somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাম নিয়া অত নামানামি দেখতে দেখতে বেজার হইয়া একখানা জীবন থেকে নেয়া পুস্ট

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চারিদিকে আজ নাম নিয়ে কতকিছু হয়ে যাচ্ছে। ওসব ভেজালে আমি নাইক্কা। নামের এত বাহার দেইখা নিজের নামখানা নিয়া একখানা জীবনঘনিষ্ঠ ঘ্যাটনা মনে পড়ে গেলু।

আসল ঘটনা বলার আগে অন্য কয়েকটা ঘটনা বলে পুস্ট টারে একটু মোটাতাজা করি (গরু মোটাতাজা করণের মতন আর কি!।

স্কুলে আমাদের এক বন্ধু ছিলো। তার আসল নামটা আসলেই ভুইলা গেছি। তার নাম আমরা ডাকতাম লেম্বু ভাই। লেবুর মত সাইজ দেখে এই নাম দেয়া হইসিলো। সে ছিল এক মজার মানুষ। তার চালচলন, কথাবার্তা--খুব সহজ সরল, কিন্তু অনাবিল হাসির উৎস। তো একবার কেমিস্ট্রি পরীক্ষায় প্রশ্ন আসলো--লবণ কি। লেম্বু ভাইয়ের উত্তর--সমুদ্র থেকে পানি শুকিয়ে আমরা যেটা রান্নায় দেই, তাকে লবণ বলে।

আরেক বন্ধুর নাম ছিলো ইকবাল। আমাদের ক্লাস সিক্সের ক্লাস টিচার ছিলেন মনসুর স্যার। সবাই ওনাকে ডাকতো মনসুর বয়াতি, ছড়ায় ছড়ায় কবিতা বলতেন তো। ওনার ছড়ার বইও ছিলো। তো ইকবাল স্কুল লাইফে খুব দুষ্ট ছিলো, এখন অবশ্য সে কর্পোরেটম্যান। একদিন মনসুর স্যারের হাতে ধরা খেলো ইকবাল। স্যার ছোট্ট একখানা বেত দিয়া তারে আস্তে আস্তে মারতে মারতে ছড়া বলছিলেন, "ইকবাল,মারের চোটে দিবা ফাল"। স্যার একটা করে বাড়ি দেন, আর ইকবাল ইঁদুরের মত একটা আওয়াজ করে সরে যায়, আর খালি হাসে। দেখার মতন দৃশ্য ছিলো সেইটা।

ক্লাসে দুইজন ফাহিম ছিলো। এখন কেমনে দুইটারে আলাদা করা যায়? সহজ সমাধান। মোটাজনরে মোটকা ফাহিম, চিকনজনরে চিকনা ফাহিম। নাম দুইটা এতই জনপ্রিয় এবং প্রয়োজনীয় ছিলো যে কারণে সমস্ত গার্জিয়ানরা(পড়ুন, আমাদের মায়েরা)ও তাদেরকে এবং আন্টি দুজনকেও ঐ নাম দুইটা দিয়ে আলাদা করে বুঝাতো। যেমন, এক আন্টি আরেকজনকে বলছেন, "আজকে মোটকা ফাহিমের আম্মা আসেনি ভাবী?"

যাই হউক, নাম নিয়া এরকম অনেক অনেক ঘটনা আছে, বোধ করি সবারই আছে। এইবার নিজের কথা কই। রাগিব ভাইয়ের নাম নিয়ে পোস্টটা দেখে প্রথমে মনে হলো আমার নিজের এই ঘটনাটা।

আমার পুরা নামটা কই আপনাদের।

আবু বকর মোহাম্মাদ রুবাইয়াত ইসলাম সাদাত
সংক্ষেপে সামনেরটুকু লিখি 'এবিএম'।

এইটা আমার সার্টিফিকেটের নাম। মাঝখানে 'ইবনে'ও ছিলো ;)। কিন্তু এসএসসির সময়ে ওএমআর ফর্মে জায়গা হয়নাই। তাই বাদ দিতে হইসে :(

ঘটনার শুরু এইভাবে।

তখন আমি ইতালিতে। একটা কোর্সের জন্যে ভাইভা পরীক্ষা ছিলো। তো প্রফেসর কোর্স রিলেটেড এইটা সেইটা জিজ্ঞেস করার পর আমাকে বলে, "আচ্ছা, তোমাদের দেশের মানুষের নামকরণের নিয়মটা বলো তো। তোমাদের দুজন বন্ধুকে দেখলাম, দুজনের লাস্ট নেমই হাসান। ওদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, তোমরা কি দুইভাই? ওরা বললো যে না। তাহলে কেমনে কি হইলো বুঝলাম না। তোমাদের কোনটারে ফার্স্ট নেম, কোনটারে লাস্ট নেম করো আমারে ডিটেইলস কওতো"।

আমি তারে বললাম, "দেখো, আমাদের নামের ব্যাপারগুলো তোমাদের মতন না। হাসান আমাদের দেশের খুব সাধারণ একটা নাম। তুমি হাজার জন পাবে যাদের লাস্ট নেম হাসান।"

ঠিক তখন প্রফেসর আমারে ফেললো বিপদে। সে আমারে জিগায়, "তোমার নামটা আমারে বিশ্লেষণ কইরা বুঝাও।"

আমি একটা হাসি দিয়া তারে কইলাম, "তাইলে শুনো। আমার নামের মধ্যে আমার অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত-সব আছে। আমার বাবার নামে ছিলো 'ইসলাম'--মাঝখানে যেইটা দেখতেসো। সো এইটা হলো আমার অতীত। 'সাদাত' হইলো আমার ডাকনাম, 'রুবাইয়াত'ও আমার নাম। এইটা বর্তমান। আর সামনে দেখো লিখা আছে এবিএম--আবু বকর মোহাম্মাদ। আবু বকর শব্দের অর্থ হলো 'ফাদার অব বকর'। এর মানে বুজছো? এইটা হইলো ভবিষ্যৎ।"

এই বিশ্লেষণ শুনার পর প্রফেসরের চোয়াল প্রায় মাটিতে পৌঁছায় গেসিলো। আশা করি আর কোনদিন আমাদের নাম নিয়া সে কিছু জিগাইবোনা।
----------------------------------------------------------------------------

যেই অবস্থা শুরু হইসে, এখন কি আমার নামের আগে পিছে আরো কোন বাধ্যতামূলক কিছু যোগ করতে হবে?? তাইলেই মরসি!!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৩:৩০
২৯টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×