somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্রান্স --- যেটুকু দেখা হয়েছে (১)....

০৭ ই আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৮ ই এপ্রিল ২০০৭ আমরা লন্ডনের (Waterloo train station) থেকে (Eurostar) ট্রেনে উঠলাম ফ্রান্স যাবার জন্য। ট্রেনটা বেশ আরামের ছিল, একদম প্লেনের মতই ভেতরে...:) প্রায় আড়াই ঘন্টা থেকে ৩ ঘন্টার মত সময় লেগে ছিল আমাদের ফ্রান্স পৌঁছাতে। আমি একটু কৌতুহলী ছিলাম যখন শুনেছিলাম যে আমাদের ট্রেনটা সমুদ্রের নীচে (Channel tunnel) এর ভেতর দিয়ে যাবে। আমি ভেবে ছিলাম টানেলটা কাঁচের হবে আর আমি সমুদ্রের নীচের মাছ,গাছপালা এসব দেখতে পাব। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো যে টানেলটা কাঁচের ছিলনা...ঐটার ভেতরে ঢোকার সাথে সাথে অন্ধকার হয়ে গেল...ট্রেনের ভেতরে আলো জ্বলছিল তাই আমি জানালার বাইরে দেখার চেষ্টা করলে শুধু কাঁচে নিজের প্রতিচ্ছবিটাই দেখছিলাম...:| কি আর করা, কিছুক্ষণ ঐভাবে অন্ধকারের ভেতর দিয়ে চললাম। তারপরে উঠলাম প্যারিসে...চারিদেকে খুব সুন্দর গ্রামের মত সব দৃশ্য, যদিও গ্রাম কিন্তু বাংলাদেশের গ্রামের মত ছিলনা সেগুলো। ঐ গুলো হচ্ছে বিদেশী গ্রাম,পরিষ্কার ঝকঝকে...:D প্যারিসে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের ট্রেনটা ফ্রান্সের (Gare du Nord...train station) এ এসে থামলো। আমরাও গা টানা দিয়ে উঠলাম ট্রেন থেকে নামার জন্য।


ফ্রান্সের (Gare du nord train station)

হোটেল আগে থেকেই বুক করা ছিল তাই সেই ঝামেলা মাথা থেকে বাদ,কিন্তু সেই হোটেলে যাবটা কিভাবে...ট্যাক্সি করে তো যাব কিন্তু ট্যাক্সি পাব কোথা থেকে। এদিকে কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করলেই কিছু বুঝেনা ইংরেজী...ফ্রেন্চ ভাষা ছাড়া কথাও বলেনা কেউ। আর আমরা মরার ফ্রান্স গেছি ঘুরতে ফ্রেন্চ না জেনেই...:| কি যে অবস্থা,কোন ভাবে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড খুঁজে পেলাম...যাক ট্যাক্সি ওয়ালা ইংরেজী বোঝে...B-) তাকে হোটেলের নাম বলাতে সে সুন্দর ভাবে আমাদেরকে সেই হোটেলের সামনে এনে নামিয়ে দিল। যা বোঝা গেল তা হলো, হোটেলটা ছিল স্টেশনের একদম কাছেই...৫ মিনিটও লাগলো না সেখানে যেতে। যাইহোক এতদূর থেকে এসে এখন হেঁটে হেঁটে হোটেল খোঁজার এনার্জী আমাদের কারোই ছিল না তাই ট্যাক্সি ভাল ছিল। হোটেলে চেক ইন করে আমরা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নীচে নামলাম। উদ্দেশ্য ফ্রান্সের রাস্তাটা ঘুরে দেখা আর পেট পুজা করা। হোটেল থেকে নেমে হাঁটা শুরু করলাম...শহরটা কেমন যেন পুরানো আমলের মত... বিল্ডিং গুলো, রাস্তা সব কিছুই অনেক আগের তৈরী মনে হলো। সামনে ম্যাকডোনাল্স পেয়ে আমরা ভেতরে ঢুকে গেলাম খেতে। খাওয়া শেষ করে বাইরে আরো কিছুক্ষণ থেকে সেদিনের মত আমরা হোটেলে চলে গেলাম ঘুমানোর আশায়। কিন্তু যে ঘুমের জন্য আসলাম সে ঘুম তো আর আসে না,আসবে কি করে রাত ৮:৩০ টা ৯ টা বাজে সূর্যী মামা ডুবার নামই নেয়না.../:) আমাদের বাঙ্গালীদের বহুদিনের অভ্যস বাইরে অন্ধকার না হলে কি আর রাতের ঘুম হয়, না রাতের খাওয়া হয়। তাই অগত্যা বসে বসে টিভি দেখা শুরু করলাম বাইরে অন্ধকারের অপেক্ষায়। বাইরে কালো হওয়ার সাথে সাথে বাতি বন্ধ করে ঘুম...আহ কি শান্তির ঘুম...:)

নীচে হোটেলের সামনের রাস্তার কিছু ছবি...




