somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বস্তুবাদ, ভাববাদ, সংশয়বাদ, অজ্ঞেয়বাদ, নাস্তিক্যবাদ, যুক্তিবাদ, অভিজ্ঞতাবাদ, মুক্তমনাঃ কোনটা কী?

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বস্তুবাদঃ

দর্শনের সবচেয়ে প্রাথমিক মতবাদগুলোর একটি হল বস্তুবাদ। আমাদের চারপাশের জগতের যেসব অস্তিত্ত্ব আমরা পর্যবেক্ষণ করি বস্তুবাদ অনুযায়ী তারা যেকোন প্রকার চেতনা নিরপেক্ষ। যে দার্শনিক ধারায় ধরে নেওয়া হয় যে পৃথিবী বস্তুগত, তার অস্তিত্ব আছে বিষয়গতভাবে, চৈতন্যের বাইরে ও চৈতন্য-নিরপেক্ষভাবে, বস্তুই মুখ্য, তা কারো দ্বারা সৃষ্টি হয়নি এবং আছে বাহ্যিকভাবে, চৈতন্য, চিন্তন হল বস্তুরই একটি গুণধর্ম; পৃথিবী ও তার নিয়মগুলি জ্ঞেয়। বস্তুবাদ ভাববাদের বিরোধী এবং তাদের সংগ্রামই ওইতিহাসিক-দার্শনিক প্রক্রিয়ার আধেয়। বস্তুবাদ কথাটি ১৭শ শতাব্দীতে ব্যবহৃত হয়েছিল প্রধানত বস্তু সম্বন্ধে পদার্থবিদ্যাগত ধারণাগুলির অর্থে এবং ১৮শ শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে তা ব্যবহৃত হয়েছে দার্শনিক অর্থে, ভাববাদের বৈপরীত্যে।

ভাববাদঃ

ভাববাদী তত্ত্ব অনুসারে বস্তু জগতের সবকিছু পরমাত্মা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়, অর্থাৎ বস্তুজগতের সৃষ্টি ও ধ্বংস সহ সকল রকমের পরিবর্তন পরমাত্মা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অন্যদিকে প্রকৃতিবাদী তত্ত্ব অনুসারে বস্তু ও পদার্থ সহ যা কিছু আছে সবই বস্তু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও চালিত হয়, কারণ বস্তু ও শক্তি অভিন্ন।
ভাববাদীরা মনে করেন বস্তু ও শক্তি দুটো ভিন্ন জিনিস। বস্তু জড় বিশেষ, কিন্তু শক্তি একটি অবস্তুগত জিনিস। শক্তি যখন বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তখনি বস্তু সক্রিয় হয়ে ওঠে। অন্যদিকে প্রকৃতিবাদ অনুসারে বস্তু ও শক্তি ভিন্ন কিছু নয়। শক্তি ও বস্তুর মধ্যে মূলত: কোন পার্থক্য নেই। যেমন- পানি, বরফ ও বাষ্প। এদের মধ্যে মূলত: কোন পার্থক্য নেই। যতটুকু পার্থক্য তা নিতান্তই অবস্থাগত এবং বাহ্যিক। এ জন্য এরা পরস্পর রূপান্তরযোগ্য। বস্তু এবং শক্তিও তাই।

ভাববাদী তত্ত্ব অনুসারে জীবন জীব কোষের কোন গুণ বা ধর্ম নয়। পরমাত্মা থেকে আসা একটি অলৌকিক ও অবস্তুগত শক্তি, কিন্তু প্রকৃতিবাদী তত্ত্ব অনুসারে চেতনা বা মন পরমাত্মা থেকে আসা কোন অলৌকিক ও অবস্তুগত শক্তি নয়; বরং মস্তিস্ক কোষ থেকে আসা বস্তুগত একটি গুণ বা ধর্ম বিশেষ। তাই মস্তিষ্ক বিলীন হবার সাথে সাথেই মন বা চেতনার চির অবসান ঘটে। অন্যদিকে ভাববাদী তত্ত্ব অনুসারে মস্তিষ্ক কোষের অবসান হবার সাথে সাথে মন বা চেতনার চির অবসান ঘটে না, স্থানান্তরিত হয় মাত্র।
ভাববাদী তত্ত্ব অনুসারে মানুষের দেহের মধ্যে আত্মা নামক অবস্তুগত একটি অবিনাশী অস্তিত্ব আছে। মানুষের দেহের অবসানের পরেও আত্মার অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকে। অন্যদিকে প্রকৃতিবাদী তত্ত্ব অনুসারে মানুষের দেহের অবসানের সাথে সাথে জীবন, মন, চেতনা, ইত্যাদির চির অবসান ঘটে। আত্মা বলে অবিনাশী ও চিরন্তন কিছু নেই। কাজেই আত্মার অমরত্বের কোন প্রশ্নই ওঠে না।

