প্রত্যন্ত গ্রামের কোন এক ছেলে আজ থেকে ১৪ বছর আগে ক্লাস ফাইভে বৃত্তি পেয়েছিল।অশিক্ষিত বাবা-মা তেমন কিছু বোঝেন নি।যখন স্কুলের হেডমাস্টার সাত্তার মুন্সীকে ডেকে বললেন,"তোমার পোলাটার মাথা ভালো মিয়া,কখনো পড়ালেখা বন্ধ কইরোনা" তখন সাত্তার মুন্সীর কেমন যেন খুব আনন্দ হতে লাগল ছেলের জন্য।প্রতিজ্ঞা করলেন যেভাবেই হোক ছেলেকে শিক্ষিত করবেন, ছেলে বড় চাকুরী করবে।সেই সাত্তার মুন্সী আজ ছেলের পড়ালেখার চাহিদা মেটাতে মেটাতে অনেকটা ক্লান্ত ও নিঃস্ব।তাঁর কিছুতেই মাথায় ঢোকে না,পড়ালেখা শেষ করার দুই বছর পরেও কেন ছেলেটার চাকুরী হচ্ছে না।সাত্তার মুন্সী আজকাল ভাবেন,ছেলেকে শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখাটা তাঁর ভুল ছিল।এরকম অসংখ্য সাত্তার মুন্সী রয়েছেন পুরো দেশ জুড়ে। বাংলাদেশে বিসিএস চাকরিতে ৫৬% কোটা নির্ভর নিয়োগ হয়। ফলে যারা কোন কোটাতেই আসে না তারা ৪৪% সিটের জন্য যুদ্ধ করে। ৫৬% কোটার মধ্যে ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০% মহিলা কোটা, ১০% জেলা কোটা, ৫% উপজাতি কোটা, এবং বিভিন্ন পদে ১% প্রতিবন্ধী কোটা যুক্ত করা হয়েছে।এছাড়াও রয়েছে মামা-চাচা-দুলাভাই কোটা,ঘুষ কোটা,দল কোটা ইত্যাদি ইত্যাদি।অন্যান্য চাকুরীগুলোতেও অবস্থা খুব একটা ভালো নয়,সবখানেই কোটা। সাত্তার মুন্সীদের মত মানুষেরা কি করবে,যাদের কোন কোটা নেই? তাঁরা কি স্বপ্ন দেখতে ভুলে যাবে? উপজাতি ও প্রতিবন্ধী এই দুটো কোটা বাদে অন্য কোটাগুলোর যৌক্তিকতা কতটুকু তা নতুন করে ভেবে দেখার সময় কি এখনও আসেনি,পাঞ্জেরী?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:২৩