মোহাম্মদ আশরাফুলের মত একটা লম্বা বিরতির পর আবার যদ্দিনে ব্লগে লেখা শুরু করলাম, তদ্দিনে ক্রিকেটের মত ব্লগের পরিবেশও বদলে গেছে। গেটআপ, মেকআপ, সেটআপ, সবই অন্যরকম। এই বদলের সাথে ধাতস্ত হতে আমার সময় লাগছিলো বৈকি!
বিরতির এই ব্যাপারটা ছাড়া মোহাম্মদ আশরাফুলের সাথে আমার আর কোনো মিল নেই, হাবিবুল বাশার সুমনের সাথেই বরং বেশি মিল। কোনো চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্স নেই, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ইনিংস নেই, অভিষেকেই টেস্ট সেঞ্চুরি করে হইচই ফেলে দেয়ার মত গ্লামার নেই, তবুও কিভাবে কিভাবে যেনো জাতীয় দলে লম্বা সময় থেকে গেছেন। মাঝখান দিয়ে অধিনায়কত্বটা উপরি পাওয়া!
আমিও তেমনই নিরবে নিভৃতে নিজের মত করে লিখি কিন্তু খুব অল্প পাঠকই সে লেখা পড়েন। হু-হ্যাঁ করে মন্তব্যও দেন দুয়েকজন। আমিও যে খুব মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য করি এমন নয়। এ রকম এক দিনে আমি চাঁদগাজী সিনড্রোম শিরোনামে একটা লেখা দিই। চাঁদগাজী যে ব্লগের লিভিং লেজেন্ড, সেটা না জেনেই আমি পোস্টটা দিয়েছিলাম এবং যা হওয়ার তাই হলো। ব্যাপকভাবে পঠিত এবং মন্তব্য আসতে লাগলো। ঠিক চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ভারতকে ধ্বসিয়ে দেয়া মোহাম্মদ আমিরের পারফরমেন্সের মত হয়ে গেলো এই পোস্টটা। আর এর দৌলতে আমি আরও কিছুদিন ব্লগিং করার একটা মোমেন্টাম পেয়ে গেলাম।
যেটা আগেই বলেছি, অ্যাদ্দিনে ব্লগের অনেক কিছু বদলেছে। ‘নির্বাচিত পোস্ট’ নামে একটা নতুন ট্যাবও যোগ হয়েছে প্রথম পাতাতেই। কিন্তু ঠিক কি আছে এই ট্যাবে তা দেখা হয়ে ওঠেনি। আরও পরে একদিন ‘নির্বাচিত পোস্ট’ ট্যাবে ঢুকে দেখি আমারই একটা লেখা ওই পাতার প্রথমেই দেখাচ্ছে। আমি আগামাথা কিছুই বুঝলাম না কিন্তু স্ক্রল করতে করতে দেখলাম ওখানে আমার আরও কয়েকটা পোস্টও আছে।
আমার লেখা এবং অন্যদের লেখাগুলো ঠিক কি যোগ্যতায় নির্বাচিত পোস্ট ক্যাটেগরিতে গেছে না বুঝলেও একটা কমন বিষয় দেখলাম যে ওই পাতার সব পোস্টেই ‘কাল্পনিক ভালোবাসা’ নামে এক ব্লগার লাইক দিয়েছেন। পরবর্তীতে পোস্ট দেয়ার পর যখনই দেখতাম কাল্পনিক ভালোবাসা লাইক দিয়েছেন, তখনই সে লেখাটা নির্বাাচিত পাতায় চলে যেতো।
বিরতির আগে কাল্পনিক ভালোবাসা নামের কোনো ব্লগারকে আমার চোখে পড়েনি। সে সময় জানা আপা নিজ নামেই ব্লগিং করতেন, অরিলেরও নিজ নামের আইডি ছিলো বলেই মনে পড়ছে। কিন্তু অ্যাডমিন রিলেটেড কোনো বিষয় হলে ‘নোটিশ বোর্ড’ নামের আইডি থেকেই পোস্ট আসতো। এ জন্য কাল্পনিক ভালোবাসা যে অ্যাডমিন প্যানেলের একজন হতে পারেন, বিষয়টা আমার মাথাতেই আসেনি। জিজ্ঞাসা করার মত পরিচিত কেউ ছিলোও না ওই সময়।
তবে ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগতো। 'একদিন কিভাবে লেখা নির্বাচিত হয়' এ রকম একটা পোস্টে মজা করেই মন্তব্য করেছিলাম ‘ব্লগার কাল্পনিক ভালোবাসা লাইক দিলেই সে পোস্ট নির্বাচিত হয়।’
তারও বেশ কিছুদিন পর ব্লগার কাল্পনিক ভালোবাসারই একটা পুরোনো পোস্টে জানা আপার সাথে মিটিং, ব্লগ দেখভাল করার প্রস্তাব পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে পড়ে প্রথম জানতে পারলাম যে তিনি অ্যাডমিন প্যানেলেরই একজন!! এবং বুঝলাম যে কাল্পনিক ভালোবাসা লাইক দিলেই কেনো সে পোস্ট ‘নির্বাচিত পোস্ট’ পাতায় যায়!!
সুতরাং 'নির্বাচিত পোস্ট' পাতায় লেখা সিলেক্ট হওয়ার এটাই কারণ, ব্লগার কাল্পনিক ভালোবাসার লাইক।
কি, রেগে গেলেন? ভাবছেন, এই কথা তো আমিও জানি?
আরে ভাই, আপনি যে জানেন, সেটা আমিও জানি, কিন্তু কোন লেখায় ব্লগার কাল্পনিক ভালোবাসা লাইক দেবেন, সেটা তো জানেন না, তাই না?
সেটা অবশ্য আমিও জানি না!!
উৎসর্গ: কাল্পনিক ভালোবাসা
ব্লগার কাল্পনিক ভালোবাসা’কে অ্যাডমিন হিসেবে জানার পর আমার একটু ক্ষোভ জন্মেছিলো। এ ধরনের অতি নাটকীয় নাম অ্যাডমিন এর ভারি বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যশীল নয় বলেই আমার মনে হচ্ছিল। যদ্দুর মনে পরে আমি এই বিষয়টা তাঁর পোস্টে জানিয়েছিলামও কিন্তু কোনো ফল হয়নি। পরে জাদিদ ভায়ের সাথে একবার দেখা হওয়ার সুবাদে তাঁর নিপাট ভদ্রলোকির পরিচয় পেয়ে সে ক্ষোভ প্রশমিত হয়ে গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:২০