পরেরদিন সকালে উঠে নাস্তা খেয়ে আমরা অভিযানে নামলাম...(Eiffel Tower) দেখতে যাওয়ার জন্য। প্রথম দিন তার উপরে ফ্রেন্চ একদমই না জানার কারণে আমরা ট্যাক্সিতে করে যাওয়ার চিন্তাই করলাম। তারপরে সেই আইফেল টাওয়ারের কাছে এসে নামলাম। হাঁটতে হাঁটতে গেলাম তার নীচে....নীচ থেকে উপরে তাকালে অবস্থা খারাপ হয়ে যায় এত উঁচু। পুরাটাই একদম লোহা লক্কর দিয়ে তৈরী...সেই যুগে মানুষ কেমন করে যে এই বস্তুটা বানিয়েছিল তা একমাত্র তারাই জানে..সেজন্যই এইটা পৃথিবীর সাতটা আশ্চর্যের মধ্যে একটা হয়ে আছে। টাওয়ারের উপরে উঠার জন্য লিফটের ব্যবস্থা আছে,যার ইচ্ছা হবে সে এই গগনচুম্বী টাওয়ারের মাথায় উঠে পৃথিবী দেখতে পারবে...আমাদেরও সেই ইচ্ছা হলো। তাই আমরা টাওয়ারের উপরে উঠার জন্য টিকিট কাটার লাইনে দাঁড়ালাম...সেই লাইন আর শেষ হয়না তার উপরে রোদের তেজ বেড়েই চলেছে। বেশ অনেকক্ষণ লাইনে থাকার পরে আমরা বের হয়ে আসলাম ওর উপরে উঠার সবরকমের ইচ্ছা বা কৌতুহল আমাদের শেষ ততক্ষণে...:| আমরা সামনের পার্কে বসলাম কিছুক্ষণ,অনেক কবুতর আসলো আমাদের খাওয়া দাওয়ায় অনুপ্রানিত হয়ে...আমরা তাদের খাওয়ালাম আর বুঝলাম যে কবুতর কে খাওয়ানো একটা নেশার মত...অনেক মজা আছে তাতে,খাওয়াতেই থাকলাম বেশ অনেকক্ষণ ধরে...তারপরে খাওয়া শেষ হয়ে গেল। সেখানে আমাদের অনেক আলোকচিত্র নেয়া হলো...ভিডিও করা হলো। ঠান্ডা বেশ ভালই ছিল তখন, আমার তো গলার আওয়াজ পুরা বন্ধ হয়ে গেছিল,আবার কাশিও হচ্ছিল। মেজাজ গরম,কি আর করার মানুষের সামনে কাশতে কেমন লাগে চিন্তা করেন...ননস্টোপ কাশি তাও আবার...X(( হোটেলে ফেরত চলে গেলাম...তারপর আবার সেই অপেক্ষা... রাত হবার।

নীচে Eiffel Tower ও তার আসেপাশের কিছু জায়গার ছবি...

















অশ্বারোহী দুই ফরাসী সুদর্শন...B-)

*** বাকি লেখা পরের পোষ্টে পোষ্টাবো...বড় লেখা কেউ পড়ে না তাই....আশা করি খারাপ লাগবে না যদি কেউ এটা পড়েএএএন...:)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ২:৩৯
২২টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাতে লাগে ব্যথা রে, কোক ছাইড়া দাও সোনার দেওরা রে…

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৩২

"কোকাকোলার লোগো প্রতিবিম্বিত করলে তা আরবি বাক্য 'লা মুহাম্মদ, লা মক্কা' সাদৃশ্য হয়। যার অর্থ দাঁড়ায় 'না মুহাম্মদ, না মক্কা' (No Muhammad, No Mecca)।" এই ইস্যুতে একবার মুসলিম বিশ্বে বয়কটের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরফমানব এবং ইভের সাত কন্যা

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের এক সকাল বেলা। আল্পস পর্বতমালার ইতালী অস্ট্রিয়া সীমানায় এরিকা এবং হেলমুট সাইমন নামের দুইজন অভিজ্ঞ জার্মান পর্বতারোহী তাদের হাইকিংয়ের প্রায় শেষ সময়ে এসে পৌঁছেছেন। গতরাতে আবহাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোকাকোলা সহ সকল কোমল পানীয় বর্জন করুন। তবে সেটা নিজের স্বাস্থ্যের জন্য, অন্য ব্যবসায়ীর মার্কেটিং কৌশলের শিকার হয়ে না।

লিখেছেন নতুন, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

মার্কেটিং এর ম্যাডাম একবার বলেছিলেন, "No publicity is bad publicity." প্রচারের মূল উদ্দেশ্য হল মানুষের মনে ব্র্যান্ডের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া। কিছুদিন পরে মানুষ ভালো কি মন্দ সেটা মনে রাখে না,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওরা আমাদের ঐতিহ্যের পোশাককে নোংরা পোশাক হিসেবে পরিচিত করতে চায়। ওরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে গ্রাস করতে চায়।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০


"লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি'মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।"

এক মৌলভী পোস্ট দিয়েছেন
"শাড়িকে একটি নোংরা পোশাক বানিয়ে দিয়েন না।
শরীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমূদ্র-সৈকতে - ১৬

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯



ছবি তোলার স্থান : মেরিনড্রাইভ, কক্সবাজার, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : পহেলা অক্টোবর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ।

বেড়াবার সবচেয়ে আকর্ষণীয় যায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমূদ্র সৈকত। কখনো কখনো আমারও সুযোগ হয় বেড়াতে যাবার।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×