somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইটিহাড বিমানের বিমানবালার সহিত এক রাত; এবং ততসংক্রান্ত অতি প্রাসঙ্গিক কিছু কথা!

০৭ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছোটবেলার হাজার হাজার প্রশ্নের অবসান ঘটাইয়া আমাকে যেই দরজার সম্মুখে দাড় করাইল উহাতে আমি স্তম্ভিত হইয়া গেলাম। ইহারাতো সবাই মানুষ! যিনি আমাকে টিকিট চেক করিয়া বলিলেন, আপনার সীট জানালার পাশে তিনি কালো মেয়ে। কৃষনো কালো। আমি নিশ্চিত তাহার জীবনের সকল স্বপ্নই তাহার দাঁত জুড়িয়া। কারন উহা ছাড়া দৃশ্যত তাহার গর্ব করিবার মতো আর কিছু আমার চোখে পড়িল না। কিন্তু আহা , এ কি! তিনি আমাকে যেখানে যাইয়া বসিতে বলিলেন উহাতো বসার জায়গাই শুধু! এসব কি! এ জায়গাতো পৃথীবতেও আছে! তবে প্লেনের কি দরকার? আমি মানুষ ঠেলিয়া গিয়া দুইজনকে বাহির করিয়া জানালার পাশের ৩ নম্বর সিটটাতে বসিয়া পরিলাম। অতপর বন্ধু মিরাজরে ফোন করিয়া বলিলাম, বন্ধু, আমার মেজ ভাইর জন্য খুব আফসোস হইতেছে। তাহার কত আশা বিমানবালা দেখিবে- পারেনাই। আর আমার সামনে প্লেনের অরজিনাল বিমানবালা ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। মনে মনে ভাবিলাম কালো যিনি তিনি বোধহয় আমাদেরকে টয়লেটে নিয়া যাইবার জন্য আর এই যে হাটুজলা লাল আপা উনিই অরজিনাল বিমানবালা! এই প্রথমবারের মতো আমি বুঝিলাম আমি প্লেনে উঠিয়াছি কারন আমার সীটের সামনে স্পষ্ট অক্ষরে লিখা- ইটিহাদ এয়ার সার্ভিস। আমার গায়ে স¤্রাট ভাইয়ার দেয়া সুয়েটার, বিমানবালার গায়েও সুয়েটার। ক্রমেক্রমে ভালোলাগা বাড়িতে লাগিল।

আমার মন খারাপ হইতে লাগিল কারন আমার বড় ভাইয়া যদি জানেন আমি প্লেনে উঠিয়াই টয়লেটে যাবার কথা ভাবিয়াছি তবে তিনি নিশ্চিত আমার দিকে রক্ত চোখে তাকাইয়া বলিবেন, মন থাকে কই? প্লেনে উঠার আগে কি করছো? মানুষজন বসতে পারেনাই আর উনার.....। কপাল ভালো ভাইয়া সাথে নাই। থাকিলেও যদি কিছু বলিতেন আমার কষ্ট লাগিত না। কারণ বড় ভাইয়াদের মেজাজ একটু এমনই থাকে। মা’র কাছে শুনিয়াছি এই ভাই আমার পড়াশোনার জন্য খুব পরিশ্রম করিয়াছেন। আমার দশম শ্রেণীর রেজাল্টের দিন ক্যান আমি দ্বিতীয় সেমিস্টারের চেয়ে কম পেয়েছি সেই রাগে আমার সাথে রাতে ঘরে বসে কথা বলেন নাই। এও শুনিয়াছি ছোট্ট বেলায় আমি নাকি সর্বদা তাহার কোলে-কোলে থাকিতাম। আমার কারণে তিনি অনেক সময় বাহিরে ঘুরিতে পারিতেন না।