সংশয়বাদঃ

সংশয়বাদ (ইংরেজি ভাষায়: Skepticism) শব্দটি অনেক বৃহৎ পরিসরে ব্যবহৃত হয়। যেকোন কিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মনোভাবকেই সংশয়বাদ বলা যেতে পারে। সাধারণ্যে বহুল প্রচলিত কোন ধারণাকে সন্দেহ করা অর্থে সংশয়বাদ শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কোনকিছুর নিদর্শন পেলে তাকে বিনা বাক্যবয়ে মেনে না নিয়ে বরং সেই নিদর্শনটিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করাই সংশয়বাদ। যারা সংশয়বাদের প্রতি আস্থা রাখেন বা সংশয়বাদ চর্চা করেন তাদেরকে সংশয়বাদী বলা হয়।
চিরায়ত দর্শন থেকেই সংশয়বাদের ইংরেজি প্রতিশব্দ, স্কেপ্টিসিজম শব্দটি এসেছে। প্রাচীন গ্রিসে কিছু দার্শনিক ছিলেন যারা "কোনকিছুকেই নিশ্চিত বলে ঘোষণা দিতেন না বরং সবকিছুতেই তাদের নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতেন"। দার্শনিকদের এই ধারাটিকে তখন Skeptikoi বলা হতো। তাই Skeptikoi দার্শনিক ধারার দার্শনিকদের বৈশিষ্ট্যকেই স্কেপ্টিসিজম হিসেবে আখ্যায়িত করা হতে থাকে।

নাস্তিক্যবাদঃ

নাস্তিক্যবাদ (ইংরেজি ভাষায়: Atheism; অন্যান্য নাম: নিরীশ্বরবাদ, নাস্তিকতাবাদ) একটি দর্শনের নাম যাতে ঈশ্বর বা স্রষ্টার অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়না এবং সম্পূর্ণ ভৌত এবং প্রাকৃতিক উপায়ে প্রকৃতির ব্যাখ্যা দেয়া হয়। আস্তিক্যবাদ এর বর্জন কেই নাস্তিক্যবাদ বলা যায়। নাস্তিক্যবাদ বিশ্বাস নয় বরং অবিশ্বাস এবং যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বাসকে খণ্ডন নয় বরং বিশ্বাসের অনুপস্থিতিই এখানে মুখ্য।

ইংরেজি ‘এইথিজম’(Atheism) শব্দের অর্থ হল নাস্তিকক্য বা নিরীশ্বরবাদ। এইথিজম শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে গ্রিক ‘এথোস’ (ἄθεος) শব্দটি থেকে। শব্দটি সেই সকল মানুষকে নির্দেশ করে যারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই বলে মনে করে এবং প্রচলিত ধর্মগুলোর প্রতি অন্ধবিশ্বাস কে যুক্তি দ্বারা ভ্রান্ত বলে প্রমাণ করে। দিনদিন মুক্তচিন্তা,সংশয়বাদী চিন্তাধারা এবং ধর্মসমূহের সমালোচনা বৃদ্ধির সাথে সাথে নাস্তিক্যবাদেরও প্রসার ঘটছে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে সর্বপ্রথম কিছু মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে স্বীকৃতি দেয়। পশ্চিমের দেশগুলোতে নাস্তিকদের সাধারণ ভাবে ধর্মহীন বা পরলৌকিক বিষয় সমূহে অবিশ্বাসী হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মের মত যেসব ধর্মে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হয় না, সেসব ধর্মালম্বীদেরকেও নাস্তিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নাস্তিক শব্দটি বৈদিক হিন্দু ধর্মের, হিন্দু ধর্মে নাস্তিক তাদেরই বলে যারা বেদের অপৌরুষয়েতায় বিশ্বাস করেনা। বেদের কিছু নাস্তিক ব্যক্তিগত ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা, হিন্দু ধর্মের দর্শন, যুক্তিবাদ,মানবতাবাদ এবং প্রকৃতিবাদে বিশ্বাস করে। নাস্তিকরা কোন বিশেষ মতাদর্শের অনুসারী নয় এবং তারা সকলে বিশেষ কোন আচার অনুষ্ঠানও পালন করে না। অর্থাৎ ব্যক্তিগত ভাবে যে কেউ, যে কোন মতাদর্শে সমর্থক হতে পারে,নাস্তিকদের মিল শুধুমাত্র এক জায়গাতেই, আর তা হল ঈশ্বরের অস্তিত্ব কে অবিশ্বাস করা।


