বিগত এক দশকে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সাইবার অপরাধের প্রবণতাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে উন্নত বিশ্বে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন থাকার কারণে এবং তার ব্যাপক প্রয়োগের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই সাইবার অপরাধের দমন সম্ভব হয়েছে, বিশেষ করে ব্যক্তি পর্যায়ে সংঘটিত অপরাধগুলো অনেক ক্ষেত্রেই বিচারের আওতায় এসেছে। তবে এ কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সাইবার ক্রাইম এখন আর কোন সুর্নিদিষ্ট দেশের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই এবং এর ব্যাপকতা ধীরে ধীরেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে সাইবার ক্রাইম এবং এর পরিধি নিয়ে ততটা জনসচেতনতা লক্ষ্য করা যায় না। তবে বাংলাদেশেও এ ব্যাপারে ধীরে ধীরে আইন সুসংগঠিত হচ্ছে। প্রচলিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একটি বিশেষ ইউনিট সাইবার ক্রাইম এর বিষয়গুলো দেখভাল করে থাকে। এক্ষেত্রে যে কেউ ভুক্তভোগী হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় স্বাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে আইনের শরনাপন্ন হতে পারেন। বিশেষ করে যেসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী শিশু কিংবা নারী, সেসব ক্ষেত্রে সাইবার ক্রাইমের ব্যাপকতা অনেক বেশী। এ ক্ষেত্রে ডিএমপি'র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলামের এই ইন্টারভিউটি দেখতে পারেন।
লক্ষ্য করুন ভিডিওটির প্রথম দিকেই কমিশনার "সাইবার বুলিং" বা "মানহানির" বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছেন। সেদিক থেকে "সামুর" মতো একটি পাবলিক প্ল্যাটফর্মও বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের আওতাধীন। খুব সংক্ষেপে বলতে গেলে, সামুতে লেখা কোন পোস্ট বা কমেন্ট যদি কোন ব্যক্তি বিশেষের প্রতি উদ্দেশ্য করে, তাকে হেয় করে লিখা হয় এবং কেউ যদি মনে করেন তিনি বা তারা সাইবার বুলিং এর শিকার হচ্ছেন বা তার মানহানির উদ্দেশ্যে কেউ ক্রমাগত মিথ্যে বা ভিত্তিহীন প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাহলে আপনি ঐ লিখা বা মন্তব্যগুলো সংরক্ষণ করে তা প্রমাণ হিসেবে রেখে আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন।
অনলাইনে যদি কেউ ফেইক/ভুল/কাল্পনিক নাম ব্যবহার করে বা ভুয়া ইমেইল ব্যবহার করেও যদি আপনাকে প্রতিনিয়ত ট্রল বা হয়রানি করা হয়, তবুও তা সংরক্ষণ করে রাখুন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঐ অভিযুক্ত ব্যবহারকারীর ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করে, তাকে খুঁজে বের করে আইনের মুখোমুখি করতে সক্ষম।
লিখার মূল উদ্দেশ্য হলো, সামুর মতো ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেও আমরা কেউই যাতে সাইবার বুলিং বা হয়রানির শিকার না হই সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ এবং সচেতন থাকার অনুরোধ করা। সামু একটি মুক্ত ভার্চুয়াল স্থান হলেও তা আইনের বাইরে নয়, তাই মত প্রকাশের স্বাধীনতার পাশাপাশি আমাদেরকে আরো কিছু বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। মতামত থাকতেই পারে, সমালোচনা হতেই পারে তবে সেটা হতে হবে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ এবং ব্যক্তির সম্মান বজায় রেখে, তবেই প্রত্যেকের লিখালেখি থেকে ভালো কিছু বের হয়ে আসবে যা সবার জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে। আসুন আমরা সবাই মিলে সামুকে একটি সুন্দর আর সুস্থ পরিবেশ তৈরীতে সহযোগীতা করি। হ্যাপী ব্লগিং।
দ্রষ্টব্যঃ আমি কোন আইন বিশেষজ্ঞ নই, তাই আইনগত সহযোগীতা পেতে নিকটস্থ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা আইনজীবীর শরনাপন্ন হওয়ার অনুরোধ থাকছে।
ছবি কপিরাইটঃ স্লাইডশেয়ার
ভিডিও কপিরাইটঃ বিডিনিউজ২৪.কম
সহায়ক লিঙ্কঃ বাংলাদেশ পুলিশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৩:৫১