চাপা স্বভাবের লোক বলিয়া টয়লেটও চাপিয়া গেলাম। কিন্তু চাপিয়া যাইয়াও বা লাভ কি? কি হয় তাতে! আর না চাপিলেও বা ফায়দা কি? এই যে আসমানীরে আমার ভালোলাগার কথা যদি চাপিয়া যাইতাম হয়তো আসমানী সিরিজ লেখা হইতোনা, জানা হইতো আমি কেমন, আমরা কেমন, কাউরে ভালো লাগিলে কেমন লাগে, কষ্ট পাইলে কেমন লাগে। আর না চাপিয়া গিয়াও বা কি লাভ হইলো? প্লেনে উঠিবার আগ মুহুর্তে দীর্ঘ সময় তাহার ফোনের অপেক্ষা করিয়া ফোন না পাইয়া ফোন দিলাম। বলিলাম ‘‘তোরে যে ছেলেটা পছন্দ করিতো সে তো চলিয়া যাইতেছে। উহা জানিয়াও তাহাকে একটা ফোন দেওয়া উচিৎ ছিলনা? ৩০ সেকেন্ডের জন্য হইলেও!’’ সে বলিল ‘‘ রাত্র জাগিয়া ম্যাথ প্রাকটিস করার কারনে তাহার ঠান্ডা লাগিয়াছে। সেই যন্ত্রনায় অন্যসব কথা খেয়াল নেই!’’

দুনিয়া প্লাবিত করার প্রয়াসে আসা জলচ্ছাসের ন্যায় তাহার ব্যয়িত এ সরল বাক্যে আমার চোখেও নোনা জলের বান আসিতে চাহিল। পূর্বের প্রতিজ্ঞা রক্ষার্থে ও প্রচন্ড রকম নিজের নির্বুদ্ধিতার ঘৃনায় সেই জলকে অপমান করিয়া তাড়াইয়া দিলাম সত্য তবে ঝড়ের আঘাত ঠিকই লাগিল! নিত্যান্ত নিরুপায় হইয়া তাহার দেখাদেখি আমিও ভাবিয়া বসিলাম, সব ভুলিব; সব। আমিও কিছুই খেয়াল রাখিবনা । সিদ্ধান্তও লইলাম, অকারণে আসমানী সিরিজ আর দীর্ঘ করিবনা। যদি কোনদিন সম্ভব হয় পূর্বের ওয়াদা মতে তাহার নামে একখানা ছোট-বড় বাড়ি বানাইয়া দিবো। বাড়ির নাম যাহা সাজাইয়া ছিলাম তাহাই- আসমাণী কটেজ।

অবাক হইলাম কারন কোন ধরনের কুচকাওযাজ ছাড়াই প্লেন স্টার্ট লইলো। ঠিক যখন সমতল ছাড়িয়া উপরে উঠিতে লাগিলাম দুই কানের মধ্যেই তীব্র ব্যথা অনুভুত হইলো। মাথা তুলিয়া দেখি সামনের দুই তিনজন কানের মধ্যে আঙ্গুল দিয়া বসিয়াছেন। আমিও তাহাদের মতো করিলাম ও ভাবিলাম, প্লেন উপরে উঠিবার কালে এইরকম হওয়ার নিশ্চই কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য সেই ব্যাখ্যা আমার জানা নাই। কারন আমাদের বিজ্ঞানের ফিরোজ স্যার বিজ্ঞানে ব্যাখ্যা পছন্দ করিতেন না। মুল লাইন বাদে বাড়তি কোন লাইন লিখিলে সেই প্রশ্নে তিনি অংকের ন্যায় জিরো বসাইয়া দিতেন। একবার রেশম গুটি দিয়া রেশমি সুতা তৈরীর প্রক্রিয়া লিখিয়া সেই প্রশ্নে আমি ০ পাইয়া সৌভাগ্যবান ৪ জন পাশ করা ছাত্রের একজন হইতে পারি নাই। অতপর খাতা লইয়া তাহাকে প্রশ্নটি দেখাইয়া বলিলাম, স্যার উহাতে এমন অন্যায় কি লিখিয়াছি যে রাগের সহিত আপনি ডাবল জিরো বসাইয়াছেন? তিনি আমার দিক তাকাইয়া স্বভাবসুলভ হাসি হাসিয়া বলিলেন, পৃষ্ঠাতো ভরিয়াছো দুই খানা, যেই কর্মে ফল লাভ হয় সেরকম কি কর্ম করিয়াছো? কোকুন হইলো রেশমি সুতার মুল উপাদান, উহাইতো লেখ্য হয় নাই! অতপর রুদ্ধশ্বাস তল্লাশিতে ‘‘কোকুন’’ কে খুজিয়া বাহির করিয়া বলিলাম, স্যার, এই যে! তাহাকে পাওয়া গিয়াছে! স্যার খুশি হইয়া অতপর উহাতে ১ বসাইয়া আমাকেও ভাগ্যবান বানাইয়া পাশ করা ছাত্রের সংখ্যা ৫ করিলেন এবং বলিলেন, হাতের লেখা সুন্দর ও পৃষ্ঠা দীর্ঘ করিলেই পরীক্ষায় অধিক নম্বার পাওয়া যায় না। মনে রাখিও - ‘‘আদর্শলিপির সব কথাই বিশ্বাসযোগ্য নহে।’’