অভিজ্ঞতাবাদঃ

অভিজ্ঞতাবাদ হচ্ছে একটি জ্ঞান তত্ত্ব। মানুষের জ্ঞানের উৎস কি এবং জ্ঞানের ক্ষমতা এবং সীবাবদ্ধতা কি এ বিষয়ে দর্শনে বিভিন্ন তত্ত্ব আছে। সাধারণভাবে অভিজ্ঞতাবাদ বলতে এরূপ তত্ত্বকে বোঝায় যে, মানুষের ইন্দ্রিয়- অভিজ্ঞতাই হচ্ছে জ্ঞানের একমাত্র উৎস। তবে অভিজ্ঞতা কথাটি দর্শনে ব্যাপক ব্যবহৃত শব্দ। ভাববাদ এবং বস্তুবাদ উভয় তত্ত্বে অভিজ্ঞতার ব্যবহার দেখা যায়।

অভিজ্ঞতাবাদ দু'ধরনের। ভাববাদী অভিজ্ঞতাবাদ এবং বস্তুবাদী অভিজ্ঞতাবাদ। বস্তুবাদী অভিজ্ঞতাবাদের তত্ত্ব অনুযায়ী আমাদের চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহবা, ত্বক- অর্থাৎ ইন্দ্রিয়সমূহ হচ্ছে ভাবের বাহক এবং বস্তুজগৎ হচ্ছে ভাবের উৎস কেন্দ্র। ইন্দ্রিয়জ অভিজ্ঞতাই হচ্ছে জ্ঞানের মূল। ইন্দ্রিয়ের বাইরে কোন ভাবের সৃষ্টি সম্ভব নয়। ভাববাদীদের মতে মনের বাইরে কিছু নেই। মনের ভাবই জ্ঞানের একমাত্র বস্তু। দর্শনশাস্ত্রে অভিজ্ঞতাবাদ দ্বারা জ্ঞানের কিছু তত্ত্বকে বোঝায় যেখানে আদর্শ বা মকবাদের গঠনকার্যে অভিজ্ঞতার ভূমিকা মূখ্য হিসেবে ধরা হয়। এই মতবাদে সহজাত আদর্শগুলোকে তেমন কোন গুরুত্ব দেয়া হয়না।

যুক্তিবাদঃ

দর্শন ও বিজ্ঞানের বিকাশের যুগ থেকে যুক্তিবাদ বলতে দর্শনশাস্ত্রে গাণিতিক পদ্ধতির সম্পৃক্তকরণকেই বোঝানো হয়ে থাকে, যেমনটি দেকার্ত, লিবনিৎজ্ এবং স্পিনোজা করেছিলেন। একে মূলত ইউরোপীয় যুক্তিবাদ বলা হয়, কারণ ইউরোপে যখন এই মতবাদ কর্তৃত্বময় ছিল তখন ব্রিটেনে অভিজ্ঞতাবাদের রাজত্ব চলছিল।
যুক্তিবাদকে প্রায়ই অভিজ্ঞতাবাদের বিপরীতে দাড় করানো হয়। বিস্তীর্ন অর্থে এই দু’টো দৃষ্টিভঙ্গী একটা আরেকটা থেকে স্বতন্ত্র্য নয়, কারণ একজন দার্শনিক একই সাথে যুক্তিবাদী ও অভিজ্ঞতাবাদী হতে পারেন।[১]অভিজ্ঞতবাদের সবচেয়ে চরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গী বলে যে অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই জ্ঞান অর্জন হয়, হয় পঞ্চইন্দ্রীয় দিয়ে নয়ত বেদনা-সুখের মত গহীন অনুভূতি দিয়ে। জ্ঞানের ভিত্তি অভিজ্ঞতা, আবার অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান অবরোহিতও হয়। দন্দ্ব মূলত জ্ঞানের উৎস এবং জ্ঞান যাচাইয়ের উপযুক্ত পদ্ধতি নিয়েই।
যুক্তিবাদের কয়েকটি তরিকার সমর্থকরা বলেন যে ভিত্তিপ্রস্তরমূলক নীতি থেকে, যেমন জ্যামিতির সূত্র, অবরোহী পদ্ধতি দ্বারা সব প্রকার সম্ভাব্য জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। বারুচ স্পিনোজা এবং গটফ্রিড লিবনিৎজ্ এই মতের অনুসারী ছিলেন এবং তাঁরা দেকার্তের উপস্থাপিত কিছু জ্ঞানতাত্ত্বিক এবং অধিবৈদিক সমস্যার সাথে লড়তে গিয়ে তাঁরা যুক্তিবাদের মৌলিক তরিকার জন্ম দেন। স্পিনোজা এবং লিবনিৎজ্ দাবি করেন যে তত্ত্বীয়ভাবে সব প্রকার জ্ঞান (যার মধ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানও অন্তর্ভুক্ত) যুক্তি দ্বারা আহরণ করা সম্ভব, যদিও তাঁরা দু’জনই পর্যবেক্ষণ করেছিলেন যে গণিতের মত কিছু ব্যতিক্রমী শাখা বাদে আর কোন ক্ষেত্রেই এই কাজ সম্ভব না। আচরণকে যুক্তির উপর ভিত্তি করে বিশ্লেষণ করাকেই যুক্তিবাদ বলে।

