somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রামকাহিনী- দ্যা স্টোরি অফ রামস! (নট এ অনন্ত জলিল প্রডাকশন)

১৮ ই মে, ২০১২ রাত ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এলআরবির একটা গান আছে, “তিন পুরুষ, আমার তিন পুরুষ”। এক পুরুষে ধন সম্পদ বানায়, আরেক পুরুষের ভোগে সেটা খরচের খাতায় চলে যায়, শেষের পুরুষের জন্য আর কিছু বাকি থাকে না- এরকম কথা ছিল গানটায়। কবে যেন পড়েছিলাম মনে নেই ঠিক, একটা ভিন্ন ভাবে বলা তিন পুরুষের চিরাচরিত আখ্যান। পারিবারিক প্রতিষ্ঠা, অর্থ-বিত্ত, আর সর্বোপরি মানসম্মান গড়ে ওঠার ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন প্রজন্মকে বলে কেনারাম, বাবুরাম এবং বেচারাম। অনেকেই হয়ত জানেন, এরপরেও ভুমিকা দিয়ে নেয়ার দরকার আছে বলে মনে করছি (সবজান্তা ভাব নেয়ার চেস্টা)। B-)


ব্যাপারটা এরকম, শুরুতে খান্দানের শান শওকত, পয়সা কড়ি তেমন থাকে না। এসময়টা হল কষ্টকর সংগ্রামের, তিল তিল করে সম্পদ বাড়ানো। এই প্রজন্ম থাকে অনেক সুশ্রংখল, ফোকাসড, কষ্টসহিষ্ণু, বৈষয়িকবুদ্ধিসম্পন্ন। এরা আদর্শের অথবা আধুনিক চাল চলনের তেমন ধার ধারে না। তথাকথিত “কালচার” এ পিছিয়ে থাকলেও বৈষয়িক সম্পদের প্রাচুর্য দিয়ে এরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা শক্ত ভিত করে দিতে চমৎকারভাবে। এরাই হল কেনারাম, প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে উঠে ক্রয়ক্ষমতার সিঁড়িতে উপরে উঠতে দারুন পারঙ্গম এরা।


তো এরপরে আসছে কারা? বাবুরাম অবশ্যই। এদের ব্যাপারে প্রথমেই যা বলা যায় যে, এরা হচ্ছে “বাবু সম্প্রদায়”, সমাজের এলিট গোষ্ঠী। কেনারামের ঘরে দুধ কলা খেয়ে বড় হওয়া বাবুরামেরা নিজেদের পূর্বপুরুষের সেকেলে মন মানসিকতার থেকে এগিয়ে গিয়ে আধুনিক যুগের উপযোগী করে নেয়- সোজা বাংলায় “খ্যাত” থেকে “স্মার্ট” হয়। চলনে-বলনে, বেশ ভূষায়, সামজিক আচরণে, সামগ্রিক জীবনযাপনে এদের সমসাময়িক উৎকৃষ্ট সাংস্কৃতিক চর্চার ছাপ থাকে। দক্ষতা বিকাশের সাধনা আর উচ্চ জীবনমান পরিচালনা এই দুই বিপরীত মুখি দাবীর চাহিদা মেটাতে পারদর্শী হয় এরা।


এরপর আস্তে আস্তে দক্ষতা, মনোযোগ, কষ্টসহিষ্ণুতা হারাতে থাকে আর জায়গা করে নেয় অবহেলা, অদক্ষতা, অপরিণামদর্শী বিলাসিতা। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন- এরাই বেচারাম। আগের প্রজন্মের সব অর্জনকে ধরে রাখার মত যোগ্যতা থাকে না, তাই ভরসা করতে হয় “বেচা”র উপর। শুধু যে সয় সম্পত্তিই এরা খরচের খাতায় লেখায় তা নয়, অনেক ক্ষেত্রে বহুদিনের অর্জিত মান সম্মানও খুইয়ে বসে। এই অবস্থা যেন কোথায় ছিল? ঠিক ধরেছেন, এই অবস্থা ছিল বিফোর দ্যা রাইজ অফ কেনারাম। এটা অনেকটা যেন হিরোডটাসের জাতিগোষ্ঠীর উত্থানের ব্যাখ্যার মতই- “প্রথমে শৃঙ্খংলা জনিত উন্নতি এবং সাফল্য, এরপরে সাফল্য জনিত অহমিকা, সবশেষে অহমিকা জনিত পতন।“ (সকলে পড়েন, “ইন্নালিল্লাহে...”) |-)