প্লেন উপরে উঠিয়া গেল। শরীরের ব্যাথা শেষ। জানি বাহিরে চাপা অন্ধকার। কিছইু দেখা মিলিবে না। তাহার পরেও তাকাইলাম। ভাবিলাম অন্ধকার দেখি আর জীবনের আগা-গোড়া ভাবি। মন সায় দিল না। কারণ জানি যে উহার রেজাল্ট শূণ্যই হইবে। ভাবিয়া কিছু হয়না। যাহা হয় এ¤িœতেই হয়। যাহা হইবার তাহা হইবেই। উহাকে বড় লঞ্চ বাধা লোহার শিকল দিয়াও থামানো যাইবেনা। তাহা সুন্দরবন-৮ এর শিকল্ হইলেও না।


্এরপর ক্ষণে ক্ষণে আরও ঘটনা ঘটিতে লাগিল। প্রথমে সেই লাল আপা আসিলেন; তাহার হাতে নানান রংয়ের নানান পানীয়। তিনি আমাদিগকে উহা পানের জন্য আহবান করিতেছেন। সে যে কি অপূর্ব দৃশ্য! আমি বাংলা, তিনি কোথাকার হাফ প্যান্ট পড়া লাল আপা! আমার অনুমান শক্তি বাড়িয়াছে বলিযা পূর্বে যে সন্দেহ করিযাছিলাম উহা সত্যই প্রমানিত হইয়াছিল কারণ আমরা প্লেন হইতে নামিবার সময় লাল আপা জুস বাবদ আলাদা কোন টাকা নেন নাই। তিনি ইংরেজীতে জুস গুলোর নাম বলিতে থাকিলেন যাহার মধ্যে অতি পরিচিত হিসেবে অরেঞ্জ শব্দটাই কর্ণে লাগিল। গলাও শুকাইয়া গিয়াছিল। তাই হাত বাড়াইয়া তাহার হাত হইতে এক গ্লাস কমলার জুস লইলাম। বলিয়া রাখি, লাল আপা যখন আমাকে জুস দিয়াছেন তাহার হাতের সহিত আমার কোন ধরনের স্পর্শ হয় নাই এবং আমার এ ধরনের কোন ইচ্ছাও ছিলন্।া কারণ আমি জানি, তাহার গায়ে সুয়েটার, আমার গায়েও সুয়েটার! বাকী আল্লার ইচ্ছা!
চোখ বুঝিয়াছিলাম, ঘুমও আসিয়াছে। ঘুমের মধ্যে লাল আপারে লইয়া স্বপ্নে বিভোর হইবো আশা; কিন্তু ঐ হারামজাদা বাংলা ব্যাটা আমারে সেই স্বপ্ন দেখিতে দেয় নাই। কি যে সুন্দর স্বপ্ন! তাহার অন্তত এইটা বোঝা উচিৎ ছিল যে, আমি জিন্সের প্যান্ট ও পিটি সু (নগর সংস্করণে পিটি সু ই এখন কনভার্টস) পড়িয়াও যেহেতু রিক্স না লইয়া শুধু অরেঞ্জের জুস লইলাম তুই ক্যান গ্রামের ছেলে হইয়া অপরিচিত রস খাইতে গেলি। লোকজনের হট্টগোলের শব্দে হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল। উঠিয়া দেখি আমার ২ সিট সামনে লোকজনের ভিড়। কি হইয়াছে শুনিবো বলিয়া যখন আগাইয়া গেলাম দেখি লাল আপার নরম-কোমল -উষ্ণ-শীতল কোলের উপর ঐ বাংলা ব্যাটার কেয়া সাবানে ধোয়া মাথা লুটাইয়া গড়াগড়ি খাইতেছে। হেডার এন্ড সোল্ডারে (দামী ও অধিক উন্নত কোন শ্যাম্পুর নাম আমার জানা নেই) ধোয়া আমার মাথাখানা তখন আগুনের ন্যায় জলিতেছে। নিজ চোখে দেখিতেছি, লাল আপা কোমল স্পর্শে তাহারে আদর করিতেছেন আর ছোট ছোট করিয়া যেন কি বলিতেছেন। কস্টে আমার চোখে পানি আইসা গেল। কি হইলো জীবনে? কি করিলাম! নো রিক্স নো গেইন- শব্দটার অর্থ আর একবার মনে পড়িল। লোকটা রিস্ক লইয়া জুস ভাবিয়া বিয়ার খাইয়া মাথা ঘুরাইয়া আইজ লাল বিমানবালার কোলে! আর আমি বাংলা- চরম আফসোসে ‘‘চাপা লয়লেট’’ প্রকাশ করিতে ছুটি! হায়রে জীবন! না পাইলাম পৃথীবিতে, না পাইলাম প্লেনে!


