somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অণুগল্প ১ ও ২ ...

০২ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অণুগল্প : ১
===============

ধরা যাক, তুমি মাধ্যমিকের ছাত্রী...রোজ বেণি দুলিয়ে স্কুলে যাও । মাঝামাঝি বেঞ্চিতে বস ।

তোমার টেবিলে একটা বাঁধাই করা মোটা খাতা রাখা আছে....তার ভেতরে একটা লালচে গোলাপ....খাতাটা তোমার.....তুমি খুললে.....গোলাপ দেখে চমকে গেলে..!!
কে রাখলো !!?

এদিক ওদিক কৌতুহল নিয়ে তাকালে.....একটা প্যাঁচার মতো বিদঘুটে দেখতে ছেলে তোমার দিকে তাকিয়ে আছে..!! মুখে মিচকে হাসি । তুমি বললে..... 'অ্যাই, কি দেখছিস !? '

সে কিছু বলল না.. । কিন্তু চোখও সরালো না...। তুমি একটু ভড়কে গেলে.... । মুখে কিছু বললে না....তবুও আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলে.... 'গোলাপটা কি তোর ?!'
সে বললো....'ছিল, এখন তোর। খাতাটা কি তোর ?''
তুমি বললে... ' হ্যাঁ, তো !'
সে বললো .... ''তাহলে দুটোই রেখে দে । "

ব্যাস, তুমি চমকে গেলে.....!! বাড়ি ফিরলে কলম চাবাতে চাবাতে । ভাবতে বসলে...'ছেলেটা পাগল না হাফ প্যান্ট ?....
'শয়তান না সেফটিপিন ?' ....অবশেষে বুঝলে সেফটি পিন..। আটকে রাখতে হবে...।

পরদিন সকালে স্কুলে আবার খাতা খুলে রেখে বাইরে গেলে... ।
কিছুক্ষণ বাদে ফিরে গিয়ে দেখলে খাতার মধ্যে আরেকটা গোলাপ.... অবিকল এক রকম দেখতে ..!!

এবারও জিজ্ঞাসা করলে, ...'এটা তোর?'
সে বললো.... ' না, এটা আগেরটার বয়ফ্রেন্ড । আগেরটাকে তুই নিয়ে গেছিস.....এটাকেও নিয়ে যা...। "

তুমি বাধ্য মেয়ের মতো বাড়ি নিয়ে চলে এলে...খালি মুচকি মুচকি হাসতে লাগলে আপন মনে।।


অণুগল্প : ২
==============

ধরা যাক, এক চমৎকার সকালে সাইক্লিং করতে গিয়ে তুই ফার্মগেটের সিগন্যালে আটকা পরলি । প্রায় অর্ধ-উলঙ্গ একটা শরীর তার কচি হাতের মুঠোয় দুটো গোলাপ এগিয়ে দিয়ে কাতর স্বরে বললো ....
'' কিনবেন স্যার ?! সকাল থেইকা কিচ্ছু খাইনাই । "

তুই কিছুক্ষণ শুকনো মুখটার দিকে তাকিয়ে রইলি ... । তারপর পকেট হাতড়ে যা ছিল তাই দিয়ে গোলাপদুটো হাতে নিলি । ...কচিমুখটি সাতরঙ্গা প্রজাপতি হয়ে আনন্দে নাচতে নাচতে আড়াল হলো ।

সিগন্যাল পেরোতেই তোর মাঝবয়েসী সাইকেলটাকে পেছন থেকে একটা সিলভার প্রিমিও ধাক্কা লাগিয়ে দিলো .. তুই হুমড়ি খেয়ে পড়লি । গা ঝেড়ে উঠে দাড়াতেই মুখে একটা নোংরা গালি এসে গেলো ...

যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে এক পা এগোতেই দেখলি গাড়ি থেকে গোলাপি ফুলকাটা ফ্রক পরা গোলাপি রঙের পরী বেলীফুলের গন্ধ নিয়ে নেমে এল তোর দিকে।
একটু ঝুঁকে জিজ্ঞাসা করল...”কোথায় লেগেছে আপনার !?”

বেলীফুলটা হাসনাহেনা হয়ে তোর মুখে ছড়িয়ে পড়লো ... কান লাল করে বললি .. "না ,না তেমন কিছু হয়নি ! একেবারেই সামান্য .... " । বাকী কথা তোর জিহ্বার আড়ালেই হারিয়ে গেলো ।

মেয়েটা পার্স খুলে একটা দামী নোট বের করে বিটোফেনের সুরে বলে উঠলো ... "এক্সট্রিমলি স্যরি, মাফ করবেন । এটা রাখুন দয়া করে... ফার্স্ট এইড নিয়ে নেবেন । "
পরের কয়েক সেকেন্ড তুই বোবা সেজে রইলি । বাধ্য হয়ে মেয়েটি তোর বুকপকেটে টাকাটা গুঁজে দিল ... " প্লিজ না করবেন না । "

তুই এক পা সরে গিয়ে বুকপকেটে হাত রাখলি । হৃদপিন্ডটা তখন শরীর ফুঁড়ে পকেটে জায়গা নিয়েছে । ডান হাত দিয়ে সেটা নিয়ে হাতে ধরা গোলাপদুটোয় মুড়ে দিলি ।

তারপর কাঁপা হাতে সেটা পরীর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে হেসে বললি...'' ম্যাডাম, গরীব হতে পারি তবে ভিখারী নই ।"

মেয়েটার রসগোল্লার মত চোখদুটোর সামনে দিয়ে সাইকেলের প্যাডেলে জোড়ে চাপ মারলি । মুখে এক আশ্চর্য্য খুশির ঝিলিক ..........
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২৫
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×