somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলুন ড. মশিউর রহমানের পাশে দাঁড়াই

৩০ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের সেরা ব্রেনগুলোর অনেকেই বিদেশে পড়তে যান, সেখান থেকে দেশে ফিরে এসে কাজ করার জন্য আকুলি পাকুলি করেন, মাতৃভূমির কষ্ট নিয়ে ভাবেন, তবে অনেকেই শেষ পর্যন্ত ফিরতে পারেন না। কারো জন্য দেশে তাঁর মেধা দেখানোর সুযোগ থাকে না, কারো কারো ছেলে মেয়ের পড়ালেখা শুরু হয়ে যায়, কেহ কেহ এমন প্রতিষ্ঠানে চাকরি পান যে যা কেবল আমরা স্বপ্নে দেখি। ফলে ফিরবো, ফিরবো করে আর ফেরা হয় না।



তারপরও অনেকে ফিরে আসেন এবং কেন জানি না তাদের সঙ্গে আমার এক ধরণের সখ্যতাও গড়ে উঠে। তাদেরকে দেখে আমি অনুপ্রেরণা পাই, নিজের ভেতর থেকে জেগে উঠি, ভাবি কী চমৎকার জীবন ছেড়ে তারা আমাদের এই দেশে এসেছেন, এই দেশটাকে বদলে দেওয়ার লড়াইটাকে নিজের করে নিয়েছেন। ভাবি, একদিন আমিও আলসেমি ছেড়ে তাদের মতো সত্যিকারের কিছু একটা করার কাছে শরীক হতে পারবো। ভেবে ভেবে সময় পার হয়।

এর মধ্যে দেশে আসেন আবেদ চৌধুরী, আসা যাওয়ার মধ্যে থাকেন আতাউল করিম স্যারসহ আরো অনেকে। আরো আসেন ড. মশিউর রহমানের মতো স্কলার লোকেরাও। কারো কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে ড. মশিউরের সঙ্গে আমার প্রথম কথা বলা। তারপর থেকে আমি তাকে দেখেছি শিক্ষার্থীদের জন্য নানান কাজে, গবেষণায় মগ্ন হয়ে সময় কাটাতে। কমিউনিকেশনের যে বিষয়টিতে তাঁর সবচেয়ে বেশি দক্ষতা সেটি এই দেশে ভাসুরের নামের সিনোনিম। এই একটি কারণ যথেষ্ট ছিল তাঁর চলে যাওয়ার। কিন্তু যাননি। যা করা যায় দেশে থেকেই করবেন ঠিক করেছেন।

গবেষণার কাজে জাপান গেলেন। একদিন আমাকে লিখলেন জাপানীরা যে কায়দায় প্রিয়জনকে খুজে ফিরেছে সেরকম একটা ব্যবস্থা নিজেদের জন্য করে রাখা দরকার (ভাবা দরকার, সে সময়ে আমাদের সরকার মনে করেছে জাপানে আমাদের দূতাবাসটা বন্ধ করে দিলে ভাল হয়!)। আমাকে জানালেন কীভাবে তিনি এই কাজের জন্য কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক যোগাড় করতে পারেন। তারপর ঠিকই তিনি কয়েকজনকে নিয়ে কাজটি করেছেন।

জাপান থেকে দেশে ফেরার সময় জেনেছেন যে একটি অপারেশন করতে হবে। কিন্তু তখন জানতেন না, ধরা পড়বে ক্যান্সার। এমন অপারেশন করতে হবে যার জন্য লাগবে ২০ লক্ষ টাকা। নিজের সঞ্চয় বলতে স্ত্রীর গচ্ছিত ১০ লক্ষ টাকা।

এখন ব্যাংককে তিনি আছেন। এরই মধ্যে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে। আরো ১০ লক্ষ টাকা লাগবে! অনেকে হয়তো ভাববে,বেশিরভাগ সময় যিনি বিদেশে কাটালেন তিনি কীভাবে নি:স্ব থাকেন?



থাকেন, কারণ তিনি তার স্বপ্নের পেছনে দৌড়ান। আমরা যারা চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুলে পড়েছি তারা আমাদের নূরুল ইসলাম স্যারকে দেখেছি। তিনি আমরা অংক পারলে ব্রিজ হোটেল থেকে পরোটা কিনে এনে খাওয়াতেন। সেরকম ড. মশিউর তার শিক্ষার্থীদের গবেষণার পেছনে, বিজ্ঞানী.অর্গ নামে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে, শিক্ষার্থীদের নানান কাজে যুক্ত থেকে সব টাকা খরচ করে ফেলতেন।

নিজের কঠিন দিনের কথা ভাবেন নি।

ভাববেনই বা কেন?

যে দেশের ডাকে তিনি প্রাচুর্য ছেড়ে এই লড়াই‌-এ ফিরে এসেছেন, সেখানে কি তিনি একা?

আমরা কী প্রমাণ করবো যে, দেশে ফিরে তিনি ভুল করেছেন?



আমার মনে হয় না।

তার শিক্ষার্থীরাতো বটে, আমরা যারা এই দেশটাকে বদলে দেওয়ার জন্য, জ্ঞান বিজ্ঞানে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সুন্দর স্বপ্নের পেছনে একটু একটু করে লড়ে যাচ্ছি, তারা কী মাত্র ১০ লক্ষ টাকার কাছে হেরে যাবো?



১০ লক্ষ টাকা কতো টাকা? প্রত্যেকে একহাজার টাকা করে দিলে এক হাজার জন। ৫০০ টাকা করে দিলে দুই হাজার জন!!! মাত্র!!!



আসুন আমরা স্যারের পাশে দাঁড়াই।





কীভাবে সাহায্য করবেন?



ড. মশিউরের চিঠি (Click This Link) তে তিনি একাউন্ট নম্বর দিয়েছেন। দেশে ও বিদেশে যারা সমন্বয় করছেন তাদের নাম ধামও সেখানে আছে।



প্রাইম ব্যাংক একটি অনলাইন ব্যাংক। কাজে দেশের যেকোন প্রাইম ব্যাংকের শাখায় গিয়ে সরাসরি তাঁর একাউন্টে টাকা জমা দেওয়া যাবে। তবে, সবচেয়ে ভাল হয়, নিজে যাওয়ার আগে আশে পাশের লোকদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া যে তারা কেহ সাহায্য করবে কী না। তাহলে সবার থেকে নিয়ে একবারে জমা দেওয়া যাবে। সেটি বরং ভাল।

শ্রাবণীর জন্য টাকা তুলতে গিযে আমি দেখেছি অনেকে ব্যাংকে যেতে চান না। তারা কাউকে খুঁজে নিন। কয়েকজন মিলে টাকা তুলে নিজের কাছে রাখতে পারেন। নিজরা ব্যাংকে যেতে না পারলে আমাকে খবর দেবেন। আমি তেমন ব্যস্ত লোক নই। দরকার হলে আমি টাকা নিয়ে এসে ব্যাংকে জমা দেবো। অথবা কাউকে অনুরোধ করবো। তবুও ব্যাংকে যাওয়ার সময় হবে না এ কারণে দূরে থাকবেন না।



ড. মশিউর রহমানকে এই দেশের খুবই দরকার।



তিনি নিশ্চয়ই সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।
----------------------------------------------------------মুনির হাসান
এই ফ্যান পেইজটি প্রপাইল এ শেয়ার করে এবং সাজেস্ট করে বন্ধুদের আমন্ত্রন জানাতে পারেন ।
Click This Link

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×