somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিসেম্বর মাস! কিছু বাড়াবাড়ি দেশপ্রেম, কতিপয় অধিক সচেতন কটুক্তি ও আমার কিছু কথা...

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা বাঙ্গালী, আমাদের আচার-আচরণ কাজকর্ম খুবই বিচিত্র। মাঝে মাঝে উত্তেজনার বশে আমরা তিলকে তাল করি, আবার মাঝে মাঝে তাল পেকে গেলেও আমাদের খেয়াল হয় না। ব্যালেন্স বলে একটা ব্যাপার, আমাদের মাঝে খুব একটা আছে বলে আমার মনে হয় না। আমরা আমাদের বিশ্বাস ও পছন্দকে পোক্ত করতে যুক্তি দাড় করাই, সেক্ষেত্রে অনেক সময়ই সত্যকে পাশ কাটাতেও দ্বিধা বোধ করি না। যাইহোক, আসল কথায় আসি।

ডিসেম্বর মাস চলতেছে। এই মাসজুড়ে ফেসবুক আর ব্লগগুলাতে একটু খেয়াল করলে, আপনি মূলত দুই ধরনের মানুষ খুঁজে পাবেন। এক ধরনের মানুষ খুঁজে পাবেন, যাদের মাঝে ডিসেম্বর মাসকে সামনে রেখে ব্যাপক দেশপ্রেম জাগ্রত হয়েছে। আরেকটি দল খুঁজে পাবেন, যারা অতি সচেতন। আপনি বিজয় দিবসকে সামনে রেখে কোন স্ট্যাটাস কিনবা আপনার প্রোফাইল পিকচারটি পরিবর্তন করলেই দেখবেন, এরা কমেন্ট করে বসবে, কিরে, ১১ মাস খবর নাই, এখন তোর দেশপ্রেম বাইরা গেছে না? তৃতীয় আরেক ধরনের মানুষ আছে, যারা এই দুই ধরনের মাঝামাঝি। এদের আলাদাভাবে কারো চোখে পড়ার কথা নয়। কারন এদের সংখ্যা কম, এবং এদের কাজকর্মও চোখে পড়ার মতো নয়।

আমার এই পোস্টটি মূলত প্রথম দুই শ্রেনীর লোকজনকে উদ্দেশ্য করে। আমি এখানে কিছু উদাহরণ দিতে চাই। আমরা সবাই আমাদের বাবা, মা এবং প্রিয়জনকে ভালোবাসি। কিন্তু সারা বছর কোনো খোঁজ না নিয়ে যদি বাবা দিবস, মা দিবস কিংবা ভালেন্টাইন্স ডে-তে আপনার মাঝে অধিক ভালোবাসার জন্ম হয় তাহলে তা অবশ্যই দৃষ্টিকটু। আবার আপনি নিশ্চয় প্রতিদিনই আপনার বাবা, মা কিনবা প্রিয়জনকে আপনার ভালোবাসার কথা বলতে যাবেন না। সেক্ষেত্রে একটি বিশেষ দিন যদি থাকে তাহলে খারাপ কিছুতো না। বাঙালি হিসেবে পহেলা বৈশাখ আমাদের জন্য একটি বিশেষ দিন। সারাবছর কে,এফ,সি/ বি,এফ,সি/পিজ্জা হাট-এ কাটিয়ে একদিন পান্তা-ইলিশ নিয়ে বাড়াবাড়ি যেমন গ্রহনযোগ্য নয়, তেমনি পাঞ্জাবি কিনবা শাড়ি পরে দিনটিকে উদযাপন করাতেও খারাপ কিছু নেই। কিন্তু আগেই বলেছি, আমার মনে হয় আমাদের মাঝে ব্যালান্স ব্যাপারটির বেশ অভাব আছে।

কেউ কেউ যখন তাদের কথাবার্তা , আচার-আচরনের মাধ্যমে দেশপ্রেমকে বাড়াবাড়ির পর্যায়ে নিয়ে যায়, অতি সচেতন কিছু লোক বলবে, দেশপ্রেম মুখে বলে প্রকাশ করার কিছু নেই, এটি শুধু বুকে ধারণ করতে হয়। কিন্তু আমি মনে করি, বুকে ধারন করার পাশাপাশি বলারও কিছু আছে। তা নাহলে, আপনার নিরবতা স্বাধীনতা বিরোধীদের উৎসাহীত করতে পারে। আপনি যদি প্রবাসে থাকেন, তবে দেশ নিয়ে বলা কথাবার্তাই আপনার দেশকে পরিচিত করবে সবার কাছে। দেশপ্রেম এমন একটি ব্যাপার যা শুধু বুকে ধারন করে বসে থাকার নয়। আপনার কাজ কর্ম এবং কথাবার্তার মাধ্যমে এটিকে অবশ্যই ছড়িয়ে দিতে হবে। উদাহরনসরূপ, আপনার বাবা-মা যদি ছোটবেলা থেকেই আপনাকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্য নিয়ে আপনাকে সচেতন না করে, আপনার মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত হবার সম্ভাবনা খুব কম। তারমানে, এই নয় আপনার দেশপ্রেম হবে ডিসেম্বর মাসকে কেন্দ্র করে, আপনি সারা বছর হিন্দিতে স্ট্যাটাস দিবেন, আর ২১শে ফেরুয়ারীতে শহীদ মিনারে ফুল দিবেন... এই কথার মানে, এও নয় যে, এই দিন গুলোতে আপনি কিছুই করবেন না। অবশ্যই ফেসবুক এ একটি স্ট্যাটাস কিনবা প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তনের মাধ্যমে অথবা অন্য যেকোনো ভাবে আপনি এই বিশেষ দিনগুলোতে আপনার দেশপ্রেম প্রকাশ করতে পারেন। তবে আপনার দেশপ্রেম ও তার প্রকাশভংগির মাঝে একটা ব্যালান্স যেনো থাকে। দেশপ্রেম নিয়ে বাড়াবাড়ি যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি অতিরিক্ত সচেতনতাও অগ্রহনযোগ্য।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×