somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটুখানি স্মৃতিচারণ ও শুভেচ্ছা বন্ধু :)

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও ছোটবেলায় আমার জন্মদিন ভীষন জমকালো ভাবে আয়োজন করা হতো। প্রায় এক মাস বা তারও আগে থেকে আমার মা নিজের হাতে জামা সেলাই করা শুরু করে দিতেন। নানা রঙের চুমকি, পুঁতি, লেস দিয়ে পুরাপুরি অসাধারণ, ভয়াবহ রকম সুন্দর জামা বানিয়ে ফেলতেন! সময় হাতে থাকলে একটা না এই রকম বেশ কয়েকটা প্রিন্সেস ড্রেস আমি পেয়ে যেতাম। অনেক সময় বিদেশি ক্যাটালগ দেখেও সেই সময় আমার জন্য মা জামা বানিয়েছেন। (শোকরিয়া যে তিনি এখনও সময় পেলেই আমার জামায় অদ্ভুত সুন্দর সুন্দর সব ডিজাইন করে দেন। এই লেখাটা লেখার সময় আমার জামায় একটা ময়ূর পালক সেলাইয়ের কাজ চলছে !:#P )
একদম ছোট থাকতে মা এর কর্মকান্ড দেখেই আমি বুঝতাম আমার জন্মদিন আসছে। রাত জেগে বসে বসে তিনি সোনালি-রূপালি কাগজ কেটে কেটে "শুভ জন্মদিন" এর পর নিজের মেয়ের নামটা যখন লিখতেন, ওহ! নিঃসন্দেহে দেখার মতো হতো সেইটা! 8-| :>

জন্মদিনের মাসটাতে যে বাবার জন্য তখন তার স্বল্প বেতন থেকে একটা ভালো অংশ কত কষ্টে বাঁচিয়ে রাখতে হতো আমি সেসব বুঝতাম না। কাকে কাকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে, কে কি কি আনবে সেই চিন্তায় আমার কয়েক মাস আগে থেকে আমার ঘুম গায়েব হয়ে যেত! :|

আমার সাথে তুলনা করতে গেলে বলতে হয় আমার ছোট ভাইয়ের কোন জন্মদিনেই তেমন আহামরি টাইপ কিছু করা হয়নি। কিন্তু ছোটবেলা থেকে পেতে পেতে আমার মোটামুটি ধারনাই হয়ে গিয়েছিল জন্মদিন আসলে সবাই আসবে...আর নানা রকমের গিফট আনবে...আর জামা-কাপড় দিলে আমি অনেক রেগে যাব! X((
আমার পাওয়া সেই সব খেলনা-পাতি কেউ ধরতে পারবেনা।( একটা ছবিও আছে আমার বয়সী এক পিচ্চি কাজিন আমার খেলনা ধরেছিল দেখে চুল ধরে টান দিসি:P )

আমার জীবনটা মোটামুটি রাজকুমারী স্টাইলেই কাটানো বলা যায়! বাবা-মায়ের শীতল ছায়ার পরশ কখনো প্রখর রোদের তীব্রতা অনুভূত হতে দেয়নি! মহান আল্লাহর কাছে দোয়া ও শোকরিয়া জানাই, যতদিন বেঁচে থাকি এই শীতল ছায়ারতলে যেন থাকতে পারি। ...

যাইহোক সংক্ষেপে বলে ফেলি, (কত কি যে বলতে ইচ্ছা করা শুরু হয়! সেই প্যানপ্যান শুনবেটা কেX()
এভাবে বড় আর বুড়া হতে হতে এক সময় কিভাবে কিভাবে জানি আগের মতো জন্মদিন পালন এর সেই আগ্রহটা হারিয়ে ফেললাম! /:)
জন্মদিনে কেক কাটতে দেখলে মহা বিরক্ত লাগা শুরু হল! আমার বয়স বেড়ে যাচ্ছে আর সবাই কি সুন্দর হাততালি দিচ্ছে X( !! ....

তবে দেশে থাকতে অনেক মজা হত। একই বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে সব কাজিনরা মিলে থাকার ফলে বাসায় যে কারো জন্মদিন হলেই দল বেঁধে (এমন কি নানুও!) সবাই মিলে রাত বারোটার সময় আইসক্রিম খাওয়া চলতো। যাওয়ার সময় হাতে একটা নোট গুঁজে দিয়ে যেত নানু :((

আজকাল তো আর মনেই করতে ইচ্ছা হয়না জন্মায় ছিলাম আবার কবে! /:) প্রতিটা মানুষই জন্ম নেয় একটা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য। একটা নির্দিষ্ট কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আমাকে দিয়ে মনে হয় সেসব কিছুই হবে না :-< ...আবার ভাবি চেষ্টা করে দেখতে থাকি কি হয় #:-S ...এ দ্বন্দ মনে হয় সারা জীবনই চলবে:|

এখনও ব্লগে এক বছর পার হয়নি আমার। কিন্তু বন্ধুত্বের বন্ধনে মনে হয় কতদিনের পরিচিত বুঝি:D
মাঝে মাঝে ভেবে অবাক হই কি এক অদ্ভূত বন্ধন! দেখা নাই, হয়তো কথাও নাই তবুও কত আপন লাগে! আবসরে বা কাজের ফাঁকে উঁকি দেয় মনে...মুখের কোণে হাসি ফুটে ওঠে অজান্তেই :)

আবশেষে আমার ভীষণ প্রিয় দুজন ব্লগারকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই। একজন অসম্ভব ভালো জিনিয়াস একটা মানুষ ও আমার অতি প্রিয় ভাইয়া, সাইফু ভাই। যার ফটোশপের অসাধারন কাজগুলি দেখে আমি পুরাপুরি মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত !!
আরেকজন আমাদের ট্যালেন্টেড খেকু না মানে ছেকু (দাওয়াত পাই নাই তো তাই প্রিন্টিং মিসকেট হচ্ছে;)) ব্লগার শামীমB-) (ব্লগারদের জন্মদিনের শুভেচ্ছা ভরা পোস্টগুলি পড়ে ভাবতাম মেরা নাম্বার কাব আয়েগা:P )

আরো দুজন প্রিয় মানুষ নিবিড় আর (আমার ব্লগতুত ভাবী)তানজু আপুর কাছ থেকে ভীষণ ভালোলাগায় মাখা শুভেচ্ছা পাওয়ার বিনিময় রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

সবাই অ-নে-ক অ-নে-ক ভালো থাকুন সেই শুভ কামনায়...

(:| এগুলি যে কি লিখলাম!)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১:০২
২৭টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×