somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশপ্রেমের লৌকিকতার তেলেসমাতি…….

০৯ ই মার্চ, ২০১২ রাত ৮:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকে বলে থাকে, ‘বাঙালী হুযুগে জাতি’। যা দেখে তাতেই নাকি ঝাপিয়ে পরার অভ্যাস।
গত কয়েকদিন যাবত ভারতের সীমান্ত ও পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নানা পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে। আমাদের কেউ ভারতীয় ওয়েব সাইট হ্যাক করছে, কেউ ভারতীয় পন্য বর্জন করতে বলছে। ভাল! সবার মধ্যে দেশপ্রেম যাগ্রত হচ্ছে। কিন্তু দেশপ্রেমটা যেন আবার হুযুগ হয়ে না যায়। অর্থাৎ কিছুদিনের জন্য হুযুগ উঠল, আবার হুযুগ নেমে গেল দেশপ্রেমও নেমে গেল, বিষয়টি যেন এমন না হয়।
আবার দেশপ্রেম রসম-রেওয়াজ বা লৌকিক হয়ে উঠলেও সমস্যা। ’৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙালীর দেশপ্রেম রসম-রেওয়াজ বা লৌকিক ছিল না। কারণ লোক দেখানো দেশপ্রেমের জন্য কেউ জীবন দিত না।
আমার বলার উদ্দেশ্য, প্রকৃত দেশপ্রেম একটা সুফল বা বিজয় নিয়ে আসে, আর রসম-রেওয়াজ বা লৌকিক দেশপ্রেম বুলি ফুটাতে পারে অনেক, কিন্তু প্রকৃত অর্থে জাতিকে করে দেয় পঙ্গু ।
যেমন ধরেন, ফেলানীর মৃত্যু নিয়ে যখন সবাই খুবই সোচ্চার, টিপাইমুখি বাধ বন্ধ করতে যখন সবাই দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত মার্চ করে বেরাচ্ছে, সেই সময় বাংলাদেশে ভারতীয় নর্তকী-বাদিকারা কনসার্ট করে যায়।
বা, সীমান্ত হত্যার বিরোধীতা করে প্রতিবাদে সবাই যখন একত্মতা ঘোষণা করছে, তখন বিপিএল-এ উদ্বোধনীতে ভারতীয় নর্তকী-বাদিকারা আবারো মহড়া দিয়ে যায়।
আবার গতকয়েকদিন ধরে সবাই বলছে, যেহেতু সীমান্তে হত্যা বন্ধ হচ্ছে না, পানি আগ্রাসনও বন্ধ হচ্ছে না, এবার তাহলে ভারতীয় পন্য বর্জন হোক, অথচ সেই সময় বাংলাদেশে ভারতীয় বাদিকা আশা ভোসলে আসছে কনসার্ট করতে (৯ই মার্চ)।
এখানে আমার সাথে আপনারা অবশ্যই একটি বিষয়ে একমত হবেন,তা হল:
সীমান্তে অবিরাম হত্যাকা- বা দেশে কৃত্তিম পানি সঙ্কট তৈরী করা অবশ্যই আমাদের স্বার্বভৌমত্ব বা স্বাধীনতার জন্য হুমকি, যা দেশপ্রেমে জাগ্রত হয়ে আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও রক্ষা করতে হবে।
কিন্তু, একবার ভাবুন তো, দেশদখল ছাড়াই, কোন দেশের সংস্কৃতি হরন করাটা আরো বড় স্বাধীনতার জন্য হুমকি নয় কি?
কারণ: দেশ দখল করার জন্য শুধু বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ করতে হয় না।
ডিশ এন্টেনা বা টিভি চ্যানেলের মাধ্যম দিয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতি ছুড়ে দিয়ে এবং মাঝে শত মাইল ফারাক থাকলেও দুই এলাকার সংস্কৃতি যেমন পোষাক আশাক, ভাষা, অন্যান্য বিষয়গুলো এক রকমে রূপান্তরিত করেও দেশ দখল করা যায়। এটি অবশ্যই এক ধরনের যুদ্ধ, যা সংস্কৃতি যুদ্ধ। আর ভারতীয়রা যে সেই যুদ্ধে কিন্তু জয়লাভ করেছে। যার চুড়ান্ত প্রমাণ হচ্ছে, আশা ভোসলের কনসার্টে ২০ হাজার টাকা দিয়ে প্লাটিনাম টিকিট কেটে বাঙালীরা তার গান শুনতে যাবে। উল্টোদিকে, বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো ভারত তার মাটিতে নিষিদ্ধ করবে, অথবা খোদ বাংলার মাটিতে শাকিব খানের সাথে শাহরুক নাচতে লজ্জা বোধ করবে।
কোন দেশের সংস্কৃতি যখন দখল করা যায়, তখন তার ভূমি দখল করতেও বেশি সময় লাগে না। তারা জানে, বাংলাদেশে ভারতীয় নতর্কীদের বহু ভক্ত জনগণ আছে, যারা বাঙালীদের মনোবলে ক্যান্সার স্বরূপ, আর এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েই শিঘ্রই বাঙালীরা পুরোপুরি ধরাশায়ী হবে।
তাইতো ভারতীয়রা বুক ফুলিয়ে বলছে, “হে বাঙালী! তোমরা কত বোকা, তোমরা কত নির্বোধ। তোমরা তোমাদের স্বাধীনতার কথা বলছ, কত লম্ফঝম্ফ করছ। কিন্তু তোমাদের এ দেশপ্রেম তো ঘুনে ধরা, লৌকিকতা সর্বস্ব। তার প্রমাণ: তোমাদের কথিত দেশপ্রেমকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়ে আমারা আমাদের নর্তকী-বাদীকাদের তোমাদের বাসায় পাঠাচ্ছি, আর তোমরা তাদের জন্য পকেট ফুরিয়ে নিঃস্ব হচ্ছো, নতর্কীদের দেখে মাতাল হচ্ছো, পুরুষত্ব হারিয়ে ঝিমুচ্ছ। তোমরা কি তোমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারবে?”

সূত্র
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×