
বৃক্ষ তোমার নাম কি ফলে পরিচয়। কিংবা ব্যবহারে বংশের পরিচয়। অর্থাৎ একটা মানুষ ভাল না মন্দ তা তার ব্যবহারই বুঝিয়ে দেয়। আপনি কেমন শান্তিকামী না উগ্রপন্থী তা আপনার কথাবার্তা চালচলনেই প্রকাশ পাওয়া যাবে। আমরা মাঝেমাঝেই গর্ব করি নিজেকে নিয়ে, নিজের ধর্ম নিয়ে। আমি শ্রেষ্ঠ, আমার ধর্মই শ্রেষ্ঠ কিংবা পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তির ধর্ম। কিন্তু এটা প্রমাণ করবে কে; যে আপনার ধর্মই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কিংবা শান্তির ধর্ম। না, আর কেঊই প্রমাণ করবে না, আপনাকেই করতে হবে।
গরু খাওয়ার দায়ে অন্য ধর্মের মানুষকে হত্যা, কাবা শরীফের উপর শিবের মুর্তি স্থাপনের দায়ে নাসিরনগরে নির্দোষী মানুষদের বাড়িঘর পোড়ানো কিংবা মায়ানমারে রোহিংগা ট্রাজেডি কোনটাই আপনার ধর্মকে শ্রেষ্ঠত্তের আসনে বসায় বলে আমার মনে হয় না। আপনার ধর্মকে শ্রেষ্ঠত্বএর আসনে বসাতে হলে আগে আপনাকেই শ্রেষ্ঠত্ব এর আসনে বসতে হবে। আপনি হবেন সহিষ্ণু, দয়াবান, মানবতাবাদী। তবেই না আপনি ধার্মিক। অন্যথায় বারমাসে তের পুজা, পাচ ওয়াক্ত নামাজ, নিয়মিত প্যাগোডায় গেলেই ধার্মিক হওয়া যায় না।
একটা সদ্যজাত মানবশিশু আর ছাগশিশুর মধ্যে গঠনগত পার্থক্য ছাড়া আর তেমন কোন পার্থক্য নাই। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার বিচার বুদ্ধি ক্ষমতা বাড়তে থাকে । ধর্মীয় রীতিনীতি তাকে অন্যান্য পশুর থেকে আলাদা করে তুলে । তাকে পৃথিবীর তথা জীবজগতের শ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে । হে মানুষ বেদ, কোরান, বাইবেল, কিংবা ত্রিপিটক নয়, তুমিই ধর্মের দর্পণ, তোমাতেই গ্রন্থগুলোর প্রতিচ্ছবি দেখা যাবে । তোমার আচার , ব্যবহার, সহিষ্ণুতা প্রমান করবে তোমার ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব ।
শ্রী চৈতন্য, হযরত আলী (রা
সেদিন ফেবুর পাতায় কোন এক উগ্রপন্থীর মন্তব্যের প্রতি উত্তরে কোন এক মধ্যমপন্থী খুব নাখোস হয়েই বললেন, এরা যে মুখ দিয়ে অন্য ধর্মের মানুষকে গালি দেয়, আর সেই মুখ দিয়েই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পড়ে । সত্যিই তো । আগে তো এত টা ভাবি নাই । এটা ও সত্য যে, যে হাত দিয়ে এরা পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলোর পাতা উলটায় , সেই হাত দিয়েই অন্যের বাড়িতে আগুন দেয়, গুলি করে । এরা কি ধার্মিক??? এরা পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গুলো হয়তো পড়েছে, কিন্তু আত্মস্থ করে নি, যে কারনে ধর্মগ্রন্থের আদর্শ এদের মধ্যে ঢুকে নি । এরা ডগমাবাজ, আদর্শহীন, ভন্ড । আর তা না হলে আপনিই ভাবুনতো যারা নাসিরনগরের জন্য মানববন্ধন করল, তারা রোহিংগাদের জন্য তো একবার ও মানববন্ধন করল না কিংবা আজ যারা রোহিংগাদের জন্য মিছিল করছে তারা তো নাসিরনগরের জন্য মিছিল করল না ।
তাহলে কি বুজলেন এদের ব্যবহার থেকে? যাদের শোষিতের কান্না দেখে রিদয় কাঁপে না, তারা ধার্মিক হল কি করে?? একজন ধার্মিকই বড় মানবতাবাদী । পৃথিবীর যেখানেই মানবতা নিভৃতে কাঁদবে, সেখানেই ধার্মিকরা প্রতিবাদ করবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলবে । আর এরা হল তথাকথিত স্বার্থবাদী ধর্মান্ধ ।
আসুন আমরা ধার্মিক হই । ধর্মান্ধতার অভিশাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করি ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