টয়লেটে ছুটিয়া গেলাম!
দাদা বাড়ির সব টয়লেটের কথা অক্ষরে অক্ষরে খেয়াল আছে। পশ্চিম ধারের টয়লেটের ছাউনি কলা-পাতা আর সুপারির খোল। এটা ছোট ছেলেদের জন্য। মুরব্বীদের জন্য পুকুর পাড়ের টয়লেট। কাঠের বেড়া, ছাউনি নেই। মেহমানদের জন্য দরজার ধারের নতুন টিনের টয়লেট। আমরা উহার আশেপাশে ভিড়িতে পারিতাম না। রাতে বর্ষাকালে টয়লেট চাপিলে আমাদেরকে চুলোর গায়ে ছালাম করিতে বলা হইতো। চুলাকে বলিতাম, আমার টয়লেট তুই নে, তোরটা আমারে দে!
ব্যাখ্যা করিবার লোক ছিলনা বলিয়া কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি, চুলারও কি টয়লেট ধরে? তাছাড়া আমাদের টয়লেট নিয়া চুলা কি করিবে? উহাতে এমন গুরুত্বপূর্ণ কি উপাদান রহিয়াছে? প্লেনের বাথরুমে ঢুকিয়া হঠাৎ পুরানো দিনের বাথরুমের কথা মনে আসিয়া গেল। আশ্চর্য্য কিছু না দেখিয়া যখন ফ্লাস করিবো বলিয়া ফ্লাস বাটন খুজিতে লাগিলাম তখনই খটকায় পড়িলাম। এইখানেতো অনেকগুলো বাটন। একটা লাল, একটা সবুজ, একটা হলুদ। কোনটা কোন কাজে? এমনতো না যে, লালটায় চাপ দিলাম অমনি প্লেন থামিয়া গেল? হলুদটা দেয়ার সাথে সাথে ঘিঁয়াঁও ঘিঁয়াঁও করিয়া বেক গিয়ার মারা শুরু করিবে? একটু ভাবিতে চেস্টা করিয়া সব ক্লিয়ার হইয়া গেল। কারন এইখানে যদি প্লেন অফ করিবার সুইচ থাকিতো তবে ল্যান্ডিং অন দ্যা মুন গল্পে দেখা সেই চাঁদের পোষাক পড়া পাইলটগন সামনের গ্লাস মোড়ানে ঘরে না বসিয়া এই টয়লেটের মধ্যে বসিয়া থাকিত। নিজের বিচার বুদ্ধির উন্নতি দেখিয়া খানিকটা আনন্দ ঠেকিতে লাগিলাম। চরম তৃপ্তিতে সবুজ বুতামে চাপ দিয়া মুহুর্তের মধ্যে ২ হাত পিছনে দৌড় মারিলাম! নিজেকে স্থীর করিয়া পিছনে তাকাইয়া দেখিলাম, সব আগের জায়গায়-ই আছে, আয়না আয়নার জায়গায়, সুইচ, লাইট সবাই ঠিক আছে। ভাবিতে লাগিলাম, প্লেনের টয়লেটের প্যান কি দিয়া বানানো? যদি বাংলার কোন কাচামাল হইতো তবে খোদার কসম করে বলিতেছি, পানির এমন জোড়ালো আঘাতে এই প্যান সর্বোচ্চ ২ দিন টিকিত! এমন জোড়ে শব্দ হইলো যে কলিজার পানি শুকাইয়া যাইবার পালা!


