জন্মের পর বাবা বলেন-
ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে।
মা বলেন- ডাক্তার হবে।
ফ্যামিলিতে পণ্ডিত টাইপ
কেউ থাকলে বলেন-
ক্যাডার হবে। আই মিন
"বিসি এস ক্যাডার"।
একবারের জন্য হলেও
কোনো বাব-মা ভাবেন না,
তাঁর ছেলে বড় হয়ে লেখক
হবে, মুক্ত চিন্তার মানুষ হবে।
একজন সৎ নির্ভীক
সাংবাদিক হবে।
ভালো অভিনেতা হবে।
সংগীত শিল্পী হবে।
কোনো বাবা-মাই ভাবেন
না, তাঁর ছেলে একদিন
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, স্যার
ফজলে হাসান আবেদ,
ফজলে লোহানী কিংবা হানিফ
সংকেত হবে।
মা-বাবা সর্বদাই সন্তানের
মঙ্গল চান। তাঁর সন্তান দুধে-
ভাতে ভালো ভাবে বাঁচুক
সেটাই থাকে তাঁদের
একমাত্র কামনা। সে জন্যই
তাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম
করে যান। কিন্তু আমি হলফ
করে বলতে পারি বাংলাদেশের
শতকরা ৯০ভাগ বাবা-মাই
কখনো জানতে চান
না তাঁদের সন্তান
কি হতে চায়?
এদেশের শতকরা ১০ ভাগ
বাবা-মাও যদি চাইতেন
যে, বড় হয়ে তাঁদের
ছেলে চাকরি না করে বরং অন্যদের
চাকরি দিবে-
তা হলে দেশে প্রতি বছর কম
করে হলেও কিছু না কিছু তরুণ
উদ্যোক্তা তৈরী হতো।
ছোট বেলায় "এইম ইন লাইফ"
রচনা লিখতে গিয়ে লিখেছি,
বড় হয়ে ডাক্তার হবো। কেউ
লিখেছে, ইঞ্জিনিয়ার
হবো। কেউ কেউ আবার
আকাশে উড়ার ইচ্ছা পোষণ
করে লিখেছে, পাইলট হবো।
"এইম ইন লাইফ"
লিখতে গিয়ে যদি কেউ
লিখতো- বড় হয়ে "হানিফ
সংকেত হবো"
কিংবা "ফজলে লোহানী"
হবো। কিংবা "কলিম
শরাফী" হবো।
তাহলে সে ছেলে ক্লাসে শিক্ষকের
কাছে কতোটা হাসির পাত্র
হিসেবে পরিগণিত হতো-
একবার ভাবুন তো!
তাই আমি একজন
সন্তান হয়ে প্রত্যেক বাবা-
মাকে অনুরোধ করবো। আপনার
সন্তানের ভালো মন্দ অবশ্যই
আপনি দেখবেন।
তবে তাকে নির্দিষ্ট
কোনো ফ্রেমের
মধ্যে আটকে না রেখে তাকে সেটাই
করতে দিন-
যেটা সে ভালো পারে।
যে আর্ট পারে, তাকে আর্ট
করতে দিন।
যে নাচতে পারে তাকে নাচতে দিন।
যার ভালো গলা আছে-
তাকে গাইতে দিন। যার
অভিনয়ে আগ্রহ
আছে তাকে উৎসাহ দিন।
যে সাংবাদিকতা করতে চায়,
তাকে করতে দিন। যার
লেখার হাত
ভালো তাকে লিখতে দিন।....
সব বাবা-মা ই তাঁর মেয়ের
জামাই হিসেবে সবসময়
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার,
বিসিএস ক্যাডার, বড়
ব্যবসায়ীর পোলা-
ইত্যাদি খুঁজে বেড়ান। কেউ
চান না তাঁর মেয়ের জামাই
একজন সংস্কৃতিমনা মুক্ত মনের
লেখক, উপস্থাপক
কিংবা সাংবাদিক হওক ।
উপসংহারঃ
কালচারাল
সেক্টরে গভমেন্ট এর স্বল্প
বাজেটও একটা বড় বাঁধা।
প্রতি বছর সামরিক
খাতে যেভাকে বাজেট
বাড়ে সে অনুপাতে কালচারাল
সেক্টরে কাজেট
বাড়তে দেখি না আমরা।
প্রথম বাঁধা ফ্যামিল আর
দ্বিতীয় বাধা গভমেন্ট। এ দুই
বাধা অতিক্রম
করে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ,
ফজলে লোহানী হওয়া আর
প্রশান্ত মহাসাগর
সাঁতরে পারি দেওয়া তো' একই
কথা।......