যুক্তিবাদী ও অভিজ্ঞতাবাদীদের মধ্যে পার্থক্যটা পরে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং একারণে উভয় তরিকার দার্শনিকরা এই পার্থক্যীকরণ সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। এছাড়া এই পার্থক্যের করণটা আপাতদৃষ্টিতে যত পরিষ্কার মনে হয়, বাস্তবে মোটেই তা নয়; যেমন, প্রধান তিন যুক্তিবাদী অভিজ্ঞতাবাদী বিজ্ঞানের গুরুত্বের প্রতি নিবেদিত ছিলেন, ওদিকে অনেক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাবাদীরা তাঁদের কর্মপদ্ধতি এবং অধিবৈদিক তত্ত্বের দিক দিয়ে দেকার্তের সাথে স্পিনোজা এবং লিবনিৎজের থেকে বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ ছিলেন।

মুক্তচিন্তাঃ

মুক্তচিন্তা (ইংরেজি: Freethought) হল এক প্রকার দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গী যা বলে যে বিজ্ঞান, যুক্তিবিদ্যা এবং যুক্তির আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত; মতামত গঠণের ক্ষেত্রে প্রথা, অন্ধ বিশ্বাস এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রভাবিত হওয়া বাঞ্চনীয় নয়। সচেতনভাবে মুক্তচিন্তার প্রয়োগকে বলে মুক্তচিন্তন এবং এর অনুশীলনকারীদের বলে মুক্তমনা।

মুক্তচিন্তা বলে যে জ্ঞান ও যুক্তির অনুপস্থিতিতে দাবিকৃত কোন মতকেই সত্য হিসেবে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করা উচিত না। সুতরাং, মুক্তমনারা বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান, বাস্তব সত্য এবং যুক্তির আলোকে মত গড়ে তুলে এবং হেত্বাভাস অথবা কর্তৃপক্ষ, পক্ষপাতদুষ্টতা, লোকজ্ঞান, জনপ্রিয় সংস্কৃতি, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা, প্রথা, গুজব এবং অন্য সব গোঁড়া, বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতার উৎসাহদাতার ভূমিকা পালনকারী শাস্ত্র থেকে নিজেদের বিরত রাখে। ধর্মের ক্ষেত্রে মুক্তমনারা সাধারণত বলে যে অলৌকিক অবভাসের পক্ষে প্রমাণ যথেষ্ট নয়।

ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ এবং দার্শনিক উইলিয়াম কিংডন ক্লিফোর্ডের “ক্লিফোর্ডস্ ক্রেডো” এর একটি বাক্যকে মুক্তচিন্তার ভিত্তি বলা যায়- “যে কোন ব্যক্তির যে কোন জায়গায় উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে কোন কিছু বিশ্বাস করা উচিত নয়”।

অজ্ঞেযবাদ

(ইংরেজি: Agnosticism) একটি দর্শন, যা বিভিন্ন মৌলিক প্রশ্ন বা ধর্মীয় দাবি, যেমন - ঈশ্বর-এর অস্তিত্ব, ইত্যাদির সত্যতাকে মনে করে অজ্ঞাত ও অজ্ঞেয, তথাপি জীবনযাপনের জন্য অগুরুত্বপূর্ণ। অজ্ঞেয়বাদ, নাস্তিকতাবাদ হতে ভিন্ন, কেননা নাস্তিকতাবাদ ঈশ্বরের অস্তিত্বহীনতা দাবী করে, যেখানে অজ্ঞেয়বাদ এই দাবীর প্রশ্নেও সমান সন্দিহান।

অজ্ঞেয়বাদে যারা বিশ্বাস করেন তাদের সাথে, যারা মৌলিক প্রশ্নের উত্তরকে অজ্ঞাত কিন্তু হয়তো অজ্ঞেয় নয় মনে করেন, তারাও নিজেদের অজ্ঞেয়বাদী দাবী করেন ও শেষের দর্শনটিকেও অজ্ঞেয়বাদেই আলোচনা করা হয়। সাধারণভাবে সকল অজ্ঞেয়বাদী ধর্ম সংক্রান্ত বিশ্বাসের ব্যাপারে সংশয়ী হন।


(সংকলিত)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×