অতপরঃ জানালায় তাকাইয়া দেখি নিচে জোনাকী পোকার মতো আলো দেখা যায়। ভেতর কাপিয়া উঠিল! কাপিয়াও ঠিক না, কেমন যেন! আমি আর আমার দেশে নাই! আমার বলিতে অবশিস্ট যাহারা ছিল তাহারা অন্য দেশে, আমি আর এক দেশে। অল্পপর আরবী ও পরে ইংরেজীতে ঘোষনা আসিল, আমরা আবুধাবি বিমান বন্দরে আসিয়া গিয়াছি। নামিতে ব্যস্ত হইতে লাগিলাম। যখন কাধের ব্যাগটা কাধে উঠাইলাম পিছনে তাকাইয়া দেখি, সেই হাটুজলা লাল আপা দীর্ঘ ৪ ঘন্টার বানিজ্যিক হাসির ধকলে খানিকটা ক্লান্ত হয়ে সীটের সহিত মাথা ঠেকইয়া চোখ বুঝিয়াছেন! তারে ঘুমে দেখিয়া খুব শখ হইলো অলক্ষ্যে তার কাছে গিয়া একবার স্পর্শ করিয়া দেখি উহারা কি সত্যিই চামড়ার নাকি প্লাস্টিকের?
দুর হইতেই লক্ষ্য করিলাম, উনি চোখ মেলিয়াছেন এবং ইশারায় বলিতে চেষ্টা করিতেছেন, যাও, জলদি নামিয়া যাও। যাহা দেখিতেছো উহা মেকআপ মাত্র। যেই হাসি এতক্ষণ দেখিয়াছো সেই হাসি ইচ্ছা-অনিচ্ছায় আমাকে সারাদিনই দিতে হয়। প্রতিটি হাসির বিপরীতে আমার স্যালারি গননা হয়। এ হাসিতে আকৃষ্ট হইয়া লাভ নাই। আল্লাহ তোমার জন্য যাহা সযতেœ রাখিয়াছেন তোমার সুখ তাহাতেই। আর একটা কথা, সুয়েটারের মিলের যে বিষয়টা ভাবিয়াছো উহাও ঠিক নয়। মিললেই যে মিলন হয় ; তা-না। খোদা তোমার জন্য যাহাকে বানাইয়া রাখিয়াছেন দেখা যাইবে তাহার সহিত তোমার আচার-আচরন, চরিত্র কোন কিছুরই সামান্য মিলও নাই। তুমি চুপচাপ, তিনি উত্তাপ। তুমি তাহাকে সামান্য ধমক দিয়াও কথা বলোনা, তিনি নিয়মিত আধাঘন্টা কোমড় খিচাইয়া ঝগড়া করিয়া তীব্র শীতের মধ্যে ঘন্টাখানেক দরজার সম্মুখে দাড় করাইয়া তোমার তৈরী ঘরে তোমাকে ঢুকিতে অনুমতি দিবেন। তারপরও ভাবিয়া লইবা, উহাই বোধহয় সুখ, উহার মধ্যেই সোনা পাওয়া যায়। কারণ, খোদা যাহা করেন, উহা মঙ্গলের জন্যই। সব মঙ্গলই সাধারণ মানুষের চোখে প্রকাশ্য নহে। যাও, তোমাকে দেরি করাইয়া ফেলিলাম। আল্লাহ চায়তো বাড়ি ফিরিবার পথে আবার যদিদেখা হয় দু’চারটা কথা বলিব। তোমার ভাই তোমার জন্য অপেক্ষা করিতেছেন। তাহার মেজাজ গরম হইলে তোমারই অমঙ্গল।

আমি তাহার কথা মানিয়া ভাইয়ার কথা ভাবিয়া দ্রুত পায়ে প্রস্থান করিলাম।
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×