যাই হোক, এই হল তিন পুরুষের কারবারের ফিরিস্তি। প্রশ্ন উঠতে পারে সবাই কি এই প্রকরণে পড়ে কিনা? আর পুরো প্রক্রিয়াকে কেবল তিন প্রজন্মে সীমাবদ্ধ করা যুক্তিযুক্ত কিনা? পড়বে না মানে, একশবার পড়বে! নাইলে এত ধানাই পানাইয়ের পরে এই লেখকের ইজ্জত কই থাকে বলেন তো? আমার মতে, এই তিন পুরুষ আসলে তিন রকম অবস্থা যা চক্রাকারে আসে আর যায়। (ভাবছি নিজের নামে এটারে নাম দেব) হতে পারে কেনারামথেকে বাবুরামে আসতে কয়েক জেনারেশন লেগে গেল। আবার বাবুরামরা কিছুদিন মজা করে গেলেন। অথবা বেচারাম এক জন্মে সব বেচে দিতে পারল না। কিন্তু কথা হল ট্রানজিশান টা চলতেই থাকে- দ্রুত বা ধীরে। আমাদের চারপাশের মানুষ সাথে আমরা নিজেরা মিলেই এই পুরুষানুক্রমিক বাস্তবতা। বিশেষ করে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে কিংবা একত্রিত হবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গেলে এই বিভাজনটা খুব চোখে পড়বে আপনার। দেখা যায় সমজাতীয়রা (যেম্নঃ বাবু-বাবু, কেনা-কেনা, বেচা-বেচা) এসব ক্ষেত্রে মিলে যায় ভালভাবে। বাবুরা যেসব জায়গায় ভীড় করবে কেনারামরা হয়ত সেখানে যেতে চাইবে না, আবার বেচারামরা যেখানে জটলা পাকায় সেখানে হয়ত অন্যরা যাওয়ার কথা চিন্তাও করে না। আবার এভাবেও দেখা যায়, কোন বেচারামের বেচাতেই তৈরি হচ্ছে কোন এক কেনারাম, শুরু হচ্ছে নতুন পরিক্রমার।


তবে এই থিওরি নারীজাতির উপর এপ্লাই করতে গিয়ে আবিস্কার করলাম তারা এই ধারার স্বাভাবিক গতির বিপরীতে যেতে চায়। সব মেয়েই বলে যে তার পছন্দ লম্বা, সুদর্শন, খোলা মনের ধনবান পুরুষ। এগুলা কিন্তু আমরা দেখেছি যে বাবুরাম কিসিমের কমন ট্রেইট। তাদের কারো ভাগ্যে সেই শিকে ছিঁড়লে সেক্ষেত্রে রিভার্স প্রগ্রেশন দেখা যায়। তো নারীকুলের আরোপিত ওয়েটেইজের দরুন দেখা যাচ্ছে বাবুরাম কেই আইডিয়াল স্টেট অর্থাৎ স্ট্যান্ডার্ড ধরা যেতে পারে। তাই সকল অবিবাহিত ভাইদের অতিসত্বর বাবুরাম কম্প্যাটিবিলিটি টেস্ট করার জন্য নিলে নেন না নিলে পস্তাইবেন টাইপ উপদেশ দেয়া যাচ্ছে। দরকার পড়লে গুগলে সার্চ মারুন, “হাউ টু বি এ বাবুরাম” অথবা “বাবুরাম ফর ডামিজ” ইত্যাদি।




অট- কেউ বাবুরাম বলতে বাবুরাম সাপুড়ে ইন্টারপ্রেট করলে লেখক কোনভাবেই দায়ী নয়। :P
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১২ রাত ১০:৪৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×