রাশি রাশি মেঘ এসে আমায় ভিজিয়ে দিয়ে যায়
অথবা
দুহাত ভরে মুঠো মুঠো মেঘ ধরার অনুভূতি...
এরম অনেক গল্প আমরা অনেক শুনি .. কিন্তু সেটা যে আমার দেশেই দেখা সম্ভব তা আগে জানা ছিল না... শহরের যান্ত্রিকতায় বোর হতে হতে রোবোটিক জীবনের ছন্দ পতন কিন্তু ভালই লাগে ... আর যদি সুযোগ মতো এক্টা লম্বা ছুটি হাতের কাছে চলে আসে...
আগস্ট ৩ দিনের ছুটি ... তার মানে ঈদ ... এখন অবশ্য চাইলেই হুট্ হাট্ ছোটা যায় না ... উইপ আছে ... টোনাটুনির পরামর্শ ... বান্দরবন... যদিও আগে একবার ঘুরে আসছিলাম বগা লেক পর্যন্ত... তখন উইপ বিহীন ছিলাম ... দোস্ত বন্ধুরা মিলে আর কি... বন্ধুদের সাথে এডভেঞ্চারের মজা আসলে কোথাও পাওয়া যায় না..
দূরের ভ্রমনগুলোতে রাত্রিকালিন ভ্রমণেই আগ্রহ আমার ... অহেতুক একটা দিন অপচয়ের হাত থেকে বাঁচানো.. সৌদিয়া পরিবহনে সকালে বান্দরবন... ফ্রেস হয়েই সকালের নাস্তা করতে করতে কথা সারলাম জীপ চালকের সাথে ... সময়ের সবটুকুই সদ্ধব্যবহার করা... সিজন ভেদে সমদূরত্বের পথের ভাড়া আপডাউন লক্ষণীয় ... আপনাদের জন্য: বান্দরবন হিলবার্ডের সামনে থেকেই নীলগিরির গাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়।
প্রাতরাশ সেরেই বেরিয়ে পরলাম নীলগিরির পথে।
শহরের আকিবুকি পথ পেরোতে না পেরোতেই পরবে বান্দরবনের সৌন্দর্যমন্ডিত শৈলপ্রপাত... সাথেই আদিবাসীদের কিছু দোকান... চাইলেই একটু চা খেয়েও নেয়া যায়...
এরপর পাহাড়ী আঁকা বাঁকা পথে যেতে যেতে পথেই পরে চিম্বুক পাহাড়। চিম্বুকে টিএন্ডটির বিশাল টাওয়ার, একটি সদ্য তৈরি রেস্ট হাউস এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের পুরনো একটি রেস্ট হাউস।
চিম্বুক থেকে বের হওয়ার একটু দূরেই সেনাবাহিনী পরিচালিত ক্যান্টিন রয়েছে। যারা নীলগিরিতে আগেই খাবারের অর্ডার না দিয়ে যাবেন .. তাদের অবশ্যই এখান থেকে খাওয়া দাওয়া করে যাওয়া উচিত হবে... নাইলে আবার উপোস থাকার সম্ভাবনা থাকে ...
নীলগিরি... বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্ববধানে পরিচালিত... নীলগিরি জেলা সদর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে। দুর্গম অঞ্চল হওয়া যাতায়াতে বেশ কিছুটা সময় চলে যায়। যদিও চারিদিকের অপরূপ দৃশ্যে একধরনের মুগ্ধতা কাজ করে। নীলগিরিতে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে আকাশ নীলা, মেঘদূত, নীলাঞ্জনা নামে সকল সুবিধা সম্বলিত কটেজ। জেনারেটরের সাহায্যে ৩ ঘন্টা বিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে... রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত। কেউ চাইলে বাড়তি টাকা পরিশোধে জেনারেটর সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। তবে সোলার বাতি থাকছে সব সময়। খাওয়া-দাওয়ার জন্য রয়েছে একটি চমৎকার রেস্টুরেন্ট। পাহাড়ী পথ পেরিয়ে নীলগিরিতে পৌঁছেই রেস্টুরেন্টে খেতে পারা যায়... আগেই খাবারের অর্ডার দিয়ে না রাখলে রান্না হয় না ।
নীলগিরিতে গিয়ে প্রথম টের পেলাম ক্যামেরা এবং মানুষের চোখের পার্থক্য কি বিশাল পার্থক্য... খালি চোখে যে বিস্তৃত সৌন্দর্য অবলোকন করা যায় ... অত্যাধুনিক ছবি তোলার যন্ত্রে তা আটকানো সম্ভব হয়ে ওঠে না.. ওই দূর পাহাড়ে ছোপ ছোপ মেঘ ... পাহাড়ের চূড়া গুলোকে দখল করতেছে... নিচে বয়ে চলেছে সাঙ্গু নদী.. মাঝে মাঝে মনে হয় পাহাড় ফুঁড়ে মেঘ বের হচ্ছে...
নীলগিরিতে তৈরী করা হয়েছে পাহাড়ের উপরে ফুলের বাগান... এক কথায় চমৎকার।
তবে কটেজ বুকিং এর জন্য আগে থেকেই কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
প্রকৃতির অনন্য দান নীলগিরি। মাঝে মাঝেই মেঘ ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায়... মেঘগুলোর পাহাড় টপকানো ঘোর লাগা এক ভাললাগায় শিহরিত হই। রাতের বেলায় ক্যামন অদ্ভুত একটা ভালোলাগায় ঘিরে ধরে... আবহাওয়া একটু ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাগে ... চারদিকে সুনশান নীরবতা মাঝে মাঝে হরিণ, শিয়ালসহ বন্য প্রাণীর ডাক ...
বেশ কয়েকটি ম্রো উপজাতি নীলগিরির কাছাকাছিতেই রয়েছে... সময় থাকলে ঘুরে আসা যায়... তাছাড়া কাছাকাছি রামু... সেটাও আরেক সৌন্দর্যের জায়গা...
শিশুকাল পেরিয়ে বাল্য কালে আমরা প্রচণ্ড ব্যস্ত স্কুল নিয়ে... তারুণ্য কাটে কলেজ জীবনে... যখন আমি যুবক তখন আমার ব্যস্ততা কর্মক্ষেত্রে... পরের সময়টা পেরিয়ে যায় বিয়ে, বউ, বাচ্চা... বাচ্চার লালন পালন... গুটি গুটি পায়ে চলে আসে অবসরের সময়... বৃদ্ধ বয়সে এসে আমরা বুঝতে পারি I forgot to live
সো বন্ধুরা... বর্তমান অবস্থানে থেকেই জীবনকে উপভোগ করুন
To make money we lose our health
And then to restore our health we lose our money…
We live as if we are never going to die,
And we die as if we never lived….
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:০৫