে তারা পাকিস্তানের রাজাকার, তারা চায় না এদেশে বিদেশী সাহায্য আসুক।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে অন্যান্যদের মতো গাজীও ভারতে পালায়ন করার চেষ্টা করে। দুর্নীতি করা দুই বস্তা টাকা নিয়ে ভারতে পালানোর সময় বাংলাদেশ বর্ডারে জনতার হাতে ধরা পরে। সাধারণ জনতা তাকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে দেয়। পরবর্তীতে তাকে ঢাকায় এনে কোর্ট মার্শল 'ল'এর বিচারে দশ বছরের কারাদন্ড দেয়। প্রায় পাঁচ বছর পর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তাকে ১৯৮০সালের ২৮শে মার্চ মুক্ত করে দেন।
এরপর তিনি আজমীর শরীফের উদ্দেশ্যে সপরিবারে ভারত চলে যান। ভারত যাওয়ার পর ভারতীয় সরকার তাকে দিল্লীতেই থাকার জায়গাসহ যাবতীয় ব্যাবস্থা করে দেন। কিছুদিন সেখানে থাকার পর ভারতীয় সরকারের ব্যাবস্থাপনায় সপরিবারে আজমীর শরীফ রওনা হলে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের চাপায় ১৯৮০সালের ১৯শে জানুয়ারি পুরো পরিবারসহ নিহত হন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


