somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবার জন্য শিক্ষা অসাধারণ একটি উদ্যোগ

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অমাদের কোন রাজনীতিবিদ এর দরকার নাই। সব গুলোকে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করা হোক। দেশের প্রতি ভালবাসা আছে এমন মানুষরাই বাংলাদেশ কে এগিয়ে নিচ্ছে এবং নিবে। নিচের আর্টিকেলটাই তার প্রমাণ।

দারিদ্র, ক্ষুধা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দেশ নিয়ে বলতে গেলে কেমন যেন সবই নেতিবাচক কথা চলে আসে। কিন্তু এতো কিছুর পরও আমরা স্বপ্ন দেখতে পারি। কারণ আজ এমন কিছু তরুণদের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব, যারা শুধু নিজের আর পরিবার নয় পুরো দেশকে আলোকিত করার স্বপ্নে বিভোর। আর তারা স্বপ্ন দেখেই বসে নেই। স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এগিয়ে গেছেন বহুদূর।

অদ্যম সেই স্বপ্নের নাম, এডুকেশন ফর অল(সবার জন্য শিক্ষা)। নূর খান, সাইফুর রহমান, এনায়েত হোসেন রাজিব এই অনুকরণীয় তরুণ উদ্যোক্তা।(সাইফুর রহমান কাজ করছেন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি এরিকসনে। নূর খান রাইট-ব্রেইন সলিউশন, সফটওয়ার ডেভেলপার কোম্পানির কর্ণধার। এনায়েত হোসেন রাজিব সিইও, দি ওয়েব ল্যাব।)

প্রতিবছর এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের পরে কিছু মেধাবী ছাত্র ছাত্রীর খবর ছাপা হয় বিভিন্ন মিডিয়ায়। যেখানে দেখা যায় খুব দরিদ্র পরিবারের হয়েও তারা সবচেয়ে ভালো ফলাফল করছে।

এই খবরগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সেসব মেধাবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এডুকেশন ফর অল। আর্থিক অবস্থা এবং ফলাফল বিবেচনা করে ঢাকায় এনে সবার সঙ্গে কথা বলে নির্বাচন করা হয় ৩৮ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী। তাদের পড়ার খরচ চালাচ্ছেন এই তিন বন্ধু।

শুরুর গল্প:

মেধাবী এই মুখগুলোর জীবনে শিক্ষার আলো যেন থেমে না যায় তার স্বপ্ন দ্রোষ্টা সাইফুর ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছেন তার সৎ সরকারি চাকরিজীবী বাবা যেখানে ছেলে মেয়ের পড়াশোনা আর সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতেন তার মধ্যেও তিনি চেষ্টা করতেন গরীব ছাত্রদের খরচ দিতে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে বাবা ছেলে মিলে দায়িত্ব নেন একটি ছেলের পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়ার। তাদের শিক্ষিত মানুষ গড়ার সেই ছোট্ট প্রয়াস দেখে সাইফুরের দুই বন্ধু বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত। স্বপ্নের সঙ্গে বাড়তে থাকে কাজের পরিধি। আজ তিন বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছেন এডুকেশন ফর অল(সবার জন্য শিক্ষা)। আর আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন প্রায় ৪০ জন ছাত্রের জীবনে।

সুবিধা:

এইচএসসি প্রথম বর্ষ বই, ভর্তি, দ্বিতীয় বর্ষ: বই, ভর্তি, পরীক্ষার ফি, ৩০ মাসের বেতন।

৫ মাস ঢাকায় থাকা খাওয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তী কোচিং-এর যাবতীয় খরচ।

এছাড়াও যেকোনো ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরম পূরণ, পরীক্ষা দেয়ার যাতায়াত খরচ।

২০১২ সালে প্রতিটি ছাত্রের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬৯ হাজার টাকা। তবে সবদিক বিবেচনা করে তারা ছাত্রদের পড়াশোনার সুবিধার জন্য বাজেট বাড়িয়ে ২০১৩ সালে ৮১ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সুবিধা পাওয়ার যোগ্যতা: ঢাকার বাইরের হতে হবে। রেজাল্ট- এ+,

শর্ত: কোনো ধরনের নেশা করা যাবে না।
পড়াশোনার একটা পর্যায়ে না গিয়ে বিয়ে করতে পারবে না।
রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থাকতে পারবে না।
অন্য কোনো সংস্থা থেকে আর্থিক সহযোগিতা নেওয়া যাবে না।

রাজিবরা শুধু টাকা পাঠিয়েই নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেন না। তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর সঙ্গে। এসব ছাত্রদের পড়াশোনার পাশাপাশি সামাজিক মূল্যবোধ তৈরি এবং যে কোনো সমস্যায় পরিবারের একজনের মতোই মানসিক সহযোগিতাও দিয়ে থাকেন তারা।

নিজেদের চেষ্টা, অর্থ, সময় এবং বন্ধু, আত্মীয় আর কিছু শুভাকাঙ্ক্ষির আন্তরিক সহযোগিতায় চলছে এই মহৎ উদ্যোগ।

এডুকেশন ফর অল-এর সুবিধাভোগী নিলফামারী জেলার সৈয়দপুরে সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী-সুমি আক্তার লাবনী। বাবা বাবলু হোসেন রিক্সা চালাতেন বর্তমানে অসুস্থতার কারণে রিক্সা চালাতে পারেন না। তার মা আম্বিয়া খাতুন পিঠা বিক্রি করে মেয়ের পড়ার খরচ, সংসার এবং অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করেন।

দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিলেও হার মানেনি সুমি। এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন পাঁচ পেয়েছেন। বড় হয়ে ডাক্তার হতে চান তিনি। বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলার সময় সুমি বার বার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছিল এডুকেশন ফর অল-এর উদ্যোক্তাদের। এই সাহায্য ছাড়া পড়া চালিয়ে নেওয়াই কষ্টকর ছিল। যে কোনো সমস্যায় তাদের কাছ থেকে নিজের বড় ভাইয়ের মতোই পরামর্শ পান বলেও উল্লেখ করেন সুমি।

সুমিরও একদিন স্বচ্ছলতা আসবে। তবে সে আজকের অভাবের কথা কখনো ভুলেতে চান না। বরং এই অনুভূতি থেকেই দরিদ্র ছাত্রদের পাশে থাকতে চান তিনি।

সিরাগঞ্জের উল্লাপাড়ার ছাত্র ওমর ফারুক । বাবার সঙ্গে চা বিক্রি করে পড়ার এবং সংসারের খরচ চালায় সে। তার পরেও এসএসসির রেজাল্ট এ+। এমনই গল্প এডুকেশন ফর অল-এর সুবিধা পাওয়া প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর।

সংস্থাটির অন্যতম উদ্যোক্তা সাইফুর রহমান বিশ্বাস করেন একদিন এই সাহায্য পাওয়া ছাত্ররাই অন্যদের সাহায্য করার মতো যোগ্য হয়ে গড়ে উঠবে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমাদের সামান্য সামর্থ দিয়ে পুরো দেশের মেধাবীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তবে সমাজের শিক্ষিত সচেতন স্বচ্ছল প্রতিটি ব্যক্তি যদি নিজের জায়গা থেকে অন্তত একটি শিশুর শিক্ষার দায়িত্ব নেন তাহলে দেশে কোনো মেধাবী শিক্ষার্থীর টাকার অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হবে না।

মুল লেখা
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×