বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ ধর্মনিরপেক্ষতার রাজনীতি করে। ধর্মীয় মূল্যবোধের রাজনীতিকে আওয়ামিলীগ অত্যন্ত ঘৃনার চোখে দেখে এবং বাংলাদেশ হতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য একটা আন্দোলন্মুখ পরিবেশ সবসময়ই বজা্য় রেখে আসছে। কিন্তু এই চরম ধর্মনিরপেক্ষতার মধ্যেও কোথায় যেন বারংবারই মানুষের পবিত্র ধর্মীয় মূল্যবোধ ব্যাবহার করার প্রবনতা লক্ষনীয় হয়। যেমন, প্রতিবার নির্বাচনের গনসংযোগ শুরু করা হয় হযরত শাহ্ আলী (র মাজার জেয়ারতের মধ্য দিয়ে। আমার যতটুকু ধর্মীয় জ্ঞান আছে তা থেকে আমি এইটুকু অন্তত পক্ষে জানি যে, মাজার জেয়ারত একপ্রকার ধর্মীয় গোড়ামীমূলক কার্যক্রমের একটা প্রধান রূপ। আর এ ধর্মীয় গোড়ামীমূলক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়েই শুরু হয় আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলের নির্বাচন ক্যাম্পেইন। আবার বিবিধ দুর্যোগ-দুর্বিপাকের সময় মসজিদে মসজিদে মিলাদের আয়োজন করা হয় রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতায়। আবার একই সময়ে সংবিধানে যে কতটুকু ইসলাম ধর্মের ছিটেফোটা কথাবার্তা আছে তা মুছে ফেলার জন্যও তৎপর। এ কেমন দুমুখি রীতি! ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির নামে যদি ইসলামকে রাষ্ট্রব্যাবস্থা হতে আলাদা করে যার যার বাড়িতে রাখার কথা বলা হয়, তবে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে এটা পুরোপুরিই ইসলাম বিরোধী মতবাদ। ইসলাম কোন একটি ধর্ম নয়, এটি একটি জীবন ব্যাবস্থা। এ জীবন ব্যাবস্থার প্রবর্তন হয়েছিল আমাদের তথাকথিত গণতান্ত্রিক রাস্ট্রব্যাবস্থা প্রবর্তনের অনেক অনেক বছর আগে, প্রবর্তিত হয়েছিল সাধারন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েই, যখন সাধারন মানুষের কোন অধিকার বলেই কিছু ছিলনা তখন। ইসলামের প্রবর্তন হয়েছিল ধর্মকে বাড়িতে আবদ্ধ করতে নয়, বরঞ্চ একটি সত্য ধর্মকে মূলনীতি করে মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে। আর সেই জীবন ব্যাবস্থাকে রাস্ট্রব্যাবস্থা হতে ব্যাবচ্ছেদ করার অপচেষ্টা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবেনা। সংবিধানের পঞ্চম সংসোধনী যদি দেশের বর্তমান আইন মোতাবেক বেআইনি হয়, তবে তা অবশ্যই বাতিল করা উচিৎ। কিন্তু এর ফলশ্রুতিতে ইসলামী যে মূলনীতি সমূহ সংবিধান হতে বাদ পড়বে তা অবশ্যই পূণ:সংযোজনের ব্যাবস্থা নেয়া হোক এ-ই আমার দাবী।